🌻🌹 রাখিবন্ধন 🌹🌻
➡️ সনাতন ধর্মে রাখি বন্ধন উৎসব কেন করা হয়?
শ্রাবণের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় রাখীবন্ধনের অনুষ্ঠান । এই দিনে দিদি তার ভাই এর হাতে রাখী বেঁধে দেন। এই বন্ধনের মধ্যে থাকে ভাই এর প্রতি দিদির আন্তরিক শুভকামনা, ভাই এর মনে থাকে দিদি কে রক্ষা করার দায়িত্ববোধ। এই রাখী বন্ধন এক বন্ধন শক্তির প্রতিরূপ, যে শক্তি সকল প্রকার বাধা বিঘ্নতা, প্রতিবন্ধকতা, কাটিয়ে ভাই বোন কে জীবন যুদ্ধে জয় লাভ করার নীরব শপথ করায়। তবে এই মাঙ্গলিক উৎসবের পিছনে আছে অনেক পৌরাণিক গল্পকথা ও ঐতিহাসিক কাহিনী।
.
রাখিবন্ধনের দিন গণেশের বোন গণেশের হাতে একটি রাখি বেঁধে দেন। এতে গণেশের দুই ছেলে শুভ ও লাভের হিংসে হয়। তাদের কোনো বোন ছিল না। তারা বাবার কাছে একটা বোনের বায়না ধরে। গণেশ তখন তাঁর দুই ছেলের সন্তোষ বিধানের জন্য দিব্য আগুন থেকে একটি কন্যার জন্ম দেন। এই দেবী হলেন গণেশের মেয়ে সন্তোষী মা। সন্তোষী মা শুভ ও লাভের হাতে রাখি বেঁধে দেন।
.
পুরাণ বলছে , মহাভারতে আছে, একটি যুদ্ধের কৃষ্ণের কবজিতে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হলে পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এতে কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে যান। দ্রৌপদী তাঁর অনাত্মীয়া হলেও, তিনি দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন এবং দ্রৌপদীকে এর প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বহু বছর পরে, পাশাখেলায় কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করে তাঁর বস্ত্রহরণ করতে গেলে কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে সেই প্রতিদান দেন। এইভাবেই রাখিবন্ধনের প্রচলন হয় ।
.
বলিরাজা ও লক্ষ্মী
অন্য একটি গল্পে রয়েছে, দৈত্যরাজা বলি ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে বালির রাজ্য রক্ষা করতে চলে এসেছিলেন। বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে বলিরাজের কাছে আসেন। লক্ষ্মী বলিকে বলেন, তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ। যতদিন না স্বামী ফিরে আসেন, ততদিন যেন বলি তাঁকে আশ্রয় দেন। বলিরাজা ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে আশ্রয় দিতে রাজি হন। শ্রাবণ পূর্ণিমা উৎসবে লক্ষ্মী বলিরাজার হাতে একটি রাখী বেঁধে দেন। বলিরাজা এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে লক্ষ্মী আত্মপরিচয় দিয়ে সব কথা খুলে বলেন। এতে বলিরাজা মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। বলিরাজা বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেন। সেই থেকে শ্রাবণ পূর্ণিমা তিথিটি বোনেরা রাখীবন্ধন হিসেবে পালন করে।
এছাড়া ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করতে রাখিকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । এই বছরের ২০ জুলাই ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের কথা ঘোষণা করে।
জানানো হয়, এই আইন কার্যকরীর হবে ১৯০৫-এরই ১৬ অক্টোবর, বাংলায় ৩০ আশ্বিন। সেই সময়ে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় মানুষ সামিল হয়। ঠিক হয়, ওই দিন বাংলার মানুষ পরস্পরের হাতে বেঁধে দেবেন হলুদ সূতো।
এই দিনকে মিলন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই দিনটিকে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করার ডাক দেন।
বাংলায় হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বকে ফুটিয়ে তুলতেই এই উদ্যোগ নেন রবীন্দ্রনাথ।
.
শুভ রাখিবন্ধনের আন্তরিক অভিনন্দন।
ঈশ্বর সবার মঙ্গল করুক, আরো শক্তিশালী হোক দাদার প্রতি দিদির শ্রদ্ধা এবং দিদির প্রতি দাদার ভালোবাসা।
শুভ রাখিবন্ধন 🙏
.
ছবিঃ গুগল।
২৫টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভীন
রাখিবন্ধনের পৌরাণিক কাহিনী জেনে খুব ভালো লাগলো। ভাইয়ের প্রতি বোনের স্নেহ ভালোবাসা, বোনের প্রতি ভাইয়ের দ্বায়িত্ব কর্তব্য ভাই-বোনের বন্ধনকে আরো মজবুত করে।
শুভ রাখিবন্ধনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো দাদা
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দিদি।
ভালো থাকুন অনেক।
আলমগীর সরকার লিটন
রাখিবন্ধন আসলে একটা পবিত্র বন্ধন কবি দা
অনেক অনেক ঈদ মোবারক
নিশ্চিয় ভাল ও সুস্থ আছেন——–
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দাদা।
ভালো থাকুন অনেক।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দাদা শুভ রাখিবন্ধন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন । ঈশ্বর মঙ্গল করুন সব ভাইদের। শুভ কামনা রইলো
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দিদি।
ভালো থাকুন অনেক।
ফয়জুল মহী
মনোমুগ্ধকর কথামালায় প্রতিশ্রুতিশীল লেখা ।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দাদা।
ভালো থাকুন অনেক।
সুপায়ন বড়ুয়া
দাদা শুভ রাখিবন্ধন।
রাখি বন্ধনের তাৎপর্যটা বিশদ ভাবে তুলে ধরার জন্য
ধন্যবাদ প্রাপ্য। ভাই বোনের বন্ধন চীর অটুট থাকুক।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন । শুভ কামনা রইলো
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দাদা।
ভালো থাকুন অনেক।
সঞ্জয় মালাকার
দদা শুভ রাখিবন্ধনের শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন।
ভাই বোনের বন্ধন চীর অটুট থাকুক যুগযুগ।
ধন্যবাদ দাদা শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দাদা।
ভালো থাকুন অনেক।
ছন্দা দাম
রাখি বন্ধনের পৌরানিক ইতিহাস সবার জানা থাকা দরকার।আপনার এই লেখা থেকে অনেক জ্ঞান লাভ করলাম।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দিদি।
ভালো থাকুন অনেক।
নিতাই বাবু
আপনাকেও শুভ রাখিবন্ধনের শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাচ্ছি, দাদা। সাথে কামনা করছি, এই রাখিবন্ধনের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল ভাই-বোনদের ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়ে উঠুক। মমজবুত হোক ভালোবাসার বন্ধন।
সবাইকে শুভ রাখিবন্ধনের শুভেচ্ছা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দাদা।
ভালো থাকুন অনেক।
ছাইরাছ হেলাল
বিস্তারিত জেনে ভালো লাগল।
এ ভাবে জানা ছিল না।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা দাদা।
ভালো থাকুন অনেক।
মোঃ মজিবর রহমান
রাখিবন্ধন সম্পর্কে তেমন জানা ছিলনা। প্রদীপদার লেখায় সুন্দরভাবে বিস্তারিত জ্বনে খুশি হলাম। শুভহোক রাখি বন্ধন।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ,দাদা।
শুভেচ্ছা নিবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা
তৌহিদ
এ সম্পর্কে কিছুই জানতামনা। আপনার লেখার মাধ্যমে জানলাম।
ভালো থাকুন দাদা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ,দাদা।
শুভেচ্ছা নিবেন।
আরজু মুক্তা
নতুন করে ঝালিয়ে নিলাম কাহিনী টা।
অটুট থাক বন্ধন। ভাই বোনের
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ,দিদি।