কিছুদিন আগের একটা ঘটনা শেয়ার করছি ।

ভুমিকাঃ
সম্ভবত আপ্রিলের ৭ তারিখ এক কিশোর কে রক্ত দেয়ার জন্য সদর হাসপাতালে যাই। ছেলেটি শুকিয়ে একেবারে আমসত্ত হয়ে গেছে । বেচে থাকার জন্য তার ৪ ব্যাগ রক্ত দরকার । আমার দেয়া ১ ব্যাগ সহ তার যোগাঢ় হয়েছে মোট ২ ব্যাগ । যেহেতু সেচ্ছায় রক্ত দানের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত সেহেতু ও+ রক্ত যোগাড় করা আমার পক্ষে খুব একটা কঠিন না । আরও দুই ব্যাগ রক্ত ছেলেটিকে যোগাড় করে দিলাম । ছেলেটির বাবাকে দেখে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমান মনে হয় ।সুন্নতি পোশাকধারী । অনেক দোয়া করল আমার জন্য । তো যখন আমার রক্ত নেয়ার সময় হল তখন কি মনে করে যেন বলে ফেললাম " কাকা আমি কিন্তু নাস্তিক, আমার রক্ত আপনার ছেলের জন্য নিতে অসুবিধা নেই তো??" উনি আমার কথা শুনে একটু থমকে গেল,তারপর হেসে বলল, "বাবা মানুস তো সব সমান,তুমি নাস্তিক তাতে সমস্যা কোথায়" । ওনার কথা শুনে খুব ভালো লাগল । খুশি মনে রক্ত দিয়ে চলে আসলাম ।

আসল ঘটনাঃ
ঘটনাচক্রে এই ব্যাক্তির ভ্রাতুস্কন্যার সাথে আমার দীর্ঘ দিনের সুসম্পর্ক(আগে জানতাম না) । কাল বিকালে বৈকালিক আড্ডায় যাওয়ার পথে তার সাথে বহুদিন পর দেখা এবং রাস্তায় দাড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বললাম । আজ একটু আগে আমার ওই বন্ধু ফোন করে জানালো তারা চাচা(মানে আমি যাকে রক্ত দিয়েছি তার বাবা) আমাদের একসাথে কথা বলতে দেখেছে, এবং তাকে খুব বকেছে । কোন নাস্তিকের সাথে নাকি সম্পর্ক রাখা উচিত না । নাস্তিকরা নাকি চরিত্রহীন হয় । আমার সাথে আবার যদি কোনদিন দেখে তাহলে নাকি তাকে কেটে মধুমতিতে ভাসিয়ে দেবে । এবং আমার বন্ধু খুব ভয়ে আছে তার বিদেশে অবস্থানরত বাবা জানতে পারলে কি হবে ???
যখন রক্ত দিলাম তার ছেলেকে , তখন তার এই অনুভুতি কোথায় ছিল ???

অনুভুতিঃ
আর কোন গোঁড়া আস্তিককে রক্ত দেব না ।

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ