প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,
শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা নিবেন। আমি জানিনা এ চিঠি আপনি পড়বেন কিনা। হয়তো আপনার অজান্তেই এই চিঠিখানি ডিজিটাল প্রযুক্তির আড়ালেই রয়ে যাবে চীরকাল। অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আপনাকে লিখতে বসেছি একজন সংখ্যালঘু(শব্দটি পীড়াদায়ক হলেও মেনে নিয়েছি) হিসেবে।
এদেশে জন্মগ্রহণ করা হয়তো আমাদের জন্য আজন্মের পাপ। তাইতো স্বাধীন দেশে আর সকলের মতো গর্ব করে স্বাধীনতার কথা বলতে মানা, মাথা উঁচু করে লড়াই করাতেও অক্ষম আমরা। আমাদের মন্দিরের দেবতারা কাঁদে, বদৌলতে কিছু পাপিষ্ঠ হাসে। হয়তো পরোক্ষভাবে এইদেশে কীটসম পাপীষ্ঠ আমরাই। তাই ঈশ্বর নামক একজন অদৃশ্যবাদী চীরকালই মুখ বুজে এ খেলা দেখে যান। নিয়তির কাছে হার মানি আমরা।
খুব কষ্ট হয় যখন আপনাদের মুখেই শুনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি আর উদারপন্থী এই ছোট্ট-সুন্দর এই দেশ সকল ধর্মের সমাধিকারে বিরল দৃষ্টান্ত। খুব অবাক হয়ে শুনি যখন আপনারা আমাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। আবার সমানভাবে মাথা নিচু করে শুনতে হয় আওয়ামী দালাল, ভারতের দালাল, মালায়ন, মালু, আওয়ামিলীগের ভোট ব্যাংক ইত্যাদি নানা ব্যঙ্গ ।
খুব কষ্ট নিয়েই সহ্য করতে হয় প্রতিটি ভ্রুক্ষেপ। অথচ নীরবেও প্রতিবাদ-প্রতিরোধের চিন্তাও আজ হারিয়ে ফেলেছি। এটা এই ঘুণে ধরা মনের দোষ নয় প্রিয় প্রধানমন্ত্রী। নিজের প্রতি নিজেরই ঘৃণার প্রতিফলন।
রাজাকার সাঈদীর রায় হলে পুড়তে হয় আমাদের, কসাই কাদেরের ফাঁসি হলে জ্বলতে হয় আমাদের, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হলেও জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডের ক্ষোভটাও আসে আমাদের উপরেই। কি অপরাধ বলতে পারেন প্রিয় প্রধানমন্ত্রী? ‘সংখ্যালঘু?’ ‘নাকি আপনাকে ভালোবাসার প্রতিদান?’ ‘নাকি আপনার উপর আস্থা রাখার ফলাফল?’
শেয়াল কুকুরের জীবনও বুঝি এর চেয়েও ভালো। হিংস্র বাঘের বনে অসহায় হরিণ সাবকের স্বাধীনতাও এর থেকে ঢেড় নিরাপদের। এদেশটিকে আর পাঁচজন সাধারণের মতোই ভালোবাসি আমরাও। এদেশের প্রতিটি শুভ সংবাদে আমরাও সমানভাবে আবেগতাড়িত হই। মন্দ সংবাদে সমানভাবে ব্যথিত হই। অথচ খড়কূটের মতোই আমাদের জীবন মূল্যহীন।
আবেগে তাড়িত হয়ে নয় প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, ক্ষোভের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতেও নয়, আপনাকে ভালোবেসেই এ চিঠি খানি লিখলাম অধিকার বলে। কিন্তু অদৃষ্টকে আর দ্বিতীয়বার বিশ্বাস করতে পারিনি নিরাপত্তা ভিক্ষা চেয়ে স্বাধীনতাকেও আর কলঙ্কিত করলাম না।
১৮টি মন্তব্য
মা মাটি দেশ
কি ভাবে শান্তনা কিংবা বুঝাব ভাষা যে হারিয়ে ফেলেছি স্ব-জাতি নিকৃষ্ট কৃতকর্মে তবু বলব ভাই আর একটু ধৈর্য্য চাই অবশ্যই সমাধানে আসবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (y)
নীলকন্ঠ জয়
ধন্যবাদ জানবেন।
অদ্ভুত সেই ছেলেটি
প্রধানমন্ত্রি নির্বাক বুঝলেন । সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টা আগেই সমাধান করা যেত । না হলে রাজনীতির হাঁতে এভাবে পুড়তে হত না গোটা জাতিকে , দেশটা আমজনতার না , দুই নেত্রি । এই সব চোখের পানি তাদের কাছে পৌছবে না , এগুলো শুধু আমাদেরই চোখে পানি আনবে। খুবি খারাপ লাগলো পোস্ট টি পড়ে ।
নীলকন্ঠ জয়
ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
গতকাল থেকে খুব কষ্ট পাচ্ছি নীল
এই দেশ কি আমরা চেয়েছিলাম ?
এই হায়েনার দলকে আমরা পরাজিত করেছিলাম ১৯৭১ এ
কিন্তু তারা এখন আরো সংগঠিত
দেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ এদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে ।
কিভাবে এই অবস্থা মোকাবেলা করা যাবে জানিনা
হতাশার মাঝে আছি।
নীলকন্ঠ জয়
এই দেশ নিয়ে আমি আর কোনদিন ভাববো না। এই দেশ আমাকে নিয়ে কখনই ভাবে না।
সুকান্ত
এবার হিন্দুরা ভোট দিয়ে ও মার খেয়ে আওয়ামীলীগের যে সব উপকার করলো ঃ
১) ওদের কারনে ব্যালট বাক্স খালি ফেরত যায়নি।
২) কেউ ভোট দেয়নি এই প্রচারটা হালে জল পেলো না।
৩) ভোট কেন্দ্রের ছবিতে অনন্ত কিছু মানুষের ছবি দেখা গেছে।
৪) মার খেয়ে, ঘর বাড়ী পুড়ে যাওয়ায় তার ছবি প্রমান হিসেবে দেখানো যাচ্ছে যে ভোট হয়েছে এবং মানুষ ভোট দিয়েছে।
৫) বিশ্ববাসী জানলো আস্লেই বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ ছাড়া কোন বিকল্প নাই।
৬) বিএনপি’র আর একবার রাজনৈতিক পরাজয় হইল।
৭) আমেরিকা সহ সব কুশিল দেশ শেখ হাসিনার সাথে দেখা করলো বইলা।
৮) জাতিসঙ্ঘ হাসিনার কাছে মাপ চাইলো বইলা ।
আরও কত …… লাভ আর লাভ, সব আওয়ামীলীগের।
—– আর মার সব হিন্দুদের কপালে !!!
নীলকন্ঠ জয়
হাহাহা বাঁকা হাসি দিয়ে দিলাম সুকান্ত দা।
সাবধানে এবং নিরাপদে থাকুন।
শুন্য শুন্যালয়
কিছু বলার নেই, আমি লজ্জিত… শুধু এটুকু বলবো… কিছুদিন পর আমরাও এদেশে সংখ্যালঘু হয়ে যাবো… সেদিন বেশি দূরে নয়…
হিন্দুরা এদেশ কে নিজেদের দেশ মনে করেনা, চান্স পেলেই ইন্ডিয়া চলে যায়… একথা এখন থেকে যার মুখে শুনবো থুথু মেরে দেবো…
নীলকন্ঠ জয়
ধন্যবাদ
ছাইরাছ হেলাল
আজকাল চিঠি আর কেউ তেমন পড়ে না !
যাঁতাকলে শুধুই আটকে যাওয়া ।
নীলকন্ঠ জয়
ঠিক । ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
জয় কিছু দিয়েই শান্তনা দিতে পারবনা। ক্ষমা চেয়েও ছোট করতে পারবনা।
এখানে আপনাকে বা সংখ্যালখু বলব কিবাবে আমরা ও যে ভাই আক্রাত হয়, গত ১৯৯৬ সালে আমাদের গ্রামের বাজারও তারা ভেঙ্গে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।
তবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে হিন্দু বা কারো উপর আক্রমণ হয়নি।
শুধু সরকারের নিকট জোর দাবী প্রতিহত করুন।
নীলকন্ঠ জয়
হুম। ধন্যবাদ।
খসড়া
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন সংখ্যালঘু নয় একজন সাধারন নাগরিক, সাধারন জনতার খোলা চিঠি।
নীলকন্ঠ জয়
সাধারণ নাগরিক বা জনতা এখন আর ভাবতে পারি না।
ধন্যবাদ।
লীলাবতী
খুব কষ্ট লাগে ছোট ভাইয়া , খুব কষ্ট 🙁
নীলকন্ঠ জয়
🙁