আপনাকে একটা নীল পাঞ্জাবি দেবো।সাথে নীল চুড়ি।
-নীল চুড়ি!নীল চুড়ি দিয়ে আমি কি করবো?
~কেন,আপনার পাশে যখন নীল শাড়ি তে মুচকি হেসে আপনার গা ঘেষে দাড়াবো তখন না হয় পড়িয়ে দেবেন আমার এই ফাকা দু হাতে কি দেবেন না?
-দেবো।অবশ্যই দেবো।তবে শুধু নীল চুড়ি না।ভালবাসায় মোড়ানো নীল চুড়ি।
আমার কথায় মেঘলা মুচকি হেসে আবারও সামনের দিকে তাকালো।এই সময়টাতে এখানে বেশ বাতাস থাকে।ঠান্ডা বাতাস।অবশ্য এটা গরমে হলে মন্দ হতো না।কিন্তু এই শীতে এটা মোটেই আমার জন্যে না।শুধু আমার কেন,কোন সুস্থ মস্তিষ্ক ব্যাক্তি চাইবে না এই বাতাসে এখানে বসে থাকতে।
অবশ্য আমিও চাই নি এখানে বসতে।মেঘলা যখন মায়াময় চাহনিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,চলেন এখানে একটু বসি'”তখম আর না করতে পারিনি।কিন্তু এই না করতে না পারাটা যে আমাকে এতটা পোহাতে হবে সেটা ভাবতেও পারিনি।একদম কাপুনি শুরু হয়ে গেছে।এদিকে মেয়েটার যেন কোন ঝামেলাই নেই।একমনেই তাকিয়ে আছে নদী মাতিয়ে রাখা ঢেওয়ের খেলায়।
মেঘলার সাথে আমার পরিচয় এই মাস খানেক হবে।সেদিন যখন পাত্রি দেখতে মেঘলাদের বাড়িতে যাই সেদিনই ওকে প্রথম দেখি।প্রথম দেখাতে খারাপ কিছু দেখলেও কেমন যেন ভাল লাগে।তারপর আস্তে আস্তে খুত ধরা শুরু হয়ে যায়।মেঘলাকে যখন আমি প্রথম দেখি তখন আমার একদম ই ভাল লাগেনি। এই শীতে মেয়েটা যখন শুধু সেলওয়ার কামিজ পড়ে আমাদের সামনে আসলো তখনই ভেবেছিলাম এই শীত শেষ হওয়ার আগেই মেয়েটা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হবে।আর এটাকে নিয়ে আমার দৌড়াতে হবে এ হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতাল।তারচেয়ে পরেরটার অপেক্ষা করাই ভাল।
তবে মেয়েটার সরল চাহনীর সাথে এমন সুমধুর বাচন ভঙ্গি যেন আমাকে খুব দ্রুতই মুগ্ধ করলো।এরকম সহজ সরল মেয়ে এই সময় পাওয়া বেশ দুস্কর।দুপুর গড়িয়ে যখন বিকেল হয়ে এলো তখন মেঘলাদের বাড়ি থেকে বের হতে হতে আমার মাথায় একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছিল।এই মেয়েটাকে ই আমার চাই।হ্যা এই মেয়েটাকেই চাই।
.
বাতাসের বেগ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আমার কাপুনিটাও কেমন যেন বেড়ে গেলো।হয়তো এটা মায়ার চোখ এড়ায়নি।মেয়েটা আমার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে বললো,
-আপনাকে নীল পাঞ্জাবির সাথে একটা নীল সোয়েটার ও কিনে দেবো।
মেঘলার কথায় আমি এবার মুচকি হাসলাম।আমার হাসিতে মেঘলাও হেসে উঠে দাড়িয়ে বললো,
-চলুন।
মেঘলার কথায় আমিও বসা থেকে উঠে দাড়াতে দাড়াতে বললাম,
-কোথায়?
-নীল পাঞ্জাবি আর নীল সোয়েটার কিনতে।
কথাটি বলেই মেয়েটা আমার হাতটা একটু শক্ত করেই ধরলো।চাদরে মোড়ানো মেয়েটার দিকে আমি এবার একটু ভালভাবে তাকালাম।এই শীতে মেয়েটাকে যেন আরও বেশি সাদা মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে ওর ও বেশ শীত লাগছে।এই সময় মেঘলাকে একটু জড়িয়ে ধরার ইচ্ছে হলেও সেটা আমি করলাম না।বলা তো যায় না, কে আবার কোথা থেকে ছবি তুলে ভাইরাল করে দেয়।এই ডিজিটাল যুগের ভাইরাল আমি হতে চাই না।
মেঘলার সাথে হাটতে হাটতে বেশ খানিকটা পথ এলেও কেমন যেন শীত কমছিল না।আমার এ অবস্থা দেখে মেঘলা মুচকি হেসে বললো,
-আপনাকে আমি এই চাদরের কিছুটা ধার দিতে পারি,যদি আপনি আমাকে নীল চুড়ি পড়িয়ে দেন।
মেঘলার কথায় আমি কি বলবো ভেবে পেলাম না।মুচকি হেসে ওর বাড়িয়ে দেওয়া চাদরের কোনাটা গায়ে জড়িয়ে নিতেই মেয়েটা আমার কোমড়ে হাত রাখলো।অবশ্য এই কাজটা আমার করা উচিত ছিল।কিন্তু সাহসের অভাবে সেটা আর করতে পারিনি।আমি মেঘলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললাম, এই চাদরের অর্ধেক যদি এভাবে সারাজীবন ধার দাও তাহলে প্রতিরাতেই তোমার জন্যে নীল চুড়ি আনবো।নিজ হাতে পড়িয়ে দেবো।
আমার কথায় মেঘলা কিছু বললো না।আমার দিকে আরও একটু ঘেষে আসলো।এই ছোট চাদরটা হুট করেই কেমন যেন শীতটা অনেকটাই কমিয়ে দিল।আমি মেঘলার সাথে হাটছি আর ভাবছি,
আর যাই হোক এই চাদর হাতছাড়া করা যাবে না।কোন ভাবেই না,কোন মতেই না।
১২টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
নিল পাঞ্জাবি ও নিল চুড়ির মন্তব্য পরে দেব। মন তৃপ্ত হোক।
সুপায়ন বড়ুয়া
সোনেলার উঠানে স্বাগতম।
সুন্দর গল্প নিয়ে এলেন।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
স্বাগতম আপনাকে সোনেলায়।
নিয়মিত লেখুন। অন্যদের লেখাও পড়ুন।
ব্লগ বিষয়ে যে কোন সমস্যায় মন্তব্যে লিখে জানাবেন।
প্রফাইলে একটি ছবি যুক্ত করুন।
শুভ ব্লগিং।
উর্বশী
সুস্বাগতম,
সুন্দর ও মিষ্টি ভাল লাগার গল্প নিয়ে এসেছেন এই সোনেলা ভালোবাসার পরিবারে। গল্প পড়ে ভাল লেগেছে। আমিও নতুন, মাত্র কয়েক দিন হয় এসেছি, তবে মনে হয়েছে এখানে সবাই গুনীজনের পাশাপাশি আপনজন। লিখতে থাকুন,সবার লেখা পড়ার আহবান করছি। ভাল ও সুস্থ থাকুন , শুভ কামনা।।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
স্বাগতম সোনেলার উঠোনে , প্রথম দিনের মিষ্টি গল্পের কারণে খুব ভালো লাগলো। নীল চুড়ি, চাদরের কোনা দারুন উপভোগ্য লেগেছে তার উপর মেঘলার কোমরে হাত রাখার বিষয়টি । ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ কামনা অবিরাম।
নিতাই বাবু
প্রথমে আপনাকে সোনেলা উঠোনে স্বাগত। এরপর সোনেলা ব্লগে প্রথম পোস্টেই বাজিমাত করার জন্য আপনার প্রতি রইলো শুভকামনা। আশা করি সবসময়ই আমাদের সাথে থাকবেন।
ফয়জুল মহী
ভালো লাগলো লেখা ।
মোঃ মজিবর রহমান
আমি মুগ্ধ হয়ে পড়লাম খুব সাজানো পরিপাটি মিস্টি প্রেমের গল্প। নীল চুড়ি ণীল পাঞ্জাবি শোয়েটারে দারুন সোকেজ সাজান হবে। অপুর্ব।
সোনেলায় লিখতে থাকুন। সোনেলায় আপনার আগমন সুন্দর ও সফল হোক কামনা করি।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
আলমগীর সরকার লিটন
রোমান্টিক ধররেন গল্প নীল পাঞ্জাবির সাথে নীল চুড়ি বেশ
অনেক শুভেচ্ছা রইল————–
তৌহিদ
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে। প্রথমেই চমৎকার একটি রোমান্টিক গল্প নিয়ে এলেন দেখে ভালো লাগলো।
নীল চুড়ি নীল পাঞ্জাবি সাথে নব্যপ্রেমিক যুগলের মিস্টিমধুর প্রেম দারুণ ফুটিয়ে তুলেছেন। নিয়মিত লিখুন। প্রোফাইলে সুন্দর একটি ছবি দিন।
শুভ কামনা রইলো।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
খুব চমৎকার — আমার কথায় মেঘলা কিছু বললো না।আমার দিকে আরও একটু ঘেষে আসলো।এই ছোট চাদরটা হুট করেই কেমন যেন শীতটা অনেকটাই কমিয়ে দিল।আমি মেঘলার সাথে হাটছি আর ভাবছি,
আর যাই হোক এই চাদর হাতছাড়া করা যাবে না।কোন ভাবেই না,কোন মতেই না।
শুভ কামনা ।
আরজু মুক্তা
মিষ্টি গল্প মন ভরিয়ে দিলো। ভালোবাসা এমনি হয়।
সোনেলায় স্বাগতম