
চলুন কিছু উপহাসমূলক কথা শুনে আসি-
# বিজিএমিএ –
সরকার লকডাউন করলো তাহলে শ্রমিকরা রাস্তায় দিয়ে এলো কিভাবে? আমরা কি শ্রমিকদের চলে যেতে বলেছিলাম? সরকার ছুটির পরে আবার কারখানা খোলার ঘোষণা দিয়েছে সেটাই আমরা শ্রমিকদের বলেছি। আমরা বেতনভাতা দিতেই তাদের ডেকেছি। এসব ভোগান্তির দায় আমাদের নয়, প্রশাসনের!! তারা মানুষকে আসতে দিলো কেন?
# সরকার –
শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে কারখানা খোলা রাখা যাবে অর্থাৎ সবাই নয় যারা শুধুমাত্র পিপিই, মাস্ক এসব তৈরী করবেন তারা খোলা রাখতে পারবেন।
# শ্রমিক –
মালিকরা আমাদের না ডাকলেতো আমরা আসতাম না। এখন সারাদেশ লকডাউন অথচ মালিকরা তাদের স্বার্থের জন্যই এত লোককে বিপদে ফেললো। কারখানা বন্ধের ঘোষণায় আমরা বেতনও পাইনি। আমার ঢাকা থেকে যেতেও পারছিনা কারন ঢাকায় ঢোকা এবং বের হবার সব রাস্তা আজই বন্ধ করেছে সরকার। বাসাভাড়া বাকী তাই ঘরমালিকরা ঘরেও ঢুকতে দিচ্ছেনা। আমরা কোথায় যাব!
# অর্থনীতিবিদ –
এ বছরে বিজিএমইএ’র পোষাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৯ বিলিয়ন ডলার যার মধ্য ২২ মিলিয়ন ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে। মাত্র ৩ মিলিয়নের অর্ডার বাতিল হয়েছে যা পুরো লক্ষ্যমাত্রার ১০ ভাগ। কারখানা বন্ধ রেখে শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্যই সরকার প্রণোদনা দিল তারপরেও কারখানা বন্ধ হলোনা কেন?
করোনার সংকটে মালিকরা মাত্র ১০% লস মেনে নিতে নিতে পারলেননা! তারা কি আসলেই লসে আছে! এটি অবিশ্বাস্য! মালিকরা এই দুর্যোগে নিজেদের একাউন্ট থেকে শ্রমিকদের বেতন দিতে অপারগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বলাতেই তিনি প্রণোদনা দিয়েছেন তাহলে মালিকদের শ্রমিকদের প্রতি এত উদাসীনতা কেন? এর পেছনে আসলে কারা? এই স্বাস্থ্যঝুঁকির দায় বিজিএমই এর উপরেও বর্তায় বৈকি!
# আমি-
সময় টিভির টকশোতে এসব দেখলাম আর রাতের খাবার খেলাম। এসব তথ্য সেখান থেকেই আজ শুনলাম আমি। তাহলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর বিজিএমিএ এ দুটোর মাঝে কলকাঠি নাড়ছেন কারা সেটাই প্রশ্ন! দেশের শ্রমজীবী মানুষকে করোনাঝুঁকিতে নিয়ে আসার অন্যতম কালপ্রিট কিন্তু তারাও। করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উপহাসের পাত্র বানিয়ে ছাড়ছে দেশকে, দেশের মানুষকে।
একজন প্রধানমন্ত্রী কত দিকে দেখবেন? দায়িত্বশীলদের কি হোম কোয়ারিন্টাইনে থেকে নিজেদের মাথা কাজ করছেনা? আপনারা পাঠকরা ছাড়া আমার মত সামান্য একজন মানুষের এসব কথাবার্তা শোনার সময় দায়িত্বশীলদের নাই। তারা নিজেদের সার্কাস দেখাতেই ব্যস্ত।
সত্যিই সেলুকাস!
২৭টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
অসাধারণ লেখা।
তৌহিদ
ধন্যবাদ মহী ভাই।
সুপায়ন বড়ুয়া
মনে হচ্ছে কেউ দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না।
সবাই যার যার অবস্থান থেকে ব্যাখ্যা দিচ্ছে।
কোন না কোন এক পক্ষ সুযোগ নিচ্ছে। কারন মানুষ পড়েছে বিপদে।
আজমত গ্রুপের ৫০০ শ্রমিক বিনা বেতনে ১ লাখ ppe বানাচ্ছে ডাক্তার দের জন্য এই ছুটির দিনে। ৪০০০ জন ছুটিতে।
অবশ্যই স্বাস্থ্য বিধি মেনে।
আল্লাহ তাদের রক্ষা করুক ও সবার সুমতি দান করুক।
তৌহিদ
একে অপরের উপর দোষ চাপানো আমাদের পুরোনো অভ্যেস ভাই। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের কথা ভেবে চিন্তিত হচ্ছি সেইসাথে শংকাও বাড়ছে।
এই দূর্যোগে যারা মেডিকেল সেফটি কীট বানানোর সাথে জড়িত তাদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রইলো। তথ্যটি জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
সুরাইয়া পারভীন
কী যে হচ্ছে/হবে দেশে
এ দেয় ওর দোষ
ও দেয় তার দোষ
আর সব দোষ গিয়ে পড়ে সরকারের উপর
আজব/অদ্ভুত বটে
তৌহিদ
একা সরকার কি করবে বলুন?
একে অপরের উপর দোষ চাপানো আমাদের পুরোনো অভ্যেস ভাই। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের কথা ভেবে চিন্তিত হচ্ছি সেইসাথে শংকাও বাড়ছে।
ভালো থাকবেন আপু।
ইঞ্জা
আমার কেন যেন মনে হচ্ছে বিজিএমইএ একটা গেইম খেললো সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য।
বাকিটা সরকার দেখুক।
ধন্যবাদ ভাই, বেশ ভালো পোস্ট দিলেন।
তৌহিদ
শুধুমাত্র প্রণোদনা নেবার জন্যই এত কাহিন।এর পেছনে অনেক রাঘববোয়াল জড়িত ভাই। কথা হচ্ছে সব শেষে হিসেব নিকেশ করে তারপর লসের টাকা তারা সরকারের কাছে চাইতে পারতো, তা না করে আগেই টাকা নিয়ে বসে আছে।
এ কেমন বাটপারি?
ভালো থাকবেন ভাই।
ইঞ্জা
শুধু বাটপারি বললে কম হবে ভাই, এ এক বিশাল চক্রান্ত মনে হচ্ছে আমার।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আবার ও একদম তরতাজা ইস্যু নিয়ে লিখলেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। এর ভিতরে অনেক প্যাঁচ খেলা হয়েছে ।
তৌহিদ
কি করবো বলুন? এসব দেখলে মনের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য হাত নিশপিশ করে। এসব প্যাঁচ কষারাই আসল কালপ্রিট।
ভালো থাকবেন আপু।
হালিম নজরুল
এ দেশ কেউ চালায় না, এমনিতেই চলে। মাঝখান থেকে কিছু সুবিধাভোগী সুবিধা ভোগ করে।
তৌহিদ
ভাই সমস্যা হচ্ছে আমরা সুদূর প্রসারিত চিন্তা করিনা। ফলাফল হলো সাধারণ জনগন হয় বলির পাঠা।
ভালো থাকবেন ভাই।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার লেখা ভাইয়া।
শুভ কামনা রইল।
তৌহিদ
ধন্যবাদ আপু
নীরা সাদীয়া
এরকম অবস্থা চলতে থাকলে কী যে দূর্দশা হবে তা ভেবে কূল পাচ্ছি না।
তৌহিদ
আল্লাহ রহমত করুন। তবে নীতিনির্ধারকদের এমন কাজকর্মে আল্লাহ কতটুকু রহমত করবেন সেটা ভেবে কূল পাচ্ছিনা।
ভালো থাকবেন আপু।
জিসান শা ইকরাম
দেশ চলছে একটা হযবরল অবস্থার মধ্যে,
আর এই সুযোগে দেশের ১৫ টি জেলায় করোনা বিস্তার লাভ করেছে।
ভালো লিখেছেন ভাই,
শুভ কামনা।
তৌহিদ
খুব শঙ্কায় আছি ভাই। হুট হাট এক একটি সিদ্ধান্ত মানুষের জীবনকে হুমকীর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ভালো থাকবেন ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
শ শ কিলমিটার হেঁটে কেন আসলো মানুষ, এখন আবার হেঁটেই ফিরে যেতে হয়েছে।
এ নাটকের নাট্যকার কারা কে জানে। এই অভুক্ত মানুষদের অভিশাপ কে পাবে কে জানে!!
তৌহিদ
এই নাটকের পিছনে তারাই যারা শতকোটি টাকার অবৈধ মুনাফা খাচ্ছে। কারখানা বন্ধ না হলে শ্রমিকরা আক্রান্ত হলেও যাদের কিচ্ছু যায় আসেনা।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার লেখা ভাইয়া।
শুভ কামনা রইল।
তৌহিদ
ধন্যবাদ আপু।
এস.জেড বাবু
সমন্বয়
যা কোন কালেও এ দেশে ছিলো না
এই কঠিন সময়ে ও সে জ্ঞান কর্তাব্যাক্তি পর্যায়ে আসেনি-
কবে হুস ফিরবে – দেখার /ভাববার বিষয়।
তৌহিদ
তাদের হুঁশ কোনদিনও ফিরবে না। শুধুমাত্র তাদের স্বার্থের বলি হলো সাধারণ মানুষ।
ভালো থাকবেন ভাই।
কামাল উদ্দিন
এতোসব কান্ডকারখানার ভীরে আমিও সেলুকাসকেই খুঁজছিলাম, জানিনা সামনের দিন গুলোতে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
তৌহিদ
ভয়াবহ বিপদ ছাড়া আর কিছুই মনে আসছে না ভাই। আল্লাহ সহায়।