= ভাইয়া, সারাদিন ল্যাপটপ এ বসে কি করিস? ব্যস্ত?
// হুম অনেকটা।
= ভেতরে আসি?
// না আসিস না।
= প্লিজ ভাইয়া প্লিজ। একটু আসি?
// কথা! ঢং করিস না , আয়।
= ভাইয়া এমন অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাস না প্লিজ। একটু বসি?
// কথা তুই যে ঢংগি তা আমি জানি কিন্তু আজ একটু বেশি বেশি হচ্ছে না?
= কথা ঢংগী মেয়ে? আমি ঢংগী? আমি সারাক্ষণ ঢং করি? আচ্ছা আমি চলে গেলাম।
// যা না বাবা যা।
= এই দরজা পেরিয়েছি কিন্তু। গেলাম…..
// এই যা ভাগ ঢংগী।
= হুম যাই যাই। সাথে এগুলাও ভুলে যাই যে “নীইইলু” কি ফুল পছন্দ করে, কি রঙ পছন্দ করে, কি খাবার, কোন জায়গা এসবও ভুলে যাই কেমন?
// ( নীলু? ওহ মাই গড) কথা? এই কথা? বুনু? এই বুনু? শোন না? বলছিলাম কি, আয় না বোস আমার সামনের চেয়ারে। একটু গল্প করি। পড়াশোনা, থিসিস এসব ঝামেলায় কতদিন গল্প করিনা তোর সাথে।
= আচ্ছা বসলাম। আর কখনও ঢংগি বলবি না তো?
// জীবনেও না। ইয়ে তুই নীলুকে চিনিস কিভাবে?
= সব বলবো কিন্তু কন্ডিশন আছে কিছু।
// কী চাই বল? আইসক্রিম খাবি? চকলেট? নাকি আমার বুকসেল্ফ এর কোন রো চাই তোর বল না বল?
= ভাইয়া আমি কিসে পড়ি?
// সেকেন্ড ইয়ার অনার্স।
= আমি তো অনেক বড় বল?
// তা অবশ্য।
= আমার চাওয়াটাও একটু বড়।
// আচ্ছা বল শুনি।
= তোর ফোন বুকের সেকেন্ড নম্বরটা।
// লেট মী চেক, আবির!!!?
= আবির নামে সেইভ আছে? তাহলে ওটাই।
// কথা!!!
= ভাইয়া তুই না দিতে চাইলে বল আমি চলে যাবো। আর নীলুদির চিঠিটাও নীলুদি কে ফেরত দিয়ে দেবো। বলে দেবো তোর চিঠি পড়া ভালো লাগে না।
// না না চলে যাওয়ার কি দরকার! আবির ছেলেটা অবশ্য ভালো। আর আমার বিশ্বাস সে তোকে….. সে যাক।
= ভাইয়া তুই একটা কাগজে লিখে দে নম্বরটা। আমি বাম হাতে নেবো সেই কাগজ আর ডানহাতে নীলুদির চিঠি তোকে দেবো। গিভ এন্ড টেক এর দুনিয়া ভাইয়া। সেটা ভুললে কি চলে?
// পাঁকা পাঁকা কথা শিখেছিস না? টেবিলে রাখা আছে নম্বর ওটা নিয়ে নীলুর লেখা কাগজটা আমায় দিয়ে যা।
= ভাইয়া…….
// যা ভাগ…..
“বৃত্ত”
এই চিঠি ছিঁড়ে ফেলো। ছিঁড়ে ফেলো বলছি। কি হলো? তাও পড়ছোই যে? থামো বলছি। থামলে না তো! তাহলে তুমি ততোটাও ভীতু না। তাহলে যেদিন দেখলে সেদিনই প্রপোজ করলে না কেনো? তুমি যে একটা বুদ্ধুও। কিভাবে ৩ বছর না বলে চুপ করে ছিলে ভেবেই পাই না। তিন বছর আগের সেই মেলায় আমায় দেখে দুহাতে মুখ ঢেকে ফেলেছিলে। প্রথমে ভেবেছিলাম আমায় বিচ্ছিরি লাগছে কিন্তু তোমার নিঃশ্বাসে তোমারই চশমার ঘোলা কাঁচের মাঝ দিয়ে যখন তোমার চোখ দেখেছিলাম তখনই বুঝেছি “কী”। একটিবার সাহস করে বলতে পারলে না? সব মেয়ে চায় ছেলেরা আগে বলুক। বুদ্ধু একটা। বোন কে বলে খোঁজ নিতে পারে অথচ আমায় বলতে পারে না! ভীতু একটা। আমি কি বাঘ নাকি রাক্ষস? খেয়ে ফেলতাম তোমাকে?
পহেলা বৈশাখ! বিকেল ৫ টা। যেখানে প্রথম দেখেছিলে।
ও হ্যাঁ একটা কথা বলতে ভুলে গেছি তোমায় নীল রঙ এর পাঞ্জাবী তে খুব মানায়।
নীলু।
= ভাইয়া? এই ভাইয়া? চিঠির ভেতর ঢুকে যাবি নাকি?
// কি হইছে?
= আর একটা কথা ভুলে গেছি।
// কী?
= আজ থেকে ২২ কি ২৩ বছর আগে বৈশাখ এর প্রথম দিনে “নীলু” নামের এক মেয়ের জন্ম হয়েছিলো, যে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া খুব পছন্দ করে। আর টং এর দোকানে বসে চা খেতেও……
২৫টি মন্তব্য
চাটিগাঁ থেকে বাহার
শেষ!
মেহেরী তাজ
কি জানি কি হলো!!!
শুন্য শুন্যালয়
বাব্বাহ কথা তো দেখি পাক্কা বুড়ি, চামে আরেকজনের নাম্বার নিয়ে নিলো! 🙂
বৈশাখের শুরুতে নীল পাঞ্জাবি পরা যুবক কৃষ্ণচূড়া হাতে টং ঘরে আর দুজনের চায়ের চুমুকে আমাদের সবার দাওয়াত। বা জন্মদিনের দাওয়াত চাইতেই পারি।
মিষ্টি গল্প কিন্তু 🙂
মেহেরী তাজ
তিনবছর পরে এই সুযোগ আসছে। তুমি/ তোমরাও থাকতে চাও সেখানে?
গেলো! এবারেও গেলো! সব আশা ভরশা সব শেষ। ^:^
হৃদয়ের স্পন্দন
^:^ ;(
মেহেরী তাজ
;? -:-
নীহারিকা
ভাইয়ের কাছ থেকে এইভাবে ফোন নম্বর চাইলে ভাই আমারে আস্ত রাখবে না রে….
মেহেরী তাজ
আপু নম্বর তো নেওয়া যেতেই পারে বলেন? নম্বরে কি এলো গেলো?
এমনও তো হতে পারে যে নম্বর চাওয়া টাও ভাইয়ের জন্যই।
ইঞ্জা
বাহ, এই না হলে আমার বন্ধুকওয়ালি আপু হওয়া যায়, কিন্তু মন ভরলোনা, একটুকুতেই টুস। :p
মেহেরী তাজ
ভাইজান পরের লেখাটায় যাতে মন ভরে লেখার সময় তা স্মরণ রাখবো।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকবেন।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কই গেলো তাজঁ আপু। -{@ গল্পতো ফাটাফাটি।
মেহেরী তাজ
আমি কোথাই গেছি? ;? এখানেই তো ছিলাম।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছাইরাছ হেলাল
একদম পাক্কা!! অকালপক্ব বলিনি!!
টংয়ে আমাগো-ও যাইতে মুঞ্চায়।
মেহেরী তাজ
অকাল পক্ক নয়। শুধু পাক্কা। উক্কে।
টং এর সাথে মনে হয় কোন অদৃশ্য চুম্বক আছে যা সবায় কে টানে।
নীলাঞ্জনা নীলা
এটা কি হলো!? এভাবে তাড়াতাড়ি শেষ করে দেয়া ঠিক হয়নি কিন্তু পিচ্চি আপু।
ডুবে গিয়েছিলাম গল্পের ভেতর, তারপর হঠাৎ দেখি কূলে বসে আছি।
খুবই ভালো লিখেছেন।
মেহেরী তাজ
কেমন করে যেনো শেষ হয়ে গেলো আপু।
পরের বার ঠিক মনে রাখবো “এতো তাড়াতাড়ি শেষ করা যাবে না”।
ধন্যবাদ আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
আসলেই একটা কথা খুব সত্যি। যে লেখা পড়তে ভালো লাগে, সেটা জলদি শেষ হয়ে যায়।
শেষ হবার পর মনটা খারাপ হয়ে যায়, মন জিজ্ঞাসা করে কেন এতো ছোট হয় গল্প?
নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা পিচ্চি আপু।
অনেক ভালো থাকবেন।
মেহেরী তাজ
আপনাকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রিয় আপু।
মিষ্টি জিন
ছোট মানুষ কিন্তু বুদ্ধি তো সেই লেভেলের । ভাইয়ার কাছ থেকে নাম্বারটা শেষ পর্যন্ত আদায় করে নিলেন।
গল্প ভালো হয়েছে।
মেহেরী তাজ
আপু ছোট রা ও পাক্কু হয়।
ধন্যবাদ আপু।
আবু খায়ের আনিছ
পাকনা পাকনা কথা বলে ছোট মানুষ সেজেঁ বড় কাজ করে ফেলেছে। অসাধারণ হয়েছে ।
মেহেরী তাজ
এখনকার ছোট রা কি আর সেই ছোট থাকে নাকি ভাই।?
ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
কথা কথা জানে।
কথা বলা একটি আর্ট,
কথা দিয়ে একটি গল্প লেখা আরো বড় আর্ট।
টং ঘরের চা, আমাকেও খুব টানে।
মেহেরী তাজ
দাদা মাঝে মাঝে সময় করে কোন টং এ বসতেই পারো। কারন টং এর চায়ের টেস্ট অন্য যেকোন চায়ের চেয়ে বেশি ভালো। আমার মনে হয় আর কি!