সত্যি! আজকে যে সময়টায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি। সে সময়টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, মহামারী ও দুর্যোগপূর্ণ। প্রিয় এই সময়গুলোতে খুব কাছের, প্রিয় কিছু ভালোবাসার মানুষও দূরে বহুদূরের দূরত্বে চলে যাচ্ছে। মা-বাবা, ভাইবোন, পাড়াপড়শি, আত্মীয়স্বজন সবাই যেন দূর আকাশের বাসিন্দার মতো। কেউই সাহায্যের হাত টুকুও বাড়াচ্ছে না। এই দুর্বিষহ সময়ে আসুন আমরা সকলেই সচেতন হই। নিজের পরিবার পরিজন থেকে শুরু করে দূরে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সচেতন হওয়ার চেষ্টা করি। তাদের যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করি।
এই মূহুর্তে, এই কাকপক্ষী জীবনের মৃত্যু সংকটে বিভিন্ন সমাজ কল্যাণ সংস্থা, বিভিন্ন সংগঠন, ব্যাক্তিগত, দলগতভাবেও সবার পাশে এসে দাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও থেমে নেই। সরকারের প্রনোদনা হিসেবে ৭২,৭৫০ কোটি টাকা মানব কল্যাণের জন্য ব্যাবস্থা গ্রহণ করেছে।
এই ৭২,৭৫০ কোটি টাকা যদি ১৮ কোটি জনগনের মাঝে সমান ভাগে ভাগ করে বন্টন করা হয় তাহলে জনপ্রতি ৪০৪১.৬৬ টাকা পায়। এখন দেখা যাক, জনগন কত টাকা পায়? কতোগুলো পরিবারের কাছে গিয়ে পৌঁছায় এই সরকারি আর্থিক সাহায্য। যেখানে শত শত চাউল চোরের ঘটনায় দেশের জনগণ স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে।
আরেকটি হিসেব ধরা যাক, বাংলাদেশের মোট ১৮ কোটি জনগণ। প্রতি পরিবারের সদস্য সংখ্যা গড়ে তিনজন ধরা হলেও দেশে মোট পরিবারের সংখ্যা (১৮÷৩)=৬ কোটি। এরমধ্যে রয়েছে অনেক কোটিপতি। যাদের এই সামান্য মাথাপিছু টাকা না হলেও চলবে। তারপরও হিসেবে ধরে যাক।

এখন প্রত্যেক পরিবারের ১ মাসের খোরাকের অথবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র (যেটা একটি পরিবারে জন্য না হলেই নয়) মূল্য তালিকা নিম্নরূপঃ

৫০ কেজি চাল (সর্বনিম্ন) = ১৫০০ টাকা
০৫ কেজি ডাল = ৩০০ টাকা
২.৫কেজি তেল = ২০০ টাকা
১০ কেজি আলু = ২০০ টাকা
৩ কেজি পিয়াজ= ১০০ টাকা
নগদ-প্রদান (সবজির জন্য)= ৭০০ টাকা
___________________________
সর্বমোট = ৩০০০ টাকা

তাহলে এখন ধারায়, ৬ কোটি পরিবার x ৩০০০ টাকা= ১৮,০০০ কোটি টাকা খরচ হবে। অবশিষ্ট থাকবে আরও ৫৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যা দিয়ে আরও তিন মাসের খোরাকি দেওয়া সম্ভব।
এভাবে প্রত্যেক পরিবারের ০১, ০২ অথবা ০৩ মাসের খোরাকি দিয়ে সমস্ত বাংলাদেশ ০১, ০২, অথবা ০৩ মাসের জন্য লক ডাউন করে দিলেও মানুষজন আর কিছু নুনভাতে চলে যাবে।
তবে এই টাকা বিতরণের একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন, সরকার থেকে একমাসের জন্য কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া হোক। যাদের কাজ হবে গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা এমনকি জেলা পর্যায়ে। যাদের প্রধান কাজ হবে প্রত্যেক পরিবারের লোকজনের তথ্য সংগ্রহ করা। সেই তথ্যগুলো সরকার কতৃক একটি ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপসের মাধ্যমে একটি সুনির্দিষ্ট এ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া। যাতে করে একটি পরিবারের জন্য একটি এ্যাকাউন্টই থাকে। অন্য কেউ একই আইডি কার্ড দিয়ে যেন আরেকটি এ্যাকাউন্ট না খুলতে পারে। এজন্য ঐ এ্যাকাউন্টে একটি পরিবারের সকল সদস্যদের আইডি তথ্যসহ উল্লেখ থাকবে। যেন ক্লিক করলেই নথিপত্র চলে আসবে। এভাবে যখন প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা, থানা ইউনিয়ন এমনকি গ্রাম পর্যায়ে যখন এ্যাকাউন্ট খোলা শেষ হয়ে যাবে। তখন সরকার ঐ ওয়েবসাইট, কিংবা সফটওয়্যার অথবা অ্যাপসের মাধ্যমে সরকারি অনুদান পৌঁছে দেবে। তবে, অবশ্যই যারা এ্যাকাউন্ট খোলার দায়িত্বে থাকবে তাদেরকে অবশ্যই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আশাকরি, সমস্যার সমাধান হবে।

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ