কসাইয়ের ছুরির খিপ্রতায় ফালা ফালা মাংস, যকৃত- চর্বিতে মোড়া হাড়-হাড্ডি, আঙ্গুর ফলের মতো নড়ে! অস্পষ্ট নোনা রক্তের গন্ধে- গা গুলানো বিকালে, আমার জ্যন্ত হৃদয়- কেটে ফেলেছিলে; মস্তিষ্কের শাঁসে জমছে ধূসর ক্ষয়! মগজ কড়াইয়ে কড়া তেলে ভেজেই চলেছে- অত্যুৎসাহী কিছু রমণী! তাজা ফুল কেটে মমি করে আহ্লাদী ড্রেসিং টেবিলে, গোছানো বেশ! পাউডার, লিপস্টিকের কড়া গন্ধে, জ্বলে না কি শ্বেত ফুলটার নিষ্পলক মুখ! রমণী তুমি কি দেখোনি আজো পুরূষের পাঁজর কাঁটা- বুক? নিহত হৃদয়ে পিপড়েরা দলে দলে, লাল রসগোল্লার মতো ছেঁকে আছে! প্রতিটি চুম্বন মাঝে মাঝে ফরমিক এসিডের মতো, স্নায়ুতে স্নায়ুতে তীব্র জ্বলুনি আনে! তবুও এখনো বেশ বেঁচে আছি! কড়া তেলে মাংসল হৃদয় ভাজা শেষ করো তাড়াতাড়ি, অলিন্দে নিলয়ে রক্তের বদলে জমছে মশলার ঝাঁজ! আর কতো উত্তাপ চুলায় চড়াবে রমণী? আজকাল চাঁদের আলোর তাপে গলে যায় পারদ, আমিতো জানিই কম্বলের সুপ্ত পশমে, লেগে আছে খাঁটি বারূদ! সামান্য মোমের আগুনে- বিস্ফোরিত হবো! নিউ ইয়ার সেলেব্রেশনের মতো ফটাফট শব্দ হবে, অথচ কথা ছিল একদম নিঃশব্দ চুম্বন- এবং চাঁদের আলো মিশে একাকার হবে! কথা ছিল তুমি আমার সাথে রাত্রির কান্না কুড়াতে যাবে, একদিন পাঁজর টুকরো হলো, তুমি দ্রুতগামী বুলেটের মতো লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে, বাতাসে পোড়া গন্ধেরা পেট্রোলের কণার মতো, ছিটকে পড়ছে জলে! ডিনারের পানীয় ভয়ংকর দাহ্য, ছুঁইয়ো না রাঙ্গানো ঠোঁটে; হবে বিস্ফোরণ! তোমার ঠোঁটেই ব্যস্ত আগুন! মেকআপের তীব্র গন্ধে বুনো বেবুনের মতো, অনেকেই করছে লম্ফঝম্প! এদিকে বিদীর্ণ ক্ষত ঢেকে দিচ্ছে আমার আপাদমস্তক!
১০টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
নিপুণ রচনাশৈলী
ভীষণ ভালো লাগলো।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপনার লেখার উপমা, শব্দচয়নে বারবার মুগ্ধ হই। বিরহের প্রকাশ ভঙ্গি দারুন লেগেছে। এভাবেই কাটা অংশ গুলো আঙ্গুর ফলের মতো ঝুলে থাকে কেউ দেখে না, বুঝতে চায়না সেই ক্ষতের গভীরতা। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
সৌবর্ণ বাঁধন
আমরা তো সবাই ক্ষত বিক্ষত! কোনটা দৃশ্যমান আবার কোনটা অদৃশ্য! ধন্যবাদ দিদি।
আলমগীর সরকার লিটন
দারুণ আপনার চিন্তাশক্তি স্যালুট জানাই কবি দা
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
নিতাই বাবু
এভাবেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছে কবি। তা কেউ দেখে না, ভাগও নেয় না। নিজের জ্বালা নিজেকেই সইতে হচ্ছে।
শুভকামনা থাকলো কবি দাদা।
সৌবর্ণ বাঁধন
পুড়ছি তো সবাই অবিরত! জন্ম থেকেই অবিরত জ্বলে চিতা! কে তাকে থামাবে বলুন! অনেক ধন্যবাদ দাদা।
রেজওয়ানা কবির
ভালো লাগল, কিন্তু ভাষাগুলো একটু কঠিন মনে হলো আমার কাছে।।
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ। কবিতা যেভাবে আসে সেভাবেই লিখি। কখনো সহজ হয়, কখনো বন্ধুর।