মায়া (২)

ইঞ্জা ১৬ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার, ১১:২৬:২০অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৩২ মন্তব্য

রাতে আব্বাকে দেখলাম পাটের বস্তা দিয়ে এলো ওর সামনে, যেন ও ওখানেই ঘুমাতে পারে।

রাতে সব ভাই বোন মিলে মিটিংয়ে বসলাম, কি নাম রাখবো ওর?
সেইসময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ইংরেজি ছবি ছিলো স্পেস 1999, সাইন্স ফিকশন ছবিটির সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীর নাম ছিলো মাতা, যে তার পাওয়ারের মাধ্যমে যেকোন কিছুর রূপ নিতে পারতো, সাপ, তেলাপোকা, ভিনগ্রহের প্রাণী, সে যা চাই সেই রূপ নিতে পারে।
সেই মায়ার নামই আমরা আমাদের কুকুর শাবকের নাম মায়া রাখবো বলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হলো।

তখন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হতো, কারণ স্কুল আমাদের শুরু হতো সকাল আটটায়, সকাল ছয়টার সময় উঠে ফ্রেস হয়ে ব্রেকফাস্ট করে রওনা হতে হতে সকাল সাতটা।
আমরা ফ্রেস হয়েই নাস্তার টেবিলে বসলাম, আম্মা যা নাস্তা দিয়েছে তার অর্ধেক খেয়ে বাকিটা মায়াকে দিলাম, মায়া দেখলাম পেটপুরে চেঁটেপুটে খেলো, ওর খাওয়া শেষে আম্মা দিয়ে গেলো দুধ আর বিস্কুট, সেটাও দেখি চুকচুক করে খেয়ে নিলো।
আমরা ওকে বিদায় জানিয়ে স্কুলে গেলাম।

স্কুল থেকে ফিরেই ওকে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগলাম ভাই বোন সবাই কাড়াকাড়ি করে, এই দেখে আম্মা দিলো পিটে কিল সাথে বললেন, যাও এখন গোসল সেরে আসো সবাই, এরপরে ওকে আর কোলে নেওয়া চলবেনা।
আমরা গোসল সেরে ভাত খেলাম, আম্মা কাজের লোককে দিয়ে ডাল ভাত দিলো মায়াকে।
ওকে দেখে রাখা আমাদের নিত্য কর্ম হয়ে উঠলো, বিকেলে আমার সাঙ্গপাঙ্গরা এলে মায়ার লেজে কখনো নারিকেল পাতা, কখনো কাগজ বেঁধে ছেড়ে দিতাম, ও ও গুলো লেজে নিয়ে আমাদের পিছে পিছে দৌঁড়াতো, কখনো আমরাই ওকে ধাওয়া দিতাম, এই হয়ে গেলো আমাদের প্রতিদিনকার রুটিন।

একদিন বিকেলে আব্বা অফিস থেকে এলেন কোন এক কাজে, এসেই দেখেন ওর পিছনে নারিকেল গাছের পাতা বাঁধা, দিলেন কঠিন বকা, এতেই এরপর থেকে ওর পিছনে ওসব লাগানো বন্ধ হয়ে গেলো।
এরপর থেকে আমরা ছেলেরা খেলার সময় মায়াও আমাদের সাথে খেলা করা শুরু করলো, বলের পিছনে দৌঁড়ানো বা আমাদের সাথে সাথে দৌঁড়ানো ওর ভীষণ প্রিয় খেলা হয়ে দাঁড়ালো।

....... চলবে।
ছবিঃ গুগল।

0 Shares

৩২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ