- বড়বড়িয়া হাজরা বিদ্যাপীঠ—/অরুণিমা মন্ডল
আমার স্কুল ,আমার কৈশোর বেলা যেখানে কেটেছে, মেদিনীপুরের মাটির সেঁদো গন্ধ
বড় বাজারের চিৎকার,স্কুলে হেঁটে যাওয়া রাস্তার বাঁক,বাঁকের সাইডে বাজানো হিন্দী গান” , প্রার্থনার ঘন্টা, প্রিয় স্যারদের মুখ, ম্যাডামদের হাসি, স্কুলের টিফিনের হইহই
ইংলিশ স্যার টির বাইরে ক্লাশ করানো
ধুতি পরে আসা উনার প্রথম দিন
ফাইভে র প্রথম ক্লাশে ভয়ে শাড়ি খুলে যাওয়া
বারবার পেনের কালি শেষ হওয়া
টিফিন পালানো বান্ধবীর বাড়ি যাওয়া
ঝোপেঝাড়ে আড্ডা মারা
প্রথম নাইনে উঠা
মাধ্যমিকে” র শাসনে কচুকাটা
জীবনযাপন?
স্টার” রাই কি ভবিষ্যত প্রকৃত নাগরিক?
বলদের মতো পড়তে থাকা?
ফুটবল খেলে, ফাঁকা বড় পুকুরটার জলের আবেগ টার বস্তাভর্তি মুখ খুলতে পারলাম না!
কবিতা আসা যাওয়া করত মনে
কোনদিন লিখে শান্তি পাইনি
অনুশাসনের অত্যচারের ভয়ে?
রাস্তার ধারে কাক, কুকুরের গোলমাল
পুকুরের শান্ত জলের উপর হীরে লাগানো”
“ইমোশানগুলি” আমাকে নির্জন ক্লাশরুমে গিলে খায়,
আমি একা হতে থাকি
অনেক যন্ত্রণার মধ্যেও কেমন
একটা আপন” সুখ খুঁজে পাই
আমার স্কুল
আমার স্মৃতি গুলোর দেয়াল
এখানে মনের বালুকণায় সিমেন্টের আঠায়
জোড়া
আমার অসহায় বেলা
সারাদিন না খাওয়া টিফিনের পয়সা জমিয়ে রাখা মেয়েটির
করুন দিন কেটেছে এখানে
তবু ও
ক্লাশগুলো কেমন ফুলের সুগন্ধে ভরা থাকত
পেটের ক্ষিধা আর গণিত ও বিজ্ঞানের রসায়ন” কেমন গুলিয়ে যেত?
বাড়িতে বাবার মার আর পরিবারের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য!
স্কুলে করুণা” আর দয়া
“ ভালোবাসা” জিনিসটা
মেয়েদের জীবনে মা” ছাড়া কেউ দিতে পারে না?
ক্লাশের বাংলা লেকচার শুনতে
“ আমার মা” যেন কাছে চলে আসত
বাংলার দুজন দিদিমনি
র পড়ানো” তেই পড়া হয়ে যেত!
ছুটির বোরিং হইহই শব্দ
রাস্তার দুদিকে সাইকেল র ঝনঝনানি
বাইক আর ইংলিশ স্যারদের কলকল ধ্বনি
উইলিয়াম ওয়ার্ডওয়ার্থ
আজ ও যেন আমার মনে গেঁথে আছে
বাগান জুড়ে ড্যাফোডিল যেন
স্যারের স্নিগ্ধ আওয়াজে তাল দিচ্ছে!
প্রতি বছর নবীন বরন
পুরোনোদের বিদায়
স্যারেদের বিদায়
ভালোভাবেই উদযাপন হতো!
স্কুলের আনাচে কানাচে লেগে থাকা কত হাসি’, খুশি কষ্ট
কত সরস্বতী পূজোর অঞ্জলী র ছিটেফোঁটা চন্দন
কারোর ভাঙা মনের ক্রন্দন
ধুতি পাঞ্জাবী শাড়িদের অবাধ মেলামেশা
কোন ফুলের পূজো হয়
মায়ের অঞ্জলিতে লাগে
কোন ফুল” বৃন্ত থেকেই ছিঁড়ে
ফেলে অলক্ষ্যে পায়ে
মাড়িয়ে
শেষ করে ফেলে
আমাদের সমাজ?
তবুও
সে মনে রাখে বাগানটিকে
তাঁর আপন “ মাটির স্বাদ”
টিকে
ভুলে যেতে পারে না
কোনদিনই?
———
কাকদ্বীপ
দক্ষিন চব্বিশ পরগনা
৭৪৩৩৪৭
৫টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
স্কুল জীীবনের স্মৃতি বড় মধুর। সেেই সব স্মৃতি কখনো ভুলা যায় না।বয়স বাড়ার সাথে স্মমৃতিগুলো সসজীব হতে থাকে।ভাল থাকুন।সুস্থ থাকুন।
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
সুন্দর লেখা।
শুভকামনা রইল সতত।
পপি তালুকদার
স্কুল জীবনের স্মৃতি সত্যিই ভোলা যায়না।এ যেন এক মধুময় জগৎ।স্মৃতি পাতায় চির অমলিন ছবি।
শুভকামনা ও শুভেচ্ছা রইল।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
স্মৃতি জাগানিয়া সুন্দর কবিতা।
হারানো দিনের স্মৃতি সত্যিই ভুলা যায় না।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন নিরন্তর।
আরজু মুক্তা
শৈশবের সাজানো বাগান। ভোলা কঠিন।