শেষ বিকেলের রোদ্দুর_১

সুরাইয়া পারভীন ২ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ০৭:১৪:২৪অপরাহ্ন গল্প ৩১ মন্তব্য

পর্ব_১

নিকষ  কালো আঁধারে ঢেকে যাওয়া মোহনার কাছে শরতের শুভ্র নীল আকাশটাকেও ধূসর বিবর্ণ মনে হয়। শরতের আকাশ অথচ কোথাও কোনো নীল নেই, নেই কোনো শুভ্র মেঘেদের দল। পুরো আকাশটা যেনো বিদঘুটে কালো মেঘে আচ্ছাদিত। স্বপ্ন ভঙ্গের যন্ত্রণায় বিষণ্ণ বিষাদে কাতরানো মানুষের মনে শুধু শরৎ কেনো বসন্ত ঋতুও কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। শরৎ ঋতু মোহনার  ভীষণ প্রিয়।  শিশির শিক্ত স্নিগ্ধ সকালে শিউলি তলায় গিয়ে ফুল দিয়ে প্রিয়জনের নাম লেখা, শিউলি ফুলের মালা গেঁথে খোঁপায় গুঁজা মোহনার নেশা। অথচ এবারের শরৎ যেনো বিশাল অসুখের ছায়া হয়ে মোহনার সামনে দাঁড়িয়েছে। মোহনার ঘুম কেড়েছে, মন খারাপের সকাল দিয়েছে। ভীষণ ক্লান্ত শ্রান্ত মোহনা যখন ঠিকই করে এমন বিষাদিত জীবন নিয়ে বেঁচে থেকে কি লাভ? একজন ব্যর্থ মানুষের পৃথিবীতে থাকা না থাকায় কি এসে যায়! ঠিক এমন সময়ে দেবদূত হয়ে অর্ণব এলো মোহনার জীবনে।বাড়িয়ে দিল বন্ধুত্বের হাত। দেখালো আলোর দিশা, দিলো বেঁচে থাকার প্রেরণা।

মোহনার সাথে অর্ণবের পরিচয়টা ফেইসবুকে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে হয়। অর্ণব  তিন বছর মোহনার ফেইসবুক আইডিতে এ্যাড আছে। তবে এ তিন বছরে তাদের কোনো কথা হয়নি। অর্ণব প্রায় ইনবক্সে শুভ সকাল জানালেও মোহনার তা চোখেই পড়েনি।

শরৎ শেষ হওয়ার আগেই একদিন সকালে অর্ণব শুভ সকাল জানিয়ে বার্তা পাঠায় ইনবক্সে।

অর্ণবঃ শুভ সকাল
কেমন আছেন?
তিন ঘণ্টা পর মোহনার রিপ্লাই

মোহনাঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন?

প্রায় চার ঘন্টা পর

অর্ণবঃ আলহামদুলিল্লাহ

মোহনাঃ এতোদিন এতো ম্যাসেজ দিয়েছেন আমি দেখিনি আর আজ যখন দেখছি রিপ্লাই দিচ্ছি তখন আপনার কিছু লেখার নেই দেখছি,,,হা হা হা

অর্ণবঃ হা হা হা,,,কি করেন?

মোহনাঃ কিছু না

অর্ণবঃ লাঞ্চ করেছেন?

মোহনাঃ ১২ টায় লাঞ্চ করেছি।
আপনি করেছেন?

অর্ণবঃ লাঞ্চ করেছেন না লাঞ্চ পাস্ট করেছেন! হা হা হা
খাইতাছি।

মোহনাঃ খেতে খেতে রিপ্লাই! আচ্ছা খেয়ে নিন।

অর্ণবঃ ভয়েস টাইপিং ইউজ করি। মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায়। সেটা আবার কারেকশন করা লাগে।

মোহনাঃ ওহ আচ্ছা।

অর্ণবঃ আপনি সব সময় এত দুশ্চিন্তায় থাকেন কেন?
কি সব হাহাকার?
আরে ভাই জীবন তো একটাই তাই না?
এই অল্প সময়ের ক্ষুদ্র জীবনটাকে কেন অযথা চিন্তায় চিন্তায় কাটিয়ে দিচ্ছেন?

মোহনাঃ ধুর! কোথায়?

অর্ণবঃ এই যে কি সুন্দর করে স্যাডি কবিতা লিখেন!

মোহনাঃ লেখায় আমি যা তা আমি নই! দুঃখ কষ্ট হতাশা কেবল লেখায় ব্যবহৃত শব্দ মাত্র।জানি না তা কি করে সম্ভব হয়? ব্যক্তি জীবন আমার এমন নয়। পরে যখন নিজের লেখা পড়ি, তখন আর সবার মতো আমিও ভাবি।

অর্ণবঃ কেন এসব লিখলাম তাই না!আসলেই আমারও বেশিরভাগ লেখা বেদনাদায়ক

চলবে…….

২২২০জন ১৮৭৯জন
37 Shares

৩১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ