
পর্ব_১
নিকষ কালো আঁধারে ঢেকে যাওয়া মোহনার কাছে শরতের শুভ্র নীল আকাশটাকেও ধূসর বিবর্ণ মনে হয়। শরতের আকাশ অথচ কোথাও কোনো নীল নেই, নেই কোনো শুভ্র মেঘেদের দল। পুরো আকাশটা যেনো বিদঘুটে কালো মেঘে আচ্ছাদিত। স্বপ্ন ভঙ্গের যন্ত্রণায় বিষণ্ণ বিষাদে কাতরানো মানুষের মনে শুধু শরৎ কেনো বসন্ত ঋতুও কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। শরৎ ঋতু মোহনার ভীষণ প্রিয়। শিশির শিক্ত স্নিগ্ধ সকালে শিউলি তলায় গিয়ে ফুল দিয়ে প্রিয়জনের নাম লেখা, শিউলি ফুলের মালা গেঁথে খোঁপায় গুঁজা মোহনার নেশা। অথচ এবারের শরৎ যেনো বিশাল অসুখের ছায়া হয়ে মোহনার সামনে দাঁড়িয়েছে। মোহনার ঘুম কেড়েছে, মন খারাপের সকাল দিয়েছে। ভীষণ ক্লান্ত শ্রান্ত মোহনা যখন ঠিকই করে এমন বিষাদিত জীবন নিয়ে বেঁচে থেকে কি লাভ? একজন ব্যর্থ মানুষের পৃথিবীতে থাকা না থাকায় কি এসে যায়! ঠিক এমন সময়ে দেবদূত হয়ে অর্ণব এলো মোহনার জীবনে।বাড়িয়ে দিল বন্ধুত্বের হাত। দেখালো আলোর দিশা, দিলো বেঁচে থাকার প্রেরণা।
মোহনার সাথে অর্ণবের পরিচয়টা ফেইসবুকে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে হয়। অর্ণব তিন বছর মোহনার ফেইসবুক আইডিতে এ্যাড আছে। তবে এ তিন বছরে তাদের কোনো কথা হয়নি। অর্ণব প্রায় ইনবক্সে শুভ সকাল জানালেও মোহনার তা চোখেই পড়েনি।
শরৎ শেষ হওয়ার আগেই একদিন সকালে অর্ণব শুভ সকাল জানিয়ে বার্তা পাঠায় ইনবক্সে।
অর্ণবঃ শুভ সকাল
কেমন আছেন?
তিন ঘণ্টা পর মোহনার রিপ্লাই
মোহনাঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন?
প্রায় চার ঘন্টা পর
অর্ণবঃ আলহামদুলিল্লাহ
মোহনাঃ এতোদিন এতো ম্যাসেজ দিয়েছেন আমি দেখিনি আর আজ যখন দেখছি রিপ্লাই দিচ্ছি তখন আপনার কিছু লেখার নেই দেখছি,,,হা হা হা
অর্ণবঃ হা হা হা,,,কি করেন?
মোহনাঃ কিছু না
অর্ণবঃ লাঞ্চ করেছেন?
মোহনাঃ ১২ টায় লাঞ্চ করেছি।
আপনি করেছেন?
অর্ণবঃ লাঞ্চ করেছেন না লাঞ্চ পাস্ট করেছেন! হা হা হা
খাইতাছি।
মোহনাঃ খেতে খেতে রিপ্লাই! আচ্ছা খেয়ে নিন।
অর্ণবঃ ভয়েস টাইপিং ইউজ করি। মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়। সেটা আবার কারেকশন করা লাগে।
মোহনাঃ ওহ আচ্ছা।
অর্ণবঃ আপনি সব সময় এত দুশ্চিন্তায় থাকেন কেন?
কি সব হাহাকার?
আরে ভাই জীবন তো একটাই তাই না?
এই অল্প সময়ের ক্ষুদ্র জীবনটাকে কেন অযথা চিন্তায় চিন্তায় কাটিয়ে দিচ্ছেন?
মোহনাঃ ধুর! কোথায়?
অর্ণবঃ এই যে কি সুন্দর করে স্যাডি কবিতা লিখেন!
মোহনাঃ লেখায় আমি যা তা আমি নই! দুঃখ কষ্ট হতাশা কেবল লেখায় ব্যবহৃত শব্দ মাত্র।জানি না তা কি করে সম্ভব হয়? ব্যক্তি জীবন আমার এমন নয়। পরে যখন নিজের লেখা পড়ি, তখন আর সবার মতো আমিও ভাবি।
অর্ণবঃ কেন এসব লিখলাম তাই না!আসলেই আমারও বেশিরভাগ লেখা বেদনাদায়ক
চলবে…….
৩১টি মন্তব্য
নিতাই বাবু
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
সুন্দর একটা গল্প পড়লাম। দেখি সামনে কী হয়? চলুক, সাথে আছি।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
দেখা যাক অর্ণব মোহনার জীবনে কি ঘটে
ছাইরাছ হেলাল
ফেসবুক কথোপকথন চালু থাকুক,
আচ্ছা মেসেজের উত্তর দেয়ার সাথে সাথে শুরু! হয়ে গেল!
ফেসবুকার নই, তাই সামান্য প্রশ্ন,
চালু থাকতেই হবে এ লেখাটি, দেখি কোথায় কী গড়ায়!
সুরাইয়া পারভিন
হা হা হা,,,সাত আট বছরের ফেসবুকার আমি। অভিজ্ঞতা নেহাতই কম নয়
আর সাথে সাথে নয় তো।তিন বছর পর প্রথম রিপ্লাই করে মোহনা
ইনবক্স ছাড়া তিন বছর কমেন্টে মাঝে মাঝে ই কথা হয়েছে।
অপেক্ষা করুন পরিনতির জন্য
অনন্য অর্ণব
What a conversation…🙂
অনন্য অর্ণব
আমি পরের পর্ব না পড়ে অন্তত চা খাচ্ছি না 🤣🤣
সুরাইয়া পারভিন
পুরো গল্প শুনাবো ইনশাআল্লাহ
অপেক্ষা করুন
জিসান শা ইকরাম
মোহনা অর্নবের পরিচয় পর্বটা ভালোই হয়েছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
লেখাকে অনেকেই লেখকের নিজের কথা ভেবে ভুল করে।
সুরাইয়া পারভিন
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া
ভাবুক না লেখকের তবুও পড়ুক
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
শুরু করেছি ,,,শেষও করবো ইনশাআল্লাহ
সাবিনা ইয়াসমিন
অর্ণবের এই প্রশ্নটা আমারও করতে ইচ্ছে করে। এত সুন্দর সুন্দর স্যাডি কবিতা মোহনা কিভাবে লেখে!
গল্প চলুক,
শুভ কামনা 🌹🌹
সুরাইয়া পারভিন
ক্রমশ প্রকাশ্য
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু ❤
রাফি আরাফাত
পড়ের পর্ব পড়েই শান্তি পাবো৷ এখন যত দ্রুত দিবেন ততোই আমার জন্য ভালো।
সুরাইয়া পারভিন
জ্বী আজই পাবেন পরের পর্ব
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
এস.জেড বাবু
মেসেঞ্জারের কথোপকথন –
তা যদি রাইটারের হয় তবে তো কথাই নেই-
প্রতি লাইনে জীবনের বাস্তবতা বেড়িয়ে আসবে কথার ঢংয়ে-
স্বপ্ন ভঙ্গের যন্ত্রণায় বিষণ্ণ বিষাদে কাতরানো মানুষের মনে শুধু শরৎ কেনো বসন্ত ঋতুও কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না।
চমৎকার অনুভুতি।
পরের পর্বের অপেক্ষায়
সুরাইয়া পারভিন
গল্প তো কারো না কারো জীবনেরই
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
এস.জেড বাবু
শুভকামনা সে জীবনের জন্য।
নৃ মাসুদ রানা
অপেক্ষায়…
সুরাইয়া পারভিন
শীঘ্রই অবসান ঘটাবো,,,
জিসান শা ইকরাম
শিরোনামটা একটু সংশোধন করে পর্ব- ১ দিলে ভালো হয়।
যেমন ‘ শেষ বিকেলের রোদ্দুর : পর্ব- ১ ‘
সুরাইয়া পারভিন
ওকে ভাইয়া ঠিক করে দিচ্ছি
তৌহিদ
অর্ণব এবং মোহনার কথোপকথন ভালো লাগছে। তবে অনলাইনে এরুপ সম্পর্ক আমার মোটেই পছন্দ নয়। কেন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন?
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
সুরাইয়া পারভিন
জ্বী বুঝতে পেরেছি,,,, এ গল্প লেখার কারণ যখন জানবেন তখন নিশ্চয়ই ভালো লাগবে ভাইয়া
চাটিগাঁ থেকে বাহার
লেখাটি ভালো লেগেছে।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
কামাল উদ্দিন
কষ্টের প্যারাগুলো কবিতায় মানিয়ে যায় অনেক বেশী, প্রথম থেকে পড়া শুরু করলাম আপু।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
সিকদার সাদ রহমান
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। অনেক দিন পর ব্লগে এলাম! ভালই লাগছে পড়তে!
সুরাইয়া পারভিন
পর্ব_৫ পর্যন্ত দেওয়া আছে।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
সিকদার সাদ রহমান
ঠিকাছে বোন, আন্তরিক ধন্যবাদ জানিলাম!
আরজু মুক্তা
ভালো লাগলো
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু