তার পর থেকে ঘনিয়ে এলো মামার জীবনে অমাবস্যা।  কিন্তু এই অন্ধকার অমাবস্যার আগে ঘটতে থাকলো একটার পর একটা হাস্যকর ঘটনা। মামা অদ্ভুত সব আচরণ করতে শুরু করলেন। ছোট মানুষের মতো ছেলেমানুষি করতে শুরু করলেন। আস্তে আস্তে যেন মানসিক রোগীতে পরিণত হচ্ছেন তিনি।

একদিন সন্ধ্যার কিছু পরে বের হলেন বাড়ি থেকে। বাড়ির সামনে বাঁশঝাড় আছে। ইদানিং ওয়াশ রুম থাকা স্বত্তেও বাইরে যান প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে। তো উনি এক নম্বর সাড়তে গেলেন বাঁশঝাড়ে। যেই তিনি বসেছেন সেই একটা বাঁশ সামনে পড়লো। ওরে বাপরে বলে লাফিয়ে উঠে দৌড়ে এলেন বাড়িতে! এই ঘটনা বাড়ির সবাইকে বললে সবাই গেলো দেখতে। কিন্তু সেখানে কোনো বাঁশ পড়েছিল না। কিন্তু মামা দেখতে পাচ্ছেন তখনও পড়ে আছে। কেউ ব্যাপারটা সিরিয়াসলি নিলো না। সবাই ভাবলো এ মামার নেহাতই পাগলামী। এ রকম অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে থাকলো। সবাই ধরেই নিলো মামা পাগল হয়েছে। ছোট বাচ্চাদের মতো মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি করেন আর অনেক কিছু।

যা হোক মামাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া হলো। ডাক্তার দেখেশুনে বললেন উনার কোনো সমস্যা নেই। এ দিকে আমার অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হতেই লাগলো। নানাভাই শেষে কবিরাজের দ্বারস্থ হলেন। কবিরাজ সময় নিলেন রাতে বুজ করে দেখবেন সমস্যা কী? পরে তিনি বললেন যে মামার রুহুর দোষ হয়েছে। প্রথম থেকে সমস্ত ঘটনা কবিরাজ বললেন বাড়ির লোকদের।

কবিরাজ সাধ্যমত চেষ্টা করে মামাকে সুস্থ করলেন বটে কিন্তু এর প্রভাব পড়লো সদ্য বছরে মামার ছেলের উপর। ছেলেটা দারুণ হয়েছে দেখতে। প্রথমে টুকটাক কথা বলতো বাবুটা। কিন্তু আস্তে আস্তে কথা বলা বন্ধ করে দিল। যতোই বড় হচ্ছে ততোই চুপচাপ থাকতো।

অনেক ডাক্তার দেখানো হলো তার এমন আচরণের কারণ জানতে। ডাক্তার সাধ্যমত চেষ্টা করলেন, চিকিৎসা করলেন। শেষে বললেন ছেলেটি কখনো কথা বলতে পারবে না। বাক প্রতিবন্ধী হয়েছে। সবাই হতবাক হয়ে গেল। এক বছর পর্যন্ত যে টুকটাক কথা বলতো সে প্রতিবন্ধী হয় কী করে? সবাই ভাবনায় পড়ে গেলো। আবার সেই কবিরাজকে ডাকা হলো। কবিরাজ বুঝ করে বললেন এটা সেই রুহুর কাজ। কিন্তু এবারের কবিরাজ আর কিছুই করতে পারলেন না। ছেলেটি চিরস্থায়ী বাক প্রতিবন্ধী হলেন। এখন ওর বয়স প্রায় ১৪/১৫ বছর।

জানি না কি কারণে বাক প্রতিবন্ধী হয়েছে !! তবে সবাই বিশ্বাস করে ওটা রুহুর দোষেই হয়েছে।

 

0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ