সব কি হারিয়ে যাবে

হালিমা আক্তার ২৪ অক্টোবর ২০২২, সোমবার, ১২:১০:০২পূর্বাহ্ন সমসাময়িক ৮ মন্তব্য

আমি জানিনা আমার এ  লেখা পাঠক কিভাবে নেবে। যেভাবেই গ্রহণ করুন। আমার কাছে মনে হল  এ সম্পর্কে কিছু লেখা দরকার। আমাদের চোখের সামনে অনেক কিছু ঘটে যায়। যা দেখেও আমরা কিছুই করতে পারি না।ধাতব পদার্থে মরিচা ধরে ক্রমাগত পদার্থ ক্ষয় হয়ে যায়। আমাদের সমাজে এমন কিছু অবক্ষয় হচ্ছে ।যা আমাদের সমাজটাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে।

নাগরিক  জীবনের অস্থির চাপে মাঝে মাঝে দম বন্ধ হয়ে আসে। ইচ্ছে করে মুক্ত বাতাসে প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিতে। কয়জন সহকর্মী মিলে কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম। একটু আগে পৌঁছে আমি অপেক্ষা করছিলাম। ছুটির দিন প্রচন্ড ভিড়। অটো রিক্সায় কিশোর কিশোরীর মেলা। যেন প্রত্যেকে এক জোড়া দম্পতি। বয়স তাদের ১২ থেকে ১৫/১৬।

বছর তিনেক আগের কথা। চাকরির সুবাদে তখন চট্টগ্রাম ছিলাম। ছুটির একদিনে আমি আর আমার এক কলিগ ফয়েজ লেকে ঘুরতে গেলাম। জোড়ায় জোড়ায় বসা। অনেকেই স্কুল/কলেজ ড্রেস পড়া। ওদের বেসামাল অবস্থা দেখে নিজেরা লজ্জা পেয়ে সরে আসলাম। বুঝলাম ওরা ভালবাসার অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে।

ধানমন্ডি থেকে মতিঝিল বাসে আসছিলাম। ১৪/১৫ বছরের মেয়েটি মহিলা আসনে বসা ছিল। কিছুক্ষণ পর সীট খালি হলে সে একটি ছেলের গিয়ে পাশে বসে। সীট  না পাওয়ায় তারা এতক্ষন বিচ্ছিন্ন ছিল। এরপরে দৃশ্য বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বাস চালকের উক্তিটি যথেষ্ট। যাত্রী ওঠার সময় বাস চালক বললেন- আসেন আসেন বিনা টিকেটে সিনেমা দেখে যান।

সাধারণ পার্ক গুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। এক সময় এ ধরনের অবাধ মেলামেশা গুলো ছিল  আড়ালে আবডালে। এখন তারা প্রকাশ্যে বিনোদন দিয়ে যাচ্ছে। এসকল ছেলেমেয়েরা আমাদেরই মতো কোনো না কোনো বাবা-মার সন্তান। যারা বাবা মার চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্বিচারে অপকর্ম করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ভয় হয় আমার বা আমাদের সন্তান ওপথে যাবে না তো।

হয়তো অনেকেই বলবেন। স্বাধীনভাবে নিজ নিজ মতো করে চলার অধিকার সবারই আছে। এই ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের অবাধ মেলামেশা আসলে কি মেনে নেয়া যায়। সমাজের কোন পথে এগোচ্ছি আমরা। এ ব্যাপারে কি প্রশাসনের কোন কিছুই করনীয় নেই। এর থেকে উত্তরণের পথ কি। নাকি এভাবে হারিয়ে যাবে আমাদের কৃষ্টি, মূল্যবোধ, নৈতিকতা।

 

0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ