
স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায়! অত্যন্ত সত্যি কথা। স্বাধীনতা ছাড়া বাঁচা দায়। স্বাধীনতা শব্দটার মানে মুক্ত হওয়া বা মুক্ত থাকা। কিন্তু স্বাধীনতা কথাটির ব্যাপকতা বিশাল। ক্ষেত্র বিশেষে এর রূপ বদলায় বারংবার। দেশ প্রেমিকের কাছে স্বাধীনতার মানে একরকম, আর প্রেমিকের মনে এর অর্থ ভিন্ন রকম প্রকাশ পায়।
স্বাধীনতার মানে সম্পর্কের বেলায় আরেক রকম। সম্পর্কে স্বাধীনতা কম, সীমাবদ্ধতা বেশি থাকে। সীমাবদ্ধ, কথাটি যেকোনো সময় যেকোনো ব্যাক্তি, বস্তু, ক্রিয়াকে মূহুর্তে থমকে দেয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কোনো না কোনো সময়ে শুনতে হয়, এবার থামো। আর নয়। কখনো অন্য কেউ বলে দেয় কখনো নিজেকে নিজের বলতে হয়। কিন্তু কেন? এর আসলে কোনো সঠিক ব্যাখ্যা নেই। যে যার মতো ভেবে নেয়। জন্ম থেকে মৃত্যু বা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি সময়ে নির্দিষ্ট কাজে-কর্মে আমাদের সীমাবদ্ধ হতে হয়। বৃত্তবন্দী জীবনে বৃত্তের বাইরে যতই অবিরাম ছুটে চলি, দিনশেষে আমাদের বৃত্তের মাঝেই ফিরতে হয়। এখানে স্বাধীনতার চেয়ে সম্পর্ক বেশি প্রাধান্য পায়।
সম্পর্ক গুলোর অনেক নাম হয়। অনেক রূপ হয়। কিছু সম্পর্ক রক্তের। কিছু সম্পর্ক আত্মার। কিছু সম্পর্ক হয় বেনামি। নানা রঙের সম্পর্ক গুলোতে জড়িয়ে থাকাকে আমরা পরাধীনতা কখনোই ভাবতে পারিনা। অথচ, সম্পর্কের কারণে প্রতিনিয়ত কতকিছু করতে হয়, করে যেতে হয় ইচ্ছায়/অনিচ্ছায়। সব সম্পর্ক থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করতে কেউ কি কখনো চেয়েছে? চায়?
সম্পর্কে আবদ্ধতা অনেক সময় ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করে। তবুও মানুষ সম্পর্ক খুঁজে বেড়ায় হন্যে হয়ে। বাস্তব চেনা জগৎ ছাড়িয়ে সম্পর্কের বলয় বিস্তৃত করে ভার্চুয়াল জগতেও। ভার্চুয়াল জগতে ভার্চুয়াল এক্টিভিটি দেখে রিয়েল মানুষ খোঁজার মতো দুঃসাধ্য কাজ করতেও পিছপা হয়না। সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার এত যে আপ্রাণ চেষ্টা, এর থেকে কি আসলেই মুক্তি আছে? কিছু সম্পর্ক হয় ছায়ার মতো। সর্বক্ষণ সাথে থাকবে, ধরা যাবেনা। ছোঁয়া যাবেনা। আত্মার সাথে দেহের, দেহের সাথে ছায়ার যে সম্পর্ক, তার থেকে মুক্তি নেয়া যায় কেমন করে? এখানে স্বাধীনতার মূল ব্যাখ্যা অচল।
কেউ কি কখনো নিজের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারে? ছায়ার মধ্যে পদচিহ্ন রাখা যায়?
৩২টি মন্তব্য
শাফিন আহমেদ
কিছু কিছু মায়ার বাধনে এতো বেশি ভালোবাসা নিহিত থাকে যে স্বাধীনতা অর্জনের তীব্র ইচ্ছাও মানুষ ভুলে যায় । সুন্দর একটি বিশ্লেষণধর্মী লেখা । শুভ কামনা ।
সাবিনা ইয়াসমিন
ঠিক তাই, সম্পর্কের স্বাধীনতা মানুষ স্বীকার করতে চায় না। কিছু সম্পর্কে পরাধীন থাকার মাঝেই আনন্দ বিরাজ করে।
অনেক ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্যে। শুভ কামনা 🌹🌹
শাহরিন
সম্পর্ক কখনো স্বাধীন হয় না। আমরা স্বাধীনতা চাই কিন্তু অনেকেই এটার অপব্যবহার করে। কিছু দায়বদ্ধতা থাকা ভালো যদি সেটা আত্মসম্মানে আঘাত না হানে। আর সব হিসাব কখনোই মিলে না তাই স্বাধীনও হওয়া যায় না।
সাবিনা ইয়াসমিন
সম্পর্ক দায়বদ্ধতার অন্য নাম। মা-সন্তান, ভাই-বোন, আত্মীয়-পরিজন, জীবনসাথী, এদের সাথে যে সম্পর্ক গড়ে উঠে তাতে স্বাধীনতার কোনো স্থান নেই। আমরা এই সম্পর্ক গুলোতে আজীবন পরাধীন-পরাস্ত হতে চাই। এখানে পরাধীন থেকে সম্পর্কের চুড়ান্ত স্বীকৃতি লাভেই ভালোবাসার স্বাধীনতা খুঁজে নেই।
শুভ কামনা, ভালোবাসা সব সময়ের জন্যে। ❤❤
শামীম চৌধুরী
আসলেই কি স্বাধীনতা বলতে কিছু আপু। অধীনস্থ করে রাখাটাই স্বাধীনতাকে খর্ব কলে আর হ্যাঁ ঐ যে বললেন, কিছু সম্পর্ক আছে রক্তের,কিছু আত্মার, কিছু বেনামের এই সম্পর্কগুলির কাছে স্বাধীনতা মানেই আত্মতৃপ্তি। ভালো বলেছেন।
শামীম চৌধুরী
আসলেই কি স্বাধীনতা বলতে কিছু আছে আপু? অধীনস্থ করে রাখাটাই স্বাধীনতাকে খর্ব কলে আর হ্যাঁ ঐ যে বললেন, কিছু সম্পর্ক আছে রক্তের,কিছু আত্মার, কিছু বেনামের এই সম্পর্কগুলির কাছে স্বাধীনতা মানেই আত্মতৃপ্তি। ভালো বলেছেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
স্বাধীনতা বোধের জন্ম হয় মনে। মন ঠিক করে নেয় কোন সম্পর্ক থেকে সে স্বাধীন হতে চায়, কোনটা থেকে নয়। রক্ত/আত্মার সম্পর্ক থেকে যে স্বাধীন হতে চায়, সে আসলে স্বাধীনতাকে কলংকিত করে। আবার বাইরের অচেনা সম্পর্ককে যে আকড়ে ধরে বাঁচতে চায়, সেখানে অপরের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। প্রকৃত স্বাধীন আসলেই কেউ হতে পারেনা।
অনেক ধন্যবাদ ভাইজান। ভালো ও সুস্থ থাকুন সব সময়। শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
মাসুদ চয়ন
মানব জীবন অগনিত সম্পর্কের সমাহারে পরিচালিত_অধিকাংশ সম্পর্কই ক্ষণস্থায়ী।অল্প কিছু সম্পর্ক টিকে থাকে জীবনের শেষ বেলা অব্ধি।আর সম্পর্কগুলোর আবির্ভাব হয় নানাবিধ প্রয়োজনের তাগিদে,ঠিক একই কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।জীবন ঘনিষ্ট উপলব্ধি আপু।অনেক ভালো লেখা।
সাবিনা ইয়াসমিন
জীবনের প্রয়োজনে সম্পর্ক গড়ে উঠে, গড়তে হয়। সম্পর্ক থেকে আসলে স্বাধীনতা চাইতে হয়না। সম্পর্ক গুলো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। সম্পর্কের বেলায় স্বাধীনতা শব্দটি বেমানান। নিজের দ্বায়িত্ববোধ থেকেই অপরের দ্বায়িত্ব নিতে হয়।
সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ চয়ন। ভালো থাকুন। শুভ কামনা 🌹🌹
ছাইরাছ হেলাল
মেঘের সাথে বৃষ্টির, চাঁদের সাথে জ্যোৎস্নার, নদীর সাথে ঢেউয়ের, সমুদ্দুরের সাথে বালিয়াড়ির!!
স্বাধীনতা/পরাধীনতার সংজ্ঞা এড়িয়েই কিছু একটা থেকেই যায় গোচরের অগোচরে-ও।
ছায়াখোর হয়ে আর কী হবে!! জলজ্যান্ত মানুষখোর হলেই বা কে কাকে আটকায়!!
সাবিনা ইয়াসমিন
মেঘের সাথে বৃষ্টির, চাঁদের সাথে জ্যোৎস্নার, নদীর সাথে ঢেউয়ের, সমুদ্দুরের সাথে বালিয়াড়ির…….
এতো দারুন করে বলা যেহেতু শুরু করেছেন, তাতে মনে হয়না আপনি স্বাধীন। শব্দের সাথে আপনার অথবা আপনার কাছে শব্দের দ্বায়বদ্ধতা আমরা দেখতে পাই/পাচ্ছি প্রতিনিয়ত। এটাও এক সম্পর্ক। এই সম্পর্ক থেকে মুক্তি পাওয়া কখনো সম্ভব নয়। শব্দের বাধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা মন স্বাধীনতার আকাশে উড়াকেই পরাধীন হয়ে যায়।
ছায়াখোর!! ছায়া কেমন করে খাওয়া যায় মহারাজ?
ছাইরাছ হেলাল
এত্ত কঠিন প্রশ্নের উত্তর ক্যাম্নে দেয়!
শিরিন হক
আপনি আমি কিভাবে স্বাধীনতা উপভোগ করবো তা নির্ভর করে সম্পুর্ন নিজের উপর। কেউ ভালোবেসে দাসত্ব মেনে নিয়ে জীবন পার করে কেউ মুক্ত বিহঙ্গে উড়ে বেড়াই আপন ভুবনে।আমারা আমাদের দায়বদ্ধতা কে পরাধীনতার ক্যাটাগরিতে ফেলতে পারিনা। কিছু দাইত্ব,কর্তব্য সামলে এগিয়ে চলাই জীবন।এটাকে পজেটিভ ভাবাটাই শ্রেয়।
সাবিনা ইয়াসমিন
সম্পর্কে দ্বায়-দায়ীত্ব থাকবেই। এটা থেকে স্বাধীন হওয়া যায়না। কেউ হতে চায়না। যে সম্পর্কের আগল ভেঙে স্বাধীনতা খুঁজে তাকে সমাজে স্বার্থপর বলা হয়, স্বাধীন না। স্বার্থপর ব্যাক্তি এক সময় নিজের আত্মগ্লানির কাছেই পরাধীন হয়ে পরে।
মন্তব্যের জন্যে জন্যে ধন্যবাদ। শুভ কামনা 🌹🌹
ইঞ্জা
অসাধারণ বিশ্লেষণ, লেখাটি আমার অনেকদিন মন জুড়ে থাকবে আপু, লেখাটি প্রিয়তে নিলাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
ভাইয়ের কাছে বোনের সব কিছুই মুল্যবান হয়, মনের মতন হয়। এই সম্পর্ক থেকে কোনো বোন কি স্বাধীনতা চাইবে!! একদম না। এভাবেই আমরা একে অপরের পাশে থাকবো সব সময়।
কৃতজ্ঞা ও ভালোবাসা রইলো ইঞ্জা ভাইজান। ভালো থাকুন সব সময়, সারাক্ষন। শুভ কামনা ❤❤
ইঞ্জা
ভালোবাসা অফুরান প্রিয় বোনটি
তৌহিদ
সম্পর্ক আর স্বাধীনতা পাশাপাশি অবস্থান করে সাবিনা আপু। একে অপরের পরিপূরক। সমস্যা তখনি হয় যখন আমরা এ দুটো জিনিসের ভারসাম্য হাড়িয়ে ফেলি যা মোটেও উচিত নয়।
আর হ্যা সত্যি বলছি ভার্চুয়ালি আমি নিজেও অনেককে পেয়েছি যাদের দেখিনি কখনওই কিন্তু মনে হয় একান্ত আপন। আবার ধোঁকা খেতেও দেখেছি অনেককেই।
লেখা ভালো লেগেছে।
সাবিনা ইয়াসমিন
সম্পর্কের ভারসাম্য হারাতে হয়না। সম্পর্করা আমাদের জীবন চলার পথের পাথেয় স্বরুপ। পাথেয় ফুরিয়ে গেলে পথ চলার সমাপ্তি ঘটে। তবে, দূর সম্পর্কে আমাদের না জড়ানোই ভালো। দূর সম্পর্ক গুলো থেকে স্বাধীনতা লাভ করা আবশ্যক। দূর সম্পর্ক, দূর্জনেরা সম্পর্কের দ্বায়বদ্ধতার সুবিধাটুকুই গ্রহন করে। ত্যাগের মূল্যায়ন তারা করতে জানে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভিটি দেখেও নানারুপ সম্পর্কে জড়িয়ে পরে অনেকেই। তবে এখানে সাফল্যের চাইতে ব্যার্থতা বেশি। যার প্রমান আমরা দেখতে পাই, অগুনিত স্ট্যাটাস পড়ে। 😀😀
ভার্চুয়াল লাইনে সম্পর্ক গড়ে তোলা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। এখানে রিয়েলিটি কম। তবে এখানেও সম্পর্ক হয় বৈকি।
অনেক ভালো থাকুন। সুস্থ আর নিরাপদে থাকুন। শুভ কামনা তৌহিদ ভাই। 🌹🌹
রেহানা বীথি
প্রত্যেক সম্পর্কের মর্যাদাটুকু রেখে, নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থেকে ইচ্ছেমতো চলতে পারাটাই বোধকরি স্বাধীনতা। কিছু দায়বদ্ধতা থাকেই। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হতে হয়, কিংবা অনেক সময় আমরা প্রভাবিত হতেই চাই।
খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা
সাবিনা ইয়াসমিন
প্রত্যেক সম্পর্কের মর্যাদাটুকু রেখে, নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থেকে ইচ্ছেমতো চলতে পারাটাই বোধকরি স্বাধীনতা। কিছু দায়বদ্ধতা থাকেই। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হতে হয়, কিংবা অনেক সময় আমরা প্রভাবিত হতেই চাই।……
এরপর কি আর কিছু বলার থাকে! বলা যায়!!
অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য বিথী আপু। ভালো থাকুন, ভালোবাসা অবিরত ❤❤
মনির হোসেন মমি
মনের কথাগুলোই যেন লিখলেন বড় আফায়। সম্পর্কের স্বাধীনতায় বাধা থাকবে তবুও সম্পর্ক হবে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় রক্তের আত্মার কিংবা অন্য উপায়। কখনো কখনো জীবন চলতে মন বিষিয়ে উঠবে সম্পর্কের টানপোড়নৃে ভুল বুঝার নিমিত্তে তবুও জীবন থেমে রবে না জীবন চলবে তার আপণ নিয়মে।তবে জীবন অস্থিরতার ভাবনায় মানে ধৈর্যহীন আর ত্যাগহীন জীবনে বিপর্যয় ঘটে।সব কিছুতে স্বভাবিক ভাবতে হয়।মন থেকে মুছে ফেলতে হয় কিছুক্ষণ কি ঘটেছিল।
চমৎকার লেখা। প্রিয়তে নিলাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
সম্পর্কে স্বাধীনতা আনতে নেই। ইচ্ছে বা অনৈচ্ছিক ভাবে হলেও সম্পর্ক ধরে রাখার মাঝেই জীবনের সার্থকতা। রক্ত/আত্মা বাদে বাকি সম্পর্কের বেলায় নিজের আত্মসম্মান বজায় রেখে অপরের সাথে যথাসম্ভব মানিয়ে চলতে হয়। কার প্রতি কতটুকু দ্বায়বদ্ধ থাকবো, সেটা ভেবে নেবার স্বাধীনতা আমাদের থাকতে হবে। স্বাভাবিকতার যখন বিলুপ্তি ঘটে, তখনই পরাধীনতার আগ্রাসন চলে আসে।
কৃতজ্ঞতা রইলো মমি ভাই। ভালো থাকবেন সব সময়। শুভ কামনা। 🌹🌹
আরজু মুক্তা
স্বাধীনতা মানে নিজেকে অতিক্রম না করা। বেহাল্লাপনা নয়। সুন্দর, সাবলীল সম্পর্ক বজায় রাখা।সেই সাথে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া।
সাবিনা ইয়াসমিন
স্বাধীনতা মানে নিজের প্রতি আস্থা রেখে অন্যের প্রতি দ্বায়-দ্বায়িত্ব পালন করা। উগ্রতা-বেলেল্লাপনা এবং নীতিবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নিজেকে ও নিজের মানুষদের বিরত রাখা। সত্যি বলার সময় সময় সৎ সাহস পরিদর্শন করা। স্বাধীনতার ব্যাখ্যা ব্যাক্তি বিশেষে বিভিন্নরকম হয়। সম্পর্কের বেলায় স্বাধীনতার অর্থ প্রায় সব ক্ষেত্রেই একরকম।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
নাজমুল হুদা
পৌরনীতির ভাষায় বলে – যা ইচ্ছা তা করা স্বাধীনতা না ।স্বাধীনতা মানুষের বিবেকে নিহিত,সেটাই স্বাধীনতা।
সাবিনা ইয়াসমিন
একদম তাই। বিবেক যা করতে অস্বীকৃতি দেয়, তা অতিক্রম করা কখনোই স্বাধীনতা হতে পারেনা। স্বেচ্ছাচারীতা আর স্বাধীনতা এক নয়। সম্পর্ক আমাদের স্বাধীনতা দেয়না। সম্পর্কে স্বাধীনতার ব্যাখ্যা ভিন্নতর।
ধন্যবাদ ও শুভ কামনা 🌹🌹
আসিফ ইকবাল
সম্পর্ক এবং স্বাধীনতা মূলত পরস্পর বিরোধী নয়। যেই সব ক্ষেত্রে এই দুইয়ের মাঝে বিরোধ দেখা যায়, তা হয় অতি মূল্যবান না হয় একেবারেই মূল্যহীন। অতি মূল্যবাদ কোন কিছু ত্যাগ করা সম্ভব নয়, তবে মূল্যহীন জিনিসগুলো ত্যাগ করা যেতেই পারে।
সাবিনা ইয়াসমিন
কিছু সম্পর্ক সাংঘর্ষিক হয়। তখন স্বাধীন হওয়া খুব জরুরী হয়ে পরে। আবার কিছু সম্পর্ক চাইলেও মূল্যহীন করে রাখা যায়না। দ্বায়বদ্ধতা নিয়ে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে হয় আজীবন। আমাদের স্বাধীনতা বোধ মাঝে মাঝে নিজের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পরে। তবুও আমরা স্বাধীন হতে চাই না। সম্পর্ক আর স্বাধীনতার বিশ্লেসন খুঁজতে খুঁজতে জীবন পার হয়ে যায়, কিন্তু প্রকৃত বিশ্লেসন পাওয়া যায়না। একেকবার একেক রকম ব্যাখ্যার জন্ম হয়।
সম্পর্ক আর স্বাধীনতা পরস্পর বিরোধী বলেই মনে হয় আমার কাছে। সম্পর্কে স্বাধীনতার কোনো বালাই নেই। এখানে পরাধীন থাকাতেই যত আনন্দ আর সম্পূর্ণতা। ভালো লাগুক বা না লাগুক কিছু সম্পর্ক থেকে স্বাধীন হওয়া যায় না, হতে নেই। প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে হলে আপন স্বত্বাধিকার ক্ষুন্ন হয়। স্বাধীনতা হীনতাই সম্পর্ক রক্ষার মূলমন্ত্র। সম্পর্কে স্বাধীনতার ইচ্ছা প্রকাশ অনেক ক্ষেত্রে আত্মঘাতী হতে বাধ্য করে।
আপনার মন্তব্যে ভাবনার উপকরণ ছিলো। আরও ভাববো এটা নিয়ে। ভালো থাকবেন আসিফ। শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
আসিফ ইকবাল
তোমাকেও ধন্যবাদ সাবিনা। অনেক সময় নিয়ে ভেবে ভেবে ভাবনাগুলোকে গুচ্ছবদ্ধ করেছ। স্বাধীনতার চেয়ে সম্পর্ককেই অধিক মূল্যবান বলে মনে করি। নিঃসঙ্গ স্বাধীনতা বোঝা বই অন্য কিছু নয়।
তোমার এই লেখাটা কিছু গভীর ভাবনার জন্ম দিয়েছে। ভালো থেকো।
জিসান শা ইকরাম
সম্পর্ক যত গভীর হয়, একে অন্যের প্রতি শিকল এ বেঁধে ফেলা তত শক্ত হয়।
যে সম্পর্কে সম্পুর্ন স্বাধীনতা আছে, সেই সম্পর্ক অত্যন্ত শিথিল এবং তা কোন সম্পর্কই না।
একজন প্রেমিক তার প্রেমিকা বাদেও অনেকের সাথে প্রেম করে বেড়াবে, ডেটিং করবে তার সম্পুর্ন স্বাধীনতার বলে- এটি কোনো প্রেমই না। প্রেমিকের বেলায়ও তাই। সে অনেক প্রেমিকের সাথে প্রেম করবে, ডেট করবে এটা তার আসল প্রেমিক মেনে নেবে না। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা মানেই হচ্ছে প্রেমহীনতা।
মা, বাবা, ভাই, বোন, বন্ধু – প্রত্যেকটি সম্পর্কের বেলায় স্বাধীনতার সীমা আছে। আমি সিগারেট খাই, কিন্তু বাবা মা এর সামনে খাই না। এই যে বাবা মা এর সামনে খাইনা, এটি তো আমার স্বাধীনতার খর্ব। খেতে পারি, কিন্তু খাই না।
ভালো লেখা, এমন লেখা আরো চাই।
ভালো থাকবেন।
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
ইয়ে…. মানে, আমার পুরো লেখাতে কিন্তু এটাই বলেছি। সম্পর্ক স্বাধীনতা বিরোধী। যে যত স্বাধীনতা চাইবে সে মুলত নিজের একাকীত্বের কারাগারে বন্দি হবে। এমন স্বাধীনতা কে চায়!!!! 🙂 🙂