শেষ বিকেলের রোদ্দুর_২

সুরাইয়া পারভীন ৩ নভেম্বর ২০১৯, রবিবার, ০৭:৫৫:৩১অপরাহ্ন গল্প ২১ মন্তব্য

অর্ণব চৌধুরী। এ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র।  উদ্দাম, দুরন্ত, চঞ্চল, প্রাণবন্ত, কঠোর পরিশ্রমী মানুষ সে। কাজ তার প্রথম প্রেম।কাজ ছাড়া আর কিছুই যেনো নেই তার জীবনে।
৩৫/৩৬ বছরের স্মার্ট সুন্দর সুদর্শন পুরুষ অর্ণব চৌধুরী নিজেও একজন উচ্চ মানের লেখক। তবে তিনি আর সবার থেকে ব্যাতিক্রম। সোস্যাল লাইফে যেখানে সবাই নিজেকে হাইলাইট করতে ব্যস্ত, সেখানে এই একজন অর্ণব চৌধুরী নিজেকে লুকিয়ে রাখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আর সব লেখকের মতো হাজার হাজার ফ্রেন্ড,ফলোয়ার নেই তার ফেইসবুক আইডিতে। তার ভাষ্যমতে হাজার হাজার পাঠকের চেয়ে হাতে গোনা গুটিকয়েক পাঠকের মতো পাঠকই যথেষ্ট। যারা লেখাটার গভীরে গিয়ে বিশ্লেষণ করবে আর যথার্থ গঠন মূলক আলোচনা সমালোচনা করবে।

কখনো সে প্রেমের কবি, কখনো বিরহের কবি আবার কখনো বিদ্রোহী কবি। ভয়হীন এক প্রতিবাদী মানুষ। এক মাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কারো ভয়ে ভীতু নয় সে। তার লেখায় শব্দে ছন্দে উপমায় প্রেয়সীকে কখনো চাঁদের সমাসনে বসিয়েছে আবার কখনো সেই চাঁদকে ছুঁতে না পারার বিরহে বিরহী হয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও ধরা পড়েছে তার কবিতায়। তবে তার সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে।
সাহিত্য প্রেমী মোহনা মিস্টার চৌধুরীকে এইসব গুণে আবিষ্কার করে ফেলেছে, তার লেখায়, মার্জিত ও রুচিশীল মন্তব্যে। তাই তো মোহনা অর্ণব চৌধুরীকে জানতে আগ্ৰহী হয়ে ওঠে। মিঃ চৌধুরী যখন নক করে মোহনা একবিন্দু সময় নষ্ট না করে রিপ্লাই দেন। হয়তো মনে মনে মোহনা অর্ণবের ম্যাসেজের অপেক্ষা করছিলো।

মোহনাঃ আপনি কিন্তু দারুণ লেখেন।

অর্ণবঃ আমার আর লেখা, সময় পাই কই ?

মোহনাঃ আপনার শব্দ চয়ন অসাম।

অর্ণবঃ ধন্যবাদ বন্ধু

মোহনাঃ ক্ষণিক নিঃশ্চুপ,স্তব্ধ,,, বন্ধু ! এই শব্দটা যেনো কয়েকমুহূর্তের জন্য থামিয়ে দিলো মোহনাকে!

অর্ণবঃ ঐ লোকটা কে যে আপনার ম্যাক্সিমাম গল্পের নায়ক থাকে?

মোহনাঃ গান কোথায় ? যে নায়ক থাকবে

অর্ণবঃ হা হা হা

মোহনাঃ ওহ সরি! ওটা গল্প ছিলো। ঠিক করে চোখে দেখিনা।

অর্ণবঃ সরি কবিতার নায়ক।

মোহনাঃ হা হা হা।

অর্ণবঃ আমার কাছে প্রতিটি কবিতাই এক একটি গল্প।

মোহনাঃ হ্যাঁ অবশ্যই। কারণ একটা কবিতায় একটা উপন্যাস প্রকাশ হয়ে যায়।

অর্ণবঃ একটা জীবনের নির্দিষ্ট কিছু অংশ এর ইতিহাস। সেই অর্থে আমি গল্প শব্দ টা ব্যবহার করেছি

মোহনাঃ আরে বাবা আমি তো গান দেখেছি।বয়স হয়েছে
চোখে ঠিক দেখি না।

অর্ণবঃ তাই? হা হা হা
তা কত হয়েছে আপনার? ২৮/৩০ এর বেশি নয় তো

মোহনাঃ এই ধরুন৪৫/৫৪

অর্ণবঃ হা হা হা

মোহনাঃ আরো বেশি,,,৬২

অর্ণবঃ এই আমি কিন্তু দাদীর কোলে বসে চ্যাটিং করছি না। বুঝতে পেরেছেন হা হা হা?

মোহনাঃ হা হা হা

অর্ণবঃ এস এস সি কত সালে? ২০০৮/২০০৯

মোহনাঃ আরে নাহ্,,,,১৯৭৫।

অর্ণবঃ ওটা কি জন্ম সাল ?

মোহনাঃ কি জানি? জানি না তো

মোহনার ফেইসবুক আইডি থেকে একটা ছবি কপি করে সেন্ট করে বলে

অর্ণবঃ এটা ১৯৭৫ সালে মেট্টিক পাশ করা একটা ললনার ফটোগ্রাফ?

মোহনাঃ ওটা আমার কত্তো আগের ছবি! হা হা হা
হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছি।

অর্ণবঃ শুরু থেকে হাসুন। ঐ যে শুরু থেকে আর কি😃
উল্টো দিকে ও হাসতে পারেন

মোহনাঃ পর কাঁদানোর ইচ্ছে আছে নাকি?

অর্ণবঃ কেনো এমনটা কেনো?

মোহনাঃ ঐ যে বললেন শুরু থেকে হাসুন,,,তাই আর কি

অর্ণবঃ আমার কাছে কি আপনার কোন স্বার্থ আছে নাকি?
যে আটকে রেখে আমি আপনাকে কাঁদাবো?

মোহনাঃ এমা ছি ছি! তা হবে কেনো? আমি তো মজা করছিলাম।

সরি

অর্ণবঃ ওটা তো জাস্ট মজা করার জন্য বলা।
আপনাকে যদি একটু প্লেজার দিতে না পারি একটু হাসাইতে না পারি তাহলে কেমন বন্ধু হলাম?

মোহনাঃ আমিও তো মজা করেই বলেছিলাম। তবুও সরি

অর্ণবঃ সরি বলবেন না তো। এটা না বললেই ভালো হবে।
ওই শালা বেনিয়া শিখিয়ে গেছে একটা ইংরেজি শব্দ সরি। লল

মোহনাঃ হুম

অর্ণবঃ এই বললেন না তো!

মোহনাঃ কি বলবো?

অর্ণবঃ আপনার এস এস সি কত সালে? কি হলো ভাগলেন ?

মোহনাঃ ২০০৮

অর্ণবঃ দেখলেন আমি কি বলেছিলাম ? ২০০৮/২০০৯।
এগুলো স্টাডি করতে হয় না বন্ধু

মোহনাঃ হুম

অর্ণবঃ তারপর বলেন

মোহনাঃ কি বলবো?

অর্ণবঃ ইতিহাস
কবিতায় হাতেখড়ির ইতিহাস
প্রথম প্রেমের ইতিহাস

মোহনাঃ বিজ্ঞানের ছাত্রী আমি, ইতিহাস কি করে বলবো?

অর্ণবঃ কবি সাহিত্যিকদের বেশিরভাগই বিজ্ঞানের স্টুডেন্ট। হুমায়ূন আহমেদ স্যারের মতো একজন নামকরা সাহিত্যিক তিনিও তো বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন
বলেন

মোহনাঃ হা হা হা,,,বের হবো এখন।

অর্ণবঃ কোথায় যাবেন, বেড়াতে?

মোহনাঃ না,, এক মিটিং এ

অর্ণবঃ গুড জব।ঠিক আছে পরে শুনবো

মোহনাঃ আরে কি বলবো?

অর্ণবঃ জীবনের গল্প।

মোহনাঃ কিছু বলার নেই আমার, কোনো গল্পও নেই। ভালো থাকবেন

অর্ণবঃ আচ্ছা পরে কথা হবে।

সাবধানে যাবেন, ভালো থাকবেন

আল্লাহ হাফেজ ❤️

চলবে,,,,,,

শেষ বিকেলের রোদ্দুর_১

0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ