বৈরী জীবন –

ভূমিহীন জমিদার ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, বুধবার, ০১:৪৮:০০পূর্বাহ্ন অন্যান্য ১৯ মন্তব্য

ইন্টারমেডিয়েট পাশের পর কিছুদিন কলেজে ঘুড়াঘুড়ি করে অভাবের তাড়নায় পড়াশোনার পাট চুকিয়ে রাফায়েত একটা কিছু করে সংসারের হাল ধরার চেস্টা করে । নিজ এলাকার একজন প্রভাবশালি আমলার মাধ্যমে বিদেশি একটা এনজিও’তে কাজ পায় । অফিসে সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে সবাই তাকে স্নেহের চোখে দেখতো এবং সবাই তাকে রাফ নামে ডাকতো ।
মোটামুটি ভাবে ভালো ইংরাজি বলতে পারার জন্যই কান্ট্রি ডিরেক্টার হ্যারিসনের নজরে পড়ে যায় এবং তারই সহকারি হিসাবে বেশ সুনামের সাথে বছর তিনেক কাজ করার পর তার বস হ্যারিসন একদিন অফিসে এসে বল্লো ‘ রাফ ইট’স টাইম টু সে বাই । আই এম গোয়িং ব্যাক টু মাই কান্ট্রি । আই উইল রিকোমেন্ড ইউর নেম টু ইউর ইনকামিং ডিরেক্টর , ইজ দেয়ার এনিথিং দ্যাট আই ক্যান ডু ফর ইউ রাফ ‘ ? অফিসে এসে এই ধরনের একটা খবর শোনার জন্য রাফায়েত মোটেই প্রস্তুত ছিলোনা , কারন হ্যারিসন শুধু তার ইমিডিয়েট বসই ছিলোনা ,বয়স এবং পদমর্যদার উর্ধে উঠে তাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্ব হয়েছিলো এবং একটা ফ্রেন্ডলি এনভারমেন্টে কাজ করেছে ।
রাফায়েত মন খারাপ করে হ্যারিসনের সামনে অসহায়ের মত দাড়িয়ে রইলো । তার কাছে মনে হচ্ছে তার পায়ের নীচ থেকে তার মাটি সরে যাচ্ছে । হ্যারিসন তার দিকে তাকিয়ে বল্লো, ‘ লুক রাফ মাই কন্ট্রাক্ট ইজ ফিনিশ । বিফোর আই লিভ আই উইল মেক শিওর ইউ হ্যাভ ডাবল রেইজ' রাফায়েত অনেক কস্টে মুখে হাসি এনে বল্লো ‘ ইট’স ওকে হ্যারি । আই নো দ্যাট ওয়ান ডে ইউ গটা গো বাট আই ডিড নট রিয়েলাইজ ইট’স গনা বি সো সুন । এনিওয়ে গুড লাক হ্যারি ‘ । হঠাৎ করে হ্যারি রাফায়েতকে জিজ্ঞাসা করে ‘ রাফ আর ইউ ইন্টারেস্টেড টু গো টু দ্যা স্টেটস ? ইফ ইউ আর ইন্টারেস্টেড আই মাইট হেল্প ইউ টু গেট এ ভিসা ‘ ।
রাফায়েত জানে তার উপর সংসারের গোটা দায়ীত্ব । দুই ভাই বোনের মধ্যে রাফায়েত সবার বড় , ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা , বোনদের বিয়ে , অসুস্থ বাবার চিকিৎসা সবই তার উপর নির্ভর করে । রাফায়েত জানে আমেরিকা যেতে পারলে আরো ভালো ভাবে সে সংসারের দায়ীত্ব পালন করতে পারবে কিন্তু প্রবাসী জীবনের কস্ট, বৈধ হওয়ার জন্য কাগজ পত্রের ঝামেলা ইত্যাদি ইত্যাদি মিলিয়ে একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ কিন্তু নিজের ফ্যামিলির কথা ভেবে ইতস্ত করতে লাগলো । ‘ লুক রাফ হোয়াই ডোন্ট ইউ ডিসকাস উইথ ইউর প্যারেন্টস বিফোর ইউ মেক আপ ইউর মাইন্ড ‘ বলে হ্যারি রাফায়েতের কাঁধে হাত রাখে । ‘ আই থিংক সো এন্ড থ্যাংকস ফর ইউর অফার ‘ বলেই অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাসায় এসে মা বাবার সাথে আলোচনা করে আটলান্টিক পাড়ি দেয়ার মনস্থির করে ফেলে ।
পনের দিনের মাথায় নিউ ইয়র্ক এসে হাযীর হয়ে দুরসম্পর্কের এক মামাতো ভাইয়ের বাসায় উঠে । সেই থেকেই রাফায়েতের ম্যাকানিকেল লাইফ শুরু ।

চলবে...

0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ