গবেষণায় উঠে এসেছে বাবামা অভাবে এবং সচেতনতার অভাবে বাচ্চাদের কে দিয়ে কাজে পাঠিয়ে টাকা উপার্জন করিয়ে নায়। নিচের উদাহরণে তা ফুটে উঠেছে ।যা কিনা বাচ্চাদের অধিকার নষ্ট করে।
ময়নার গল্প ,বাংলাদেশ
বাবামার অভাবের সংসার। তার উপরে 'মরার উপর খাঁড়ার ঘা' রিকশা চালক বাবা দুর্ঘটনায় এখন সহ্যাশায়ী । একগাদা ভাইবোনের সবার বড়ো ময়না। বয়স ৭/৮ হবে। মাকে কেউ বাড়ির কাজে নায়না কারন তার ছোটো বাচ্চা কোলে। খাওয়ার অভাবে পেটের জ্বালায় ময়নাকে বাসা বাড়িতে কাজে দিয়ে আসে এক খালার সাহায্যে । থাকা খাওয়া, রাতে থাকা আর বেতন মার হাতে যাবে মাস শেষে। ময়নার খাওয়া জুটলেও বিনিময়ে অনেক অত্যাচার তার বদলে আরম্ভ হয়।
ক্ষিদার জ্বালায় মানুষের বিবেক লোপ পায়।তা না হলে এতোটুকু বাচ্চাকে কেউ কাজে দায় ? ছোটো ময়নার কাজের অভিজ্ঞতা নাই তার উপরে পরিপক্বতা একেবারে কম। জিনিস পত্র হাত থেকে পড়ে, বিছানা ঠিক মতো গুছাতে পারেনা,মেঝে পরিষ্কার করতে গিয়ে ধুলাময়লা থেকে যায়। প্রথম দিকে ধাক্কা দেয়া তার পরে একটু একটু করে বেশি কষ্ট দিয়ে মারধোর । শাস্তি বাড়তে বাড়তে গরম ছেচকির ছেঁকা ,গায়ে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে ফোস্কা তুলা, মাথা দেয়ালে ঠুকে মাথার রক্ত বেরকরা। বাড়ির গিন্নী আর কর্তাকে দেখলে ট্রমাটাইজ হয়ে যায় ময়না । কি ভাবে পালাবে পথ খুঁজে। খাঁচায় বন্দী জন্তুর মতো উপায় হীন অবস্থায় তার দিন কাটে।
অনেক মানুষের মধ্যে একটা শয়তান মন থাকে । আর সেটা হল মানুষকে অসহায় করে দিয়ে কষ্ট দেয়া আর তা করে এনজয় বা উপভোগ করা।ময়না অসহায় আর তার নিয়োগ কর্তা এভাবেই তাকে ব্যাবহার করছে।
রজব আলী আর তার পাঁচ সন্তানের অভাবের তাড়নায় লন্ডন আসার গল্প
পাঁচ সন্তানের হাত ধরে রজব আলী আজ প্লেনে উঠলো । সাথে বাচ্চাদের মা আয়েশা বিবি। মনে কোন শঙ্কা নাই তাদের, দেশ ছেড়ে যাওয়ার কষ্টও নাই। সময় টা বাংলাদেশ হওয়ার পরপরেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ে । চারদিকে হাহাকার, ভুখা নাঙা মানুষ চারদিকে। দেশে কোন খাওয়া নাই, থাকার জায়গা নাই,পরনের কাপড় নাই, চিকিৎসা সেবা ওষুধকিছুই নাই।তাদের কোন পিছু টান ছিলনা। কেউতো তাদের খাবার দিবেনা। থাকতেও দিবেনা। পেটের ধান্ধায় মানুষ দেশান্তরী হয়। শখে নয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেনের কল-কারখানার বিল্ডিং থাকার বাড়িঘর ধংষ স্তুপে পরিণত হয়। তাছাড়া ইন্ডাস্ট্রিতে সস্তা শ্রমিক দরকার। সেই সময় তাদের তাগিদেই প্লেন ভাড়া এবং ভিসা দিয়ে মানুষ নিয়েছিল ব্রিটেন। রজব আলী সেই দলের সামিল হয়।
রজব আলী নিজেই নীরক্ষর তার বিবি তো মেয়ে মানুষ তার তো শিক্ষা পাওয়ার আরও কথা নয়। বারো বছর বয়েসে আয়েশা বিবি রজব আলীর ঘরণী হয়ে রজব আলীর ঘরে আসে। স্কুল বাধ্যতা মূলক ছিলনা। বাল্য বিবাহর ছিল ঘরে ঘরে।
ব্রিটেনে তখন আইন হয়ে গেছে শিশু শ্রম বন্ধের এবং স্কুল বাধ্যতা মূলক ষোল পর্যন্ত ।স্কুলে না দিলে বাবামাকে জেলে পাঠানো হবে আর এই জন্যই ব্যাধ্য হয়ে স্কুলে পাঠায় রজব আলী । শিক্ষার জন্য নয়।
রজব আলী লন্ডনে নেমে কাজ পায় একটা স্টিলের ফ্যাক্টরিতে । ভারী ভারী লোহার শিক কাঁধে নিয়ে রজব আলীকে লরি বোঝায় করতে হতো। বাধ সাধল তার অসুস্থতা । ডায়াবেটিস আর হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে । কাজ বাদ দায় রজব আলী । সংসার চালানোর দায় এসে পড়ে সন্তানের উপর । শনি রবি ছুটির দিন আর সামার হলিডেতে বাচ্চাদের কে রজব আলী কাজে লাগায় । বাংলালী দের অনেক রেস্টুরেন্ট চারদিকে।কাছাকাছি রেস্টুরেন্ট না থাকলে ম্যানচেস্টার , বারমিংহাম। স্কটল্যান্ড যেখানে কাজ পাও সেখানেই যাও, এই ছিল বাবার কাজ । অথচ বাবা বেকার ভাতা পেতো। ছোট ছোট বাচ্চাকে রাতে রেস্টুরেন্টে থাকতে হত অন্য বয়স্ক লেবার দের সাথে । যা কিনা অতি বিপদজনক একটা বাচ্চার নিরাপত্তার জন্য। রেস্টুরেন্ট যেহেতু রাতে খুলে তাই স্কুল শেষে তারা রেস্টুরেন্টে কাজ করতো।
পড়াশুনার মর্ম তারা কেউ বুঝেনা। স্কুলে যেতে হয় তাই যায়। জানেনা স্কুলে কি পড়ায় বুঝেও না স্কুলের সিস্টেম বা হোম ওয়ার্ক । ইংলিশ বলতে পারেনা মা- বাবা। । টিচার ডেকে কিছু বললে সেটা তারা কিছুই বুঝতনা। স্কুলে পাঠানো একটা গুরুতপুর্ন বিষয় তার ঘুণাক্ষর জ্ঞান ছিলনা বাবার ।
ছেলেদের দিয়ে অর্থ উপার্জন করানোই তার উদ্দেশ্য । ছেলেদের পড়াশুনার অগ্রগতি শিকেই উঠলো। এই ছিল রজব আলীর পরিবারে 'শিশু শ্রমের' গল্প।
১৮৩৪ সালে আইন পাস করে শিশু শ্রম বন্ধ করা হয়। নিচের ঘটনাটি তার আগের । শিশুদের স্কুল ষোল বছর পর্যন্ত তখনও কম্পালসারি হয়নি।
চার্লস, অলিভার আর জন ব্রাউন দের গল্প ( ব্রিটেন )
সকাল সাড়ে ছয় টায় মা এসে তাড়া দিয়ে গেল ঘুম থেকে উঠার জন্য।
ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছা করেনা ছোট্ট চার্লসের । মাত্র বারো বছর বয়েসের বালক ছেলেটি আট ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় । বাবা ঋণের দায়ে জেলে গেছে। পরিবারের ভাত কাপড়ের জোগান দিতে কাঁধে নিতে হয়েছে দায়িত্ব। ছাড়তে হয়েছে স্কুল ।
একটা জুতো তৈরির কারখানায় কাজ নায় চার্লস । সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খাটতে হয় তাকে। বাসায় এসে ছোট্ট বালকটির গায়ে কোন শক্তি থাকেনা। তার মতো আরও ছোটো ছোটো ছেলে মেয়ে কাজ করে সেখানে। সকলের কাজ করার কারন একটাই 'দারিদ্র' ।
ছেলেটি আর কেউ না । বিশ্ব বিখ্যাত উপন্যাসিক 'চার্লস ডিকেনস' । যার ছিল সমাজ এবং মানুষকে অবজার্ভ করার অপরিসীম শক্তি। জন্ম ১৮১২ সালে মৃত্যু ১৮৭০। পোর্টস মাউথে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি । পনেরোটি নভেল, শত শত ছোটো গল্প এবং ননফিক্সন আর্টিকেল লিখেছেন এবং চিলড্রেন দের অধিকার নিয়ে ক্যাম্পেন করেন তিনি।
ওয়েস্টার্ন কালচার এর ভিত, শিল্প বিপ্লব এবং শিশু শ্রম ( চার্লস ডিকেন্সের 'অলিভার টুইস্ট' গল্পে শিশু শ্রমিক এবং তাদের পারিবারিক অবস্থা)
যাদের রক্তে আর ঘামে ইউরোপে সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন এবং শিল্প প্রধান দেশে পরিণত হওয়া তাদের বেশির ভাগেই হত দরিদ্র লেবার শ্রেণী এবং ছোটো ছোটো অভাবী শিশু। যে শিশু দের মুখে থাকেনা শিশু সুলভ হাসি খুশি ভাব। থাকে সিরিয়াস ,ভীত চেহারা যা প্লাস্টার দিয়ে লাগানো থাকে সবসময়। যা দেখে একজন সহানুভূতিশীল মানুষ ভাববে কি ভাবে তারা এপথে এলো ইতিহাসে এদের জীবন ধারা লিখিত থাকবে,আধুনিক সময়ে মানুষ ভাববে কি ভাবে এরা বেঁচে ছিল কি ভাবে সম্ভব।
তখন কোন শিশু শ্রম বন্ধের আইন ছিলনা, ফ্রি স্কুল ছিলনা, গরীবদের জন্য আবাসস্থল এবং ফ্রি চিকিৎসা ছিলনা।
অনাহারী ছোটো ছোটো শিশু ভয়ার্ত ভাব চোখে মুখে নিয়ে শহরে মুভ করতো কাজের আশায় কাজ পেত কল কারখানায়।
কেন এতো অল্প বয়েসে তারাকে কাজে নিত ফ্যাক্টরি মালিকরা?
শিল্প বিপ্লবের সময় বহু পরিবার অতি দরিদ্র অথবা নিম্ন বিত্ত (লোয়ার মিডিল ক্লাস) পরিবার ছিল । যথেষ্ট টাকা পয়সা তাদের হাতে ছিলনা জীবন ধারণের বেসিক চাহিদা মেটানোর । পরিবারের চাহিদা মেটানো একটা কঠিন ব্যাপার ছিল। তাই ১৮০০ সালের দিকে যেখানে যেখানে কলকারখানা গোড়ে উঠেছিল সেখানে সেখানে তারা এসে জড়ো হত কাজের আশায়।
তারপর কাজ পেলেও মজুরী পেত খুব কম মানুষ। যার ফলে বহু পরিবার কাজ পেলেও সাপ্লিমেন্ট কাজ খুঁজে বেড়াতো । সমস্ত পরিবারের এতোই কঠিন জীবন ছিল যে হয় তারা ঋণের বোঝা নিয়ে ডুবে থাকতো না হয় ছোটো ছোটো বাচ্চাদের কাজে লাগিয়ে দিতো পয়সা কামানোর জন্য।
"capitalised blood of children" কার্ল মার্ক্স এর উক্তি ।
কেমন ছিল তাদের জীবনমান
"ব্রিটিশ ন্যাসান্যাল আর্চিভস" (British National Archives) এর গবেষণায় উঠে আসে তাদের জীবন মান যা কিনা ছিল খুব বিপদজনক। ঘিঞ্জি অন্ধকার ঘরবাড়ি ,যেখানে টয়লেট থাকতো বাইরে কারন তা ছিল দুর্গন্ধময়, ফ্লাস সিস্টেম ছিলনা । কোন বাড়িতে গোছলখানা ছিলনা। শীতের দেশ কিন্তু ইলেকট্রিসিটি ছিলনা ,ঘর গরম করা হত কয়লা দিয়ে। কয়লার চুল্লি দিয়ে কোনমতে পানি গরম করে একটা বড়ো মেটালের পাত্রে রেখে সেখানে গোসল সারত আর তার রেখে যাওয়া ময়লা পানিতে একেক করে পরিবারের বাকি সবায় বসে গোসল সারত। প্রত্যেকের জন্য আলাদা পানি রাখা সম্ভব ছিলনা। যার ফলে মাসে মাত্র একবার গোসল করতো সবায়। টাকা বাঁচানোর জন্য। অনেক বাড়িতে টয়লেট ছিলনা তাই মল একটা পাত্রে পরিত্যাগ করে জানালা দিয়ে ফেলে দিতো। কোথাও স্যানেটেসন ছিলনা, ছিলনা ড্রেনেজ সিস্টেম। পুরো বাড়িতে সামনের ঘরে মাত্র একটা ছোটো জানালা ছিল যার ফলে সমস্ত বাড়ি অন্ধরকার ময় হয়ে থাকতো।
কিছু কিছু ফ্যাক্টরি মালিক লেবার দের জন্য ঘরবাড়ি বানালেও তা শুধু তাদের বেনিফিটের জন্য ওয়ার্কারদের বেনিফিটের জন্য নয়। তা ছিল সস্তা ম্যাটেরিয়ালএবং অল্প সময়ে তাড়াহুড়া করে বানানো । যেখানে কোনমতে মাথা গুঁজা যেতো। প্রত্যেক পরিবারে অনেক গুলো করে ছেলে মেয়ে ছিল ।পরিবার পরিকল্পনা তখন হয়নি। যার ফলে গাদা গাদি করে সবায় থাকতো । পরিষ্কার পানি পানকরার জন্য ছিলনা। যার ফলে পানি বাহিত অসুখ বিসুখ যেমন কলেরা মহামারি হিসাবে এসে অনেক মানুষের মৃত্যু একটা সাধারণ ব্যাপার ছিল । এই শ্রেণীকে বলা হত "Back to Back" অর্থাৎ 'পেছনে পড়া জনগস্টি থেকেও পেছনে থাকা মানুষ' ।
খাদ্য
প্রফেসার Anthonys Wohl এর গবেষণায় দেখা যায় তাদের খাবার ছিল একেবারে সাদামাটা। যা ছিল সবচেয়ে সস্তা আলু, রুটি আর চা । মাংস ছিল বিলাসিতা। তা শুধু আপার ক্লাস মানুষ জনের খাবার ছিল। ১৭% শ্রমিক মাংস কি তার স্বাদ জানেনা। অপুষ্টি খাবার এবং অস্বাস্থ্যকর বাড়িতে থাকার জন্য রোগ প্রধিরধের ক্ষমতা ছিলনা। যার ফলে অসুখ বিসুখ লেগেই থাকতো । অকাল মৃত্যু এবং মৃত্যু হার দুটোই বেশি ছিল।
Paxton Price এর গবেষণা 'ভিক্টোরিয়ান চাইল্ড লেবার'
এ দেখা যায় কলকারখানায় দৈনিক দশ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করতো এরা। কোল মাইনিং ,চিমনি পরিষ্কার শিশুরা করতো বেশি ছোটো খাটো শরীর চিমনি দিয়ে অনায়সে ঢুকে যেতো। তাছাড়া কটন লুমের মেশিনের নিচ পরিষ্কার করা যখন মেশিন চালু অবস্থায় থাকতো তখনও তাড়া হামাগুড়ি দিয়ে করতোএবং মেশিনের উপরে দাঁড়িয়ে সুতোই গিট দেয়া ছোটো মানুষ দাঁড়িয়ে সহজেই করে ফেলত। অল্প বয়স থাকায় যা বলা হত তাই শুনা , অসহায়ত্ব আর বেকারত্বকে কাজে লাগিয়ে অল্প মজুরীতে তাদের কে নিয়োগ দেয়া হত।"কাজ একটু ভুল হলে সুপার ভাইজার চামড়ার বেল্ট দিয়ে মারধোর করতো" John brown,১৮২৮ 'লাইওন' নিউজ পেপার
অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোন আইন ছিলনা, ছিলনা সেফ গার্ড ।
এইসব অত্যাচার দুর্বিসহ জীবন ছোটো বাচ্চাদের প্রভাবিত করে ট্রুমাটাইজে ভুক্ত এবং বয়ঃপ্রাপ্ত হলে মানসিক রোগে আক্রান্ত হত।
মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা ভালো ভালো স্কুলে যেতো। বাড়িতে কাজ করার আয়া থাকতো ছোটবেলায় ন্যানি বা গভরনেস থাকতো।স্কুল থেকে এসে হোম টিউটর থাকতো। তাদের বাবারা ব্যাঙ্ক ওনার বা ব্যাবসায়ী ছিল। যার ফলে তাদের জীবন ছিল উজ্জ্বল ও সম্পদশালী ।
এই ঘটনা গুলো চার্লস ডিকেন্স তার বিখ্যাত উপন্যাস "অলিভার টুইস্ট" ফিল্মে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছিলেন । যেখানে ছিল তার নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি ।
যুদ্ধে শিশুর ব্যাবহার
যুদ্ধে শিশু ব্যাবহার এবং তাদের কাঁধে গান দিয়ে যুদ্ধে ব্যাবহার একটা রীতিমত অন্যায় কাজ।ছোটো বলে যা বলা হয় তাই শুনে। সহজেই ইনফ্লুয়েন্স করা যায়। অর্ডার দেয়া যায়। পেছনে থাকে দারিদ্র আর প্রোপাগান্ডা । ১৯৪৯ সালে বলা হয়েছিলো আর্মিতে নেয়ার বয়স ১৫ হতে হবে। ইউনিসেফ এবং UN ঘোষণা দায় শিশুদের যুদ্ধে ব্যাবহার করা যাবেনা।
Graca Machels একটা গবেষণা চালায় এর উপরে। তাতে দেখা যায় যুদ্ধ, যুদ্ধাস্ত্র,কনফ্লিক্ট কিভাবে বাচ্চাদের উপরে প্রভাব ফেলে। যুদ্ধে শিশুরাই প্রথমে ভিকটিম হয়। লরেন নামক একজন নারী যিনি চার বাচ্চার মা ছিলেন। তার প্রথম বাচ্চাকে জোরপুর্বক আর্মিতে যোগ দিয়ে ভিয়েতনাম পাঠানো হয়। পরে তিনি একটি পোস্টার বানান যাতে লেখা ছিল "war is not healthy for children and other living things" এই পোস্টারটি প্রভাব ফেলে সমস্ত জাতীকে। তারপরে ১৯৮৯ সালে রাইটস অফ চিলড্রেন থেকে আইন পাস হয় আর্মি তে ভর্তি হওয়ার বয়স ১৮ হতে হবে।
"তোমাদের ছেলেমেয়ে কিন্তু তাদের দায়িত্ব দেশের এবং সরকারের " শিশু শ্রম বন্ধের আইন পাস ।
শিশু দের কাজে পাঠানো মানে তাদের খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত করা। কারন শিশুকাল হল খেলার বয়স। এটা তাদের অধিকার। তাছাড়া স্কুলে যাওয়ার সময় এটা। কাজে গেলে রেগুলার স্কুলে যেতে পারবেনা। শিশু শ্রম সামাজিক, শারীরিক, মানসিক এবং মরালী হার্ম ফুল।
সারা পৃথিবী জুড়ে শিশু শ্রম বন্ধের আইন পাস হয়। কিন্তু তা অনেক দেশেই থেকে গেছে।
আইন ১) The factory act 1833 2) The mine act 1842
১৮৩৩ আইন
কোল মাইনে, ১) নয় বছরের নিচে কেউ লেবার নিতে পারবেনা ২) ইমপ্লয়ার দের কাছে বার্থ সার্টিফিকেট থাকতে হবে ৩) কাজ করার সময় কমিয়ে আনতে হবে ৪) ৯-১৩ বছরের শিশু নয় ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেনা ৫) ১৩-১৮ বয়েসে শিশু দেরকে দৈনিক ১২ ঘণ্টার বেশি খাটানো যাবে না ৬) বাচ্চাদের রাতে খাটানো যাবে না ৭) প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে স্কুলে পাঠাতে হবে।
UNICEF এর এক গবেষণায় দেখা গেছে বাচ্চাদের কাজে পাঠায় স্বয়ং বাবামারা ই ।দারিদ্র এবং কাছাকাছি স্কুল না থাকা আর একটা কারন।
১৯৬০ -২০০৩ গ্লোবালই শিশু শ্রম কমে যায় । তবে এখনো সারা প্রথিবীতে ১৬৮ মিলিয়ন শিশু কাজ করে। দক্ষিণ এশিয়া (ভারত ,বাংলাদেস,নেপাল,পাকিস্তান ,শ্রীলঙ্কা) এবং সাব সাহারা অঞ্চলে শিশু শ্রমিক বেশি । বাসা বাড়িতে কাজ, বিল্ডিং ওয়ার্ক এবং গ্যারাজে শিশু শ্রমিক বেশি দেখা যায় ।কারণ এই সব অঞ্চলে আইন থাকলেও আইন মানা হয় না । করাপশনের ছড়াছড়ি।
গবেষণায় উঠে এসেছে বাল্য বিবাহ, জোর পুর্বক বিয়ে এবং শিশু কে কাজে পাঠানো সব কিছুর জন্য বাবামা ই দায়ী ।
বাবামার সচেতনাতার অভাব, জ্ঞানের অভাব, বাবামার নিরক্ষতা, বাবামা হয় কিন্তু দায়িত্ব জ্ঞান থাকেনা আর দারিদ্রের জন্য বাচ্চারা ভুক্তভুগি হয়। আর যা চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।
বাবামার দায়িত্ব কি ? তারা তা পালন করার জন্য রেডি তো? তাদের যথেষ্ট উপার্জন আছে কি সন্তানের বেসিক চাহিদা পালনের জন্য? পরিবারের চাপে বা সমাজের চাপে শুধু বিয়ে করলেই হয় না। এর সাথে জড়িয়ে আছে দায়িত্ব, অর্থ, নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষমতা । বাড়ি বা পরিবারকে একটি সুখি সুন্দর পরিবেশ দেয়ার ক্ষমতা না থাকলে এপথে এগুনো থেকে বিরতি দিন। আগে প্রস্তুতি নিতে হবে পরিবার গঠনের ক্ষমতা আছে কিনা । জানুন পরিবার কি ।
ব্রিটেন সহ উন্নত দেশ গুলোতে শিশু শ্রম নাই তাদের অধিকার প্রতিস্টিতো হয়েছে। কিন্তু
সোমালিয়া,আফগানিস্থান,পাকিস্তান,জিম্বাবিউয়ে,সিরিয়া এবং সাব সাহারার দেশ গুলোতে এখনো শিশু অধিকার পালন করা হয়না ।
বাবামারা শুধু বাবামাই হয় কিন্তু বাবামার কর্তব্য কি, তা তারা জানেনা।
বাবামার সচেতনতার অভাবে সন্তান পৃথিবীতে এনে তারাকে কষ্টের মধ্যে ফেলার অধিকার কারোর নাই ।