ভোরের পাখি

বোরহানুল ইসলাম লিটন ৩ অক্টোবর ২০২১, রবিবার, ০৭:১৩:১৪পূর্বাহ্ন কবিতা ১০ মন্তব্য

সুজল গাঁয়ের ধারে,
আজও সে শায়েরী নিশি-দিন জাগে মানুষের সারে সারে।
ছোট কুঁড়ে ঘরে বসত করতো আবদুর রহমান,
বয়সের ভারে দেহ ছিল তার জরা ব্যাধিদের প্রাণ।
ছেলে মেয়ে ছিল সংসার ভরা নাতি-পুতি বারো জন,
তবু সে গুণতো আনমনে একা নিরজনে বসে ক্ষণ।
বলতো না কভু কাউকেই ডাকি রয়েছে সুখে না দুখে,
মনের বাঞ্ছা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেই দিতো রুখে।

নিশীথের শেষে প্রভাত যখনই মেলতো শুভ্র আঁখি,
জায়নামাজে সে বসে হতো এক অন্তর ভাঙা পাখি।
বিধাতার দোরে নামাজ অন্তে তুলে দুইখানি হাতে,
ব্যাকুল রোদনে আব্দার যতো গেঁথে দিতো মোনাজাতে।
বলতো যখন নবীজির কথা মাতা হারানোর স্মৃতি,
ছড়ায়ে পড়তো পাড়াময় বেগে চির জাগা এক প্রীতি।
সকলে ভুলতো বিছানার মায়া ওযু করবার তরে,
আল্লাহ্ আল্লাহ্ ধ্বনিতে জাগতো রমণীরা অন্তরে।

হোসেনের কথা বলতে যখন যেতো ফোরাতের তীরে,
কান খাড়া রেখে শুনতে সকলে ভাসাতো বক্ষ নীরে।
এমনি ভাবেই যেতে যেতে দিন দুঃখ বা সুখ মাখি,
চলনে সে হলো মানুষের হৃদে ভোরের সুরেলা পাখি।
হঠাৎ সেদিন প্রভাতের শেষে এলো সকালের তান,
গাইলো না তবু মধুর কণ্ঠে আবদুর রহমান।
সকলেই এলো অস্থির পদে খোঁজ নিতে তাড়াতাড়ি,
এসে দ্যাখে পাখি বেঘোর ঘুমায়ে সুর গেছে তারে ছাড়ি।

ছবিঃ সোনেলা গ্যালারী থেকে।

0 Shares

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ