পূর্ব প্রকাশের পর : 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস বর্ণনা করেছেন, রাসুল স. বলেছেন, বায়তুল মাকদিস নির্মাণ সমাপনের পর নবী সুলায়মান আল্লাহ সকাশে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনটি বিষয়ে। আল্লাহ তাকে দান করেছেন দুটি। সম্ভবত তৃতীয়টিও। ওই তিনটি বিষয় হচ্ছে- 1. আল্লাহ যেন দান করেন প্রত্যুতপন্নমতিত্ব, যাতে যে কোন জটিলতার সমাধানে তিনি গ্রহণ করতে পারেন তরিৎ সিদ্ধান্ত। 2. যেনো তার সকল সিদ্ধান্ত হয় আল্লাহর সকল সিদ্ধান্তের পূর্ণ অনুকূল। 3. তাকে যে বিশাল সম্রাজ্য দেওয়া হয়েছে যেন ভবিষ্যতে আর কেউ না পায়। তিনি আরো নিবেদন করেছিলেন হে আমার প্রভুপালক! যে আমার এই মসজিদে দুই রাকাত নামায পাঠ করবে তাকে তুমি নিষ্পাপ করে দিয়ো সদ্যজাত শিশুর মতো। আমি আশা করি আল্লাহ তার এই নিবেদনটিও কবুল করে নিয়েছেন। বাগবী।

হযরত আনাস ইবনে মালেক বর্ণনা করেছেন, রাসুল স. বলেছেন, স্বগৃহে পঠিত নামাযের পূন্য একগুণ। সাধারণ মসজিদে পঠিত নামাযের পূণ্য পঁচিশ গুণ, জামে মসজিদে পাঁচশ গুণ। মসজিদে আকসায় এক হাজার গুণ, আমার এই মসজিদে পঞ্চাশ হাজার গুণ এবং কাবা গৃহে এক লক্ষ গুণ। - ইবনে মাজা।

হযরত আবু সাইদ খুদরী বর্ণনা করেছেন, রাসুল স. আজ্ঞা করেছেন- তিনটি মসজিদ ব্যতীত তোমাদের বাহন অন্য কোন স্থানে বেঁধো না- মসজিদে হারাম, মসজিদে আকসা ও আমার মসজিদ।

সমাধান ঃ সোনা, রুপা ইত্যাদি দ্বারা মসজিদ অলংকৃত করা যায় কিনা সেই সম্পর্কে বিদ্বানগণের মধ্যে রয়েছে মতপৃথকতা। কেউ কেউ বলেছেন, এরকম করা মাকরুহ। কারণ এতে করে সম্পদের অবচয় হয়। রসুল স.ও এরকম করার অনুমতি দেননি। তার পিতৃব্যপুত্র হযরত ইবনে আব্বাসও একবার আজ্ঞা করেছিলেন, তোমরা মসজিদকে কখনো অতি অলংকৃত করো না, যেমন করে থাকে ইহুদী ও খৃষ্টানেরা।

আবার কোন কোন বিদ্বজ্জন বলেছেন,  মসজিদ অলংকরণ পূণ্যের কাজ। কারণ এতে প্রকাশ পায় মসজিদেরই মাহাত্ব্য। হযরত সুলায়মানের আমল এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ। ‘হেদায়া’ রচয়িতা লিখেছেন, কেউ যদি তার নিজস্ব সম্পদ দ্বারা মসজিদকে সৈন্দর্যমন্ডিত করে, তবে তা হবে সিদ্ধ। কিন্তু মসজিদের তত্বাবধায়কের পক্ষে এরকম করা সিদ্ধ নয়। তিনি ব্যায় করতে পারবেন কেবল মসজিদের জরুরী নির্মাণ কর্মের জন্য। নকশা ইত্যাদি করা তার জন্য সিদ্ধ নয়। যদি কোন তত্বাবধায়ক এরকম কিছু করেই ফেলে, তবে তাকে ক্ষতিপূরণ করতে হবে তার নিজস্ব সম্পদ দিয়ে। ইবনে হুম্মাম বলেছেন, মসজিদ অলংকরনের চেয়ে দুস্থ জনতাকে সাহায্য করা অধিক উত্তম। কিন্তু অধিকাংশ বিদ্বজ্জন বলেন, মসজিদে রংবেরংয়ের নকশা আঁকা, কাঠ অথবা চুন-সুড়কির মসলার দ্বারা চিত্রিত করা, সোনা-পানির ব্যবহার ইত্যাদি জায়েজ। এতে কোন অসুবিধা নেই। অর্থাৎ এতে কোন পাপ-পুন্য কোনটাই নেই।

ইবনে হুম্মাম বলেছেন, মসজিদ সুসজ্জিত করা হল। সুচিত্রিত হল মসজিদ গাত্র, মিহরাব। অথচ সে মসজিদে নামায নিয়মিত হল না। অথবা সেখানে আসা যাওয়া করে মুষ্টিমেয় নামাজী। কখনো উঠে শোরগোল। লোকেরা সেখানে লিপ্ত হয় দুনিয়াবী কথাবার্তায়, মনে হয় যেন কারো গৃহের বৈঠকখানা। এরকম অবস্থায় সুচিত্রিত মসজিদ নির্মাণ অবশ্যই মাকরুহ। (চলবে)

0 Shares

৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ