১.
আজ কোভিড-১৯ আমাদের মাঝে আতংক নিয়ে এসেছে
কিন্তু প্রকৃতি মাঝে এনেছে ছণ্দ। বাঘেরা আজ লোকালেয়ে।
সমুদ্র সৈকতে খেলা করে ডলফিন
পাখিরা মুক্তমনে উড়ে বেড়ায়
রিনিঝিনি বৃষ্টির ছন্দে পুলকিত নাচছে তটিনি
মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব আশরাফুল মাখলুকাত আজ বন্দি
গৃহের লকডাউন উঠে গেলেও মন এখনো লকডাউনে।
টিভির পর্দায় স্কোর গোনা কতজন মৃত কত জন আক্রান্ত।
মাঝে মাঝে ভয়ে শংকায় খাবি খাওয়া।
প্রকৃতির কোন লকডাউন নেই। প্রকৃতি আজ মুক্ত স্বাধীন্
ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাচ্ছে দুষিত আবর্জনা।
নতুন এক পৃথিবীর অপেক্ষায় আছি আমরা
যার এখনো বেঁচে আছি।
যেখান সুধিত নির্মল বায়ু রবে
রবির রক্তিম আভা হবে তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত।
চাঁদনি পসরে বসবে কবিতার আসর
জোস্নায় বিবাগী হবে সাধু মহাপুরুষ যত।

২.
করোনা আক্রান্ত আদমের ফেলে দেওয়া ঝুটা খাবারে ভাগ বসায় ওরা
করোনা রোগী মরে যায়। কিন্তু মরে না ওরা।
ওদের কোন লকডাউন নেই। কারণ ওদের লক করার কোন গৃহই নেই।
ওরাও প্রকৃতির মত মুক্ত স্বাধীন। যেখানে রাত সেখানেই কাত।
ওদের আতংক করোনা নয়। ক্ষুধা ওদের বড় আতংক।
করোনা কি এটাই ওরা জানে না। করোলা ওরা চিনে। ভাবে এটা বোধহয় তেমন তিক্ত কিছু একটা। ভাইরাস কি ওরা জানে না।
এত না জানার পরও তাদের কোন সংক্রমন তেমন চোখে পড়ে না।
সংক্রামিত হয়ে মরে ফার্মের মুরগীর মত শরীর যাদের তারা শুধু। মরে যারা একটু সর্দি জ্বর হলেই উড়ে যায় পরদেশে চিকিৎসা সেবা নিতে।
কিন্তু ওরা রোদে পুরে বৃষ্টিতে ভিজে আবর্জনার মাঝে থেকে আর খেয়ে অজান্তেই হয়তো অনেক আগেই এই করোনায় তারা আক্রান্ত হয়েছে ।
তখন হয়তো কেউ করোনা কি জানতই না। তাদের শরীর বিধাতার হাতে অর্পিত ছিল। তাই কোন চিকিৎসা ছাড়াই করোনাকে তারা জয় করেছে অনেক আগেই।
করোনা তাদের তখনও কিছু করতে পারেনি এখনো নয়।
ওদের অবারিত প্রাণশক্তির কাছে করোনা যেন কিছুই নয়।
আজ করোনা খুব সেলিব্রেটি কিন্তু তা এসব ছিন্ন মুলদের কি করতে পেরেছে?
তাদের জীবন যাপনতো করোনা বিস্তারে সহায়ক। কিন্তু করোনার সেখানে চান্স নেই।
পাত্তাই নেই যেনো।
যদি করোনা তাদের ধরতো কি হতো?
লাশের স্তুপ পরে যেত আনাচে কানাচে। হাটে মাঠে ঘাটে।
রেলষ্টেশনে বা বস্তিগুলোতে।
করোনা ওদের কি করতে পেরেছে?
জীবন ধারায় এতটুকু প্রভাব ফেলেছে যে
ভিক্ষে করতে এখন কেউ বাড়িতে ঢুকতে দেয় না।
যে ভিক্ষে করে দিন যাপন করত
আজ বাধা গ্রস্থ তার জীবন জিবীকা।
তাকে বাধ্য হয়ে কুকুর বিড়ালের সাথে ঝগড়া করে ডাস্টবিন থেকে খেতে হয়
করোনা রুগির উচ্ছিষ্ট খাবার।
তবে কি করোনা শুধু শোষক শ্রেণির জন্য খরগ হয়ে এসেছে
আর শোষিতের জন্য আশিবার্দ
শোষন করে করে মালে পাহার গড়েছে যারা
সেই টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ী প্রভাব সব আজ তুচ্ছ
অদৃশ্য এক ভাইরাসের কাছে। হরহামেশা আতংকে তাদের দিন কাটে।
রাতে ঘুম আসে না।
পক্ষান্তরে, মজলুম ছিন্নমুল মানুষগুলো করোনোকে তুচ্ছ করে কুকুরের গলা জড়িয়ে ঘুমায়। হতে পারে কুকুরটার শরীরেও রয়েছে করোনার ভয়াবহ সেই ভাইরাস। তাতে কি?
হোক না আধ পেটা খাওয়া শরীর। তাতে কি। ওটুকু খেয়েই ওরা পরম তৃপ্তিতে সুখ নিদ্রা যায়।

৩.
ডাক্তার মরে। পুলিশ মরে।
অনেকে খুশি। কিন্তু কেন?
ডাক্তর নাকি কসাই। সব ডাক্তারতো আর তেমন নয়?
কেউ কেউ এমন যারা এতকাল রোগীদের জীবন নিয়ে খেলেছে নিষ্ঠুর খেলা
তবে কি প্রকৃতি প্রতিশোধ নিচ্ছে?

আর পুলিশ?
সেটা আপতত না বলাই ভাল।
সেদিন একজন পুলিশ বলছে, আমাদের প্রতি মানুষের সহানুভতি নাই।
আমরাতো তাদের জন্যই আজ বাহিরে । তাদের জন্যতো পরিবার পরিজন ছেড়ে রাস্তায়।
তবুও আমাদের কেউ মরলে মানুষ খুশি হয়। মানুষের মাঝে যে ভাবের সৃষ্টি হয়েছে
এটা প্রতিটি মানব হৃদয়ে স্রস্টার প্রথিত অভিশাপ্।
আসলেই কি তাই?
পাপিতো সবাই!! পাপ ছাড়া কে আছে জগতে?
বুকে হাত দিযে কে বলতে পারবে আমি পাপি নই।
তবে পুলিশটির কথায় যে আত্ম উপলব্ধি
যে অনুশুচনা এটাই করোনার শিক্ষা।
আমরা যারা পাপি সবাই যদি অন্য পাপিদের অবস্থা থেকে শিক্ষা গ্রহন করতাম আমরাও ছিন্নমুল মানুষগুলোর মত সুখ নিদ্রা যাপন করতে পারতাম।

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ