শিক্ষাগুরুর মর্যাদা

রোকসানা খন্দকার রুকু ১ অক্টোবর ২০২১, শুক্রবার, ০৭:২৭:৪০অপরাহ্ন সমসাময়িক ২২ মন্তব্য

বাদশাহ আলমগীর-
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর।
একদা প্রভাতে গিয়া
দেখেন বাদশাহ- শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া
ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে
পুলকিত হৃদে আনত-নয়নে,
শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি
ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ্ সঞ্চারি অঙ্গুলি।

শিক্ষক মৌলভী
ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি।
দিল্লীপতির পুত্রের করে
লইয়াছে পানি চরণের পরে,
স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন্ কালে!
ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তার ভালে।

হঠাৎ কি ভাবি উঠি
কহিলেন, আমি ভয় করি না’ক, যায় যাবে শির টুটি,
শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার
দিল্লীর পতি সে তো কোন্ ছার,
ভয় করি না’ক, ধারি না’ক ধার, মনে আছে মোর বল,
বাদশাহ্ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল!!!!-

কবিতাটি আমাদের পাঠ্য ছিলো। আমরা মনোযোগ দিয়ে পড়েছি এবং জেনেছি শিক্ষক সম্মানের, শ্রদ্ধার। তবে আজকাল আর শিক্ষকের এতো স্পর্ধা নেই। পায়ে পানি কেন সামান্য পান থেকে চুন খসলেই শিক্ষকের পাওনা অনশন, অবরোধ, মিছিল, পদত্যাগ, লাণ্চনা এমনকি খুনও হতে দেখা যায়।

কদিন আগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন ক্লাসে চুল বড় রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের বকাঝকা করেন। তারা হয়তো তার কথা শোনেনি তাই পরীক্ষার আগে তিনি শাস্তিস্বরুপ মুঠি দিয়ে ধরা যায় এমন বড় চুল কেটে দিয়েছেন।

সি সি ফুটেজে তাঁকে কাঁচি হাতে হাঁটতে দেখা গেছে কিন্তু চুল কাটতে দেখা যায়নি। তবে শিক্ষার্থীদের দাবী করে তিনি এতো এবরো- থেবরো করে চুল কেটেছেন যে লজ্জায় তারা পরীক্ষা দিতে আস্তে পারছিলো না।এবং সে লজ্জা ঢাকতে মাথা ন্যাডা করে ফেসবুকে পোষ্ট করে তবেই শান্তি পেয়েছে।

তার সহকর্মী রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল প্রমাণ পেয়েছেন যে তিনি এ কাজ করেছেন। ১৪ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে এবং এ কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল।

এরপর শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করলে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন তার দায়িত্বে থাকা তিনটি পদ (সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য) থেকে স্থায়ীভাবে পদত্যাগ করেন। তবুও শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনেই বহাল আছে এবং তাদের দাবী তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদ থেকেই স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হোক।

তিনি বহিস্কারও হবেন হয়তো কারন কথায় আছে- “ আমরা যে সরিষা দিয়ে ভূত তাড়াই সেই সরিষাতেই থাকে ভূত।” আর এমন ভূত আশেপাশে থাকলে তো পদত্যাগ করতেই হবে।

আমি নিজে যখন শিক্ষার্থী ছিলাম কোনমতেই আরবি সুরা মুখস্থ থাকতো না। সেই ক্লাস ফোরে পড়ার সময় স্যার আমাকে প্রচুর পেটালেন। তখনকার শিক্ষকরা কিন্তু বেত দিয়ে পেটাতেন। আমার পায়ে হাঁটুর কাছে অনেকখানি কেটে রক্ত বেরুলো। ভাইয়ার দামী ফাউন্ডেন পেনটা নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটি হাতে ছিলো আমি হাত দিয়ে হয়তো নিজেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম তাই সেটিও বেতের নিচে পরে ফেটে- ভেঙ্গে গেলো। বাড়িতে এসে বলার সাধ্য নেই, তবুও কলমের বিচারে ধরা পড়ে গেলাম। পড়া না পারার জন্য এমন পিটুনি কম হয়েছে এ কথা বলে মা আরও বেদম পিটুনি শুরু করে দিলো।

দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় কিছুতেই ‘টেনস’ বুঝি না। ইংরেজি স্যার আমাকে প্রায়ই ডেস্কের উপর হাটু মুডে দাঁড় করিয়ে রাখতেন। পরবর্তীতে ইংরেজিতেই আমার সবচেয়ে বেশি নম্বর ছিলো।

অনার্সে পড়ার সময় পাশের কুডিয়ে পাওয়া সাদা চিরকুটটি হাতে নেয়া মাত্রই স্যার কি ওটা, কোথায় পেলে, নকল করছো কেন? একগাদা প্রশ্ন করে খাতা নিয়ে চলে গেলেন। আমি বলারও সুযোগ পেলাম না স্যার ওটা আমার নয় এবং সাদা। দুবারের বেশি কথা বললে এক্সফেল্ড করে দিতেন সেই ভয়ে বেডিয়ে এসেছিলাম।

সে সময় আমরা কখনোই বাবা- মাকে এসে শিক্ষকদের নামে নালিশ করিনি কিংবা অনশন ধর্মঘট, পদত্যাগ দাবী করার মনমানসিকতা রাখিনি। আর বাবা- মা বোধহয় শোনার সাথেই পিঠের ছাল তুলে ফেলতো। জীবনে কি হয়েছি জানিনা তবে মনে হয় নিজেকে একজন পরিপূর্ন মানুষ বলা যায়।

আমি যখন শিক্ষক, নার্সারীর এক শিক্ষার্থীর মা এসে অফিসে কমপ্লেইন করেছে এবং আমাকেও এসে বললো- মিস আপনি এ কাজটা ঠিক করেননি। আমার ছেলের ভীষন প্রেসটিজ, সে এসব পছন্দ করে না।

আমি কি করেছি; পড়া না পারায় তার বাচ্চার কান টেনে মজা করেছিলাম। নার্সারীর বাচ্চার ভীষন প্রেসটিজ এ মা চলে এসেছেন।

আমাদের বাবা- মা হয়তো বলতেন সে জানে আর তার শিক্ষক জানে। আমি কি এতোসব বুঝি? কোনদিন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় যাবার প্রয়োজন হয়নি তাদের।

কিছুদিন আগে ডিগ্রি পরীক্ষায় এক শিক্ষার্থী অন্যজনের দেখে দেখে কপি করছিলো। আমি তাকে বেশ কয়েকবার সাবধান করার পরও সে বিরত হলো না, আমার সামনেই একই কাজ করতে লাগলো। আমি বাধ্য হয়ে অপরজনকে সরিয়ে অন্য সিটে বসালাম। তার বন্ধুবরকে সরানোর অপরাধে আমাকে সবার সামনেই বললো- ম্যাম আপনি একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। জানেন না করোনায় আমাদের পড়াশুনা হয়নি। এরকম করলে পাশ করতে পারবো?

বলতে মন চাইলো করোনায় খাওয়া, হাগা-মোতা, বন্ধু- বান্ধবী, বারোটা পর্যন্ত রাস্তার মোডে আড্ডা, রাতভর চ্যাটিং সবই যদি তোর ঠিক ছিলো তাহলে শুধু পড়াশুনা কেন বন্ধ ছিলো বা হয়নি?

আমি কিছু না বলে আমার কলিগ সহোদরকে বললাম সেই ছাত্রের খাতাটা কিছুক্ষনের জন্য সিগনেচার না করতে, সে ভয়ে থাকুক। তাতে আর ডিসটার্ব করবে না, পরে সিগনেচার করে দেয়া হবে। তিনি আমার অনুরোধ রাখেননি। শিক্ষার্থী বের হয়ে যাওয়ার সময় এমন একটা ভাব করলো- আপনার খাওয়া নাই ম্যাম!!!

এখনকার ছাত্রদের মাথায় টিকনি, কেউ কেউ মেয়েদের ব্যান্ড লাগিয়ে আসে, চুলে কালার, পেছনে ঝুটি, চুল কাটতে বললে বলে তিনি ব্যান্ড সংগীত করেন, মুখে দাড়ি তাও বিভিন্ন স্ট্যাইলের, কারও দাঁড়িতেও ব্যান্ড লাগানো, প্যান্ট যেখানে সেখানে ফাটা এবং তা কোনমতে বেল্ট দিয়ে নিতম্বে আটকে থাকে যে কোন সময় খুলে পড়তে পারে। চুইঙ্গাম চাবাতে চাবাতে পরীক্ষা দেয়, না হলে এঙ্জাইটিতে ভোগে। বিভিন্ন কালারের বাইক, গাড়িতে আসে এবং শিক্ষকদের হর্ন দিয়ে সরিয়ে চলে যায়। এসবই এখন স্বাভাবিক, যা শিক্ষকদের মানতে হয়। তবে এসব সবাই নিতে পারেন না।

কিছু প্রবীন শিক্ষককে দেখে মনে হয় তারা যৌবনে আগুন ছিলেন কিন্তু এখন তাঁদের সামনেই হাজারো অন্যায় হলেও তাঁরা চুপ মেরে দ্যাখেন। একদিন হয়তো তাঁরাও প্রতিবাদ করে, প্রতিরোধের মুখে চুপসে গিয়েছিলেন। পাশে কেউ দাঁড়ায়নি।

 

তবে কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এসব আতলামী নিতে পারেন। আর পারেন বলেই আজকাল আর সেই শিক্ষক নেই। একজনের জন্য ভালোজনও ভালো থাকতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা বিনিময়,দলীয় প্রশ্রয়, প্রশ্ন ফাঁস সহ নানারকম কাজ করে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় দলাদলি। শিক্ষকরা সবাই রাজনীতি করি, যা করা উচিত নয়। ফলে আমরা স্বার্থপর হয়ে উঠি ও একে অপরের ক্ষতি করতে চাই। সেই আশি- নব্বই দশকের শিক্ষকদের মতো একসাথে একই টেবিলে চায়ের পরিবেশ আর নেই। শিক্ষক পরিষদে অবশ্যই দুটি দল থাকে। সেখানে একদল বসলে অন্যদল বসে না। এবং অন্যদের সমালোচনা, কুৎসা রটাতে মহা ব্যস্ত সময় পার করি। তাই শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে কিভাবে অন্যদনকে হায় করা যায়, ছোট করা যায় কিংবা চাকুরীচ্যুত করা যায় তা বেশ ভালোই পারি।

শিক্ষাঙ্গন থেকে এসব দুর হয়ে যেদিন শিক্ষকরা এক হবে, একেঅপরের পাশে দাঁড়াবে, শিক্ষার পরিবেশ কঠোরতর হবে ।সেদিন আর শিক্ষার্থীর এসব আতলামী ঠাঁই পাবেনা।

0 Shares

২২টি মন্তব্য

  • নাজমুল আহসান

    আপনার লেখার বিষয়বস্তু শেষের দিকে কিঞ্চিত বিচ্যুত হয়েছে বলে সাম্প্রতিক আলোচিত এই ঘটনায় আপনার অবস্থানটা ধরতে পারিনি।

    তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই শিক্ষিকা যা করেছেন, সেটা “একটু বাড়াবাড়ি” হলেও কোনোভাবেই অনুচিত নয়। একেবারে ঠিক কাজটাই করেছেন। ছাত্রছাত্রীর বেশভূষা যদি শিক্ষক ঠিক করে না দেন, তাহলে কে করবেন? বাবা-মা? এদের বাবা-মা নিজেরাও তো অ-জাত। আর এ কারণেই ছেলেমেয়েও অ-জাত হয়েছে।

    এখনকার ছেলেমেয়েরা স্বাধীনতা আর আধুনিকতার নামে কোথায় চলে গেছে, সেটা আমাদের বুদ্ধিজীবী মহল অনিচ্ছায় হোক আর অজ্ঞতায় হোক, ধরতে পারছে না।

    আমি শিক্ষক হলে এসব আধুনিকতার ঠ্যাং ভেঙ্গে দিতাম।

    • রোকসানা খন্দকার রুকু

      আমার অবস্খান আমি শিক্ষক। শিক্ষক হয়ে আমাকেও অনেকবার লান্চনার শিকার হতে হয়েছে। এবং তা হয়েছে কিছুসংখ্যক শিক্ষকদের জন্য যারা আমি বাড়াবাড়ি করছি বলে উডিয়ে দিয়ে আমার পক্ষে না থেকে শিক্ষার্থীদের পক্ষেই থেকেছে। কারন তাদের ভোট দরকার আর আজকের এই অসভ্য শিক্ষাথীরা পড়ালেখার চেয়ে রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকে বেশি। তাই আমার শেষ লিখনিটুকু। আজকের পরিস্থিতি কিছুটা আমাদেরও সৃষ্টি। আমরা যদি এক হতাম তাহলে এতোসব কখনোই হতো না।
      এখানেও ম্যাডামের বিপক্ষ দল তৈরি হয়েছে তা না হলে সামান্য চুল কেটে দেয়াকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করার মতো ঘটনা ঘটতো না। বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে প্রমাণ সাপেক্ষে কিন্তু তারা বলেনি বিষয়টি সঠিক ছিলো। কারন শিক্ষার্থীর বেশভূষা, চলনবলন শিক্ষার্থীসূলভ হওয়া উচিত।
      আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

  • খাদিজাতুল কুবরা

    রুকু তোমার বক্তব্যের সাথে আমি ও সহমত। তবে নিজের ও দুটি বাচ্চা আছে। তারা বাঙালি সংস্কৃতির চেয়ে বিদেশি সংস্কৃতির সাথে বেশি পরিচিত। একাত্তর টিভির শো দেখেছিলাম এই বিষয়ে আমার তের বছরের ছেলে ও সাথে দেখেছে, সে কিছুতেই একসেপ্ট করতে পারছেনা শিক্ষার্থীর সাথে মেডামের আচরণ। সে বলছে মেডাম হিউম্যান রাইটস মানেননি। আমি নব্বই দশকের শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সম্মান এবং অধিকারের যে সংজ্ঞা আমি বিশ্বাস করি তা কোনভাবেই আমার বাচ্চাকে বোঝাতে পারলামনা।
    এক্ষেত্রে একজন মা হিসেবে ব্যর্থতা কি শুধু আমার?

    আরেকটি ঘটনা আমার পরিবারেই ঘটেছে। আমার ছোটভাইকে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় অংকের শিক্ষক বেত দিয়ে এমন মেরেছে যে তাকে প্রচন্ড জ্বরে ভুগতে হয়েছে তাকে। পরবর্তীতে ঐ শিক্ষকের ভয়ে সে আর স্কুলে যায়নি। তার শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি হয়েছিলো।

    আসলে শিক্ষক ছাত্রের আচরণের সমন্বয়হীনতা এবং দলীয়করণ, বিদেশি সংস্কৃতির অপচর্চা অনেক কিছু দায়ী।
    ইসলামী শাসনে বলা আছে সাতবছর বয়স থেকে বাচ্চাকে তাঁর আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণের জন্য একহাত (আঙুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই পর্যন্ত) আয়তনের বেত দিয়ে মৃদু আঘাত করা যাবে। আবার সাবালক বাচ্চাকে ব্যাক্তিগত ভাবে মারধর করা যাবেনা।
    ইসলামের অনুশাসন না মানা ও আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
    গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ বন্ধু।

    • রোকসানা খন্দকার রুকু

      তোমার সব কথাই ঠিক আছে।
      একজন শিক্ষক অবশ্যই শিষ্টাচারমূলক কথা বলবেন সে ভার্সিটি স্টুডেন্ট হোক না কেন?
      ভার্সিটিতে পড়ে বলে সে বিষেশ জ্ঞানী হয়ে গিয়েছে তাকে চুল কাটা কথা বলা যাবে না এমনটা আমি মানি না। তাহলে ভার্সিটিতে সে কেন? শিক্ষক তো তার দরকার নেই!
      আর যেটা তা হলো প্রাতিষ্ঠানিক কিছু রুলস থাকা দরকার। ম্যাডাম চুল কেটেছেন এতে তার সহকর্মীরা বেজায় খুশি কারন কোন কারনেই হোক তারঁ সাথে পেরে না ওঠার জেলাস ঝাডবে এবার।
      আন্দোলন করার মতো সাহস স্চুডেন্টরা পায় কোথায়। বরং তাদেরই বহিস্কার করা উচিত ছিলো আন্দোলনের জন্য। হচ্ছে উল্টোটা, এর ফল ভালো হবে না পরবর্তীতে।

      • খাদিজাতুল কুবরা

        এসব প্রতিহিংসার নেতিবাচক প্রভাবই বেশি।
        ছাত্রদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে কিছু ক্ষমতা লিপ্সু এতে কোন সন্দেহ নেই। এ ঘটনা ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কে আরও সহিংস করে তুলবে।

  • হালিমা আক্তার

    আমরা যেই শিক্ষাগুরুর মর্যাদা পড়েছিলাম তৎকালীন শিক্ষক আর বর্তমান শিক্ষকদের মধ্যে অনেক তফাৎ আছে। এককভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। আমাদের সময় শিশু অধিকার রক্ষায় সামাজিক কোন ধারণা ছিল না। এখন প্রায় প্রতিটি স্কুলে শিশু অধিকার সম্পর্কিত কাউন্সেলিং করা হয়। তাছাড়া এখন কার শিশুরা খুব সেনসেটিভ । বাবা-মা যদি বকাঝকা করে শিশুরা রাগ করে।
    দ্বিতীয়ত আমরা শিক্ষকরা কি আমাদের সম্মান ধরে রাখতে পারছি। একসময় শিক্ষকরা স্বার্থহীন ভাবে পড়াতেন। কিন্তু শিক্ষা এখন ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্কুল শিক্ষকের কাছে কোচিং করতে বাধ্য করা হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁস করা হচ্ছে। নকল সরবরাহ করা হচ্ছে। এরপর ও শিক্ষক হিসেবে কিভাবে মর্যাদা রক্ষায় দাবি করবো। শিক্ষকদের কিছু আচরণ আমাকেও লজ্জিত করে। সবচেয়ে বড় কথা আমরা ভালো রেজাল্ট চাচ্ছি। ভালো মানুষ হওয়ার তাগিদ দিচ্ছি না। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে সকল কে একসাথে কাজ করতে হবে। শুভ কামনা রইলো।

  • উর্বশী

    সময়পোযোগী, বাস্তবতার আলোকে স্বচ্ছতার চিন্তাধারার গবেষণার ও বিশ্লেষণ ধর্মী উপস্থাপন। শিক্ষাগুরুর মর্যাদা বলতে কি বুঝায় সেটা এখনকার শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশ্লেষণ করতে বললে বুঝাতে পারবে কি সঠিকভাবে ? সঠিক নীতিমালা আছে,কিন্তু সঠিক নেতার অভাব।অশেষ ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইলো।

  • নার্গিস রশিদ

    সময়পোযোগী একটা সুন্দর লেখা। আমরা ছোটবেলাতে মার খেয়েছি স্কুলে । কোন সময় তা ঠিক ছিল কিন্তু মাঝে মাঝে তাঁরা বেশী করে ফেলতেন। আবার এখন কিছুই বলা যায়না এটাও একটু বেশী। মাঝা মাঝি পথ হল শাস্তির মধ্য পন্থা বের করা। যেমন খেলতে না দেয়া খেলার সময়ে। এরকম আরও আছে। আর তারা যখন বড় হয়ে যায় ছোটো বেলার ব্যাপার টা তখন আর চলে না। সঠিক নীতিমালা খুঁজতে হবে। অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা সমস্যা তুলে ধরার জন্য।

  • অনন্য অর্ণব

    পুরো লেখাটা পড়লাম। কয়েকবার। শেয়ার ও করলাম। তবে দুঃখের বিষয় আমাদের ব্লগেই দেখছি অনেক সহব্লগার বন্ধুরা প্রকারান্তরে দ্বৈত মত ব্যক্ত করেছেন। আমি এক্ষেত্রে একতরফা ভাবেই বলবো, এই ঘটনায় একজন শিক্ষককেই কেবল অপমান করা হয়নি, অপমান করা হয়েছে পুরো শিক্ষক সমাজকে। What the hell you taking about human rights… Humanities…just throw that majority to drain who start an opponent motion against a teacher. You know why we are going to face a dark and injurious social pathway ? That’s the fact. We have totally forget to honour the literate person and trying to dishonored a human maker for simple nothing subject. Our parents elders and nearest relatives are always support to youngers rough attitude. Even our system of education also voted to this vulgar psycho indirectly.

    কাজেই যদি এই সমাজ থেকে সুন্দর সুপ্রতিভ কিছু আশা করেন তবে সন্তানকে শিক্ষকের কাছে অনুগত থাকতে‌ দিন। শিক্ষক ভুল করেছে সেটা শিক্ষককে একান্তে বলুন, এবং আইনী সহায়তা দরকার হলে তাকে আপনার সন্তানের অগোচরে আইনের আশ্রয়ে নিন, তবে ছাত্র-ছাত্রীর এমন হীন অপদাবীতে কখনোই একজন শিক্ষক কে তার যথাযত মর্যাদা থেকে অপসারণ করবেন না।

    • রোকসানা খন্দকার রুকু

      আপনার পুরো মতামতের সাথে আমি সহমত পোষন করছি।আমি কখনোই আমার শিক্ষার্থীর অমঙ্গল চাই না।
      আর হিউম্যান রাইটস আমরা বুঝি কজন। এটার নামেই চলছে যতোসব ন্যাকামী। কতোবড বেহায়া ছাত্র, তোর দুটো চুলই লাহয় কেটেছে সেজন্য প্রতিহিংসাপরায়ণ হওয়া ছাত্রের জন্য কতোটা ন্যাক্যারজনক ভাবতেই কেমন যেন লাগে। শিক্ষকের সাথে বিনয় না দেখিয়ে ত্যাডামী করে কে কতো বড় হতে পেরেছে তা অনেক দেখা।
      সন্তান মানুষ করতে চান? শিক্ষকের উপর ছেড়ে দিন, মেরে ফেলবে না, গিলেও খাবে না , মানুষ বানাবার চেষ্টা করবে!!!
      অসাধারণ মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা।

  • সুপর্ণা ফাল্গুনী

    আমরা শিক্ষকের মর্যাদা শুধু পড়িনি – অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে, মানতে বাধ্য হয়েছি তার জন্য অভিভাবকদের কাছে ঋণী। তাদের কঠোরতা আমাদেরকে সুশিক্ষা দিতো; এখনকার শিক্ষিত পিতা-মাতা সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে ব্যর্থ। দারুন লিখেছেন আপু। সাবধানে থাকুন, নিরাপদে থাকুন

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ