শোণিত ধারায় শানিত চেতনা

খসড়া ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, মঙ্গলবার, ০৪:৫১:২৫অপরাহ্ন বিবিধ ১৮ মন্তব্য

আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূখন্ডেবিগত কয়েক বছর ধরে যে প্রাচীন সভ্য মানুষ প্রকৃতি ও বহিরাগতদের অজস্র আক্রমনের মোকাবেলা করে ক্রমাগত আপন আস্তিত্বকে দৃঢ়তর করেছে,যাদের উত্তরসূরীরা অসংখ্য ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বংশধারাকে বিস্তৃত করেছে অদ্যাবধি, তারাই আমাদের পূর্ব পুরুষ। এই বিশ্বস্ত মাটির বুকে কান পাতলেই শুনতে পার খ্রীষ্টপূর্ব প্রায় দেড়হাজার বছর আগে যখন খাইবার ও গোলান গিরিপথ ধরে ভিন দেশী আর্যরা ক্রমাগত অগ্রসহ হচ্ছে এ অঞ্চলের তৎকালীন পন্ড্রু, গৌড় , বঙ্গো, রাঢ়, সমতট, হরিকেল নামক বিভিন্ন জনপদের দিকে। তখন বহু প্রাচীন কৌম সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এ অঞ্চলের অনার্য আদি অধিবাসীরা যারা অস্ট্রেলীয় বা ভিড্ডিড নামে পরিচিত

আর্যদের সাথে এদেশীয় অনার্যদের যুদ্ধ হয়েছিল হাজার বছর ধরে। তারপর জয় পরাজয়ের মধ্য দিয়ে কালক্রমে পারস্পরিক সভ্যতার আদান প্রদানের মাধ্যমে পরিপুষ্টি লাভ করেছে এতদেশীয় বৃহত্তর জাতিসত্বা। নৃতাত্তিক বিশ্লেষন অনুযায়ি আর্যদের আগমনের পূর্বে চৈনিক মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর রক্তধারা ব্যাপক ভাবে সংমিশ্রন লাভ করে এ অঞ্চলের আদি অধিবাসীদের সঙে, যার সুষ্পষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয় পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতীয়দের মধ্যে। আর্যদের আগমনের পর পারস্য তুর্কিস্থানের শেক’রাও ছড়িয়ে পরে ও মিশে যায় এ অঞ্চলের মানুষের রক্তের সাথে। এখানেই শেষ নয়। আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্তে ভীনদেশী রক্ত মিশেছে অনেক ভাবে। বাইরের বহু পরাক্রমশালী রাজারা এদেশে অভিযান চালিয়ও কিয়দাংশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সাথে মিশেছে। বিদেশী রাজকন্যা বিয়ের প্রচলন থেকেও এসেছে ভিন্দেশী রক্ত।কয়েকজন হাবসী রাজার রাজত্ব যেমন এনেছে কৃষ্ণবর্ণ মানুষ তেমনি মধ্য যুগের আরবী সুফি সাধক ও সওদাগররাও মিশিয়েছে সেমেতিক রক্তধারা। যাদের অত্যাচারে এদেশের মানুষ অতিষ্ট ছিল একদা, সেই মগ জলদস্যূদের রক্তও মিশেছে এ অঞ্চলের মানুষের সাথে। বস্তুতঃ যুগে যুগে সময়ের দাবী মেটাতে, সভ্যতার বিকাশকে ক্রমাগত এগিয়ে নেয়ার তাগিদে আমাদের এই বাংলার ইতিহাস নানা সময় নানা দিকে মোড় নিয়েছে।বিভিন্ন ঘটনা দুর্ঘটনার মধ্যদিয়ে একেকটি নতুন বোধের মানুষের মনে যা কালক্রমে একটি পূর্ণাঙ্গ আধুনিক জাতিসত্ত্বার বিকাশের দিকে এ অঞ্চলের মানুষকে টেনে নিয়েছে, যে জাতির নাম বাঙালী জাতি।জাতি গঠনে বিভিন্ন রক্তের সংমিশ্রনের ঘটনা ভূরি ভূরি।
বাঙ্গালী জাতিও তার ব্যাতিক্রম নয়। কবিগুরু যথার্থ বলেছেন—
“ হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবির চীন
শত হুন দল পাঠান মোগল এক দেহে হ’ল লীন।“
চলবে—

বিঃদঃ দেশের চলমান অবস্থা নিজেকে খুব অসহায় করে ফেলেছে তাই নিজের ইতিহাস খুঁজতে বসলাম।

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ