সহি ডাক্তারনামা

ছাইরাছ হেলাল ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬, শনিবার, ০৬:১৮:৫২পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৮ মন্তব্য

সখা, সখি ও শাস্ত্রী সমভিব্যাহারে রাজন মৃগয়ায় বেড়িয়েছেন সোনাবিকেলে,
উহ্‌, নাহ, এটি কোন দূষ্মন্ত-শকুন্তলা কাহিনী নয়,

বনপ্রান্তের ক্রন্দন ধ্বনিতে থমকে গেল রথ,
আলুথালু বেশে গাছ জড়িয়ে প্রবল কান্নাকাটি করছে বিমর্ষ একটি লোক,
‘এ জেপন আর রাকপ না, আম্রে আমি আজ মাইরালামু’
শাস্ত্রীর বন চটকানোতে কান্না বন্ধ, চ্যাংদোলা করে নিয়ে এসে পেশ করা হলো রাজন সম্মুখে। এ রাজ্যে কান্না নিষিদ্ধ, তাই ঘটনা জিজ্ঞেস করে জানা গেল, সে আত্মহত্যা করতে চায় গলায় দড়ি দিয়ে, কিন্তু দড়িটি তার খুব ছোট, তাই গাছের উঁচু ডাল অব্দি না পৌঁছানোয় তার আত্মহত্যার মহান কর্মটি করতে পারছে না। দয়ালু রাজন দ্রুত আত্মহত্যার ব্যবস্থা করার হুকুম দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতেই আবার কান্নার শব্দে বিরক্ত হয়ে আবার থেমে গেলেন।
এবারে শাস্ত্রীরা ঐ উজবুকের পশ্চাদ্দেশে শপাং শপাং শব্দে জালি বেত চালাতে চালাতে কান্না বন্ধ করে রাজার কাছে নিয়ে এলো। এবারে কৌতূহলী হয়ে রাজা বিস্তারিত জানাতে চাইলেন;

প্রথম বার সে আত্মহত্যা করতে চেয়েছে মনের দুঃখে, তার পোষা বাঁদরটি তাকে ছেড়ে লাপাত্তা হয়েছে, কিন্তু দড়িতে ঝোলার আগ মুহূর্তে মনে হয়েছে আত্মহত্যা করে লাভ কী? তার থেকে বৈরাগ্য নিয়ে বাকী জীবন প্রাণের বাঁদরটি খুঁজে খুঁজে বেড়াবে,

জীবনের এরূপ অপচয় ও মূল্য হীনতা দেখে রাজা এবারে ভীষণ রেগে গিয়ে দড়িতে ঝুলিয়ে তাঁর সম্মুখে সত্বর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার হুকুম দিলেন, বিপত্তি দেখা দিল, প্রবলতর থেকে প্রবলতম কান্নাকাটি, কিছুতেই সে মরতে চাচ্ছে না, প্রচণ্ড মুগুরের মার খেয়েও কান্না বন্ধ হচ্ছে না, কান্না যেহেতু নিষিদ্ধ এখানে, দণ্ড কার্যকর করা কঠিন হয়ে গেল।
বাঁধন খুলে কাছে এনে কান্নার কারণ জানতে চাইলে সে এবার জানালো,
মানব কল্যাণে সে সে তার বাকী জীবন উৎসর্গ করতে চায়,
সে একজন ডাক্তার।

0 Shares

২৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ

Thumbnails managed by ThumbPress