হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শফি সাহেবের তেঁতুল তত্ত্বের কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নারী সমাজকে নিয়ে আমি বিগত কয়েকদিন যাবত ভীষন দুঃশ্চিন্তায় আছি। আগামীতে যদি কোনো এক সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শাসন ব্যাবস্থা নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ পায় এবং বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করে হেফাজতি ১৩দফার আদলে এই দেশকে পরিচালনা করে তবে এ দেশের নারীদের জীবন বাঁচানোয় দায় হয়ে যাবে।হুজুরের ফর্মুলা মতে প্রতিটি পুরুষ ৪টা করে বিয়ে করবে এবং নবীর উম্মত বৃদ্ধির অজুহাতে বার্থ কন্ট্রোল করা হারাম করে দিয়ে বছর বছর বাচ্চা পয়দা করতে থাকবে!তা করুক-খাওয়াইব যখন আল্লায় তখন বাচ্চা পয়দা করতে আপত্তি থাকার কথা নয়-কিন্তু সমস্যা অন্য খানে-বর্তমানে একটি দম্পতি ১টা কিংবা ২টা বাচ্চা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন।একটা বাচ্চা গর্ভধারণের পর থেকে প্রসবের সময় পর্যন্ত একাধিকবার ডাক্তারের কাছে যান এবং পরামর্শ নিয়ে সে মত চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ্য সবল বাচ্চা হাসপাতাল বা ক্লিনিকে বেশীরভাগ সময় মহিলা গাইনোক্লোজিষ্টের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসব অথবা সিজারিয়ান এর সাহায্যে প্রসব করিয়ে অনেকটা নিশ্চিন্তে সন্তানের জন্ম গ্রহন নিশ্চিত করেন। শফি হুজুর মেয়েদের পড়ালেখা ক্লাস ফোর ফাইভ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে বলেছেন যাতে করে বিবাহ সাদীর পর স্ত্রীরা তাদের স্বামীর উপার্জিত টাকা পয়সার হিসাব রাখতে পারেন।যদি তেমনটিই হয়-তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আর কোনো নারী চিকিৎসক তৈরী হবে না।দেশের সমস্ত নারীরাই স্বামী সন্তান এর পরিচর্যাতেই ব্যাস্ত থাকবেন!

 

সমস্যা হলো শফি হুজুর এর মেয়ে কিংবা পুত্রবধূ হেফাজতে ইসলামের অনুসারীদের বৌ-মেয়েরা এবং তাদের সমর্থকদের মা-বোন স্ত্রীরা যখন গর্ভবতী হবেন এবং সন্তান প্রসবের জন্য ক্লিনিক বা হাসপাতালে যাবেন তখন তো তাদের চিকিৎসা পুরুষ ডাক্তার দ্বারা করাতে হবে!নিয়মিত চেকআপ-করানোর সময় ঐ সমস্ত পুরুষ ডাক্তারদের যদি তেঁতুল এর কথা মনে পড়ে যায় তখন কি হবে??তখন তো ডাক্তার সাহেবদেরও লালা ঝরতে শুরু করবে এবং তাদের দিলের মধ্যেও কু-ভাব এসে যাবে।

 

আর যদি ডাক্তারের কাছে না-ই যান তাহলে ওই ফোর ফাইভ পাশ হাতুড়ে দাইদের মাধ্যমেই বাচ্চা প্রসব করাতে হবে এবং প্রসূতিদের চিকিৎসা করাতে হবে শফি হুজুরদের মত অর্ধশিক্ষিত অশিক্ষিত হুজুরদের পানি পড়া দিয়ে-যার পরিণাম হবে ভয়ংকর!প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর কারণে নিরাপদ মাতৃত্ব থাকবে না-অকালে প্রান হারাবে বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী।এমন যদি হয়-তাহলে শফি হুজুরের বয়ান অনুসারে একজন পুরুষের ৪টা বিয়ে করার সাধ ও পুরন হবে না! অশিক্ষা অপুষ্টি আর অকাল মৃত্যুর কারণে তখন বিবাহ করার জন্য হয়ত কোনো মেয়েই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না!জানিনা হুজুরের এই তেঁতুল তত্ত্বের কারণে একসময় না পুরো তেঁতুল গাছটাই উজাড় হয়ে যাবে কি-না।

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ

Thumbnails managed by ThumbPress