বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি আর এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে সেই তুলনায় এই বিশাল সংখ্যক মানবদের সম্পদে উন্নয়নে সরকারের চেষ্টা প্রায় অপ্রতুলই বলা চলে, এই জনসখ্যার বিরাট একটি অংশ বেকারত্বের যাঁতাকলে নিশপিশিত হচ্ছে আর আরেকটি অংশ যে কর্ম ঘন্টায় শ্রম দিচ্ছে তার বিপরীতে তাদের আয় খুবই অল্প যাতে তার পরিবার নিয়ে মোটামুটি ভাবে বেঁচে থাকাও কঠিন হয়ে যায়।
আমাদের সরকার চাইলে এবং চেষ্টা করলে এই মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশের প্রভূত উন্নয়ন করতে পারেন আর তা কিভাবে সম্ভব তার একটা ছোটখাটো রুপরেখা আমি তুলে ধরছি আজ।
চায়নার উদাহরণ নিতে পারি আমরা, তারা তাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর বেকার, অল্প শিক্ষিত, অশিক্ষিত মানুষদের বসিয়ে না রেখে এদের হাতের কাজ শেখার এক কঠিন আইন পাশ করায় আর এতে এই জনগোষ্ঠী বাধ্যতামূলক ভাবে হাতের কাজ শিখতে বাধ্য হয়, কেউ লেদ মেশিনের কাজ শিখে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারিজ রক্ষাণাবেক্ষন করতে শিখে, শিখে গার্মেন্টস আইটেম নিয়ে, কেউ শিখে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বানানো, কেউ শিখে পুতুল বানানো, শিখে ইলেক্ট্রনিকসস আইটেম বানানো আর কেউ কেউ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে হাতে কলমে কাজ শিখে যার ফলস্বরুপ আজ চীন দেশ বিশ্বের কাছে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, এখন আপনি যায় চাননা কেন তারা তা বানিয়ে দিতে সক্ষম আর এতে বৈদেশিক মূদ্রা আহরণে এরা বিপুলভাবে এগিয়ে আছে আর এই উদাহরণ নিয়ে যদি আমাদের সরকার এগিয়ে আসে তাহলে চিন্তা করুন আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারি।
আমাদের দেশ হতে বিপুল পরিমান জনবল আজ বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করছে যার মাঝ থেকে এক তৃতীয়াংশ কোন কাজ না জানা সত্বেও আজ বিদেশের মাঠিতে অল্প টাকায় শ্রম দিচ্ছে কিন্তু চিন্তা করে দেখুন তারা যদি হাতের কাজ জানতো তাহলে বিদেশের মাঠিতে তাদের বিপুল চাহিদা হতো আর তাদের শ্রমমূল্যও কত বেশি হোত? বিদেশে আমাদের মানব সম্পদ ইলেক্ট্রিক্যাল, নির্মান শিল্প, গ্যারেজ যথা গাড়ী রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য কাজে রত আছে কিন্তু এরা বেশিরভাগ এইসব কাজে সিদ্ধহস্ত না আর সরকার যদি একটু চেষ্টা করে তাহলে এই জনগোষ্ঠীকে স্বশিক্ষিত করে তুলতে পারে।
সরকার যদি এই বেকার, স্বল্প শিক্ষিতদের বিনা খরচে বিভিন্ন হস্তশিল্পে যথা, ইলেক্ট্রিকাল, ঈন্ডাস্ট্রিয়াল, গার্মেন্টস, নির্মানশিল্পে, গাড়ী রক্ষাণাবেক্ষন কাজ শিখায় তাহলে এরা দক্ষ কারিগর হিসাবে গড়ে উঠবে, এছাড়াও বিভিন্ন মেশিনারিজের কাজ, লেদের কাজ, বিভিন্ন ধরনের পুতুল বানানো, প্লাস্টিক আইটেম শিল্প সহ বিভিন্ন হাতের কাজ বিনা খরচে শিখানোর ব্যবস্থা করলে প্রতি বছর আমাদের দেশে নতুন নতুন উদ্দৌক্তা সৃষ্টি হবে আর ফলশ্রুতিতে দেশে বিভিন্ন ধরনের কাজের সৃষ্টি হবে, বেকারত্ব কমবে, সবাই আত্মনির্ভর হবে, দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে, দেশ এগিয়ে যাবে আর সাথে জনগণও এগিয়ে যাবে, বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনে আমরা আরো এগিয়ে যাবো।
আমরা সবাই জানি শিক্ষায় জাতির মেরুঢন্ড কিন্তু শুধু পুতিগত শিক্ষা দিয়ে জাতির মেরুঢন্ড শক্ত হয় এমন কোথাও লেখা নেই, যে কোন ধরনের শিক্ষায় আমাদের শিক্ষিত হওয়া উচিত।।
Thumbnails managed by ThumbPress
১৭টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
একটি দেশ উন্নয়নের জন্য যতটা আন্তরিক হওয়া দরকার আমাদের, তা এদেশের জনগন এবং সরকার কেউই হচ্ছেন না।
দেশের যা প্রবৃদ্ধি তাতে সরকারের কোন ভুমিকা নেই, জনগণ নিজের উদ্যেগে করছেন। সরকার কেবল এর সুবিধা নিচ্ছেন।
খুবই ভাল একটি লেখা।
ইনজা
দুঃখজনক ভাবে এতো বড় সম্পদ অনাদরে পড়ে আছে আর আমাদের সরকার চাইলেই এর উৎকৃষ্ট ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে পারতো।
জিসান শা ইকরাম
পারতো না ভাই। আমরাই ফেইসবুকে বসে কোন কঠোর পদক্ষেপের চরম বিরোধিতা করতাম।
ইনজা
আমার মনে হয় এই বিষয়ে জনগণ আপত্তি তুলবেনা ভাইজান।
আবু খায়ের আনিছ
অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়া এই ধরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ণ সম্ভব নয়। আমরা সবাই ব্যাস্ত সমস্যা ধরতে সমাধান কেউ করি না। আপনি একটা সমাধান এর পথ দেখিয়েছেন, এমন করে আরো অনেক সমাধানের পথ যদি দেখানো হত তাহলে হয়ত সমস্যাগুলোর সমাধান হত।
আমাদের দেশে সবাই চাকুরির চায়, কিন্তু দেওয়ার মানুষ নাই। সবাই যদি চাকুরি চায় তাহলে চাকুরি দাতা হবে কে? এই প্রশ্নের উত্তর যদি আমরা দিতে পারি তবেই সমাধান হয়ে যাবে অনেকাংশে।
ইনজা
আমাদের সরকার চাইলেই এর জন্য যথাযথ আইন এবং অবকাঠামো তৈয়ার করতে পারে এর জন্য যা দরকার তা বিশ্ব ব্যাংক, জাইকা, আইএমএফ, এডিবি দেবে এবং এই অর্থের সঠিক ব্যবহার করা সরকারেরই দায়িত্ব।
আবু খায়ের আনিছ
এদের ঋণের তলে পড়েই ত এই অবস্থা।
ইনজা
এইটা আমাদের ভুলের কারনেই হচ্ছে, যদি তাদের ঋণের যথাপোযুক্ত ব্যবহার আমরা করতে পারতাম তাহলে আজ এই ঋণের বোঝা আমাদের টানতে হতোনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
সত্যি বলতে কি যে যায় লঙ্কায়, সে-ই হয় রাবণ।
ইনজা
এইখানে রাম বা রাবণের কিছু নেই আপু বরঞ্চ এই কর্মযজ্ঞে নামলে জনতার সাথে সাথে রাবণদেরই লাভ শুধু মাথা খাটাতে হবে এই যজ্ঞ কিভাবে শুরু করা যায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
কে করবে এই যজ্ঞ? কেউ নেই কোথায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
**কোথাও
ইঞ্জা
খারাপ মানুষও ভালো কাজ না করলে খারাপ কিছু করতে পারেনা আপু।
মেহেরী তাজ
এখন ও স্বপ্ন দেখি আমার দেশ একদিন মাথা তুলে দাঁড়াবে,আর বিশ্ববাসী তা দেখবে!
এমন উদ্যোগ যদি সত্যিই নেওয়া যেতো..।।।।।
ইনজা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলেই এই কাজটি করতে পারেন আপু, শুধু দরকার উনাকে ভালো বুদ্ধি দেওয়ার লোক।
মৌনতা রিতু
খুবই সুন্দর একটি পোষ্ট। কাজের মধ্যে থাকলে ক্রাইমও কম হত। বেকার মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা হত না।
এমন আইন আসলেও পাশ করা দরকার।
লেদ মেশিনে লোহার শিল্প তৈরি হত বাংলাদেশে, এতে চায়না থেকে অনেক লোহার যন্ত্রাংশ আমাদের আমদানি করতে হত না। কবে হবে এমন দেশ ?
ইনজা
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য, সরকার যদি এই বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন তাহলে এই বিষয় শুরু করতে মাত্র কয়েক বছর লাগবে বলে আমার মনে হয়।