এই সমাজের বদ্ধমূল একটা প্রথা হলো বিয়ের পর নারীর জীবন হবে স্বামীসর্বস্ব কিন্তু পুরুষের জীবন হবে তার নিজের মতোই স্বাধীন।
বিয়ের পর একটা ছেলে বড় কোনো এসাইনমেন্ট পেয়ে বা স্কলারশিপ পেয়ে কয়েক বছরের জন্য বিদেশ যেতে চাইলে কেউ আপত্তি করে না, বরং তা খুশিমনেই গ্রহণ করা হয়। বিদেশে গিয়ে সে একা কিভাবে কি করবে, খারাপ হয়ে যাবে কিনা ইত্যাদি ইস্যু সামনে এনে তার সামনের দিকে বিকাশের পথকে রুদ্ধ করা হয়না। রুদ্ধ করার অপচেষ্টা কেউ করেও না।
অথচ বিয়ের পর একটা মেয়ে ঐ একই অবস্থায় পড়লে সকলের যেন মাথা নষ্ট হয়ে যায়। বাড়ির বউ দেশের বাইরে গিয়ে জামাইকে ছেড়ে একা থাকবে, এটা যেন হতেই পারেনা!! বিদেশে বউ একা কিনা কি করবে, খারাপ হয়ে যাবে কিনা ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যু সামনে এনে তার বিকাশের পথকে ওখানেই মেরে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়। অথচ পুরুষের বেলা এই কথা মাথায় আসেনা। আর নারীরাও মেনে নেয়, মেনে নেয় বলেই আজীবন পিছিয়েই থাকে।
অনেক নারীই হয়তো বিজ্ঞানী হতে পারতো, বড় সাংবাদিক হতে পারতো কিন্তু তারা কিছুই হতে পারেনি শুধু নীরবে এসব অনৈতিক একতরফা সিদ্ধান্ত মেনে নেবার কারণে। যে জামাই বুঝলোই না যে তার অর্ধাঙ্গী সমাজের জন্য, জাতির জন্য বড় অবদান রাখতে পারে, তার নিজের সিদ্ধান্ত নেবার ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে, সেই জামাই-ই বা কেমন মানুষ? তার শিক্ষা, নৈতিকতাই বা কেমন মানের?
প্রত্যেকটা পূর্ণবয়স্ক মানুষের অধিকার আছে তার নিজের ভাল-মন্দের সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নেবার, কেউ জোর করে চাপিয়ে দেবে কেন? কেউ কাউকে কোনোভাবে দমন-পীড়ন করবে, এটা কখনোই কাম্য না। এভাবে কোনো সমাজ বেশিদূর এগোতে পারেনা। যার যা যোগ্যতা, মেধা, দক্ষতা আছে তা বিকাশের পথে বাধা দেয়া অনুচিত যদি তা মানবতার জন্যে অকল্যাণকর না হয়। মানুষ মাত্রই স্বাধীন হবার জন্যে জন্ম নেয়, নারীরাও মানুষ, তাদের পরাধীন রেখে কোনো সমাজ সভ্য এই দাবিও করতে পারেনা। এই মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। বিকশিত মানুষ চাই, উন্নত রুচি চাই।
২২টি মন্তব্য
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
প্রতিটি নারীর অবশ্যই অধিকার আছে তার নিজের ভাল-মন্দের সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নেবার । পুরুষরা দমিয়ে রাখে নারীদের । মানুষ হিসেবে প্রাপ্য অধিকার থাকা উচিৎ নারীদের ।
ভালো লিখেছেন লাভা ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
মানুষ হিসেবে নারীদের প্রাপ্য অধিকার আদায়ের লড়াইটা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
আজিম
সম্পুর্ন সহমত প্রকাশ করছি। আসলেই সেরকম সমাজ বেশীদূর এগোতে পারেনা। আর পবিত্র কোরআনেই এরকম নির্দেশ আছে। কিন্তু আমরা মানব জাতি, বিশেষতঃ পুরুষ সমাজ তাদের মতো করে আইন করে নিয়েছি।
তবে বিদেশ একাকি কোন মেয়ের যাওয়ার আমি পক্ষপাতি নই শুধুমাত্র নিরাপত্তার স্বার্থে। তবে ওখানে আত্মীয়-স্বজন থাকলে অসুবিধা নাই। কারন প্রাকৃতিকভাবে মেয়েদের শারীরিক শক্তি কম। তবে এখন যাচ্ছে অনেকে, এটাও ঠিক।
তবে মেয়েদের দমিয়ে রাখা অত্যন্ত জঘন্য কাজ বলে আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি।
ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।
ব্লগার সজীব
বিদেশে কিন্তু মেয়েদের সোসাল সিকিউরিটি অত্যন্ত বেশী । মধ্য প্রাচ্যের কথা জানিনা , সেখানে তো ধর্ষিতার বিচার হয় । @আজিম ভাই ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
আত্মীয়-স্বজন না থাকলে মেয়েরা যতোবড় কাজই হোক ছেড়ে দিয়ে চলে আসবে? বাহ্!! আর দশটা দেশের মেয়েরা যাচ্ছে না? নিরাপত্তার বাহানায় কি একজন বিজ্ঞানী হতে পারলেও যাবে না? আর নিরাপত্তা নেই এই বাহানাই বা কোত্থেকে পেলেন? নিরাপত্তার কথা তুললে তো অনেক দেশেই জঙ্গী হামলায় বাংলাদেশী লোকজন মারা যাচ্ছে, সেজন্য কি সব থেমে আছে? নারীদের বেলা এতো বাহানা খোঁজা কে্ন?
খসড়া
আগে নিজেকে মানুষ করুন তারপর অন্য কথা।
ফাহিমা কানিজ লাভা
কে নিজেকে মানুষ করেনি, কি বোঝাতে চাইলেন?
ব্লগার সজীব
লেখার সাথে একমত ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
ধন্যবাদ।
আদিব আদ্নান
যে সমাজে পুরুষেরাই সবকিছু সেখানে প্রায় অসম্ভব মনে জয় ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
যে সমাজ আটকাতে চাইবে সেই সমাজকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সামনে এগোতে হবে জয়ের পথে।
বনলতা সেন
যেখানে আমাদের দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিকের মর্যাদা দেয়া হচ্ছে সেখানে আশার আলো বেশ দূরে
মনে হয় ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
আমাদের মর্যাদা কেউ তুলে এনে দেবে না, আমাদের সংগ্রাম করে মর্যাদা, অধিকার আদায় করে নিতে হবে।
ছাইরাছ হেলাল
বিকশিত হতে পারলে এটি কোন সমস্যাই না ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
বিকশিত তো হচ্ছেই, কিন্তু বিকাশের পথে বাধাকে অতিক্রম করার সাহস না দেখালে বিকাশ থেমে যাবে। নারীদের আত্মপ্রত্যয় আর সাহসের সাথে সব মোকাবেলা করতে হবে।
ছাইরাছ হেলাল
‘নারীদের আত্মপ্রত্যয় আর সাহসের সাথে সব মোকাবেলা করতে হবে।’
এটিই কাজের কথা ।
জিসান শা ইকরাম
অবশ্যই মানুষ হিসেবে একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার সম্পূর্ণ অধিকার আছে । আমাদের সমাজ বিনির্মানে এটি অত্যন্ত জরুরী ।
ভালো লিখেছেন ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
ভাল লিখেছেন
ফাহিমা কানিজ লাভা
ধন্যবাদ।।
অজানা এক পথে চলা
আমাদের ইচ্ছে পুরুষদের হাতে বন্ধী আপু ।
ফাহিমা কানিজ লাভা
জাগো নারী, জাগো বহ্নিশিখা।
কেহ রহিবে না বন্দি কাহারো উঠিছে ডংকা বাজি।