
বন্ধুত্ব হলো খোলা আকাশের মতো যেখানে মন মেলে দিয়ে অবাধে বিচরন করা যায়। তার সাথে আমার অবাধ বিচরন নেই।
আমাদের সম্পর্ক বহুল কাঙ্খিত বৃষ্টির মতো। ক্লান্ত হবার আগে আগে আসে, সাথে থাকে মেঘের অনাকাঙ্ক্ষিত তর্জন গর্জন। যা উপেক্ষা করার উপায়ও নেই, সাথে নিয়েই আপনাকে বৃষ্টিবিলাসে নামতে হবে।
জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল ২০১৯-২০ সাল। শরীরের এতোটাই বাজে অবস্থা যে উঠতে বসতে এমনকি শুয়ে থাকতেও কষ্ট হতো। মনের অবস্থা আরও বেসামাল কিন্তু অদম্য ইচ্ছে বলে, বাঁচতে হবে।
ফেসবুক ওপেন করলাম, পড়বো বা লিখবো সময় কাটবে। ফ্রেন্ড লিষ্টটা এতো ছোট যে ভীষন বোরড হয়ে গেলাম। আমি সাধারণত কাউকে রিকু দিতাম না। কিন্তু তালিকা বাড়াতে সেই প্রথম শুরু হলো রিকু দেয়া। পরিচিতদের সাথে একজন হাসি হাসি মুখ কিন্তু তাকে আমি চিনি না। সাহস করে দিয়ে ফেললাম। মোটামুটি সাথে সাথে সবাই নিয়ে নিল। কিন্তু সেই ” হাসিন দিলরুবা ” মাত্র তিনদিন ঝুলিয়ে রেখে একসেপ্ট করলেন!!
শুরুতে স্ট্যাটাসে কথা হতো। তার স্ট্যাটাস এমন ছিল- “বাসায় গ্যাস, বিদ্যুৎ কোনটাই নেই, তাই আগুনের গান শুনি”!
আমি বললাম- আপি, ভুল হয়েছে, ইনি তো আগুন না জেমস। রিয়াক্ট এলো হা হা😀😀
উত্তর ছিল – গানে আগুনের কথা আছে! কি বোকা আমি, গান না শুনেই কমেন্ট!
কালো টি- শার্ট আর প্রকৃতি মিশেল ছবিতে আমি জানতে চাইলাম- এটা আপনি?
সাবলীল উত্তর – জী,নভেম্বরে বেড়াতে গিয়ে তুলেছিলাম।
– এ মা, কবিরাও এতো সুন্দর হয় নাকি। আবার হা হা হা।😄😄
এরপর তার লেখা অ-কবিতা পড়ি, লেখা পড়ি আর নিজের ভেতরের লেখকস্বত্তা পেট ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসতে চায়। তিনি হয়তো আমার প্রফাইল কখনো দেখেনই নি। ছয়সাত মাস পর আমিই তাকে লিখলাম- আপু পরিচিত হতে আর লিখতে চাই, আপনার মতো ব্লগে।
অনেকক্ষন তিনি নেই। হয়তো আমার প্রফাইল চেক করতে গেছিলেন। এরপর সামান্য পরিচয়, আইডি এবং এতোটা পথ এলাম তার হাত ধরে।
শুরুতে কি সুন্দর আপু ডাকতাম, তিনি টুক করে উত্তর দিতেন। ওই যে বলে না আদরে আদরে বাঁদর বানানো, সেরকম হয়ে লেখালেখির ছোট ছোট ব্যাপারেও তাকে ম্যাসেজ দিয়ে বিরক্ত করতাম।
একসময় আপু বাদ গেল, ব্লগে ম্যাচিউরড হলাম। আর তার ইমোজিও ম্যাচিউরড হয়ে হা হার বদলে আমদানী হলো এংরি 😡 ইমোজি। আমাদের একদিনের কনভারসেশান নিয়ে কবিতা লিখেছিলাম-
” আর কখনো এসব বাজে কথা বললে আনফ্রেন্ড করে দিবো ।
একি; নিদারুণ হুমকি?
ইয়েস, এটা প্রাথমিক সতর্কতা, মনে থাকে যেনো!
জ্বী মনে থাকবে, কিন্তু একটা কথা;
প্রাথমিক যদি আনফ্রেন্ড হয়, তাহলে তো বাকি কিছু রইলো না
চুপচাপ কোন কথা নেই,
হ্যালো কি হলো কিছু বলছেন না যে!
চুপ! বেশি কথা বলা আমার পছন্দ না;
আর বান্দর টাইপের মানুষের তো একেবারেই না।
হুম! বান্দর বললেন? বলেন! তবুও কৃতজ্ঞ।
বান্দর তো বলিনি, মতো বলেছি।
ওই হলো একই কথা।
এত নকপকটক দেন কেন? কাজ কাম নাই।
আছে তো ; থাকবে না আবার,
ভালোবাসি বলেই এমন করি।
আচ্ছা আর বিরক্ত করবো না বাই!
তবে শেষ কথা-
🥰 আপনার জন্যেই এখন আমার
একটা নতুন সকাল শুরু হয়,
কাটে নির্মল আনন্দে সারাদিন, মস্ত খুশি মাথায় নিয়ে।
দুপুরের ঘুমটা ফাটাফাটিই হয়;
বিকেলটায় গুছিয়ে ফেলার তাড়া নেই
শুধু অপেক্ষা সন্ধ্যের ,
এক অমোঘ আকর্ষণে নামে আমার রাত
যেন স্বপ্নে মাখামাখি।
কথা হবে আপনার সাথে কতসময়ের প্রতীক্ষায়!”🥰
খুব পন্ডিত হয়েছেন না?
আপনিই তো বানালেন, কেন ভালো হয়নি?
বলব কেন? নিজে বুঝে নেন।
আনফ্রেন্ড হচ্ছিনা তাহলে?
আপাতত না,
তবে, প্রাথমিক সতর্কতা জারি রইলো”😡😡
সতর্কতা জারি থাকুক। প্রতিদিন এংরি ইমোজি আসুক। আমিও লিখতে থাকি ভালো- মন্দ, ছাই- পাশ যা পারি।
মানুষ অনেকভাবেই কাছে থাকে, পাশে থাকে। আর তা নিয়েই আমরা বেঁচে থাকার সাহস করি। সত্যি বলছি দুবছর পার করলাম ব্লগে, মন খুলে সোনেলার সাথে কথা বলি। মনে হয় অনেক বছর বাঁচি! আজ আমার বেঁচে থাকা, পাশে থাকা মানুষটার জন্মদিন। হাজার বছর তার জন্মদিন ফিরে ফিরে আসুক। হাজার কথামালা সাজুক থরে থরে।
কারন তার অবদান অস্বীকার করার সাধ্য কার। নিজের যোগ্যতায়, দক্ষতায় তিনি সোনেলার সকলকে আগলে আছেন। আর তার কমেন্ট সম্পর্কে তার অ-কবিতা কপি করে বলতে হয়-
** সন্ধা ঘনিয়ে আসে সূর্যের রঙ বদলে
সকল ব্লগার আসে কমেন্ট দিতে,
আপনি কেন আসেন না?
অবশেষে এখন এই বেলায় না এসে,
ফের বেলায় এসে কমেন্টে শুধান “ ফিল মি?”
তাজ্জব জিজ্ঞাসায় হতবাক হই ” সাবিনা”
আপনার লেখায়, মন্তব্যে, কারণে বা অকারণে,
লাইফ আমাদের বর্তমানে সুপার-ডুপার ফিল্মি;””
আমার মনে হয় সবাই আমরা চাই তিনি সবার লেখায় মন্তব্য দিক! কারন লেখায় গুছানো একটি মন্তব্য একজন লেখকের বড় পাওয়া। আর এগিয়ে যাওয়ার রসদ। সাবিনা এমনি করে থাকুন আমাদের সোনেলার সোনালী হয়ে। সবার কলম চলুক আপনার উৎসাহে, উদ্দিপনায়, পরিচালনায়। শুভ জন্মদিন ” হাসিন দিলরুবা”🥰🥰🥰
১৯টি মন্তব্য
রেজওয়ানা কবির
প্রথম হয়ে নিলাম,
শুভ জন্মদিন সাবিনা আপু❤️
তোমাকেও শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন আপু ২০০ তম পোস্টের জন্য, বাকি মন্তব্য পরে নিয়ে আসছি।
সাবিনা ইয়াসমিন
ধন্যবাদ রেজওয়ানা 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনার অভিনন্দন গ্রহন করা হইলো। মন্তব্যের অপেক্ষায় 🥰
সাবিনা ইয়াসমিন
দুই শততম পোস্ট পূর্ণ হলো আপনার!!
অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন আপনাকে।
লেখা পড়ে হাসছি, হাসছি আর ভাবছি কি কমেন্ট দিবো এখানে..!
আপাতত 🌹🌹🌹🌹🌹
থ্যাংক ইউ রুকু মনে রাখার জন্য, মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
রোকসানা খন্দকার রুকু
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন সাদরে গ্রহন করিলাম।
আর কমেন্ট কি দেবেন এ ব্যাপারে বলার জন্য যদিও পেটটা কেমন কেমন করছে, তারপরও এই 😡 ইমোজির ভয়ে বলা গেল না। অনেক ভালো থাকুন!!
শাহরিন
শুভ জন্মদিন সাবিনা ইয়াসমিন। হাসি আনন্দে কাটুক জীবনের বাকিটা সময়।
ভালোবাসার উপস্থাপনা তো যাকে নিয়ে লিখেছেন সেই দিয়েছেন তাই লেখা নিয়ে আমি চুপটি করেই থাকি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
চুপ করে সবাই থাকতে পারে না। সেজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🥰
সঞ্জয় মালাকার
শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধেয় আপু,
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা
আনন্দ ময় হোক সবসময়, আগামীর দিন গুলো ভরে উঠুক ফুলে 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকবেন।।।
হালিমা আক্তার
শুভ জন্মদিন সাবিনা আপা। অশেষ শুভ কামনা রোকসানা আপাকে। বন্ধুত্বের চমৎকার মিথোলোজি। দুজনের প্রতি আবারও শুভকামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনিও ভালো থাকুন হালিমা আপা।
আর কিছুখন আগেই দেখে এলাম আপনি কমেন্টে ২য় তে চলে এসেছেন। আমার গতমাসের কোমর ব্যথাই আছে। আবার দৌড়ানি, চলেন তবে দেই গোল্লাছুট 🥰
হালিমা আক্তার
আপনি নিরাপদে আছেন। তাছাড়া আমি এবার আর দৌড়াবো না। স্বাভাবিক গতিতে হাঁটছি। যতটুকু যাওয়া যায়। শুভ রাত্রি।
জিসান শা ইকরাম
সাবিনা ইয়াসমিন সোনেলায় নিবন্ধন করার পরে অনেক দিন কেবল মন্তব্য করেছেন অন্য ব্লগারদের লেখা পড়ে। তিনি পড়তে ভালোবাসেন।
তার গঠন মূলক মন্তব্য অনেকের লেখার প্রেরনা।
একজন পরিপুর্ন ব্লগার নিজে যেমন লিখবেন, অন্যদের লেখা সম্পুর্ন পড়ে মন্তব্য দিয়ে ব্লগারকে উৎসাহ দিবেন। এই যোগ্যতা সাবিনা ইয়াসমিন এর মাঝে প্রবল ভাবে বর্তমান আছে।
আজকের এই দিনে সাবিনা ইয়াসমিন কে জানাই জন্মদিনের অফুরান শুভেচছা।
শুভ হোক জন্মদিন সাবিনা ইয়াসমিন 🎂🎂🎂
জিসান শা ইকরাম
কতটা ভালোবাসা থাকলে সহ ব্লগারকে নিয়ে এমন পোস্ট লেখা যায় তাই ভাবছি।
আপনার হাসিন দিলরুবার সাথে বন্ধুত্ব অমর হোক।
আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি সুন্দর পোস্ট দেয়ার জন্য।
আপনার দুইশত তম পোস্ট এটি! মনে হয় মাত্র সেদিন এলেন, আর এর মধ্যেই দুইশতম পোস্ট লিখে ফেললেন! এই বছরে প্রচুর লেখা চাই আপনার কাছে। আশাকরি তিনশত তম পোস্ট এ বছরই পাবো আপনার কাছ হতে।
ডাবল সেঞ্চুরি পোস্ট দেয়ার জন্য শুভেচ্ছা, অভিনন্দন।
শুভ কামনা। শুভ ব্লগিং।
রোকসানা খন্দকার রুকু
দুবছর হয়ে গেছে। অনেদিন হয়ে গেল।
অশেষ কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতিও কারন এক ছবি সেট করতে আপনার মাথা ভাজা ভাজা করে ভাবছিলাম এই মানুষের কি রাগ নেই, বিরক্তি নেই নাকি?? ভালো থাকুন🌹
খাদিজাতুল কুবরা
বাপরে বাপ কি দুর্দান্ত প্রেমময় বার্থডে গিফট। সাবিনাকে আজ হিংসে হচ্ছে কিন্তু সংযত হলাম তাঁর বিশেষ দিনটির জন্য। জন্মদিনের অযুত শুভেচ্ছা রইল।
দেরিতে এলাম বলে দুঃখিত
রোকসানা খন্দকার রুকু
ওই হিংসের চোখে সবই দুর্দান্ত লাগে। কৃতজ্ঞতা অশেষ 🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
ব্লগে আপনার বিচরণ এর দুইবছর পূর্ণ হয়েছে কিছুদিন আগে, এই পোস্টের সাথে দুইশত তম পোস্ট পূর্ণ হলো। আপনার লেখনি নিয়ে অনেক কিছু লেখা যেত, কিন্তু তাতে আপনার সবটুকু হয়তো তুলে ধরতে পারতাম না। আপনি আপনার রচনায় নিজস্বতা বজায় রেখে আরও অনেক অনেক লিখুন। লেখা গুলো শত থেকে সহস্র সংখ্যায় উন্নিত হোক এটাই প্রত্যাশা করি।
আবারও অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা অবিরাম 🌹🌹
রোকসানা খন্দকার রুকু
ভেবছিলাম দুইবছর পূর্ণ যেদিন হবে সেদিনই ২০০তম পোস্ট দিব। পরে আপনার জন্মদিন উইশটাকে ২০০তম রাখলাম। বারবার ধন্যবাদ দেবার কিছুই নেই,, আমি না দিলে কেউ তো দিতই।।। অনেক ভালো থাকুন!!!🥰🥰