
সেঁজুতি কোনো দিকে না তাকিয়ে ব্যাগ তুলতে নিচু হয়ে বলতে শুরু করলো…
-অসভ্য অভদ্র উশৃঙ্খল বাঁদর বদমাইশের দল সব। মেয়ে মানুষ দেখলেই যেনো ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরা যে ইউনিভার্সিটিতে কেনো আসে কে জানে? ভদ্রতার ভ টুকুও নেই এদের মধ্যে।
শ্রাবণ ব্যাগটা তুলে দিতে যাবে এমন সময় সেঁজুতিকে দেখতে পেয়ে পিছনে সরে গেছে। শ্রাবণ এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছিলো কথা গুলো আর মনে মনে ভাবছে কী মেজাজ রে বাবা! যেনো বিষ ঝাল। সেঁজুতি থেমে গেলে শ্রাবণ বললো…
-তারপর?
সেঁজুতি বসে থেকেই বললো…
-মানে কী?
-মানে বলছিলাম আপনার অভিধানে এই সব শব্দ আর নেই?
-এই দেখুন একে তো ধাক্কা দিয়েছেন। ব্যাগটা তুলে দেবার নাম নেই। একটা স্যরি বলার মতো ভদ্রতাটুকুও নেই আবার বড় বড় কথা বলছেন
বলেই সেঁজুতি দাঁড়িয়ে পিছনে ঘুরে শ্রাবণকে দেখে চিৎকার করে উঠল…
-আপনি?
-জ্বী আমি।
-আপনি জানেন আমি আপনাকে কতো খুঁজেছি!
পুরো শহর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পাইনি।
-তা আপনি আমাকে কেনো খুঁজছেন?
-কেনো খুঁজছি আপনি জানেন না?
-কী করে জানবো? আপনি তো তখন থেকে শুধু বকা ছাড়া আর কিছু বলেননি।
-আচ্ছা স্যরি। আমি ভেবেছিলাম…
-কী ভেবেছিলেন বলুন তো?
-ছাড়ুন না। এবার বলুন আপনি তো সার্ভিস ম্যান তাহলে এখানে এসেছেন কেনো? কোথাও আমাকে ফলো করতে করতে আসেননি তো! কী উদ্দেশ্য আপনার হ্যাঁ?
-ওহ হ্যালো! আমি আপনাকে ফলো করতে করতে আসিনি। এগারোটায় আমার ক্লাস আছে তাই তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়ে ধাক্কা লেগেছে। আর সার্ভিস ম্যান ইউনিভার্সিটিতে আসতে পারবে না এটা কোথায় লেখা আছে?
-সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি। আপনি কোনো সার্ভিস ম্যান ট্যান না। এবার দোয়া করে আপনার আসল পরিচয় টা দিন তো।
-আমি শ্রাবণ আহমেদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ফাইনাল ইয়ার স্টুডেন্ট।
-বাহ্ বেশ! এবার বলুন কে পার্সেলটা পাঠিয়েছিল আপনার হাত দিয়ে?
-সেটা আপনাকে বলতে যাবো কেনো?
-আরে আজব তো! আচ্ছা বেশ আমাকে না হয় বললেন না। ঠিক আছে চলুন বাসায় মামুনিকে বলবেন।
-একদম না। আমি কিছুতেই বলবো না। না আপনাকে, না আপনার মামুনিকে। শুনেছেন? আর তা ছাড়া আমার এখন ক্লাস আছে। আসছি আমি। ভালো থাকবেন লঙ্কারাণী।
বলেনই শ্রাবণ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে সেঁজুতি দৌড়ে গিয়ে ওর পথ আটকালো।
-এই আপনি আমাকে কী বললেন? আমি লঙ্কারাণী?
-জ্বী লঙ্করাণী! একদম ঠিক শুনেছেন। আমি ওটাই বলেছি।
-আপনার সাহস তো মন্দ নয়!
-জ্বী একদম
-এই দেখুন ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
-এবার যেতে হবে লঙ্কারাণী পথ ছাড়ুন
-নাহ্ একদম না। আজ ক্লাস করতে হবে না। সত্যি কথা না বলা পর্যন্ত আপনাকে কোথাও যেতে দেবো না!
-এই শুনুন আমি আপনাকে কিছুই বলবো না।
-প্লীজ বলুন। আমার জানাটা দরকার কে আমার মামুনি কে এতো ভালোবাসে?
-কেনো বলুন তো? আপনার মামুনিকে কে এতো ভালোবাসে সেটা জেনে এখন কী হবে? আপনার মামুনি তো বেশ আছে। স্বামী সন্তান সংসার সব নিয়ে। তাহলে আর নতুন করে জেনে কী হবে কে তাঁকে ভালোবেসে ধুঁকে ধুঁকে মরছে!
-এই থামুন তো। তখন থেকে বকবক করে চলেছে। যা জানতে চাইছি সেটাই বলুন না
-বলবো না, কিছুতেই বলবো না আপনার মামুনিকে ভালোবেসে তিলে তিলে নিজেকে শেষ কর দিচ্ছেন আমার মামু। বলবো না কিছুতেই বলবো না।
-বুঝলাম পার্সেলটা পাঠিয়েছেন আপনার মামু। এবার সবটা খুলে বলুন। আমার জানাটা খুব দরকার…
ছবি-গুগল
২০টি মন্তব্য
তৌহিদ
যাক পার্সেলম্যানকে খুঁজে পাওয়া গেলো তাহলে!! তবে সেঁজুতি সেই ধোঁয়াশার মধ্যেই থেকে গেলো। আসল মানুষকে খুঁজে পাওয়া হলোনা।
চলুক গল্প…
সুরাইয়া পারভীন
সামনের পর্বের সমস্ত ধোঁয়াশা কেটে যাবে মনে হচ্ছে।
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
শ্রাবন সেঁজুতির ঝগড়াটা জমে উঠলো বুঝি
দেখা যাক পরিনতি কি ?
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
দেখা যাক তবে
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়।
খাদিজাতুল কুবরা
বাহ্ এক গল্প সমাধানের পথে আরেক গল্প শুরু হতে যাচ্ছে।
গল্প জমাটি হবে মনে হচ্ছে।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
একটু এডিট লাগবে মনে হয় আপু
সুরাইয়া পারভীন
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অভস্য অভদ্র
আপনার সাহস তো মন্তব্য নয়!
এবার মেতে হবে লঙ্কারাণী – এই বাক্যগুলোতে টাইপিং মিস্টেক আছে আপু মনে হয়। গল্প আপাতত মিষ্টি মিষ্টি ঝগড়া দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। চমৎকার হচ্ছে। শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া পারভীন
ঠিক করে নিয়েছি দিদিভাই।
আসলে এতো চোখ ব্যথা করছিল লেখার পর আর পড়ার ধৈর্য্য হয়নি।
এখন পড়ে ঠিক করে নিয়েছি।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন 💓💓
ছাইরাছ হেলাল
ধাক্কাধাক্কির লক্ষণ দেখে গল্পের বাঁক অনুমান করা যাচ্ছে।
দেখি এবার মামু কী করে।
সুরাইয়া পারভীন
জ্বী এখন শুধু চেয়ে চেয়ে দেখার পালা
ধাক্কা ধাক্কির বাঁক কোথায় যায়
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
আরজু মুক্তা
গল্প টার্ন নিলো অবশেষে।
সুরাইয়া পারভীন
জ্বী আপু
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
শামীনুল হক হীরা
দারুণ লিখেছেন সম্মানিত প্রিয়কবি,,,শুভকামনা রইল।।।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
জিসান শা ইকরাম
আগের পর্বগুলো তো পড়া হয়নি। না পড়ে এটিতে মন্তব্য দেব কিভাবে?
সময় করে একদিন সব পর্বগুলো পড়ে মন্তব্য দিতে থাকবো।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
ঠিক আছে ভাইয়া
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
রোকসানা খন্দকার রুকু
হা হা হা লঙকারানী। ঝাল বেশি মানুষরাই দারুন হয়। কলেজে গল্প জমবে এবার।আর বাহানা ছাড়া প্রেম হয়না।
শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সরি ভার্সিটি হবে।
সুরাইয়া পারভীন
হা হা হা হা হা
দেখি না প্রেম টেম আদৌও কিছু হয় কিনা?
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ