যিনি লিখেন তিনিই লেখক। কোন কিছু অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করাটাই লেখা। যা কিছু লেখা হয় তার অনেক নাম থাকে। ছড়া, কবিতা,গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, চিঠি থেকে শুরু করে বাজারের ফর্দ,সবই লেখা। লেখকের রচনা।

লেখক তার কিছু রচনা শুধুই নিজের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করেন।কিছু ব্যবহার করেন কাছের ও দূরের মানুষদের জন্য। কিছু রচনা করেন মনের তাগিদে। নিজের ভাবনা গুলো, ভালোলাগা, জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, একান্ত মনের ভেতরে জমা হয়ে থাকা কথামালা, ছড়িয়ে দিতে চান সবার মাঝে।

কোন কিছু লেখা বেশ সহজ না। কঠিনও না।
নিজে-নিজেতো কত কথাই বলি, কিন্তু যখন কাউকে বলার আগে যেমন করে কথা গুলো একটু গুছিয়ে নিতে হয়, লেখা ব্যাপারটি তেমনই। যেটা ভাবছি তা কতটুকু প্রকাশ করতে পারছি বা যা নিয়ে লিখছি সেই সম্পর্কে কতটুকু জানি এটাই লেখার সময় খেয়াল রাখতে হয়। একজন লেখক নিজেকে নিয়ে যা খুশি তাই লিখতে পারেন। নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে অথবা যে-কোনো বিষয়ের উপর লিখতে গেলে তখনই কিছু রীতিনীতি পালন করতে হয়।

যখন একজন লেখক কোনকিছু রচনা করে নিজের কাছে রাখেন, তখন সেটা তার নিজস্ব থাকে। কিন্তু যখন রচনাটি জনসমক্ষে প্রকাশ করেন তখন তা আর লেখকের ব্যাক্তিগত থাকেনা। লেখক তার রচনাটি প্রকাশের বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। কেউ বই বের করেন।কেউ ফেইসবুক, ব্লগ সহ অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। মুলত উদ্যেশ্যে একটিই। পাঠক তৈরী করা। লেখক চান তার রচনাটি যেন পাঠ করা হয়।

এখন আসবো পাঠকের কথায়। পাঠক যখন কোনো কিছু পড়েন, তখন সেটা কোনো না কোনো ভাবে তার মনে প্রতিক্রিয়া তৈরী করে।লেখাটি কারো ভাবনার সাথে মিলে যায়, কারো কাছে কম ভালো লাগে। আবার কারো কাছে জটিল মনে হয়। যেসকল ক্ষেত্রে পাঠক ও লেখক একই প্লটে থাকেন সেইসব ক্ষেত্রে পাঠক মন্তব্যের মাধ্যমে সরাসরি লেখকের সাথে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। পাঠকের জন্যে সব সময় মন্তব্য করাটা খুব সহজ হয়না। লেখাটি পড়ে কতটা বুঝেছে বা কেন বুঝে নাই, এটা বলা একটু কঠিন মনে হয়। লেখার প্রশংসা করা যায় সব ভাবেই। তবে তৈলাক্ত বাক্য খুব বেশি ব্যবহার হচ্ছে কিনা এটা ভেবে দেখতে হবে। লেখকের কোনো মতের সাথে পাঠকের মত মিলছে না, বা লেখকের কোথাও ভুল হয়েছে, কিন্তু পাঠক চাইছেন লেখকের ভুলটা ধরিয়ে দিতে। ঐ সময়ে পাঠকের জন্যে মন্তব্য করাটা একটু কষ্ট সাধ্য।অনেক লেখক আছেন যারা নিজের লেখায় আলোচনা চান, তবে সমালোচনা একদম বরদাস্ত করেন না।

একটি লেখায় ইতিবাচক মন্তব্য যেমন আসে, তেমন নেতিবাচক মন্তব্যও আসে। প্রতিউত্তরে সাধারণত যাদের ভালোলেগেছে তাদের ধন্যবাদ, সাধুবাদ ইত্যাদি দেয়া হয়। কিন্তু যাদের কাছে রচনাটি গ্রহন যোগ্যতা পায়নি এবং যারা সমালোচনা করেছেন তাদের কিছু বলার আগে সময় নিয়ে ভাবতে হয় বৈকি। প্রথমত,পাঠক লেখাটি পড়েছেন এই জন্যে একজন লেখকের মাঝে অবশ্যই কৃতজ্ঞতা বোধ থাকতে হবে। পাঠক লেখাটি পছন্দ করেনি বা সমালোচনা করেছেন। এটাকে লেখক কিভাবে নিয়েছেন সেটা তার প্রতিউত্তরে প্রকাশ পাবে। সে যদি রুঢ় ভাষা প্রয়োগ করেন, সে ক্ষেত্রে তার প্রতি পাঠকের বিরূপ মনোভাব তৈরী হবে। আবার যদি এড়িয়ে যান তাহলে পাঠকের আস্থা হারাবেন। ফলে লেখক লিখে যাবেন কিন্তু সে লেখা পাঠকের দৃষ্টিতে পরার সম্ভাবনা থাকবে বলে মনে হয় না।

লেখক এবং পাঠক উভয়েই সম্মানিত। লেখকের রচনা ছাড়া পাঠক হওয়া যায়না। পাঠক ছাড়া রচনার সার্থকতা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ