বেওয়ারিশ! পিতামাতা, পরিবার পরিজন থাকার পরও আজ তোমরা বেওয়ারিশ!!
সমাজ থেকে শুরু করে তোমাদের জন্মদাতা পিতামাতাও তোমাদের ঘৃণা করে। তোমাদের কারো জানাজায় পর্যন্ত লোক শরীক হয় না! এমনকি তোমাদের জন্মদাতা পিতামাতাও না! চেয়ে দেখো তোমরা, পৃথিবী থেকে কতোটা ঘৃণা কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছো পরপারে।
আজ ১৯ জুলাই। ঠিক এক সপ্তাহ আগে, ১৩ জুলাই পত্রিকা মারফত জেনেছিলাম আর এক সপ্তাহ অপেক্ষা করে যদি লাশ পরিবার থেকে গ্রহণ করা না হয়, তাহলে গুলশান ট্র্যাজেডির আততায়ীদের লাশগুলো আঞ্জুমানে মফিদুল'এর হাতে হস্তান্তর করা হবে। বার্তাটি ছিলো ১২ জুলাইয়ের, পত্রিকায় এসেছে ১৩ জুলাই। এ কেমন মানবজীবন ছিলো তোমাদের?
দুর্ভাগ্যজনকভাবে কেউ হয়তো বেওয়ারিশ হয়ে যায় কিন্তু তোমরা বেওয়ারিশ হতে যাচ্ছো ঘৃণা কুড়িয়ে !!!
১লা জুলাই ঘটনাটি ঘটেছিলো। টানা ১৯ দিন যাবত লাশগুলো মর্গে পড়ে আছে। মা-বাবা অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, তারা লাশ নিবেন না। এরকম মানবতার হন্তারক কুলাঙ্গারদের তারা গ্রহণ করবেন না। সারা পৃথিবীজুড়ে তোমাদের প্রতি মানুষের সীমাহীন ক্ষোভ। মরণের পরেও সারা পৃথিবীর মানুষ তোমাদের থুঃথুঃ ছিটিয়ে যাচ্ছে।
কেউ কেউ যদিও আহা উহু করেছেন, সেটা নিতান্তই মানবিক কারণে। তাদের প্রশ্ন, কিসের লোভে পড়ে এমন সুদর্শন এবং বিত্ত বৈভবে বেড়ে উঠা বাচ্চা ছেলেগুলো ও পথে পা বাড়ালো! নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিলো! ছেলেগুলো কি এখন জানতে পারছে, এ দুনিয়ায় এমন একটি মানুষও নেই যে তাদের জন্য চোখের পানি ফেলছে?
তোমরা কি জানো? দুনিয়ার মানুষের কাছে যারা পরিত্যক্ত, বিধাতাও তাকে ক্ষমা করেন না।
মানবজীবনের বৈশিষ্ট্য তো হওয়া উচিৎ "এমন জীবন তুমি করিবে গঠণ, মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।"
কিন্তু তোমাদের মরণের পরে সারা পৃথিবীর লোককেবল থুঃথুঃ ছিটিয়ে যাচ্ছে!!!
Thumbnails managed by ThumbPress
২০টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
আপু সুন্দর একটি পোষ্ট ।
হ্যাঁ মানব জীবনে যদি মানুষের ভালবাসায় না থাকে তাহলে এজিবন বৃথা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধর্মান্ধতা আফিম তুল্য। এর বিষক্রিয়া মানুষকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে তোলে। ছেলেগুলি জানলোও না কি ঘৃণা কুড়িয়ে নিয়ে তারা গেলো।
মোঃ মজিবর রহমান
ঠিক বলেছেন আপু।
শুন্য শুন্যালয়
সত্যি বলতে আমি নিজেও ভেবেছিলাম, যত বড় কথাই বলুক, বাবা-মা লাশ নিশ্চয়ই নিতে যাবে। আমার ধারণা মেলেনি। কতগুলি পিশাচের জন্য টু পরিমান আহ্ও আসবেনা কারো, যদি তারা মানুষ হয়। শিক্ষা নিক বাকিরা, যদিও জানি যারা এই পথে এসেছে, আসবে তাদের কোনকিছুতেই শিক্ষা আসবে না।
বেশ লিখেছেন আপু, মানবজীবনকে বুঝি যেন আমরা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
পরিবারপরিজন থাকা সত্বেও ডাস্টবিনেই তারা বেওয়ারিশ হয়ে থাকলো।
কতোটা ঘেন্না।
মৌনতা রিতু
অবাক হয়ে ভাবি আপু, কেন এমন হয় ? আমি এসব বিষয়ে ক্ষমা করতে পারিনা। আমার মনে হয় আইনের ধারায় শাস্তির বয়স আঠারো বছরের নিচে করা উচিত কোনো কোনো ক্ষেত্রে। বিশেষ করে এসব ক্ষেত্রে। বিশ্বাষ করো আপু, ঐশীর ফাঁসির বিষয়ে আমি এতো বিচলিত হইনি। কেন যেন মন এবং বিবেক দুটোই বলছে ওর ফাঁসি হওয়াই উচিৎ। আমরা যখন বেড়ে উঠেছি ভালোমন্দ সবই তো বুঝে বেড়ে উঠেছি। এই যে আমার সন্তানকে কোনটা ভাল কোনটক খারাপ বুঝাচ্ছি কতো ভালোবাসা নিয়ে তাদের বড় করছি, কিন্তু একসময় সামান্য কিছু ক্ষণের জন্য সে সব আদর্শের শিক্ষা ভুলে যাবে ?
জানি না আপু, মানবতা কোথায় যাচ্ছে । কেন এতো এরা রুক্ষ হচ্ছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ক্ষমা তাকেই করা যায়, যে ক্ষমা পাওয়ার নূন্যতম যোগ্যতা রাখে। ক্ষমাহীন অপরাধকে ক্ষমা করাও অপরাধ।
জিসান শা ইকরাম
এই সব জঙ্গিদের জন্য এমন পরিণতিই উপযুক্ত,
এদের কানে আমাদের এত নরম ভাষা প্রবেশ করবেনা। এরা তো এই জগৎ চায় না, এরা চায় ৭০ হুর পরিবেষ্টিত জগৎ।
এরা জন্তু জানোয়ার সমতুল্য, একজন ৭ মাসের গর্ভবতী নারীকে এরা কুপিয়ে মেরেছে, একজন মহিলাকে চল্লিশটি কোপ দিয়ে মেরেছে।
জন্তু জানোয়ারের মতই এরা বেওয়ারিশ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ওরা জাস্ট বোধহীন রোবটের মতো কাজ করেছে। কোন মানুষ এতোটা রুঢ় হতে পারে ধারণাতীত। মানুষের পর্যায়েই যারা ছিলো না, তারা মানুষের মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখে না।
আবু খায়ের আনিছ
বস্তুত একটা কথা আছে, মানুষ বেশি আবেগী হয়ে গেলে সমস্যা আবার বেশি যুক্তিপ্রবণ হয়ে গেলেও সমস্যা। দুইটার ভারসম্য রক্ষা করতে হয়।
আপনি যে কথাগুলো বলেছেন, যা আবেগ দিয়ে বলেছেন, বুঝাতে চেষ্টা করেছেন, এদের মৃত্যুর পর নূন্যতম করুণাও এরা পায় না আর পাবেও না। কিন্তু আপু দূভাগ্য যে এরা আবেগ, যুক্তি কোনটাই মানে না। সব থেকেও এদের কিছু নেই, নিজেকেই এরা হারিয়ে ফেলে।
ভালো পোষ্ট, যদি বুঝতে পারে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধর্মান্ধতার আফিমে নিজেদের হারিয়ে ফেললে পরিণতি কি হয়, তা দেখে যদি কিছুটা শিক্ষা বাকিদের হয়, তবুও রক্ষা।
‘মানুষ’ এর মান+হুস দুটোই থাকা দরকার। হুস হারিয়ে ফেললে মান আর থাকে না।
আবু খায়ের আনিছ
ঠিক বলেছেন আপু।
ব্লগার সজীব
এদের পরিচয় কেবল বেওয়ারিশ হয়েই থাকুক।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এরা বেওয়ারিশ হয়েই থাকবে। কেউ এদের দাবীদার হবে না।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি খুব খুশী হয়েছিলাম যখন পেপারে পড়েছি এদের বাবা-মা এসব কূ-সন্তানদের গ্রহণ করতে চায়না।
বেওয়ারিশ হয়েই পৃথিবীর মাটিতে ঢুকলো। এরা যাবে স্বর্গে? নরকেও জায়গা হবে কিনা সন্দেহ!
ছিঃ ঘেণ্ণা!
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর। মানুষেরই মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতেই সুরাসুর।
মিষ্টি জিন
এদের জন্য শুধুই ঘৃনা ঘৃনা আর ঘৃনা ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
শুধুই ঘৃণা।
লীলাবতী
এদের এমন মৃত্যুই কাম্য। একমত আপনার লেখার সাথে আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
বেওয়ারিশ লাশ!