সাজু ভাই কি ব্যাপার দুইদিন থেকে আপনার কোন খবর নাই। সেদিন কিছু না বলে চলে গেলেন তারপর তো আপনার কোন খবরই নাই। আরে না ভাই। সেটা না। আসলে একটু ব্যাস্ত ছিলাম। ব্যাস্ত ছিলেন, নাকি কাজ আপনাকে ব্যাস্ত রেখেছে? কাজ আমাকে ব্যাস্ত রেখেছে। তাহলে বললেন কেন যে ব্যাস্ত ছিলেন? হুম আমিতো ব্যাস্ত ছিলাম মতিন মিয়া। কেন আপনি কি কাজ বাদ দিয়ে বিশ্রাম করতে পারতেন না? নাকি কাজ আপনাকে বাধে রাখছিলো? না মতিন মিয়া তা তো না। তাহলে বলছেন কেন যে ব্যাস্ত ছিলেন? আমরা ব্যাস্ত থাকিনা,ব্যাস্ত নামক শব্দটায় অভ্যস্ত হয়ে আজ আমরা ভুল ব্যবহার করি তার।
--
মাঝে মাঝে মতিন মিয়া নামাক পাগলটার কাছে নিজেকে ছোট মনে হয়। কি সুন্দর কথা বলে সে। কত যুক্তি তার কথায়। কত রহস্য তার কথায়। অথচ আমরা তাকে পাগল বলি। আচ্ছা মতিন মিয়া আপনার সেদিন সবার চলে যাওয়ার কাহিনি শুনলাম। কিন্তু তারপর কি হয়েছিল? তারপর আর কি? তারপর বিভিন্ন সমাজে পাগল বলে স্বীকৃতি পাইলাম আমি। তারপর ভবঘুরে জীবন। কিন্তু জানেন, আমি আপনাদের কাছে পাগল হলেও, আমি পাগলের মতো পাগলামি করি না। কিন্তু আপনারা নিজের কাছে ভালো মানুষ হলেও পাগলের মতো পাগলামি করেন।
--
মতিন মিয়ার কথা বুজলাম না। মতিন মিয়া আপনার কথা ঠিক বুজলাম না। আচ্ছা দেখেন আমার পরিবারের সবাই তো সুস্থ, ভালো ছিলো, আমার মতো তো পাগল ছিলো না তাইনা? জি। তারা যেহেতু পাগল না, তাই তারা কি আমাকে ভালো মানুষ করতে পারতো না। হুম পারতো মতিন মিয়া। না পারতো না তারা আমাকে বাসা থেকে বের করে দিতে পারতো,হাহাহাহা। আমি ভুল বললে সেটা পাগলামি, আপনারা ভুল বললে,মানুষ মাত্রই ভুল,তাই ভুল হতেই পারে। তাই না সাজু ভাই।
--
মতিন মিয়ার কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু মতিন মিয়া-------। সাজু ভাই আমরা যখন কাউকে বেশি কথা বলতে দেখি তখন বলি,এই ছেলেটা বেয়াদব, বেশি বুজে,পাকা হইছে বেশি,বাচাল,অহংকার অনেক আরও অনেক কিছু। আবার আমি যখন চুপ করে থাকি, তখন আমি ভাবতেছি,আমি পাগলের মতো ব্যাবহার করছি,আমি নাকি অদ্ভুত। ভদ্র সমাজ যা বলে তা সত্য,আর পাগল সমাজ যা বলে তা পাগলামি। সাজু ভাই পাগল সমাজ নিজে থেকে তৈরি হয়নি,আজকের ভদ্র সমাজ এর উদ্ভাবক। কিন্তু ভদ্র সমাজ কি জানে তারা যা করছে তা পৃথিবীর উপগ্রহ ৩ টি এমন সত্যের সমান,হাহাহাহা।
--
চুপ করেই ছিলাম আমি। আচ্ছা সাজু ভাই ছাড়েন ওইসব, কখনো কি শুনছেন পাগল আর পাগলের মাঝে মারামারি করে এক পাগল মরেছে। কিন্তু ভদ্র সমাজ মারামারি করে আজ নিজের বাবাকেও মেরে ফেলে। কিন্তু তাদের জন্য তো এসব ফ্রি,বিনামূল্যে তাদের দোষ ঢাকানো হয় এখানে। আজ ভদ্র সমাজের জন্য একটা দোকান খুলানো হইছে। যেখানে অভদ্রতার বদলে ভদ্রতা বিক্রি করা হয় সাজু ভাই। আর তার সাথে মানুষকে পাগল বলে স্বীকৃতি দাওয়ার বিশেষ ক্ষমতা ফ্রি দাওয়া হয়। অফার সীমিত সাজু ভাই। আপনি কিনে নেন যান। যেহেতু আপনিও ভদ্র সমাজের একজন ভদ্র নাগরিক।
--
মতিন মিয়ার কথা শুনে কেন জানি ভদ্র সমাজে বাস করাটা খুব লজ্জাজনক লাগছে আজ। কেন জানি মনে হচ্ছে আমরাই পাগল। তাই দল ভারি করতে বাকিদের পাগলের ডিগ্রি দেই। খুব পাগল হতে ইচ্ছে হচ্ছে আজ। তবে ভদ্র সমাজের পাগল না। পাগল সমাজের পাগল হওয়ার ইচ্ছে করছে।
চলবে----
৮টি মন্তব্য
লীলাবতী
পড়লাম আপনার সব পর্ব গুলো। চলুক লেখা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
রাফি আরাফাত
ধন্যবাদ
শামীম চৌধুরী
ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের জন্য ধীর অপেক্ষায় রইলাম।
রাফি আরাফাত
ধন্যবাদ
মেহেরী তাজ
আচ্ছা চলুক…
পড়ছি ।
রাফি আরাফাত
ধন্যবাদ!
নীলাঞ্জনা নীলা
ছয় নম্বর পর্বে এসে স্বাগত জানাচ্ছি। আপনার লেখা সবগুলো পর্বই পড়েছি। কিন্তু মন্তব্য করাই হয়নি। বেশ লেখেন আপনি।
চলুক ধারাবাহিক।
রাফি আরাফাত
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!