শুনতে পাও এখন; সোনেলা

নাজমুল হুদা ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ০৫:৪৭:৫৬অপরাহ্ন সোনেলা বার্তা ৪১ মন্তব্য

কবিতা: ২৫ শে মে; আঁকড়ে ধরা শিখেছি
__নাজমুল হুদা

২৫ শে মে মধ্যদুপুরে
তুমুল আর্কষণে টেনে নিয়ে গেছিলো আমাকে
সাবলীলভাবে; তোমাকে ধারণ করে কারো বাক্য।

সেদিন থেকে আস্তে আস্তে ঝুঁকে গেছি ভারসাম্যতায়
অনুভব করি ঘাস ফড়িংয়ের মতো তোমায়
কনকনে ভোরের আলোয় শিশির ধোঁয়া ঘাসে।

যেমন কেউ প্রেমিক সেজে প্রেমিকার হাত ধরে
শামুকের মতো; ভারী বৃষ্টিতে আঁকড়ে নেয় মাটির বুক

সেই আমিও আঁকড়ে ধরা শিখেছি ২৫ শে মে তপ্ত দুপুরে;

তারপর তোমার ফুসফুসে-
দেখেছি কত শত শালিক বকের উড়োউড়ি
দেখেছি বোনের আগলে রাখার পরশ পাথর
দেখেছি ভাইয়ের হাতে স্ফুলিঙ্গ মহানুভবতা

২৫ শে মে হাতে হাত রাখার সূচনা হলেও
কত তারিখহীন বেসামাল ডুবে গেছি তোমার উঠোনে

তখনেই শুনতে পেয়েছি আমার প্রিয় কারো চোখে
তোমাকে ছিঁড়ে খাওয়ার গল্প-
শুনতে পাই শকুনের মুখোশবাদী খামখেয়ালি
শুনতে পাই শব্দে শব্দে উত্তেজনার জোনাকি
শুনতে পাই হার না মানা তুমি সেই কত মহীয়সী।

অতঃপর, সেই ২৫ শে মে আমি
কবিতার মতোই কিশোরী তোমার হাত পুষেছি বলে
শুনতে পাও এখন; সোনেলা ভালোবাসি.. ভালোবাসি!

রচনা: ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৯
নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ।

সোনেলার জন্ম মাস উপলক্ষে কবিতাটি উৎসর্গ করলাম সোনেলাকে। এই কবিতার চিত্রকল্প পুরোপুরি বুঝতে হলে আপনাকে ।আমাকে তুলে ধরতে হবে সোনেলাকে নিয়ে নিজের কিছু একান্ত কথা।

২৫ শে মে ২০১৯ সাল সেদিন সোনেলায় আমার পূর্ণ আগমন ঘটে । পূর্ণ আগমন বললাম এইজন্য কারণ সোনেলার আগমন ঘটে আমার ভিতর আরো অনেক আগেই‌।

সেই প্রেক্ষাপট জানতে হলে ফিরে তাকাতে হবে পিছনের সময়ে। স্মৃতিচারণ করতে হবে কিছু গুণী মানুষের অবদানের কথা। আমি ফেইসবুক এ্যাকাউন্ট খোলা এবং চালানো শিখি ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর। এখন যেমন ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন পাওয়া যায় তখন সেই সময়টায় বাটন ফোন ছাড়া স্মার্টফোন ছিলো মধ্যবিত্ত সচেতন পরিবারের সন্তানদের জন্য কল্পনাতীত বিলাসবহুল বস্তু।

এরপর থেকে ফেইসবুকে আমার অবাধ বিচরণ শুরু হয় ছন্দ ছন্দে কথা সাজিয়ে পোস্ট করা । এভাবেই ছন্দে ছন্দে কিছু মানুষের মনে জায়গায় করে নেই যেগুলোকে তারা কবিতা বললেও আমি মুখ ফুটে কবিতা বলতে ভয় পেতাম। ফেইসবুকে এভাবেই বন্ধু তালিকা বাড়তে থাকে আর পরিচিতিও বাড়তে থাকে । একদিন যুক্ত হই কোনো এক ভাগ্যচক্রে ''মা মাটির মানুষ'' নামের সাহিত্য গ্রুপটিতে । সেখানে মাঝে মাঝে নিজের লেখা পোস্ট করার আর অন্যের লেখায় মন্তব্য করার মধ্যে দিয়ে চোখে আসে শ্রদ্ধেয় মনির হোসেন মমি ভাইয়ার নামটি । দেখি মা মাটি মানুষ গ্রুপ থেকে ভাইয়া আমার লেখা "তারুণ্যের জমজকন্যা" কবিতাটি শেয়ার করেন উনার টাইম লাইনে। ভাইয়ার টাইমলাইন ঘুরতে ঘুরতে বিভিন্ন পোস্টে লিংকে দেখতাম সোনেলা নামটি। তখন থেকেই সোনেলার আমার ভিতরে আগমন ঘটে। মনে মনে ভাবতাম আমি যদি এখানে লিখতে পারতাম। তখনও সোনেলার ভিতরে ঢুকতে পারি নাই ।

আরো কিছু সময় পেরিয়ে যায় । আরেকটি নাম চোখের সামনে ঘুরপাক খায় যিনি হলেন শ্রদ্ধেয় তৌহিদুল ইসলাম ভাইয়া। ভাইয়াকে ফেইসবুকে দেখে এবং পোস্ট পড়ে রাগী ভাইয়া মনে করতাম । হয়ত ভাবছেন ভালো মনের একজন মানুষকে হঠাৎ রাগী কেন বললাম। সেটার জন্য আপনাকে আরেকটু মনোযোগ দিয়ে সামনে যেতে হবে।

হঠাৎ একদিন ভাইয়ার একটার মেসেজ আসলো মেসেঞ্জারে।
- সোনেলা ব্লগে ব্লগারদের লেখাগুলি যাতে আপনি পড়তে পারেন সেইজন্য সোনেলা গ্রুপ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সোনেলার গ্রুপ ইনভাইটেশন সাদরে গ্রহণ করে পাশেই থাকুন । আপনিও হতে পারেন একজন ভবিষ্যত ব্লগার।
- ধন্যবাদ ভাই
-দাদা গ্রুপে এ্যাড হবেন কিন্তু।
- রিকুয়েস্ট দিয়েছি
-ওকে

তারপর সেদিনেই নিবন্ধন করে সোনেলার ভিতরে আমার পূর্ণ আগমন ঘটে। পোস্ট করি ব্লগে প্রথমেই- "অপ্সরীর ঘুমোপখ্যান" নামক আমার কবিতাটি । এরপর মন্তব্যে মন্তব্যে সবার সাথে পরিচয় আর আপন করে নেওয়ার অধ্যায় শুরু । সোনেলা তখন হয়ে উঠে আপন একজন কেউ । সেই লেখায় প্রথম ব্লগার সাবিনা ইয়াসমিন আপু মন্তব্যে বুঝতে পারি ব্লগের আপুরা কত স্নেহের সহিত আপন করে নেন সোনেলার সদস্যদের ।

হঠাৎ একদিন তৌহিদ ভাইয়া মেসেঞ্জারে কল দেন । নয় মিনিট কথা হয় । কথায়  কথায় সেদিন ভাইয়াকে বলি,

- ভাইয়া আপনাকে কিন্তু আমার অনেক রাগী মনে হয়।

ভাইয়াও বলেন ,

- হ্যাঁ আমি অনেক রাগী। কিন্তু ভাইয়া আমাকে বারবার আপনি আপনি বলে ডাকাতে লজ্জায় আর হাসতে পারলাম না । বললাম, ভাইয়া আমাকে তুমি করে বলবেন । কিন্তু আজও ভাইয়া আমাকে তুমি করে বলে না।

দূভার্গ্যবশত সোনেলা থেকে আমাকে টানতে নতুন ব্লগ লিংক আসে ইনবক্সে। মলম পার্টির মতো টেনে নেয় সেই ব্লগে তারপর সেখানে একটা কবিতা পোস্ট করি এবং লিংক শেয়ার করি । আমি তখন জানতাম না যে সেই মলম পার্টির বিজ্ঞ মশাই সোনেলা বিতাড়িত চক্রান্তকারীদের কেউ একজন। তখন ভাইয়া সেদিন  নয় মিনিট আমাকে উৎসাহ দেন ও মলম পার্টি থেকে সর্তকতা থাকার জন্য সর্তকতা করে দেন। জিসান ভাইয়া, সাবিনা আপুও ইনবক্সে বিভিন্ন সময় উৎসাহ দেন। এবং সোনেলায় কম উপস্থিতির জরিমানাহীন স্নেহমাখা জবাবদিহিতা নেন । যা সোনেলার প্রতি আমাকে আরো আকৃষ্ট করে তুলে। যদিও পড়াশোনার জন্য তেমন সময় দিতে পারি না ।

জন্মমাস উপলক্ষে ব্লগার বীথি আপু একটি লেখায় বলেছেন,
-"সোনেলার সকল  পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানদের ও  নাতি-নাতনি কে শুভেচ্ছা জানাই।"
আমিও সোনেলা নামটিকে একটি নারী চরিত্র মনে করি। কিন্তু আমি সোনেলার পুত্র সন্তান নই, আবার নাতিও নই। সোনেলাকে শুধু আমি আমার একটি বিশেষ নারী চরিত্র মনে করি এবং ভালোবাসি ।

এইজন্য আমার কবিতায় বলি,

''অতঃপর, সেই ২৫ শে মে আমি
কবিতার মতোই কিশোরী তোমার হাত পুষেছি বলে
শুনতে পাও এখন; সোনেলা ভালোবাসি.. ভালোবাসি!

জন্মমাসে জয় হোক সোনেলার ও সকল ব্লগারদের।

0 Shares

৪১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ