মেঘের উপর বাড়ি…………..

কামাল উদ্দিন ২৯ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ০৯:১৯:০৪অপরাহ্ন ভ্রমণ ২৪ মন্তব্য

হুমায়ুন আহমেদের একটা উপন্যাসের নাম আছে মেঘের উপর বাড়ি । সেই উপন্যাস আমার পড়া হয়নি । তবে মেঘের উপরের বাড়িতে একদিন অবস্থান করে আমি বুঝেছি ওখানে বসে নিঃসন্দেহে একটা উপন্যাস লিখে ফেলা যায় । বুঝতে পারছেন না? কোন জায়গার কথা বলছি? জায়গাটার নাম পাসিং পাড়া । ইহা একটি আদিবাসী গ্রাম । কেওকারাডাং পর্বত থেকে পূর্ব দিকের ঢাল বেয়ে ১০/১৫ মিনিটেই ওখানে পৌছে যাওয়া যায় । যার উচ্চতা ৩০৬৫ ফুট । ইহাই বাংলাদেশের সব চেয়ে উঁচু গ্রাম ।

পাড়ার বাসিন্দারা মূলত মুরং সম্প্রদায়ের। প্রচলিত মতে পাড়া প্রধান বা কারবারি পাসিং ম্রো- এর নামে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘পাসিংপাড়া’। ৫০/৬০ টি মুরং পরিবার বাস করে পাসিংপাড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মূল জীবিকা জুমচাষ। গ্রামের ঘরগুলোর বেড়া বাঁশের এবং টিনের চাল। পাসিংপাড়া গ্রামের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গ্রামের মধ্য দিয়ে মেঘ ভেসে যায়। তো আসুন আমরা ক্যামেরা নিয়ে ঢুকে পড়ি পাসিং পাড়ায়।


(১) পাসিং পাড়ায় যেতে হলে কেওকারাডাং এর চুঁড়াকে পেছনে ফেলে পুব দিকের ঢাল নেমে যেতে হবে নিচের দিকে।


(২) তারপরের পথ তুলনা মূলক ভাবে সহজ।


(৩) কয়েক মিনিট হাটলেই ঘাস বনের ভেতর দিয়ে দৃশ্যমান হয় পাসিং পাড়া।


(৪/৫) কেওকারাডাং এর চুড়ায় দাঁড়িয়ে পাসিংপাড়া দেখা যায় না, তবে তবে পুব দিকের ঢাল বেয়ে কিছুটা পথ পার হলেই উপর থেকে দেখা যাবে পাসিংপাড়ার এমন রুপ ।


(৬/৭) মেঘের ভেলার অনেক উপরে পাসিংপাড়া দেখতে খুবই চমৎকার, তবে এখানকার আদিবাসীদের বিশাল একটা কষ্ট হলো অন্যান্য পাহাড়ি গ্রামগুলোতে যেমন ঝরণা থেকে পাইপের সাহায্যে ২৪ ঘন্টা অতি সহজেই পানির সরবরাহ পেয়ে থাকে এখানে সেটা নেই। কারণ কেওকারাডাং ছাড়া আসে পাশের সব পাহাড় এই পাহাড় থেকে নিচু, আর কেওকারাডাংএ কোন ঝর্ণা নাই। তাদের অনেক নিচের ঝর্ণা থেকে পানি সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে হয় আর বৃষ্টির পানি যতটা সম্ভব ওরা জমিয়ে রাখার চেষ্টা করে।


(৮) গ্রামে ঢোকার মুখে তোলা ছবি।


(৯) আশেপাশের পাহাড় আর নির্জনতার ছবি তুললে এমনি কিছু চোখে পড়ে।


(১০) সবাই ক্লান্ত, তাই পাহাড়ি বাতাস একটু ভালোভাবে শরীরে না লাগালে কি হয়? 🙂


(১১) বিশালাকারের পাহাড়ী ঝিঁঝিঁ পোকা । পুরো পাহাড়কে যারা মিষ্টি সূরের আবেশে মাতিয়ে রাখে সর্বদা, যার সুরেলা কন্ঠ পাহাড়ে পাহাড়ে প্রতিধ্বনিত হয়ে পর্যটকদের বিমোহিত করে । পাসিংপাড়ার এক ক্ষুদে আদিবাসীর হাতে সে বর্তমানে বন্দি ।


(১২/১৩) এদিন ওদের ধর্মীয় বড় কোন উৎসব ছিল, তাই আগের দিন সারারাতই ধর্মীয় আরাধনার সূর মাইকে ভেসে আসছিল, আর খানা-পিনার আয়োজন ও ছিল বেশ। শিশু থেকে বুড়ো সবাই উপস্থিত ছিল এই উৎসবে। আর সকালে বাড়ি ফেরার পথে সবার হাতেই কিছুনা কিছু নানা ধরণের ফলমূল ও খাবার ছিল।


(১৪/১৫) গ্রামের ভেতরে ঢোকার পর দেখলাম সবাই কোন না কোন কাজে ব্যস্ত।


(১৬) বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য মাটিতে ওরা বেশ কিছু গর্ত খুড়ে রেখেছে।


(১৭/১৮) কেওকারাডাং এর বিপরিত দিক থেকে পাসিং পাড়াকে এমনি দেখায়।


(১৯) পাসিং পাড়া থেকে পুবের ঢাল বেয়ে খাড়া নামলেই জাদিপাই পাড়া । পাসিং পাড়ায় দাড়িয়ে জাদিপাই পাড়ার এমন সুন্দর ছবি তোলা যায় অনায়াসেই । যেন পটে আঁকা কোন ছবি । (এখানে টোকা দিয়ে জাদিপাই পাড়া নিয়ে আমার পোষ্ট দেখতে পারেন)


(২০) সব শেষে আমি সহ ভ্রমণ বাংলার আমরা কয়েকজন 😀


যদিও ভ্রমণ ট্যাগ লাগিয়েছি, এটা মূলত একটা ছবিব্লগ

0 Shares

২৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ