শুভ্র পরী ( ০২ )

তার ছেঁড়া ৪ ডিসেম্বর ২০১৩, বুধবার, ০৫:২৯:৩৩অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি, এদেশ, গল্প ১৪ মন্তব্য

শুভ্র পরী ( ০২ )

নাবিলার সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল বুধবারে । এরপর থেকে তার আর কোন খোজ পাত্তা পাই নাই । ভেবেছিলাম পাগলামির ভূত ছেড়েছে । কিছুদিন চলে গেল । ওর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম । এক সকালে হঠাৎ পাশের ঘরে বিড়ালের ডাক শুনতে পেলাম । হার্টটা ধ্বক করে উঠল । এই প্রথম নাবিলার উপর অভিমান হল । অভিমানের কারণটাও ছিল অদ্ভুত । কেন জানি ওই বিড়ালের ডাকটা আমি আমার বিছানায় আশা করেছিলাম । হঠাৎ সংবিৎ ফিরে পেলাম । আনমনেই হাসি পেয়েছিল এইভেবে , আমি এই সব কি ভাবছি । জানি না নাবিলাকে দেখার আশায় কিনা আমি পাশের রুমে চলে গেলাম । যা দেখলাম তাতে আর একবার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল । নাবিলা নেই । তার বিড়ালটাও নেই । অন্য একটি বিড়াল জানালার সানসাইডে বসেছিল ।

৭ অক্টোবর । রাত ১২ টা পাড় হয়ে গিয়েছিল । আমার ফোনে একটা কল আসল । রিছিভ করতেই ওইপাশ থেকে কেউ মিষ্টি গলায় বলে উঠল ..……

- ছিঃ ভাইয়া আপনার কাছে এইটা আশা করি নাই ! 🙁
- এক্সকিউজ মি । কে বলছেন ? ;? ;?
- নাবিলা বলছি ।
- ও আচ্ছা ভূতনী । :D)
- কিহ ! আমি ভূতনী ! ^:^
- হ্যাঁ , পরী আর ভূতনী , ওই একই হল ।
- কখনই না ! আপনি সবসময় আমার সাথে ঝগড়া করার তালে থাকেন ।
- এনিওয়ে , কি যেন বলছিলে ?
- ও তাই তো ! দেখেছেন , আপনার সাথে ঝগড়া করতে গিয়ে আমি আসল কথাটাই ভুলে গেছি ।
- না দেখিনাই । শুনলাম ।
- আজ আমার জন্মদিন ।
- ও , হ্যাপি বার্থডে । 🙂
- শুধু এটুকুই ?
- আরো কি চাও ?
- কাল আমাকে ফুচকা খাওয়াতে হবে ।
- আমার সময় নাই ।
- প্লিজ ভাইয়া । জাস্ট একঘন্টা সময় দিবেন ।
- হুম , দেখি ।

এরপর নাবিলার সাথে অনেক কথা বলেছিলাম । আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি ভুল করছি না ঠিক করছি । কথা বলার মাঝকানে নাবিলার একটা কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম ।

- ভাইয়া গিফট দেন ।
- কিসের গিফট ?
- ভুলে গেলেন ? আমার জন্মদিনের ।
- এত্ত রাতে কই পাব ?
- জানি না । দিতে বলছি দিবেন । না হইলে কিন্তু..…… হুম !
- গিফট কই পাব এত্ত রাতে ?
- ছাদে চলে আসেন । এটাই আমার বার্থডে গিফট ।
- হায় হায় ! ছাদে কি হবে এত্তরাতে ! ^:^
- চাঁদ দেখব ।
- জানালা দিয়ে দেখ । ছাদে যেতে হবে না । ;?
- আপনি আসবেন কিনা তাই বলেন ।
- আচ্ছা , ঠিক আছে আসছি । -:-

জানিনা , কি এক অমোঘ টানে আমি ছাদে চলে গেলাম । গিয়ে দেখি ছাদের রেলিং এ হেলান দিয়ে আমার দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে নাবিলা । পড়নে ধবধবে সাদা একটা স্কার্ট । বাসাতে চুলগুলো উড়ছে । ওকে দেখে সত্যি শুভ্র পরীর মতই লাগছিল । আমি গিয়ে ওর পাশে দাড়ালাম । চাঁদের রুপালী আলোয় অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে । কিছুক্ষণ কথা বলার পর নাবিলাকে সত্যি ভালবেসে ফেলেছিলাম । ওকে বলেছিলাম

- তোমার হাতটা একটু ধরব ?
- না ।
- কেন ?
- আগে সরি বলেন ।
- কি আবার করলাম ?
- আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছিলেন সেই জন্য ।
- ও । আচ্ছা সরি ।
- এইটা কোন ধরনের সরি বলা ? একটু ভালভাবে বলেন ।
- সরি শুভ্র পরী ।
- হি হি হি । হুম , পারমিশন গ্রান্টেড । এইবার ধরতে পারেন । (3

আমার শুভ্র পরীর শুভ্র হাতটা ধরার সাথে সাথে আমার হৃদয়ে ভালবাসার হাওয়া বইতে লাগল ।ভালবাসার বাতাসে যেন আমার মন ভেসে যাচ্ছিল । কিন্তু ভাবতে পারি নাই , এই ভালবাসার হাওয়াই আমার জীবনে ঝড় হয়ে ফিরে আসবে । সেই ঝড়ে উড়ে যাবে আমার অতীত , বর্তমান আর ভবিষ্যৎ । উড়ে যাবে আমার দুইকাল । 🙁

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ