সাধারণত মানুষ যখন মোবাইল ফোনে কথা বলে তখন তাঁর সমস্ত মনোযোগ মোবাইলে কথা বলার মধ্যে নিবিষ্ট থাকে। আশেপাশের কিছুই তখন মনে থাকেনা। কোথায় হাটছে সে খেয়ালও থাকেনা। পাশাপাশি স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে সেলফি তোলতে গিয়েও মানুষ পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে। কুমীরের পেটে সাবাড় হয়ে যাচ্ছে। নানান ধরনের মর্মান্তিক দুঃখজনক ঘটনার মাধ্যমে মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে। পাশাপাশি মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে মানুষ যে শধু ট্রেনে কাটা পড়েছে তা নয়। অনেক পথচারী কথা বলতে বলতে গাড়ীর চাপায় পড়ে আহত বা নিহিত হয়েছে সেরকম ঘটনা আমাদের দেশে ভুরি ভুরি। এটা যে যদি আমাদের দেশে ঘটছে তা নয় বরং সারা বিশ্বে তা ঘটে চলেছে।

বড় দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে গাড়ি, বাস ট্রাক, রিক্সা, টেক্সি, টেম্পো সহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা প্রায়শই মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালায়। এধরনের অসচেতনতা আর  অসতর্কতার জন্য কত যানবাহন যে দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছে তাঁর সংখ্যা শুমার করা সম্ভবপর নয়। পাশাপাশি কত মানুষ যে হাত পা হারিয়ে পঙ্গু হয়েছে আর কত মানুষ যে মৃত্যু বরণ করেছে তাঁর পরিসংখ্যান কারো কাছে আছে বলে মনে হয়না। শুধুমাত্র অসচেতনতা, অসতর্কতা আর অবহেলার জন্য মানুষের প্রাণ যাচ্ছে সাথে সাথে নিজেরও প্রাণ দিচ্ছে। রাস্তা পারাপারের সময় কথা বলা কি খুউব জরুরী ? আপনি মোবাইলে কথা বলতে বলতে যে সচেতনভাবে বা অসচেতনভাবে গাড়ির নীচে নিজেকে সপে দিচ্ছেন এটা কি ভালো হচ্ছে ! আপনার মোবাইলই আপনার ঘাতক হচ্ছে। আপনি কি একটিবারের জন্য নিজের কথা, নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করেছেন। একজন চালক যানবাহন চালানোর সময় একটি বারের জন্য চিন্তা করে দেখেছেন তাঁর যানবাহনে কতজন যাত্রী আছেন । তাঁদের পরিবার পরিজনের কথা। রাস্তায় চলাচলকারী পথচারী বা তাঁদের পরিবার পরিজনের কথা। এবং নিজের পরিবার পরিজনের কথা ।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় সবার আগে নিজেকে সচেতন এবং সতর্ক হতে হবে। নিজের কথা, নিজের পরিবার পরিজনের কথা মনে রাখতে হবে বিশেষ করে যানবাহন চালানোর সময়। আপনার অসচেতনতা অবহেলা আর অসতর্কতার জন্য অনেকগুলো মানুষের জীবনের সঙ্গে আপনার জীবনও প্রদীপও দপ করে নিভে যেতে পারে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম এবং বিশেষ একটা কারণ হচ্ছে মোবাইলে কথা বলা। আমাদের বাপ দাদাদের জামানায় তো মোবাইল ছিল না। জীবনে এতো গতিও  ছিলনা । এখন সবাই ছুটতে চায় দ্রুত থেকে অতি দ্রুত। মোবাইল ফোন মানুষকে যেমন মানুষের জীবনের কাছাকাছি এনে দিয়েছে তেমনি অবহেলা, সচেতনতা বা অসতর্কতার জন্য জীবনের জন্য বিরাট হুমকী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাস্তায় চলাচলের সময়,গাড়ি চালানোর সময় আমাদেরকে সচেতন, সজাগ এবং সতর্ক থাকা অতীব জরুরী। তাছাড়া গাড়ী চালানোর সময় যেন কেউ মোবাইল ব্যবহার না করতে পারে সে ব্যাপারে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলের জন্য সচেতনামূলক প্রচার প্রচারণা চালানো অতীব জরুরী সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এবং মানুষের মৃত্যু এবং পঙ্গুত্ব ঠেকানোর জন্য। বিষয়টি অবশ্যই আমাদের আত্মহত্যার সামিল । আশা করি বিষয়টি সবাই বিবেচনায় রাখবেন।

 

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ