নারায়নগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কেন্দ্র করে কয়েকটা বিষয় লক্ষ্যনীয়:
১। ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে’ আঘাত দেওয়ার অভিযোগ! যা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
২। অভিযোগের জের ধরে পিটিয়ে জখম। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
৩। জন প্রতিনিধি কর্তৃক তাঁকে কান ধরে উঠবস করানো। এবং সুপরিকল্পিতভাবে জয় বাংলা স্লোগান ব্যবহার।
৪। অবশেষে স্কুল পরিচালনা কমিটির স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাঁকে চাকুরিচ্যুত।
আজকের খবর থেকে পাওয়া তথ্য-
★চাকুরিচ্যুত করার চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফারুকুল। স্বাক্ষরের তারিখ হিসেবে উল্লেখ আছে ১৬ মে অথচ তিনি ১৫ তারিখের সভা শেষ করে দেশের বাইরে চলে যান। তাহলে ১৬ মে স্বাক্ষর করলেন কীভাবে ???
★ দশম শ্রেণীর ছাত্র রিফাত, যার অভিযোগকে ভিত্তি করে মসজিদের মাইকে ধর্ম অবমাননার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। সেই রিফাতই অস্বীকার করেছে ধর্ম নিয়ে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কটূক্তি করার কথা । রিফাত বলেছে, স্যার তাকে মারধর করায় সে বিচার চাইতে কমিটির কাছে গিয়েছিললো। কিন্তু মারধরের সময় ধর্ম নিয়ে কোনো মন্তব্য তিনি করেননি। একই কথা বলেছেন রিফাতের মা।
★ সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘কান ধরে দাঁড়িয়ে’ এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী সাগরিকা বলেছেন, "এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে। আমরা মানবিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শ্যামল কান্তি ভক্ত স্যারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে বলে প্রত্যাশা করি।" এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষও একইভাবে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছে।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ রটিয়ে গণরোষ তৈরি করে অপমান, অপদস্থ আর গণধোলাইয়ের ষোলকলা পূর্ণ করেও যখন শ্যামল কান্তি বিরোধীরা দেখলো তাদের সে কৌশল ধোপে ঠেকেনি, উলটো বুমেরাং হয়ে তাদের দিকেই ফিরে যাচ্ছে। জনরোষ পালটে গিয়ে জননন্দিত আদর্শ শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত না আবার স্বীয় পদে ফিরে আসেন, তাই হয়তো তড়িঘড়ি করে তাঁকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।
বরখাস্তের চিঠির অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
সবচেয়ে বড়কথা, মিথ্যাচার প্রমাণিত হওয়ার পরেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে "আপনি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন।"
★★
আমার আর্জি
★‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ নামের অভিযোগ যারা আনলো, তাদের খুঁজে বিচারের আওতায় আনা।
এটা এতোদিন একতরফাভাবে লেখকদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। দিনেদিনে স্পষ্ট হচ্ছে, এটা প্রগতিবাদীদের বিরুদ্ধে আক্রমণের একটা অতি স্পর্শকাতর কৌশল। ধর্মান্ধদের পাশাপাশি বোধবিবেচনাহীন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের খেপিয়ে তোলার একটি অতি তীক্ষ্ণ অস্ত্র। কাজেই খাপহীন খোলা তরবারির মতো এ অস্ত্র যাতে আর ব্যবহৃত না হয় সে ব্যবস্থা করা।
★শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। যে জাতি শিক্ষকের মর্যাদা দিতে জানে না, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। কাজেই জাতির কর্ণধার হয়ে কি করে একজন জনপ্রতিনিধি শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর মতো ন্যক্কারজনক কাজ করেন। জাতি যে এখনো শিক্ষকের মর্যাদা বুঝে গত দু'দিনের উত্তাল গণক্ষোভ থেকেই তা পরিলক্ষিত। সেই জাতির কর্ণধার হিসাবে এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন জনপ্রতিনিধিকে বিচারের মুখোমুখি করা।
★পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি শ্যামল কান্তি ভক্তকে সম্মানের সহিত ফিরিয়ে দেয়া। তাঁর হাতেই স্কুলটি ভালো থাকবে।
শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবিতে প্রতিবাদের মধ্যে উল্টো ওই শিক্ষকের চাকরি হারানোর খবরটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট করে দেয়, এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যটি কি ছিলো!
ছোটবেলা থেকে জেনেছি, শিক্ষক পরম গুরুজন। আম্মা বলতেন, শিক্ষক মা-বাবা তুল্য। নারায়ণগঞ্জে যে ঘটনাটা ঘটে গেলো, এর থেকে আমরা কি অশনিসংকেত পাচ্ছি? কোন পথে যাচ্ছে জাতি? যেদেশে জনপ্রতিনিধি দ্বারা (সমাজ পরিচালক) কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে মা-বাবা তুল্য পরম গুরুজন শিক্ষক এমন জনাকীর্ণ পরিবেশে 'কান ধরে উঠবস করা'র মতো লাঞ্ছনার শিকার হন, সে দেশে গোল্ডেন স্টুডেন্ট কিভাবে তৈরি হবে???? দেশে এখন গোল্ডেন এ+ যতোটা বাড়ছে 'গোল্ডেন স্টুডেন্ট' সে তুলনায় ততোটাই কমছে। তার কারণ সুবিধাবাদী রাজনৈতিক বিবেচনায় শ্যামল কান্তি ভক্তের মতো শিক্ষাগুরুদের আমরা শিক্ষাঙ্গন থেকে সরিয়ে পারভীনদের বসিয়ে দিচ্ছি।
শিক্ষকও মানুষ। ভুল তিনি করতেই পারেন। এর জন্য আইনি পদক্ষেপ আছে, আছে আরো বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনা বা শাস্তি প্রদান করা। তাই বলে একজন প্রধান শিক্ষককে নাজেহাল করতে স্পর্শকাতর ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট ব্যবহার!!! এরপর সবার সামনে কান ধরে উঠবস করানো?
রাজনীতির নস্ট খেলায় অন্তত আমরা শিক্ষাগুরুদের না আনি। মানুষ গড়ার কারিগরদেরই যদি যথার্থ সম্মান না দিতে পারি তো উজ্জ্বল, আলোকিত জাতি তৈরি হবে কিভাবে?
একদিন চরম মুল্য দিতে হবে জাতিকে এসব অনায্য কার্যকলাপের।
Thumbnails managed by ThumbPress
৩০টি মন্তব্য
সঞ্জয় কুমার
পুরোটাই সাজানো নাটক । জয় বাংলার এতবড় অপমান আওয়ামী লিগই করল !!! এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এখনো ভাবছেন এ অপমান আওয়ামীলীগই করলো? হায়!!!!
‘জয় বাংলা’ই তো তাদের জ্বালা রে ভাই। ভয় দেখিয়ে, কালিমা লেপন করে ‘৭১ এ আপামর বাঙালীর জয়ধ্বনি ‘জয় বাংলা’কে সাধারণ মানুষের মুখ থেকে সরিয়ে নিয়েছিলো। এক সময় ভয়ে মানুষ ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করতে পারতো না। মুখে তুলে দেয়া হলো ‘জিন্দাবাদ’। বিলীন করে দেয়ার উদ্দেশ্যেই ভয় চাপানো হয়েছিলো। তারপর প্রজন্মান্তরে মানুষ ভেবে নিলো এটি আওয়ামী লীগ এর দলীয় স্লোগান!
কিন্তু অই যে, ইতিহাস তার আপন গতিতে চলে। কালের পরিক্রমায় ফিরে এলো ‘জয় বাংলা’ আবার জাতীয় স্লোগান হয়ে।
জ্বালাটা কাদের? কোথায়? কেনো? এবার বুঝতে পারছেন?? :v
মোঃ মজিবর রহমান
জয় বাংলাকে নস্টের হাত থেকে বাচাতে এখন আওয়ামিলীগ কত টুকু কারজ্যকরী ভুমিকা রাখে সেটাই দেখার বিষয়।
পরিবার আগে না দল আগে না দেশ আগে এখন নেত্রী ই ভাল জানে।
সব তাঁর তরে সেপে দিলাম।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ব্যক্তি তো অই একজনই আছে।
ইকবাল কবীর
সত্যিকার অর্থে কিছুই হবে না। কয়েকদিন পত্রিকা, টিভি মিডিয়া, মাতামাতি হবে তারপর নতুন আরেক ঘটনা ঘটবে তারপর সবাই নতুন ঘটনার পিছনে ছুটবে আর পুরাতন ঘটনা নিয়তির পরিহাস হয়ে থাকবে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এ দেশে শকুনীর নজর পড়েছে, তাই চারদিকে এমন অস্থিরতা। ^:^
দেশটাকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য লেলিয়ে দেয়া কিছু এদেশীয় মীরজাফররা শকুনের ভাগাড় বানানোর জন্য দেশময় তাদের পেইড এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে। কোথাও সুযোগ পেলেই একটা গণ্ডগোলকে ঘিরে এরা ফুঁ দেয় আর তাদের প্রভুরা তখন বিশ্বময় চাউর করে বেড়ায় বাংলাদেশ অসুস্থ, চাইলে আমরা এর চিকিৎসা করতে পারি যদি অনুমতি দেয়া হয়। অবশ্য অনুমতি না মিললেও চলবে। পেইড এজেন্টদের মাধ্যমে ধীরেধীরে মুমূর্ষু করে তুলতে পারলে মানবিকতার অজুহাতেই চিকিৎসা করা যাবে।
ইকবাল কবীর
১০০০% সহমত পোষন করছি।
অপার্থিব
শিক্ষক নির্যাতন বাংলাদেশে আগেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করায় বুয়েট শিক্ষককে লাঞ্জিত করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করায় শিক্ষককে গ্রপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নির্যাতিত হয়েছে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা ধর্ম সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয় । প্রত্যেকেরই মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। এই সত্যটা উপলব্ধি জরুরী। সাম্প্রতিক কালে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে এই ধর্মানুভুতি কেন্দ্রীক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে নিয়মিত।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, হয়েছে। আগেও হয়েছে। ন্যায় এবং অন্যায় দুটোকে এক পাল্লায় নিলে হবে না। শ্যামল কান্তি ভক্তের দোষ কি ছিলো?
আর তাছাড়া আমার লিখাটা একটু দেখুন, “শিক্ষকও মানুষ। ভুল তিনি করতেই পারেন। এর জন্য আইনি পদক্ষেপ আছে, আছে আরো বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনা বা শাস্তি প্রদান করা। তাই বলে একজন প্রধান শিক্ষককে নাজেহাল করতে স্পর্শকাতর ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট ব্যবহার!!! এরপর সবার সামনে কান ধরে উঠবস করানো?”
আবার এটাও বুঝতে হবে, মত প্রকাশের অধিকার মানে যেমন ইচ্ছা বলা নয় কিন্তু। বর্তমান বাংলাদেশে মত প্রকাশের নামে তাই হচ্ছে।
অপার্থিব
// আবার এটাও বুঝতে হবে, মত প্রকাশের অধিকার মানে যেমন ইচ্ছা বলা নয় কিন্তু। বর্তমান বাংলাদেশে মত প্রকাশের নামে তাই হচ্ছে। //
মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলতে কি বুঝায় সেটা আগে ভাল করে বুঝুন। একজন মানুষ কতটুকু মত প্রকাশ করবে সেই মানদণ্ড ঠিক করে দেয়ার অধিকার রাষ্ট্রের নেই। যদি আইন করে সেই মানদণ্ড ঠিক করে দেয়া হয় তাহলে সেটা আর মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না , সেই রাষ্ট্রকেও আর সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায় না। কোন একটি নির্দিষ্ট মত আপনার ভাল নাও লাগতে পারে, আপনি সেটার সমালোচনা করুন কিন্ত সেই মত প্রকাশের কারণে রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তিগত ভাবে কোন শাস্তি দেওয়ার কেউ অধিকার রাখে না । শ্যামল কান্তিকে যাই বলুক না কেন তাকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার কেউ রাখে না তেমনি প্রধান মন্ত্রী বা বঙ্গবন্ধুকেও যদি কেউ কটাক্ষ করে থাকে তবে তাকেও শাস্তি দেওয়া সমীচিন নয়। কেউই সমালোচনার উধ্বে নয়। শ্যামল কান্তির ঘটনা অত্যন্ত মারাত্নক কারণ এখানে ধর্মানুভুতিকে উপজীব্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে এই ধর্মানুভুতি আঘাতের ঠুনকো অজুহাত ব্যবহার করে সংখ্যালঘু নির্যাতন করা হচ্ছে, এটাই সবচেয়ে উদ্বগজনক।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এই নাঃগঞ্জেই সেভেন মার্ডারের মূল হুকুমের আসামী ঐ ওসমান পরিবারের একজন অথচ তারা ধরা ছোয়ার বাহিরে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমনন্ত্রী তাদের রক্ষা করার দায়ীত্ব নিয়ে সংসদেই ঘোষনা দিয়েছেন সেখানে আমাদের ক্ষোভ ঝাড়তে পারব তবে কোন লাভ হবে না।আওয়ামীগের দলের লোকেরাই আওয়ামীলীগের বড় শত্রু যেমনটি বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল তারই আশপাশের লোকেরা। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমি এখনো প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখি। বিশ্বাস করি, তিনি যেমন পিঠে হাত বুলিয়ে দুষ্টকে সঠিকপথে রাখার চেষ্টা করেন, তেমনি সীমালঙ্ঘন করলে তার হিসাবও নিতে জানেন।
প্রাণভরে দোয়া করি আমাদের বিশ্বাসের শেষ জায়গাটুকু যেনো হারিয়ে না যায়।
ইনজা
যারা নিজদের সার্থ উদ্ধারে অথবা ফায়দা হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে তাদেরকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিচার করা উচিত।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
যেদিন এটা করা হবে সেদিন থেকেই ধর্মকে বর্ম বানিয়ে ফায়দা লুটা বন্ধ হবে। এখুনি রাস টেনে না ধরলে আগামীতে এটা যে কি ভয়ানক হয়ে দাঁড়াবে জাস্ট ভাবলেই শরীর শিউরে উঠে।
অনিকেত নন্দিনী
১. সেভেন মার্ডারের কোনো সুরাহা হয়েছে?
২. ত্বকী হত্যার সুরাহা হয়েছে?
৩. এযাবৎ যতো শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে তার সুরাহা হয়েছে?
উপরের সব প্রশ্নের উত্তর ‘না’।
উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ। শুধু এটুকু বলবো, এখনই লাগাম টেনে না ধরলে একদিন এর চরম মূল্য দিতে হবে।
অয়োময় অবান্তর
এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান
বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলামান,
তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার
তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান,
বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি,
এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান
হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষে জন্ম নিচ্ছে
পিতামহ!!!!
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আপনি ইতিহাসের যে ধারা বিবরণী দিয়েছেন সেখানে প্রথম লাইনটি নিয়ে আমার একটু খটকা আছে। আমি যতোদূর জানি গৌড় গোবিন্দের এদেশে হজরত শাহজালাম (রঃ) এসে ইসলামের গোড়াপত্তন করেন। কি জানি, আমি সঠিক না ভুল। আরো কোন তথ্য থাকলে শেয়ার করুন।
লীলাবতী
কি সব হচ্ছে দেশে। ওসমান ফ্যামিলি তো বেপরোয়া ভাবে চলছে। এদের ক্ষমতার উৎস কি? এই একটি ফ্যামিলি কি টিকিয়ে রাখছে এই সরকারকে?
প্রধান শিক্ষকের পদ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে আপু। আপনার লেখা সার্থক।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ জানি। কিন্তু ভয় তো কাটছে না। সে আবার কোন চক্রান্তের রাজনীতির বলি হয়! ^:^
শুভ মালাকার
*প্রথমে আমরা সবাই “মানুষ”,আর মানুষ হিসেবে আমাদের ধর্ম না হিন্দু-না মুসলিম “মনুষ্যত্ব” হ্যা আমাদের ধর্ম “মনুষ্যত্ব”।
** একটা মানুষের যদি মনুষ্যত্ব বোধ-ই না থাকে, তবে কিরূপে তাকে হিন্দু, মুসলিম কিংবা অন্য কোন ধর্মের অনুসারী বলে উপাধি দেওয়া যায়। (তাকে/তাদেরকে তো মানুষ-ই বলা যায় না, তবে কিভাবে সে/তারা ধর্মের স্বরূপ বুঝতে পারবে?)
*** হ্যা, ধর্মের অবমাননা করেছেন! “সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান (এবং এর সাথে যারা জড়িত ছিলেন)”-ই মনুষ্যত্ব ধর্মের অবমাননা করেছেন। এদের মধ্যে ধর্ম তো নেই-ই বরং পিতৃতুল্য একজন শিক্ষককে লাঞ্ছনা করে অপরাধ করেছেন আর তাই এদের শাস্তি পাওয়া অনিবার্য।
শিক্ষক-শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি।
ভাল থাকবেন আপনি ( মারজানা ফেরদৌস রুবা) -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
‘ধর্মের অবমাননা’ আসলে যে কখন হয় সেটাই প্রশ্ন! অই রাজনেতাকে ‘ধর্মের রক্ষক’ হিসাবে তুলে ধরার জন্য ধর্মীয় সঙ্গীতের নামে গীতিকাব্য রচনা করতে গিয়ে একদিকে সুরের ধারায় ‘খোলাফায়ে রাশেদীন’ এর চার খলিফার এক খলিফাকে টেনে আনা হয়েছে, অন্যদিকে নোংরা কিছু গালিসহ (যাকে ভদ্রভাষায় বলা হয় ‘স্ল্যাং’) কথোপকথন জুড়ে দেওয়া হয়েছে! নাউজুবিল্লা……
এটি কি ‘খোলাফায়ে রাশেদীন’ এর অই খলিফার অবমাননা নয়??? ধর্মীয় অবমাননা নয়???
মেহেরী তাজ
এমন কোন কিছুরই বিচার হয় না। এটার ও হবে না! তবে সম্ভবত উনার পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এটাই কম কি?
মারজানা ফেরদৌস রুবা
স্বপদে ফিরিয়ে দিয়েছি বলে ব্যাপারটা যদি এভাবেই আস্তে আস্তে চাপা দেয়া হয়, তবে তা হবে ছাইচাপা আগুন। ছাইচাপা আগুন কিন্তু ধিকিধিকি জ্বলে আর দেখা না গেলেও পুড়িয়ে আস্তে আস্তে সর্বময় গ্রাস করে।
মৌনতা রিতু
কাকে কোন পরিবারকে আসলে দোষারোপ করব ?কিছুদিন আগে জাফর ইকবাল স্যকর ও ম্যামকে অসম্মান করেছিল, জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে,। আমরা সবাই তার প্রতিবাদ জানাইছিলাম। স্যারকে আমরা চিঠি লিখেছিলাম। মেমন স্যারের ছবি এঁকেছিলো। আসলে আপু সভ্য সমাজেই অসভ্যদের বসবাস। আমি খুবই আশাবাদি মানুষ। আমাদের সন্তানেরা, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম এই হাল ধরবে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আশাবাদী আমিও। কিন্তু যখন ভরসার স্থলগুলোতে নড়বড়ে ভাব দেখি তখন প্রচণ্ডরকম্ভাবে আহত হই।
‘জয় বাংলা’ স্লোগানের অপব্যবহার নিয়ে প্রথম কমেন্টের জবাবে বিস্তারিত বলেছি।
মৌনতা রিতু
তবে আর একটা জিনিস আপু, সংখ্যালগু শব্দটাতে আমার বড়ই আপত্তি। আমি মিশন স্কুলে পড়েছি তাই, অনেক বন্ধু বান্ধব আছে আমার সব ধর্মেরই। তাশের সবার সালে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক। একই প্লেটে খাই। আমার বাসায় আমার ছেলেদের তিনজন টিচার আসে, দুজন হিন্দু একজজন মুসলমান। তারা প্রায়ই আমার বাসায় খায়। এক সংগেই। কোনো ভেদাভেদ নেই। কিন্তু তারা যখন এই শব্দটা উচ্চারন করে খারাপ লাগে। এতে বিদেশেও আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সংখ্যালঘু/সংখ্যাগুরু শব্দের ব্যবহারে আমারও অস্বস্তিবোধ হয়। মানুষের পরিচয় ‘মানুষ’ হিসাবেই থাকবে। রাষ্ট্র সবাইকে সমভাবে দেখবে। সমভাবে সকলে মূল্যায়িত হবে।
নীলাঞ্জনা নীলা
প্রধান শিক্ষককে স্বপদে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। এই পাওয়া নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
একটা ঘটনা মনে পড়ছে, পত্রিকায় পড়েছিলাম। ধর্ষণের পর বিয়ে। মানে সমাজপতিরা ধর্ষককে শাস্তি দিয়েছে ওই মেয়েকে বিয়ে করার।
এখন এমন যদি হয় শিক্ষকের কান ধরে ওঠা-বসা শাস্তি দেয়ার পর, ক্ষমাপ্রার্থনাস্বরূপ চাকরীতে আবার বহাল তবিয়তে ফিরিয়ে নেয়া।
হায়রে দেশ। হায়রে ধর্ম।
সংখ্যালঘু এ শব্দটি ভুলিয়ে দেয় আমরা বাংলাদেশী।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সংখ্যালঘু/সংখ্যাগুরু তফাৎ এনে সংখ্যালঘুদের উপর শক্তির অপব্যবহার করে সংখ্যাগুরুরা মুলত নিজেদের প্রকারান্তরে কাপুরুষ বলেই প্রমাণ করে। সুপুরুষরা কখনোই অসমশক্তির সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় না। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।