*সন্তান ও জীবন এবং বার্ধক্য *
আমরা মা বাবা এক সময় সন্তানকে অন্যান্য সকল সন্তানদেন চেয়ে শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য একটা রেসএ ছেড়ে দেই। সন্তান দৌড়ায়ও প্রাণপন। কোনো কারনে দুই একজন বাদে প্রত্যোকেই গন্তব্যে পৌছায় একটু আগে বা পরে।
এই আমি স্বপ্ন দেখি সন্তান আমার একজন সায়েন্টিস্ট হবে। আকাশ মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করবে। নাসায় যাবে। দশটা মানুষ তাকে চিনবে তার আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে। বিশ্ব চিনবে তাকে সেও চিনবে বিশ্বকে। ছোটোবেলা থেকে তার সাথে গল্প করে করে তার চিন্তা চেতনাকে সে পর্যায়ে পৌছে নিয়ে যাই আমার মতো অনেক মা। যার যার আলাদা স্বপ্ন ও আশা নিয়ে।
সন্তান দৌড়ায় সে স্বপ্নের গন্তব্য পর্যন্ত।
অধিকাংশ সন্তানই কিন্তু পৌছে যায় সে গন্তব্য পর্যন্ত।
সেদিন আমরা মা ছেলে হসপিটালে বসে গল্প করছিলাম। সে আমাকে নেট ঘেটে অদ্ভুত সব জিনিস দেখাচ্ছিলো মহাকাশ নিয়ে বিভিন্ন গ্রহ নিয়ে। তার ডায়রির পাতায় লেখা মৌমাছির জীবন বৈশিষ্ট্য নিয়ে। যেটা সে নিজে লিখেছে।
কথার এক ফাঁকে আমি বললাম,’ তুই চাঁদে বা মঙ্গলে গেলে আমি কি করে থাকব! নাসায় গেলে তো তুই আমাকে ফোনও করতে পারবি না।’
সে অবাক হয়ে আমাকে বলল,’তুমি তোমার কথা থেকে সরে আসতেছো আম্মু।’
আমি বললাম,’কেমন!’
সে আমাকে বলতেছে, ‘তুমিই না সেদিন আমাকে বললা একটা রিপোর্ট এসছে সিনিয়র সিটিজেনদের নিয়ে যে, অমানুষদের তালিকায় উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই বেশি। এক কথায় উচ্চ শিক্ষিতরাই বেশি। বিশেষ করে যারা বিদেশে এরকম স্বপ্ন নিয়ে তাদের সন্তানদের পড়তে পাঠায়। আর এটা পড়ে তুমি সে সব মা বাবা ও যে রিপোর্ট করেছে আর যারা নেগেটিভ মন্তব্য করেছে তাদের বকা দিলা।’
আমার সন্তানের সামনে আমিই আমার কথার ও ভাবনার জালে আটকে গেলাম। তাই তো!!
বাবা মা স্বপ্ন দেখে উচ্চ আকাঙ্ক্ষায় তাদের সন্তানদের বিদেশে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে পড়তে পাঠিয়ে দেয়। তারা পড়াশুনা শেষ করে সেখানে তাদের মতো একটা জীবন গড়ে নেয়। গড়ে নেয় বলতে, হয়ে যায়।
পড়াশোনা করতে গিয়ে একটা দীর্ঘ সময় সেখানে তাদের থাকতে হয়। সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি আবহাওয়া বন্ধু বান্ধব সব মিলায়ে তাদের একটা জীবন। একটা কথাই আছে ছাত্র বয়সের যে সময়টা তা জীবনের অন্যতম সময়। এ সময়টাও কিন্তু দীর্ঘ একটা সময়। আর এ সময়টাতে তাকে ঘিরে থাকা পরিবেশটাকেই তারা বড় আপন করে নেয়।
বিদেশে দৈনন্দিন জীবন চলায় প্রতিটা জিনিস একটা সিস্টেমে চলে। পথে ঘাটে চলতে তাদের তেমন কোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। হাঁটতে চলতে তাদের দেখতে হয় না কোনো সাধারণ মানুষ লুঙ্গি তুলে পস্রাব করতে বসেছে পথে ঘাটে যেখানে সেখানে। বা কোনো লোক লুঙ্গির মধ্যে হাত দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এস্তেঞ্জা করছে, কেউ দেদারসে বিড়ি টানছে। ধোয়া ছাড়ছে মুখের উপরে। একটা পাবলিক বাসের কোনো নির্দিষ্ট বাস স্টপ নেই। যার যখন যেখানে ইচ্ছা বাস থামিয়ে নেমে পড়ছে।
বিশেষ করে এই যাতায়াত ব্যাবস্থাই প্রধান আমি বলব। বিদেশ কোনো সামাজিক বৈষম্য। সব থেকে বড় কথা অসুস্থ প্রতিযোগিতা নেই। নিত্য পারিবারিক কলহ নেই।
আর যে সন্তান এ দেশে থেকে শৈশব কৈশোরে বাবা মা, পরিবার ও সমাজে অস্বাভাবিক অস্বস্তিকর এক কলহ দেখে বড় হয়ে যখন বিদেশে পড়তে গিয়ে ও দেশে সেটেল হয়, তখন সে মানুষটি আসলে আর চায় না তার সন্তানও অন্ততপক্ষে তার মতো একটা শৈশব ও কৈশোর পাক।
আরো একটা ব্যাপার যেখানে স্কুল ভর্তি যুদ্ধ। এবং একটা সময় এসে যেখানে একটা বাচ্চা নিজে থেকে ঠিক করতে পারে না যে সে কোন সাবজেক্ট পড়তে চায়।
পাঠ্য বইগুলোতে এমন সব বিষয় উপস্থাপন যেটা পড়ে একটা বাচ্চার কোনো কাজেই আসে না। যে দেশে কিছু গোষ্ঠী ঠিক করে দেয়, পাঠ্য বইএ গোড়া ধর্মীয় কিছু বিষয়বস্তু উল্লেখ থাকতে হবে।
যে দেশে ক্লাসরুমে একটা বৈষম্য তৈরি হয় সে অমুকের বাচ্চা, ও অমুকের বাচ্চা।
তখন একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কখনোই পড়াশুনা শেষ করে এ দেশে এসে মায়ের পছন্দ করা একেবারে বাঙলা ঘরনার কোনো মেয়েকে বিয়ে করে নিত্য সংসারে পেন্সিল দিয়ে লেখা অমলিন খসড়া খাতা রাবার দিয়ে বার বার সে মুছে ঠিক করবে।
বা সে তার সন্তানকে এ দেশে অসুস্থ সামাজিক পরিবেশে বেড়ে উঠতে দিবে।
এমন একটা স্কুলে কি ভর্তি করাবে যে স্কুলে প্রতিনিয়ত অসুস্থ প্রতিযোগিতা হয়?
বা স্কুলে যেতে আসতে তাকে যে প্রতিনিয়ত মৃত্যুপুরি দিয়ে যেতে হবে সে পরিবেশ দিতে?
এমন কোনো দিন নেই যেখানে আমরা একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু দেখি না। বাসের চাপায় পিষ্ট হতে দেখি না।
সেদিন উলিপুরে একটা ছোট্ট ফুটফুটে মেয়েকে মরে যেতে দেখলাম অটো রিক্সার চাপায় পিষ্ট হয়ে।
আমি কিন্তু নির্দিষ্ট করে আমার দেশের দোষ দিচ্ছি না। বা স্কুলেরই দোষ দিচ্ছি না।
আমি দোষ দিচ্ছি আমাকেই। পুরো সিস্টেমকে। এবং আমরা যারা সাধারণ, যাদের মানসিকতা এখনো সে রকম তৈরি হয়নি যেখানে আমরা আমাদের সন্তানদের উন্মুক্ত একটা সু শৃঙ্খল পরিবেশ দিতে পারছি না তাদের। আমরা চাচ্ছি আমাদের পরিবর্তন হোক কিন্তু আমরা সে পরিবর্তন নিজেরাই করছি না।
বা রাস্ট্র কি মূল্যায়ন করছে একটা মেধার?
প্রতিদিন আমার দেশের মেধা বিক্রি হচ্ছে সামান্য কিছু অর্থে।
আবার অনেকে এমনও আছে কিছু মায়েরা তাদের সন্তানকে পড়াশুনা করা এবং কোনো কাজ করা থেকে বিরত রাখে। এটা আমার চোখে দেখা বাস্তব উপলব্ধি। সে সব নিন্ম মধ্যবিত্তের সংসারে একজন যদি কোনো রকম একটা অবস্থানে যায় তখন সে বাবা মা তার অন্যান্য সন্তানদের কোনোরকম প্রতিষ্ঠিত সন্তানের ঘাড়ে উঠায়ে দেয়। কলুর বলদের মতো সে সন্তান সবাইকে টানতে টানতে একসময় হাঁপিয়ে ওঠে। তখনও বাবা মায়ের উল্টা সুর শুরু হয়। তখন তাদের ভাষ্য হয় এরকম যে, বাবা মা সব সন্তানকেই সমান ভালবাসে শুধু দুর্বল যে তার প্রতি একটু সদয় হয়!
এতে করে আসলে বাবা মা সে সন্তানের কাছেই অশ্রদ্ধায় পরিণত হয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটা বিরক্ত চলে আসে বাবা মায়ের উপর। একসময় পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটা চলমান সত্য এ দেশের নিন্মবিত্তের পারিবারিক প্রেক্ষাপট।
হ্যাঁ, আমরা আবেগ প্রবণ। অনেকেই বলেন আমাদের আবেগ অত্যন্ত বেশি অন্য দেশের তুলনায়। সেদিন একটা মন্তব্যে মেহেদি ভাাই এর কথাতেই মাথায় আসলো।
কথাটা আসলে ঠিক না। বিদেশিদেরও আবেগ আছে। তারাও বাবা মা। কিন্তু তাদের আবেগটা অবাস্তব নয়। যখন আপনার আবেগের সাথে বাস্তব একেবারে থাকবে না তখন আপনি আর প্রকৃত মানুষ থাকবেন কি?
এই যে, পরকিয়া নামক শব্দের কারনে হোক আর মেয়ে সন্তান হবার কারনে হোক বা পারিবারিক অন্যান্য কলহের কারণে হোক এ অতি আবেগপূর্ণ দেশের মানুষই তার কোলের সন্তানকে বেশী হত্যা করে। এ দেশের বেশির ভাগ বাবা মা তার সন্তানকে বড় করে একটা পারিবারিক কলহের মধ্যে। সন্তানের সামনে প্রতিনিয়ত মার খায় মা, গালি শোনে মা, আবার অনেক ক্ষেত্রে মাও চিৎকার করে সংসারে। এসব দেখে দেখে শিশু বড় হয় একটা অসুস্থ মানসিকতা নিয়ে।
বিদেশে হলে কি হতো? সেখানে তথাকথিত সামাজিক বেড়াজাল না থাকার কারণে, সে মা সন্তানের সামনে নিজের ও সন্তানের অস্তিত্ব টিকাতে সাইকো সে স্বামীকে লাত্থি মেরে বের হয়ে আসতো।
আর আমার সমাজে হলে আমিই বলতাম, এই সন্তানের জন্যই আর একটু ধৈর্য্য ধরতে আর একটু মাইর খেতে। সন্তানের সাহস নামক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে। সন্তানও যদি ছেলে হয় তখন সেও শিখে নিতো বউ কিভাবে পিটাতে হয়। আর মেয়ে হলে সে শিখে নিতো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে এমন দৈব বাণীতে কি করে মাইর হজম করতে হয়।
মধ্যবিত্ত দেশ, মধ্যবিত্ত পরিবার তাই মধ্যবিত্ত মানসিকতা। এখান থেকে বের হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়।
বিদেশে যারা পড়তে গিয়ে আর এ দেশে ফিরে আসেনি তাদের আমি কখনোই কোনোমতেই দোষ দেই না।
কারণ, তারা বেশিরভাগই তাদের বাবা মাকে তাদের কাছে নিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু তাদের বাবা মায়েরা যেতে চায় না এ দেশ ছেড়ে। আর যারা যেতে চান না তারা অযথা সন্তানের দিকে আঙ্গুল তুলে সন্তানকে কলুষিত করারই বা কি দরকার?
যদি তারা না যেতে চায় সে ক্ষেত্রে করণীয় কি, তা ভাবতে হবে। এমনও আছে তারা প্রচন্ড অভিমানে সন্তানের কাছ থেকে তখন টাকা পয়সাও নিতে চায় না।
যদি বাবা মায়ের আচরণ ও অভিযোগটা এমন হয় যে সন্তান আর দেশে আসে না বা এসে আর তাদের কাছে থাকে না তবে কেনো রেসএ উঠায়ে দেয়া? সন্তানের মধ্যে বড় বড় স্বপ্নের বীজ বোনা?
,,,রিতু,, কুড়িগ্রাম
১০.০৩.১৯.
২২টি মন্তব্য
মাহমুদ আল মেহেদী
আমরা চাচ্ছি আমাদের পরিবর্তন হোক কিন্তু আমরা সে পরিবর্তন নিজেরাই করছি না।কেন করছি না আপু জানতে ইচ্ছে করে।
আপু আবেগ নিয়ে প্রশ্নটা আমি করেছিলাম মনে হয়।আমি এখনও আরো অনেক জানতে চাই আবেগ নিয়ে । এই প্রশ্নটা আয়নার জন্য সবার কাছে করব এই প্রশ্ন।
রিতু জাহান
স্যরি ভাই, মনে ছিলো না। নামটা ঠিক করে দিছি।
এ বিষয়টা নিয়ে আরো লিখব ভেবেছি। ভালো থাকুন ভাই।
মাহমুদ আল মেহেদী
অবশ্য আপু এই বিষয়টা অনেক জানার ইচ্ছা। আমার নিজের ভাবনার সাথে মেলাতে চাই। অনেক খুশি হব বিস্তারিত যদি লিখেন। লেখাটা প্রিয়তে রাখলাম বার বার পড়বার জন্য।
রিতু জাহান
বিস্তারিত লিখব। কিছু কিছু ঘটনা পাবেন আপনি নেটে ওদের মানবিক গুনাবলির। যেমনঃ ছোটো ভাই তার বোন বা ভাইকে বাঁচানোর জন্য ইউটিউবে খুব আবেগপূর্ণ ভিডিও শেয়ার করছে, কোনো কিশোরি বা শিশু সংসারের খরচের জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পানি বা কাগজ বিক্রি করছে। এরকম অনেক অনেক ঘটনা আমরা দেখতে পাই।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের দেশের প্রচলিত সিস্টেমই শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটু অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এ থেকে শিঘ্র আমাদের মুক্তি নেই। প্রকৃত শিক্ষার পরিবর্তে গ্রেড গুরুত্ব পাচ্ছে।
যুগ যুগ ধরে পারিবারিক, সামাজিক অস্থিরতা সন্তানকে ক্ষুদ্র চিন্তায় আচ্ছন্ন করে ফেলছে। বড় হয়ে সে একজন পুর্বতন মানুষের মতই হয়ে যাচ্ছে।
বিদেশে সামাজিক অস্থিরতা নেই, শিক্ষা ব্যাবস্থা শিশুদের উপযোগী, চাপ মুক্ত পরিবেশেই শিশুরা পড়াশুনা করছে, মানুষ হচ্ছে।
একজন সন্তান যখন বিদেশে যায়, সে দেশ এবং বিদেশের সামাজিক পার্থক্যগুলো বুঝতে পারছে। যে কারনে উন্নত এবং ভালো সমাজে স্থায়ী হবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
অত্যন্ত কস্টের হলেও মাতা পিতার এটি মেনে নিতে হচ্ছে, হবেও।
সামাজিক সমস্যা নিয়ে অনেক ভালো একটি লেখা লিখলে।
শুভ কামনা।
রিতু জাহান
ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাবা মায়েরও উচিৎ নিজের মনকে মানিয়ে নেয়া। দেখেন না, আইয়ুব বাচ্চু যে মারা গেলো তার সন্তান ও স্ত্রীর কতো কথা শুনতে হলো!! অথচ তিনি তো নিজেই চেয়েছিলেন তার সন্তান বিদেশে পড়ুক।
এরকম কিছু ঘটনাই আমি আসলে বুঝাতে চেয়েছি।
মেমন রিয়ান যদি কখনো ওরকম কোনো পরিবেশে থাকতে চায় আমি বিন্দুমাত্র বাধা দিব না।
জিসান শা ইকরাম
বুঝেছি।
তবে সন্তানরা আমাদের দেশের পারিবারিক বন্ধন সুম্পর্কে সঠিক ভাবে জানলে, তারা বাবা মাকে উপেক্ষা করতে পারেনা কখনো।
মনির হোসেন মমি
আপনার কথাটাও ফেলনার নয় উচ্চবিত্ত যাদের সন্তানেরা বিদেশে যায় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে তারা আবার মা বাবাকে তোয়াক্কা করে না।এর কারনতো অবশ্যই আছে…এর মুলে হল পারিবারিক কলহ যা থেকে সন্তানের মনে ছোট বেলাই একটা ঘৃণা সৃষ্টি হয়।লেখাটা চমৎকার হইছে।
রিতু জাহান
ধন্যবাদ মনির ভাই।
ভালো থাকবেন ভাই।
তৌহিদ
আমিও জিসান ভাইয়ের সাথে একমত। প্রচলিত সিস্টেমটা বদলানো দরকার। বিদেশতো আছেই, আমি দেখিছি পড়াশুনা করে ঢাকাতেই চাকুরী নিয়ে সেটেল হয়েছে অথচ গ্রামে মা বা ছেলের পথ চেয়ে বসে আছে। মানুষ আসলে উন্নত জীবন চাইতে গিয়ে তার বেসিক জিনিসটাকেই ভুলে বসে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে।
আমার বাবা মারা যাবার পর আমি আর রংপুরের বাইরে যেতে পারিনি। মা একা থাকবেন তাই। তাদের মনে কষ্ট দিয়ে কি সুখে থাকা যায়?
সুন্দর একটি লেখা আপু। সকলের বিবেক জাগ্রত হোক।
রিতু জাহান
ভালো থাকবেন ভাই।
সকলেই ভালো থাকুক এই কামনা।
তৌহিদ
আপনিও ভালো থাকবেন আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
আবেগ প্রবনতা মানুষকে মনুষ্যত্ব প্রকাশ করার সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে অতি আবেগ ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। মা-বাবা বা অবিভাবকরা সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে যতটা আবেগ প্রবনতা দেখায় তার অর্ধেকও যদি নিয়মানুযায়ী পন্থায় চেষ্টা করে যেত তাহলে বেশিরভাগ সন্তানের জন্যেই তাদের পিতা-মাতারা গর্বিত হতে পারতো। তারা সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে নিজেদের অজান্তেই সন্তানকে পাঠিয়ে দেয় কঠিন প্রতিযোগিতার পেছনে। কেউ হয়তো জয়ী হয়, কেউ রোবট হয়ে যায়, আর বাকিগুলো সব হারিয়ে পরাজিত মানুষের মত বেচে থাকে কেবল মানুষ নামে।
দাম্পত্যকলহ একটি শিশুর দেখা সব চেয়ে নোংরা দৃশ্য। অনেক শিশুই এসব দেখে বড় হয়, তার মাঝে পারিবারিক বন্ধনের চেয়ে হিংস্রতাটাই বেশি উপলব্ধিত হয়। ক্রমে সে হয়ে উঠে অবসাদগ্রস্ত / নেশাগ্রস্ত বা আরেক হিংস্র মানুষে। উচ্চ বিত্ত ও মধ্যবিত্ত দের মাঝে এর প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়।
অপ্রাসঙ্গিক ভাবে আরেকটি কথা বলতে চাই, যা ধুমপান নিয়ে। কে কি পান করবে এটা যারযার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে প্রকাশ্য ধুমপান প্রত্যেকেরই বর্জন করা উচিত। ইদানীং পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও প্রকাশ্যে রাস্তা ঘাটে এসব করছে। হয়তো তারা ভাবে এতে তাদের স্মার্টনেস বৃদ্ধি পায়, কিন্তু আমার কাছে এটা কোনোই স্মার্টনেসের পর্যায়ে পরে না। যারা মুখটাকে চুলা বানিয়ে অনর্গল ধোঁয়া নির্গত করেন তারা যদি তখন আয়নায় নিজেকে দেখতো তাহলেই বুঝতো স্মার্টনেসের কি দশা হয়েছে 😂
তোমার লেখায় সব সময়েই অগ্নি ঝরে, আর সেই অগ্নিতে কল্যানের দেখা পাই। খুব ভালো থেকো, লেখক মেমনকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক ভালোবাসা আর আদর দিও। ❤❤
রিতু জাহান
তোমার আদর পৌছে দিব। ও ২২ তারিখ আসবে।
ওর লেখাও কিছু কিছু ব্লগে দিব ভেবেছি। আসুক। ওর অনুমতি নিয়ে দিব। জানি না করবে না।
শুন্য শুন্যালয়
বিদেশীদের আবেগ কম আমার কাছে কখনোই মনে হয়নি বরং একটা সময় দূরে চলে যায় বলে এদের মধ্যে বাবা-মা র জন্য একটা আলাদা রেসপেক্ট কাজ করতে দেখেছি। যা আমাদের দেশে অনেক সময়েই বিয়ের পর দুই কূল রক্ষা করতে গিয়ে নষ্ট হয়।
পরিবর্তন না হবার পেছনের আমাদেরই দোষ বেশি। বাবা-মা হবার পর আমরা আমাদের শৈশবকাল ভুলে গিয়ে বাচ্চার মন দেখতে পাইনা আর।
হু বাবা-মা একটু স্বার্থপরই হয়। লেখাটা খুব ভালো হয়েছে তোমার।
রিতু জাহান
ঠিকই বলেছো। তবে আদৌ পরিবর্তন হবে কিনা জানি না।
প্রথম পোটলার জন্য আদর আদর।
ভালো থাকুক আমাদের বাচ্চাগুলো। সকল বাচ্চাগুলো।
ইঞ্জা
আপু, বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে, যুগ বদলেছে, জীবনধারার বদল এসেছে, তাহলে কেন আমরা সেকেলে মনোভাব নিয়ে থাকবো, আমাদের সবাইকে সামনে এগুতে হবে, সন্তানদের এগুতে দিতে হবে।
আমি বলবো সবাই আপনাদের মন মানষিকতা চেইঞ্জ করুন, সামনের প্রজন্ম আগে বাড়ু।
রিতু জাহান
চিন্তা করার সময় এসেছে। আমাদের সামাজিক পরিবর্তনটা প্রয়োজন আসলে।
ভালো থাকুন ভাইজু।
ছাইরাছ হেলাল
মাকে বলা হয় সন্তান বানানোর কারিগর, সেই মাকে হতে হবে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত,
সে শিক্ষা সে কোথায় পাবে বা আদৌ পাবে কীনা তা কিন্তু অজ্ঞাত থেকেই যাচ্ছে।
তা ছাড়া কিছু অব্যবস্থা আমাদের সমাজে বিদ্যমান, তার প্রভাব আমাদের সন্তান এড়িয়ে যাবে তা ভাবতে পারি না।
অতএব জল তরল না, এটি মেনে নিচ্ছি।
লেখায় ফিরছেন দেখে আনন্দিত।
রিতু জাহান
খুব ভালোমতো আর পারছি কই!! একটানা একদিন আলোর সামনে থাকলে আর চোখ ও মাথা সায় দেয় না।
মা খুব কঠিন একটা সম্পর্কের নাম। কতো বড় বড় পাথর যে বুকে বেঁধে রাখতে হয়!!
মারা গেলে যদি আল্লাহ্ কিছু জিজ্ঞেস করার অনুমতি দেয় তবে এ কথাটা জিজ্ঞেস করব ভেবেছি যে কেনো, জীবন চাকার তলে মা নামক মনে এতো ভালবাসা দিয়ে রেখেছে।
ভালো থাকবেন গুরুজি।
বন্যা লিপি
সময়োপযোগী লেখা। অনেক ভালো লাগলো। আবেগের বেড়াজাল না থাকলে নাকি সন্তান ভুলে যাবে মা বাবার টান, দরদ, মায়া,মমতা। আজো আশে পাশে নিজের ঘরে আবেগের ব্যাপ্তি প্রকট। সামাজিক প্রেক্ষাপট। এক এক স্তরে এক এক রকম। সর্বোত ভাবে সফলতা আদৌ কখনো আসবে কি? শিক্ষা ব্যবস্থা আর পারিবারিক দৈন্যতা বৈষম্যতা ঘুচতে পাড়ি দিতে হবে আর কত যুগান্তর?
মেমনের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা ❤❤❤
রিতু জাহান
অতি আবেগ মানুষকে আসলে আর মানুষ রাখে না।
আবেগেরও লিমিট থাকা উচিৎ।
বাবা মাকেও সন্তানকে বুঝতে হবে।
তবে যারা কাছে থেকে মানে দেশে থেকে বাবা মায়ের ভরণপোষণ ও খোঁজখবর রাখে না, এ পোষ্ট মূলত তাদের নিয়ে না।
তারা কখনোই আসলে মানুষ না।