
আমি হাড়ভাঙা চাষী।
আজন্ম সংসারের গ্লানি টেনে
ক্লান্ত, জরাজীর্ণ ব্যর্থতা ঢাকতে
আমাকে পশলা সুখের সন্ধান দে- কবি
হে ক্লান্ত সংসারী
উর্ধ্বগতি নিঃশ্বাসে নিম্নমুখী প্রচন্ড বেগে
পৃথিবীর বিষাক্ত বাতাসে ছেড়ে দে- উফ্!
আমি ছয়'বছরের শিশু।
নির্জন দুপুরে মেলা থেকে আলতা কিনে বাড়ি ফিরি
হঠাৎ বুঝি বাঁশের ঝোপে শকুনের ঠোঁটে রক্তাক্ত আমি
আমার অবুঝ অক্ষত শৈশব ফিরিয়ে দে- কবি
হে ধর্ষিতা দেবশিশু
শত ক্ষোভ বুকে চেপে জ্বালাময়ী চিৎকারে
বহুরূপী সদস্য বিশিষ্ট তদন্তমূলক ফাইলে
নিষ্পাপ থুথু ছিটিয়ে বলে দে- উফ!
আমি বামপাঁজরের শেফালি।
তিলে তিলে তোদের সংসারে সুখের নকশীকাঁথা বুঁনি
মধ্যবর্তী এই যৌবনে এসে-
জাহেলিয়াতের রঙ্গীন যুগে ভালবাসাহীন পড়ে আছি
আমাকে এক শিশি বৈধ ঘুম ঘুমানোর পদ্ধতি দে- কবি
হে অসুখী রমণী
সদ্য হামাগুড়ি দেওয়া কামুকের ফসলের ঘ্রাণ শুঁকে
যৌবন সংসার কাটিয়ে দে জনপ্রিয় ঘুমের প্রতীক্ষায়
কচি শিশুর মুখ বুকে চেপে পৃথিবীকে জানিয়ে দে-উফ!
আমি এক কবি।
আমার কলম কখনো শিকলবন্দী,কখনো গৃহবন্দী
কখনো বা আমি গুম-খুনের অপবাদে করি সন্ধি
ওরা দিলো মুখরোচক উক্তি- 'শালা চরম উগ্রপন্থী'
দিনে রাতে গড়া আমার-
মানবতার পাণ্ডুলিপি প্রসবের ছাড়পত্র দে- কবি
হে ফেরারী কবি
জানিস- আমিও এখন যুগের নবাগত কবি
ঝুলিতে রাখি শুধু একটি শব্দের মহৌষধ
সমস্বরে কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে বলে দে- উফ!
আমি এক রাষ্ট্র ।
একটি তর্জনীর ইশারায় জনসমুদ্রে যার জন্ম
স্বৈরাচারীর লাগাম টেনে বহুদলীয় যার নীতি
আমাকে চিনো কবি ? চিনবে না ?
আমার আঁচলে আজ সেই সুখ নাই
বলিষ্ঠ কোনো জনতার ইতিহাস নাই
আঁচলের দুইপাশে আমার আছে শুধু আজ
মুখোশপরা মুখোমুখি বাবুদের খামছাখামছি
আমায় চিনো নাকি কবি ?
চিনে থাকলে,রক্ত শুকাবার ঔষধ দে- কবি!
চিনেছি চিনেছি তোমায়
৫৬ হাজার দেহাবিশিষ্ট হে আমার বঙ্গ প্রেয়সী
কবিরা, দুই টুকরো শব্দ ছাড়া দিবে আর কী?
যেমন দিয়েছিলো রবি ঠাকুর-
'আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি'
আমিও ভালোবেসেই তোমাকে
ক্ষত চিহ্নে ক্ষত ভুলে থাকার মহৌষধ দিচ্ছি
আঁচলে রক্ত চুষে চিৎকারে বলে দে
বেঁচে আছি, বেঁচে থাকবো- উফ্.....!
নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ
Thumbnails managed by ThumbPress
১২টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
রাস্ট্র আজ বেজাতের হাতে বন্দি
নীতি আজ বেনীতিদের কাছে সন্ধি
বিচার আজ মিথ্যার মাঝে করেছে ফন্দি
শাস্তি আজ ক্ষমতাবান্দের হাতে কান্দি।
নাজমুল হুদা
ধন্যবাদ ভাইয়া 😍
মনির হোসেন মমি
আমি এক কবি।
আমার কলম কখনো শিকলবন্দী,কখনো গৃহবন্দী
কখনো বা আমি গুম-খুনের অপবাদে করি সন্ধি
ওরা দিলো মুখরোচক উক্তি- ‘শালা চরম উগ্রপন্থী’
দিনে রাতে গড়া আমার-
মানবতার পাণ্ডুলিপি প্রসবের ছাড়পত্র দে- কবি।
কি বলব! একটি সার্থক কবিতা।কবিতা যদি সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হয় তবে এ কবিতাটি সেস্থানে বসবে।খুব চমৎকার বাক্য আর শব্দের গঠন শৈলী।
আরজু মুক্তা
তারপরেও কলম তরবারি থেকেও ভালো।
আমরা মানুষ নামের পশু।খাবলে খুবলে খাই।অন্যের অপকার করে নিজের উদর পুরি।
কবির প্রতীকী প্রতিবাদ ভালো লাগলো।
নাজমুল হুদা
এবং আপুকেও ধন্যবাদ অনেক অনেক।
নাজমুল হুদা
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া 😍।
অনুপ্রাণিত হলাম
ছাইরাছ হেলাল
শেকল বন্দি কবির দারুন হাঁসফাঁস।
তাও সে স্বপ্ন দেখে নূতনের।
নাজমুল হুদা
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া ।
ক্ষোভে চিৎকার করতে মন চায়
জিসান শা ইকরাম
অক্ষম আমরা, কিভাবে এতসব হতাশা জনক অবস্থা হতে পরিত্রান পাবো জানিনা।
লিখে প্রকাশ করি সব ক্ষোভ, হতাশাকে।
ভালো হয়েছে কবিতা,
শুভ কামনা।
নাজমুল হুদা
অন্ধকার বেশিদিন স্থায়ী হয় না।
একদিন আলো আসবে কিন্তু সময়কে ধারণ রাখা রাখলাম শব্দে।
ধন্যবাদ ভাইয়া 😍
শামীম চৌধুরী
ক্ষত চিহ্নে ক্ষত ভুলে থাকার মহৌষধ পেলে মন্দ না।
নাজমুল হুদা
সব কিছুর মহৌষধ আক্ষেপ ভর্তি ( উফ্…!)
ধন্যবাদ অফুরন্ত