মালয়েশিয়া ভ্রমণ (লাঙ্কাবি পর্ব ২)

ইঞ্জা ২ সেপ্টেম্বর ২০২০, বুধবার, ০৭:৪৭:৪৭অপরাহ্ন ভ্রমণ ৩১ মন্তব্য

হোটেলে ফিরে আমরা রুমে গেলাম, টুইন বেডের রুমটা থেকে মনোরম  সুইমিংপুল, এরপরে নারিকেল গাছের সারি, তার ওপারে বেলাভূমি এবং সাগর দেখা যায়, এই মাস সাত আটেক আগেই ইন্দোনেশিয়ার ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে এই সমুদ্রের জলরাশি মালয়েশিয়ারও ক্ষতি করেছিলো ভেবে ভয়ে ভয়ে বাইরে তাকালাম, খুবই মনোরম দৃশ্য, সুইমিংপুলে যুগলরা সাঁতার কাটছে, কেউ কেউ ককটেইল পান করছে, এইসব দেখতে দেখতে খেয়াল করলাম দরজায় নক হচ্ছে, আমার ট্রিপ পার্টনার বন্ধুটি দরজা খুলে দিলে রুম বড় বড় সাইজের এক ফ্রুট বাস্কেট রেখে গেলো। 

পার্টনার সন্দেহের চোখে আমার দিকে তাকালে আমি বললাম, ফ্রুট গুলো কম্পলিমেন্টারি, আসো আপাতত এই দিয়ে লাঞ্চ করি। 

বিভিন্ন সিজনাল ফ্রুট ভর্তি বাস্কেট নিয়ে বসলাম দুজন, আনারস, পেঁপে, কমলা, মালটা, কলা কি নেই বাস্কেটে, দুজনেই পেট ভর্তি করে খেলাম।

খেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে সুইমিং ট্রাঙ্ক পড়ে উপরে সর্টস পড়ে দুজনেই নিচে গেলাম, উদ্দেশ্য সুইমিংপুল, সুইমিংপুলের কর্মকর্তারা আমাদের টাওয়াল দিলে দুজনেই ড্রেসিংরুমে গিয়ে রেডি হয়ে এসে পাশাপাশি দুইটা চেয়ার দখল করে টাএয়াল আর সর্টস, টিশার্ট রেখে পানিতে নামলাম, আমি তো অসাঁতারু, কম পানিতে দাপাদাপি করছি, পার্টনার ব্যাটা পুরা সুইমিংপুল সাঁতরাচ্ছে, সুইমিংপুলের পাশেই ককটেইল বার, আমি ডুব দিয়ে এগিয়ে গেলাম বারের কাছে। 

এইসব বারে হার্ড ড্রিংক্স দিয়ে ককটেইল বানালেও, এর মিশ্ররণের কারণে তা আর হার্ড ড্রিংক্স থাকেনা, এতে খুবই কম নেশা হবে, ফলশ্রুতিতে নেশার কারণে সুইমিংপুলে আপনি তাল হারাবেন না। 

আমি ডাবের শাষ, হাল্কা নারিকেল তেল, এনার্জি ড্রিংক্স এবং ভদকা দিয়ে তৈরি এক ককটেইল নিলাম, যা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করাতে মুসের মতো (থকথকে) হয়ে গেলো, স্ট্র দিয়ে খেতে অসাধারণ লাগছিলো। 

কিছুক্ষণের মধ্যে পার্টনারও এসে যোগ দিলো, আগে থেকেই কথা ছিলো যা খরচা হবে তা দুজনে মিলে দেবো।

এরপর আর কিছুক্ষণ সুইমিংপুলে থেকে উঠে গিয়ে পুল চেয়ারে শুয়ে রইলাম, এক সময় উঠে গিয়ে শাওয়ারে গোসল করে চেইঞ্জ করে রুমে ফিরে এলাম। 

রুমে ফিরেই ঘুম দিলাম যা সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত চললো।

 

ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ড্রেসআপ করে নিচের রেস্টুরেন্টে গেলাম, দুজনে একটা টেবিল নিয়ে বসেছি, ওয়েটার এসে হট টাওয়েল দিয়ে গেলো, সাথে জানতে চাইলো আমরা কি বুফে নেবো না আলা কার্ট নেবো, আমি বললাম, বেটার আমরা বুফেই নেবো। 

এরপর দুজনেই উঠে গেলাম বুফে থেকে খাবার নেওয়ার জন্য, আমি ফ্রাইড রাইস, চিকেন গার্লিক বা এই ধরণের কিছু নিলাম, সাথে রেড স্ন্যাপার, বড় সাইজের চিংড়ি আর স্যুপ নিলাম। 

দুজনেই ফিরে এসে খেতে বসলাম, ওয়েটার এসে আমাদের পানি দিয়ে বললো, রেস্টুরেন্টের অন্য পাশে বার বি কিউ আইটেম আছে, কিছুক্ষণ পর সেইসব আইটেম এনে খেলাম। 

 

খাওয়া শেষে দুজনই রুমে ফিরে এসে ফ্রি ডিউটি থেকে আনা জ্যাক ডানিয়েলস খুলে আমি এক পেগ পেটে চালান করে দিলাম ঘুম, পরদিনের জন্য রিসেপশনে বলা ছিলো সাড়ে পাঁচটায় ওয়েক আপ কল দেওয়ার জন্য, ওয়েক আপ কলের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলে দ্রুত উঠে ছোটো এক ব্যাগে সুইমিং ট্রাঙ্ক, টাওয়াল ইত্যাদি নিয়ে নিচে গেলাম, রেস্টুরেন্টে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে রিসেপশনে অপেক্ষা করতে লাগলাম গাড়ির জন্য। 

জাস্ট সাতটায় একটা মাইক্রোবাস এলো, সেটাতে আমরা দুইজন ছাড়াও আরও দুই জোড়া ফরেনার উঠলো আমাদের হোটেল থেকে। 

গাড়ি ছেড়ে দিলে আমরা অপেক্ষা করছি শীপের ঘাটে পোঁছানোর জন্য, ঘাটে পোঁছালে দেখলাম প্রচুর মানুষ একটা বড় বিল্ডিংয়ের সামনে যাচ্ছে, আমরাও তাদের ফলো করে সেই বিল্ডিংয়ের ভিতরের করিডোর ধরে ঘাটে পোঁছালাম, সবাই টিকেট দেখিয়ে দেখিয়ে শীপে উঠতে লাগলো, শীপ ফুল হয়ে গেলে শীপ ছেড়ে যেতে লাগলো। 

আমাদের পালা এলে শীপে উঠলাম, শীপ নয় যেন বাসে উঠেছি, এমনই সব সিট। 

আমরা রওনা হয়ে গেলাম পুলাও পায়ার উদ্দেশ্যে, কিছুক্ষণ পর দেখলাম অনেকেই চেয়ার ছেড়ে উঠে শীপের ছাদে চলে যাচ্ছে, আমরাও উঠে গেলাম ছাদে, চারিদিকে তাকিয়ে দেখি সাগরের নীল জল ছিড়ে আমাদের শীপ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে, এই শীপকে শীপ কম স্পীড বোটই বলা যা বা ইয়ট বলতে পারেন এমনই তার স্পীড। 

আমরা চারিদিকের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে দেখতে এগুচ্ছি, ছাদের বসার জায়গা আছে দেখে সেখানেই বসে বসে দেখছি সব। 

 

..... চলবে।

ছবিঃ গুগল।

১ম পর্বের লিংকঃ

https://www.sonelablog.com/%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%ad%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a6%a3-%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%95-2/

0 Shares

৩১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ