
২০০৪, ২০০৫ সালের কোনো এক সময় জানতে পারলাম মালয়েশিয়াতে নিজেদের ব্রান্ড গাড়ি বানাচ্ছে, যেহেতু এক সময় গাড়ি ব্যবসায়ী ছিলাম তাই ভাবলাম যায় মালয়েশিয়া ঘুরে আসি।
তখন মালয়েশিয়ান সরকার পর্যটকদের সেই দেশ ঘুরে বেড়াবার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছিলো জেনে গেলাম পরিচিত এক ট্রাভেল এজেন্সিতে, তাদের কাছে জানতে চাইলাম বিষয়টা কি?
ওরা জানালো মালয়েশিয়ার ভিতরে যেকোনো দুইটা ডেস্টিনেশন গেলে সেখানে ভাড়া পড়বে প্রায় পঁচিশ হাজার, সাথে যেকোনো এক ডেস্টিনেশনে দুই রাত এবং এক দিন মানে দুপুর বারোটা পর্যন্ত, যা সময়ে দুপুর তিনটা পর্যন্ত এক্সটেন্ড করা যায় এমন ব্যবস্থায় ফাইভ স্টার হোটেলে থাকতে পারবো কম্পলিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট সহ, কিন্তু কমছে কম দুইজন গেলেই তা সম্ভব।
আমি আশাহত হলেও আমার পাশের টেবিলে থাকা আমার এক পরিচিত জন বললো, আমিও যেতে চাই কিন্তু পার্টনার নেই।
দুজনে যুক্তি করে পার্টনার হয়ে গেলাম কিন্তু ডেস্টিনেশন চুজ করতে হবে দুইটা, পার্টনারের শখ লাঙ্কাবি যাবে, শুনেছে খুব সুন্দর আর আমি যেতে চাই কুয়ালালামপুর।
শেষমেশ ঠিক হলো উক্ত দুই ডেস্টিনেশনেই যাবো, যেহেতু লাঙ্কাবি যাবো তার সৌন্দর্য্য দেখতে, বেড়াতে, তাই কুয়ালালামপুর নেমেই প্রথমে যাবো লাঙ্কাবি, সেখানে তিন রাত এক দিন থেকে বিকালের ফ্লাইটে কুয়ালালামপুর যাবো, এভাবেই টিকেট নিয়ে নিলাম, ভিসার সমস্যা নাই, কারণ এরাইভাল ভিসা, সুতরাং হোটেল বুকিং করালাম কুয়ালালামপুর গ্র্যান্ড মায়া হোটেলে, লাঙ্কাবিতে আমরা নিজেরাই হোটেল করবো।
যাক সব রেডি করে ফিরে আসলাম নিজ আলয়ে।
এক সপ্তাহ পরেই মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সে চড়ে বসলাম দুজনে, বিমানে উঠেভতো আক্কেল গুড়ুম, পর্যটকের চাইতে লেবার বেশি প্লেনে, তাদের কর্মকান্ডের কারণে নিজেদের পর্যটক কম লেভার বেশি মনে হলো।
আমরা রাতের ফ্লাইটে ফ্লাই করার দরুন ভোরে পোঁছে গেলাম কুয়ালালামপুর নতুন টার্মিনালে, আমরা যেহেতু আগেই ট্রানজিটে লাগেজ দিয়ে রাখায় লাগেজ কালেকশনের ঝামেলা নেই, চলে গেলাম সিকিউরিটি চেকের জন্য।
সে সময় সিকিউরিটির এতো সমস্যা ছিলোনা, কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব কাজ সেরে এন্ট্রি ভিসা নিয়ে এগুলাম ট্রানজিট ফ্লোরের দিকে।
আমাদের ফ্লাইট ছাড়লো সকাল সাড়ে সাতটায়, যখন লাঙ্কাবির কাছাকাছি হলাম, মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম লাঙ্কাবির সৌন্দর্য্য, উপর থেকেই দেখতে কত সুন্দর, না জানি নিচে কত সুন্দর হবে।
ফ্লাইট ল্যান্ড করার পর লাগেজ কালেক্ট করে বেরুলাম, টেক্সি হায়ার করে শহর দেখতে দেখতে খোঁজে লাগলাম সুইটেবল হোটেলের, খুঁজে পেতে এক হোটেল নিলাম বাংলাদেশি সাড়ে তিন হাজারে।
রিসেপশনে জানতে চাইলাম দেখার কি আছে?
ওরা জানালো, হয় পারাডাইজ আইল্যান্ড দেখতে যাও নাহয় পুলাও পায়ার দ্বীপ দেখতে যাও, যেহেতু তোমাদের সফর কম সময়ের তাহলে পুলাও পায়ার যাও।
যাবো ঠিক আছে কিন্তু কিভাবে?
ওরা বলে দেওয়াই টেক্সি নিয়ে চলে গেলাম নির্দিষ্ট এক মার্কেটে, ওখান থেকেই দুজনের জন্য শীপের টিকেট কাটলাম লাঞ্চ সহ, ওরা জানালো সকাল সাতটায় গাড়ি পাঠাবে আমাদের পিক করে শীপ ইয়ার্ডে দিয়ে আসবে, আবার ফেরার পর ওদের গাড়ি আমাদের হোটেলে নামিয়ে দিয়ে যাবে।
আমরা টিকেট কেটে এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে গেলাম হোটেলে।
….. চলবে।
ছবিঃ গুগল।
৩০টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
লান্কাবী দিয়ে হলো শুরু
এখনো হয়নি দেখা প্রকৃতির রূপ লাবন্য।
আশায় থাকি ততক্ষন। শুভ কামনা।
ইঞ্জা
লাঙ্কাবি দেখেও মেটেনা স্বাদ, এর আশেপাশের দ্বীপ গুলোও অসাধারণ দাদা, যেমন লাঙ্কাবিও একটা বড় দ্বীপ।
সাথে থাকুন দাদা, ধন্যবাদ। প
সুরাইয়া পারভীন
ওয়াও দারুণ ছবি সহ মালয়েশিয়া ভ্রমণ কাহিনী!
দেখা যাক পুলাও পায়ার ভ্রমণ কেমন হয়েছিল
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
ইঞ্জা
পুলাও পায়ার, আমি বলি পোলাও পায়া, কি সব নাম তাদের, যেমন জিসান ভাইজানের ভ্রমণে এক নাম শুনেছিলেন, ছাতার চেনি নাকি কি একটা।
লাঙ্কাবি দেখার মতো এক দ্বীপ, আমি মাঝে মাঝে এখনো স্বপ্ন দেখি।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপু।
বন্যা লিপি
ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভ্রমনের সৌন্দর্য কতটুকু উপভোগ্য হতে পারে। চলুক লাঙ্কাবি ভ্রমণ।
ইঞ্জা
লাঙ্কাবি ভ্রমণ ছবির চাইতেই হাজার গুণ এর সৌন্দর্য্য, সাথে থাকুন আপু।
ফয়জুল মহী
মালয়শিয়া অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ। তারা ব্যবসায় বাণিজ্যে এমন সব সুযোগ দিয়ে রেখেছে দুনিয়ার বড় বড় চোর কোটি কোটি রিঙ্গিত বিনিয়োগ করছে তেমনি বাংলাদেশের চোরেরাও বাড়ি গাড়ি করেছে।
ইঞ্জা
এতে মালেশিয়ার দোষ নেই, দেশ হলো দেশীয় চোরদের, তারা ওখানে সেকেন্ড হোম করছে কেন?
ছাইরাছ হেলাল
আপনার চোখে মালয়েশিয়া দেখতে ভালই লাগছে।
আছি সাথেই।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাইজান, সাথে থাকুন। 😊
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভ্রমণ কাহিনী পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে আর সাথে যদি ছবি থাকে তাহলে তো সোনায় সোহাগা। আপনার বর্ণনায় লাঙ্কাবি দেখছি। খুব সুন্দর ভাইয়া। ভালো থাকুন। শুভ সকাল
ইঞ্জা
ভ্রমণ কাহিনী সবসময় মানুষকে টানে, অবশ্য বর্ণনা কতটুকু পারফেক্ট হচ্ছে তা মূখ্য বিষয়।
সাথে থাকুন আপু, চুম্বক অংশ বাকি রয়ে গেছে।
আরজু মুক্তা
মালয়েশিয়া, ঘুরে আসি আপনার সাথে।
ইঞ্জা
চলুন আপু, মালেশিয়া সত্যি দেখার মতো দেশ।
শামীম চৌধুরী
ভাইজান,
শুরুটা ভাল লাগলো। আশা করি সামনে আরো চমক আছে। যেহেতু একজন গাড়ি বিশেষজ্ঞ তার ভ্রমন নিয়ে লিখছে সুতারাং তার পুরা অভিজ্ঞতা ভ্রমন গল্পে তুলে ধরবে। লাঙ্কাবী দেখার মতন জায়গা। আর সেই সময় ম্যালয়শিয়ায় যাবার জন্য মানুষের হিড়িক ছিল। সবাই লেবারের কাজে যেত।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ইঞ্জা
মালেশিয়া ভ্রমণ আমার জন্য বেশ চমকপ্রদ ছিলো, আমি গাড়ি বিশেষজ্ঞ তা ঠিক, সাথে আমি কনজিউমার গুডস বিশেষজ্ঞও, লাঙ্কাবি সত্যি দেখার মত এক দ্বীপ, বিশেষ করে তার আশেপাশের দ্বীপ এবং শারুখের ডন ছবির সেই ফাইট সিন, যা পর্বতের উপরে হয়েছিলো।
সাথে থাকুন ভাই।
আলমগীর সরকার লিটন
চমৎকার লাগল ইঞ্জা দা
ইঞ্জা
সাথে থাকুন ভাই, ভ্রমণ কাহিনী আমার এই ব্লগের সেরাই হয়। 😊
রেজওয়ানা কবির
ইশ! আমি কবে যাবো??? ভ্রমণকাহিনী ভাল লাগল ভাইয়া তবে পরের ঘটনার জন্য অপেক্ষা করছি।
ইঞ্জা
ভ্রমণ সবসময় আমাকে টানে, এইবারের ভ্রমণ খুবই সুন্দর, সাথে থাকার অনুরোধ রইলো।
তৌহিদ
আপনার লেখা ভ্রমণগল্পগুলির বড্ড ভক্ত আমি। আমার কাছে অন্যান্য লেখার চেয়ে ভ্রমণগল্প সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য। আজকের এই লেখাটিও এর ব্যাতিক্রম নয়। লাঙ্কাবি পর্ব দারুণ উপভোগ্য হবে আমি নিশ্চিত।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই। শুভকামনা সবসময়।
ইঞ্জা
সোনেলার বেস্ট ভ্রমণ কাহিনী লেখক আমি 😜 , ভালো না লেগে কই যাবে, সাথে থাকুন নিশ্চয় লোভাতুর হবেন ঘুরে আসার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই। 🙂
রোকসানা খন্দকার রুকু।
এই সুযোগে আপনার সাথে ঘুরে আসি। দেখা যাক কতদুর যায়।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
ইনশা আল্লাহ সময়টা নিশ্চয় উপভোগ করবেন সুপ্রিয় ব্লগার। 😊
প্রদীপ চক্রবর্তী
ভ্রমণকাহিনী আমার বেশ প্রিয়।
বেশ ভালো লাগলো,দাদা।
আগামী পর্বের অপেক্ষায়….
ইঞ্জা
খুব দ্রুতই পাবেন দাদা, সাথে থাকুন। 🙂
হালিম নজরুল
পড়তে পড়তে মনে হল নিজেই লংকা জয় করে ফেলেছি।
ইঞ্জা
সাথে থাকুন সুপ্রিয়, লঙ্কা নাহলেও মালেশিয়া নিশ্চয় জয় করবো। 😊
কমলিনী
গতিময় সাবলীল বর্ণনা..
ইঞ্জা
নিরন্তর ধন্যবাদ দিভাই।