মাকড়শার প্রেম-ভালোবাসা আর বিরহের গল্প

ফাঈলাসূফ ১৭ এপ্রিল ২০১৪, বৃহস্পতিবার, ১১:২৪:৫৯অপরাহ্ন বিবিধ ৭ মন্তব্য

একটা সময় ভাবা হতো প্রেম ভালোবাসা মানুষের একার সম্পত্তি। কিন্তু ধারণাটা দিন দিন বদলে যাচ্ছে। বরং দেখা যাচ্ছে অ্যানিম্যাল প্লানেটে কীটপতঙ্গ বা পাখিদের প্রেমের উপর করা ডকুমেন্টরি অনেক সময় টিভিতে ভালোবাসা দিবসের রাতে দেখানো পুতুপুতু প্রেমের নাটকের চেয়ে ঢের বেশি উপভোগ্য। Smile with tongue out

এই যেমন, প্রেমের ক্ষেত্রে স্যাক্রিফাইস করার যে ব্যাপারটা আছে তার কথা যদি বলি, সেটা মানুষ বা অন্য যে কারো চেয়ে হাজারগুন বেশী করতে হয় আর একটা প্রাণীকে, সেটা হলো মাকড়শা।

IMG-20140409-WA0002IMG-20140409-WA0009

Photo Courtsy: Asfi Kabir

 

চিন্তা করে দেখুন – আমরা যারা মানুষ, প্রপোজ করার সময় আমরা কি চিন্তা করি? ইতিবাচক সাড়া পেলে তো কথাই নাই, দুই কেজি মিষ্টি কিনে সোজা কাজী অফিস। আর নেতিবাচক হলে দুই চারটা কথা হজম করতে হতে পারে, অথবা খুব বেশি হলে একটা চড়  Confused smile আর সাথে দহনজ্বালা। Crying face এ আর এমন কি! অন্যদিকে একটা পুরুষ মাকড়শাকে প্রেম নিবেদন করতে যেতে হয় নারী মাকড়শার কাছে, যে কিনা ক্যানিবাল । মানে ক্ষুধার সময় যারা জাতিগোত্র বাছবিচার করে না।

একটা গবেষনায় দেখা গেছে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে মাত্র ২০% পুরুষ মাকড়শা শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফেরত আসতে পারে, বাকী ৮০% মাকড়শা বেঘোরে প্রাণটা হারায়।

অর্থাৎ, হৃদয়ের কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো প্রান উৎসর্গ করতে হয় বেচারাদের।

কিন্তু কেন এই নিষ্ঠুরতা? নারী মাকড়শার দৃষ্টিতে যদি দেখি, তারা আসলে রীতিমতো কনে দেখার মতো করে সঙ্গী নির্বাচন করে। আগের দিনে কনে দেখতে আসলে পাত্রপক্ষ যেরকম কনের সাথে কথা বলে এমনকী হাঁটিয়ে পর্যন্ত দেখে নিতো মেয়ের কোনো খুঁত আছে কিনা, ঠিক সেরকম নারী মাকড়শাও প্রেম নিবেদনকারী পুরুষটিকে দেখে শুনে তার হাবভাব বিচার করে, তারপর সায় দেয়।

আর দেখে শুনে পাত্রকে যদি সুবিধার মনে না হয় তাহলে তাকে দিয়েই লাঞ্চটা সেরে ফেলে নারী মাকড়শাটা। Sick smile

রংঢং করে যখন প্রেম নিবেদনকারী পুরুষটিকে কাছে আসতে আহবান করে, তখন সে তো খুশীতে রীতিমতো আটখানা হয়ে এগিয়ে আসতে থাকে। যেই নাগালের মধ্যে চলে আসে অমনি খপ! Surprised smile কাহিনী খতম! Disappointed smile

তবে যারা পুরুষদের প্রতি নারী মাকড়শাদের এই নির্দয় আচরণে ক্ষুদ্ধ, তাদের জানিয়ে রাখি, মাকড়শাদের মধ্যে ক্যানিবালিজম এর চর্চা শুধু পুরুষদের উপরেই হয় তা না। এক প্রজাতির মাকড়শা আছে, যারা ডিম ফুটে বের হওয়ার পর প্রথম খাবার হিসেবে মা মাকড়শাকে ভক্ষণ করে।

যাহোক, ভাগ্য ভালো বলতে হবে, পুরুষ মাকড়শার এই করুণ পরিনতি চোখে পড়েছে বেশ কিছু সহৃদয় গবেষকের। তারা এই ব্যপারে রীতিমতো গবেষণা করে বের করেছেন বেশ কিছু সূত্র।

এই যেমন, যেসব পুরুষ খালি হাতে সঙ্গীর কাছে যায়, তাদের চেয়ে যারা কিছু একটা উপহার সাথে করে নিয়ে যায় তারা কম প্রত্যাখ্যাত হয়। Gift with a bow Winking smile

উপহার বলতে পোকামাকড় টাইপ কিছু আরকি! তাও আবার খোলা অবস্থায় নিয়ে গেলে হবে না! রীতিমতো র‍্যাপিং পেপার দিয়ে মুড়িয়ে..মানে মাকড়শার জাল দিয়ে জড়িয়ে নিয়ে যেতে হবে! Thinking smile

চকচকে সাদা রঙ্গের জাল দিয়ে মোড়ানো পোকাই সবচেয়ে লোভনীয় গিফট। তবে এই চকচকে সাদা জালের আবার কাহিনী আছে। জাল বুনতে ভুল হলে অথবা প্রেম নিবেদনের সময়টা অনুকূলে না থাকলে প্রানের ভয়টা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

উপরের সূত্রগুলোর সাথে মানুষের প্রেমের সূত্র একদম খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে না? ঠিক যেনো দজ্জাল টাইপ কোনো মেয়েকে প্রেম নিবেদন করতে যাচ্ছে কোনো গোবেচারা ছেলে। Nerd smile

কে জানতো মানুষের ডেটিং টিপস মাকড়শাদের জন্যেও এতো কঠিনভাবে প্রযোজ্য!

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ