ব্যাচেলর চায়ের কাপ

এস.জেড বাবু ১ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, ০১:৫৯:৩৮অপরাহ্ন কবিতা ১৪ মন্তব্য

আবারও ডাকে কুকিল,
ভাঙ্গা সুরে, উড়ে উড়ে, দুরে দুরে।
কুহুতানে- নিবিড় আলিঙ্গনে, ভাঙ্গে স্বপ্ন ভাঙ্গা ঘোর।
কনকনে উষ্ণতায়, ভেজা বকুলের কাঁচা গন্ধ,
ক্লান্ত ভোরের বাহুডোরে নিদ্রাভাঙ্গা চিরন্তন ষোড়ষী সকাল,
আপন তিক্ষ্মতায় ঘনঘোর কুয়াশার বস্ত্র হরণ শেষে
মুচকি পরশ বুলিয়ে, একুশের হাসি হাসে সোনালী কিরণ-
যৌবনের বলিষ্ঠ, সুমিষ্ট স্বর্ণালী ইশারায়।

কানামাছি খেলে নিস্তব্ধ ভেজা হাওয়া,
দৈবাৎ দোলে উঠে-
শিক্ত শিহরিত ভারী সবুজের আবেগ।
বেলকনিতে ঝুলতে ঝুলতে
নিজের শুভ্র রং ফিরে পায়,
গেল রাতে স্নান শেষে লটকে দেয়া
পুরুষালী বর্ণালী হাল্কা পরিধেয়।

সে সমারোহে গাঢ় নীল ওড়নাটা উড়ে না স্বাধীন-
সটান রশি কামড়ে ধরে শূণ্যতায় ঝুলছে দুই জোড়া প্লাষ্টিকের ক্লিপ-
পতপত করে দুলছে না-
উল্টে দেয়া মিষ্টি গোলাপি কামিজের থ্রী কোয়াটার হাতা।

ঘুমটা মতো টেনে খানিক সরিয়ে দিলে একেলা পাঞ্জাবির কোনা-
খুউব করে কাছে ডাকে,
ঝুলন্ত বেলকনির কর্নিশে রাখা,
ভুল করে ফেলে আসা, ধোঁয়া উঠা ব্যাচেলর চায়ের কাপ।
শেষ হয়েও হয় না শেষ,
তলানির শেষ চুমুক স্বীয় উষ্ণতায় বরণ করে বাসন্তি ঢং
উদাসী ঋতূ বৈচিত্র্যে- উসখুস মন, উদাসী ক্ষণ
অপেক্ষা আর অপেক্ষায়, কড়া নড়েনি দরজায়
এখনও আসেনি খবরওয়ালা-

সখি ! তুমি কই ! কতদুরে ?
ভেজা বিনুনীর জল ছাড়াতে ছাড়াতে
ডান হাতে খবর ঢেলে দিয়ে,
শূণ্য কাপটা উঠিয়ে নিতে যদি আসতে-
শিউলি আঁচলে জড়ানো ভেজা বাসন্তি কোমরে
আলতো করে ছুঁইয়ে দিতাম ভাদ্রের খরাচ্ছন্ন অনামিকা।
তুমি হাসতে, রাগতে, চোখ রাঙাতে, ছিটকে যেতে,
আমি দেখতাম, ভাবতাম, ভয় পেতাম কালবৈশাখী মতো।
তবুও আর একটি বার জড়িয়ে ধরে,
হাসনাহেনার গন্ধ নিতাম- বন্ধ চোখে।
কম্পিত ঝড়ো বদনের কোনায় কোনায়, ভাঁজে, লাজে-
সাজিয়ে দিতাম; গেল রাতের নিদ্রাহীনতার সমস্ত জড়তা।
প্রত্যাশিত লিকলিকে সদ্য ভেজা আঙ্গুলের পরশে-
আর একটি বাসন্তি সকাল দেখতাম দুচোখ মেলে।

-০-

0 Shares

১৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ