বুবুর ভালবাসা

ছারপোকা ৪ অক্টোবর ২০১৫, রবিবার, ০৪:২৫:২১অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৭ মন্তব্য

কলেজ থেকে ফিরেই মনটা অনেক খারাপ হয়ে রইলো অন্তুর । মা ও কাছে নেই
যে বলবে কি হয়েছে রে বাপ । কাছে থাকার মধ্যে আছে শুধু ওর বুবুটাই । বুবুটার একটা অসীম ক্ষমতা আছে যখনই অন্তুর মন খারাপ থাকে কিভাবে যেন বুঝে ফেলে । সবসময়ে যতই কষ্ট থাক না কেনো এই একটা মানুষ এ মনটা খুব ভাল করে দেই অন্তুর। অন্তু কলেজ থেকেই এসেই শুয়ে আছে রুমে হঠাত্ বুবু এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,কি হয়েছে রে ভাইয়ু ?সঙ্গে সঙ্গে বুবুকে জড়িয়ে ধরে ছোট বাচ্চার মতো কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো অন্তু ।আজ কলেজে স্যার ওকে নিয়ে হাসাহাসি করেছে খুব।স্যারে ইদানিং তাকে যাচ্ছে তাই বলেই যাচ্ছে ।এইসব নিয়ে প্রায়ই মন খারাপ করে থাকলে ও কাউকে বলতো না কিছু।কিন্তু আজ না বলে পারলো না বুবুকে ।ওর বুবু টা মুচকি হেসে বললো পাগল এটা বুঝি কিছু হলো?বুবু টা ওকে বুঝিয়ে বললো আরে এসব কিছুই না তুই আমার কাছ থেকে কিছু টিপস নে কাজে লাগা দেখবি সব কিছু ওকে ।এরপর থেকেই কোন সমস্যা হলেই অন্তু ওর বুবু কে সব কিছু খুলে বলতো ।এরপর থেকেই আর কোনো সমস্যায় পড়তে হয় নাই অন্তু কে । মা বাবা কাছে না থাকাই বুবুটাই ওকে আগলে রেখেছে ।সেই সকাল থেকে রাত অব্দি ।সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অন্তু খুব খারাপ করে এতে মন খারাপ করে সারাক্ষন রুম আটকিয়ে বসে থাকে ।অন্তু মনে মনে খুব ভয় পেয়েছিলো বুবু যদি কিছু বলে ।কিন্তু সে অবাক হলো বুবু ওকে কিছুই বললো না ।বুবু ওকে এসে বলল কি রে পাগল খারাপ করছিস তো কি হয়েছে পরেরবার ভাল করবি আমি জানি তুই অনেক ভাল স্টুডেন্ট ।বুবুর অনুপ্রেরনায় বদলে গেছে অন্তু ।পরেরবার কলেজের সবার থেকে ভাল রেজাল্ট করেছে ও । অন্তুর জীবনে ওর বুবু টাই ছায়ার মতো হয়ে আছে সবসময় ।কখনো ও পরামর্শক ,কখন ও বন্ধু,কখনো শিক্ষক ।দিনের পর দিন অন্যদের উপর রাগ করে থাকলে ও বুবুটার উপরে একটু ও রাগ করে থাকতে পারে না ।বুবুর হাসির কাছে ওর রাগ টা পানি হয়ে যায়।ছোটবেলায় বুবু স্কুল
থেকে আনা নেওয়া করতো ওকে । প্রতিদিন ঐ দূরে ক্যন্টিনে দাড়িয়ে থাকতো স্কুল ছুটি হলে হাত ধরে নিয়ে আসতো বাসায়।এখন আর ওর বুবু আসে না কিন্তু ওর পথ চেয়ে বসে থাকেন।ঘরে ফিরলেই স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলেন ।কলেজে কয়েকটা নতুন বন্ধু হলে ও ওর সবচেয়ে ভাল বন্ধু ওর বুবুটাই । বুবুটারর জন্মদিন সামনে তাই অন্তু ভাবলো বুবু কে কি দেয়া যায় । কি দিলে বুবুটা খুশি হবে ।অনেক কিছু দিতে চাইলে ও কিছু এ দিতে পারলো না শুধু এইটুকু এ বলতে চেয়েছে ।অদ্ভূত চিন্তারা যখন এই প্রখর রোদে ক্লান্ত হয়ে বুকে আছড়ে পড়ে তখন তোর কথাগুলো মনে পড়ে।তোর প্রত্যেকটা বুলি আমাকে অনুপ্রেরিত করে ভাল কোন কাজে।
রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় কারো হাসির আওয়াজ কানে বাজলে মনে হয় এই যেনো তুই হেসে যাচ্ছিস প্রাণখুলে। তোকে প্রানখুলে হাসতে দেখলে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয় নিজেকে । কাঠপোড়া রোদে যখন শরীরের ঘাম অঝোর ধারায় ঝরে পড়ে তখন তুই এসে ঘামগুলো মুছে দেস তুই না থাকলে আমাকে কল্পনা করাটা অসম্ভব রে বুবু । তোকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় নি কখনো । তোর কারণেই নিজেকে চিনেছি,নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি, নিজেকে সংজ্ঞায়িত
করতে শিখেছি।।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ

Thumbnails managed by ThumbPress