সরঞ্জাম:
বর-বউ: ১ জোড়া
ননদ, দেওর: যথেচ্ছ পরিমাণে।
সদ্য মেকআপ বাক্স থেকে তুলে আনা দজ্জাল জা: ১ টা (২ টো হলে মন্দ হয়না, আপনার ঝাল খাওয়ার অভ্যেসের ওপর নির্ভর করছে)
বরের সুপ্ত প্রেমিকা: ১ টা
ম্যাদামারা ভাসুর: ১ টা (তেজপাতার মতো, দিলেও হয়, না দিলেও হয়)
বউয়ের বাবা-মা: (আলাদা করে রেখে দিন, পরিস্থিতি অনুযায়ী যোগ করতে হতে পারে)
বরের বাবা মা: ২ জোড়া (প্রত্যেকের প্রথম আর দ্বিতীয় পক্ষ মিলিয়ে)
চাকর-বাকর: আন্দাজ মতো।
প্রণালি:
সুরম্য অট্টালিকায় ১ টা ননদ, ২ টো দেওর আর ১ টা ভাসুরকে ছেড়ে দিন, আর দৈনন্দিন নানান সমস্যায় তাদের ক্রমাগত জড়াতে থাকুন।
ছিঁচকাঁদুনে টিনেজ ননদের জীবনকে সবদিক থেকে সমস্যাসঙ্কুল দেখান। দুচোখ দিয়ে অঝোরে নায়াগ্রা ফলস নামিয়ে আপাদমস্তক ভেজাতে থাকুন।
এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর বর, অর্থাৎ নায়ক – অর্থাৎ ননদ-দেওরের বৈমাত্রেয় দাদাকে এদের মাঝে ছেড়ে দিন। সমস্যা আস্তে আস্তে পাতলা হতে শুরু করবে।
কে কোন পক্ষের সন্তান প্রথমে বুঝতে দেবেন না, দর্শককে অল্প অল্প তথ্য দিয়ে উস্কে দিতে থাকুন।
ইতিমধ্যে বরের জীবনে কিছু সমস্যা যোগ করুন।
বাদলা রাতে এক অচেনা মেয়েকে বরের গাড়ির সামনে এনে ফেলে দিন। আহত করবেন না, অজ্ঞান করে রাখতে পারেন কিছুক্ষণ।
সেই সুযোগে হলুদ হেলোজেনের আলোয় হবু বউকে ভালো করে দেখে নিতে দিন। একসাথে গায়ে হলুদ আর শুভদৃষ্টি হয়ে যাবে।
জ্ঞান ফিরলে জানান যে অসুস্থ বাবার ওষুধ কেনার জন্য নায়িকা মাঝরাতে পাটভাঙা কাঞ্জিভরম শাড়ি আর অঞ্জলি জুয়েলার্সের গয়না পরে হন্তদন্ত হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
বরের দয়ার শরীর উথলে উঠতে দিন। তার সামগ্রিক সাহায্যে বউয়ের বাবাকে সুস্থ করে তুলুন। শুভদিন দেখে এদের বিয়ে দিয়ে দিন।
এদিকে, নিজের বোনকে নায়কের গলায় ঝোলানোর মতলব বানচাল হওয়ায় জায়ের সাথে নতুন বউয়ের সাপে-নেউলে সম্পর্ক তৈরি করুন। তার অভিসন্ধিতে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির নজরে নতুন বউকে ক্রমাগত খাটো করার চেষ্টা করুন।
প্রয়োজনে চুরির অপবাদও দিন। চমকপ্রদ কিছু ঘটলে ক্যামেরাতে হ্যাঁচকা টান মেরে সবার মুখের ওপর দিয়ে একবার প্যান করান।
খেয়াল রাখবেন যেন খুব বেশি প্যান না হয়ে যায়। সেটের অন্য দিকে যে ডিরেক্টর বা স্ক্রিপ্ট-রাইটার কেউই নেই, সেটা দর্শকের কাছে প্রকাশ হয়ে যেতে পারে।
চাকর-বাকরদের মাঝে মাঝে ব্রাওনিয়ান মোশনে বাড়ির মধ্যে ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দিন, আর কথায় কথায় নতুন বউয়ের সুখ্যাতি করান।
এরই মধ্যে শ্বাশুড়িকে, মানে বরের সৎমাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিন। তিন চার দিন কোমায় রাখার পর বের করে আনুন।
বউকে প্রাণভরে শ্বাশুড়ির সেবা করতে দিন। জায়ের পাঁচ ফোঁড়নকে প্রশমিত করতে বিভিন্ন উপায়ে বউয়ের উদার রূপকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরুন। মাসের পর মাস এভাবে চলতে দিন।
পেছনে হিন্দি সিরিয়াল বা সিনেমা থেকে সুর ঝেড়ে যন্ত্রানুষঙ্গে একটানা বাজাতে পারেন। চমক আনার জন্য অহেতুক ফুটেজ খাওয়া দু-একজন পাবলিক, যেমন কন্যাদায়হীন বউয়ের বাবাকে মেরে ফেলতে পারেন।
বাঙালির চিরন্তন ‘আহারে, বেচারা’-মার্কা সেন্টিমেন্টে সুড়সুড়ি দিতে বাড়ির মেয়েদের পণ্যের মতো ব্যবহার করুন।
সারাদিনের সমস্যার সমাধান খুঁজে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরা বাঙালীর পাতে রোজ সন্ধ্যেবেলা পরিবেশন করুন, হু হু করে উঠে যাবে।
কৃতজ্ঞতাঃ Yajnaseni Chakraborty
১৩টি মন্তব্য
মেহেরী তাজ
হা হা হা হা হা স্টার+জি এর ভূত এটা। শিওর।
এই সিরিয়াল দেখা না দেখা নিয়ে যথেষ্টই অত্যাচার এর মধ্যে আছি।
আসুন কাধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলা সিরিয়াল বানাই। হা হা হা হা
বায়রনিক শুভ্র
হ , চলেন ঝাপায় পড়ি ।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
ভাবছি কোন চরিত্রটি আমার জন্য মানাবে।
ইতিপূর্বে আমার অভিনীত দুটি ফিল্মে একটিতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অপরটিতে প্রবাসী ছেলের চিঠির আশায় অপেক্ষারত বাবা অভিনয় করেছি। 🙂
বায়রনিক শুভ্র
ভয়ের কিছু নাই । শ্বশুরের পোস্ট তো খালী আছে
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আমি আগে স্ক্রীপ্ট পড়ি। পছন্দ হলে তবেই অভিনয় করি। জাতির প্রতি কোন পজেটিভ মেসেজ থাকতে হবে আমার চরিত্রে। অথবা কোন নীতিবান লোকের চরিত্র যদি হয় তাতেও অমত করি না। 🙂
বায়রনিক শুভ্র
কদর্য ভিলেনের কোন চরিত্র পাওয়া গেলে জানাইয়েন । ইদানিং এলাকার পুলাপানগো খাওয়ানোর সময়ে আমার নাম নেওয়া হয় । 😀
চাটিগাঁ থেকে বাহার
;?
গাজী বুরহান
আপ্নে থাক্তে ইন্ড্রাস্টির এই বেহাল দশা ক্যান? জাতি যানতে চায়।
রম্য হইছে বটে কিন্তু আমি সিরিয়াল বানানর প্রস্তুতি নিতাছি!!
বায়রনিক শুভ্র
ঝাপায় পড়েন । লগে আছি 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা… :D) :D) :D) :D) :D) :D) :D) :D)
একসময় দেশে ধারাবাহিক নাটক দেখতাম, কতোটা আগ্রহ নিয়ে। আর এখন দেশের নাটক কিংবা ভারতের সিরিয়াল এসব দেখিনা।
সত্যি বলতে কি আমি টেলিভিশনই দেখিনা। এতোটাই বিরক্তিকর!
মজা পেয়েছি। 😀
বায়রনিক শুভ্র
আমিও টেলিভিশন একদমই দেখি না ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আপনার নামে মামলা হবে। -{@
বায়রনিক শুভ্র
ভাই ডর দেখাইয়েন না ।