
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র, অতীতে এটি যুগোস্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রের একটি অংশ ছিল।
১৯৯২ সালের মার্চ মাসে এটি স্বাধীনতা লাভ করে, এর পরপরই বসনীয় মুসলমান, ক্রোয়েশীয় ও সার্বীয় জাতির লোকদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে, ১৯৯৫ সালে যুদ্ধ শেষে সার্বীয়রা দেশের ৪৯% এলাকা দখলে সক্ষম হয় এবং এর নাম দেয় সার্ব প্রজাতন্ত্র।
বসনীয় ও ক্রোয়েশীয়রা দেশের বাকী অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় যার নাম বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ফেডারেশন, এই ফেডারেশন ও সার্ব প্রজাতন্ত্র একত্রে বর্তমানে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা রাষ্ট্র নামে পরিচিত, তবে বাস্তবে দেশটির বসনীয়, ক্রোয়েশীয় ও সার্বীয় জাতির লোকদের মধ্যে প্রবল বিভাজন ও বিদ্বেষ বর্তমান, যদিও এটি নিরসনের জন্য বহুবার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিলোক।
বসনিয়ার যুদ্ধ বা বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার যুদ্ধ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক যুদ্ধ।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়, এই যুদ্ধে বিভিন্ন পক্ষ সংশ্লিষ্ট ছিলো, যার মধ্যে রয়েছে, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং সেখানে বসবাসকৃত স্বতন্ত্র পরিচয়দাবীকৃত বসনীয় সার্ব ও বসনীয় ক্রোয়েট গোষ্ঠী, রেপুব্লিকা স্পোর্সকা ও হার্জে-বসনিয়া, যারা ছিলো যথাক্রমে সার্বিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার সহায়তাপুষ্ট।
মে ১৯৯২-এ গোলন্দাজ বাহিনীর আক্রমণে সারায়েভোতে অবস্থিত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ভবন জ্বলছে (বাঁয়ে); স্পোর্সকা সৈন্যদের সাথে রাটকো ম্লাদিভিচ (ডানে ওপরে); সারায়েভোতে জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত একজন নরওয়েজীয় সৈনিক।
এই যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যায় ও সোশালিস্ট ফেডারেল রিপাবলিক অফ যুগোস্লাভিয়া ও সোশালিস্ট রিপালিক অফ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা নামের নতুন দুটো রাষ্ট্রের জন্ম হয়, এর মধ্যে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ছিলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, যার মোট জনগোষ্ঠীর ৪৪% মুসলিম বসনীয়, ৩১% অথোর্ডক্স সার্বীয়, এবং ১৭% ক্রোয়েশীয় ক্যাথলিক। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২-এ তাদের স্বাধীনতার ঘোষণা পাস করে, কিন্তু এই ঘোষণা বসনীয়-সার্ব রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা প্রত্যাখান করে এবং নিজেদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, এর ফলে সার্বিয়ান সরকারের প্রধান স্লোবদান মিলসোভিচের সহায়তায় বসনীয়-সার্ব বাহিনী এবং যুগোস্লাভ পিপল’স আর্মি রাষ্ট্রটির সার্বীয় অংশ নিজেদের দখলে নিতে রিপাবলিক অফ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা আক্রমণ করে, এর পর খুব তাড়াতাড়িই সমগ্র বসনিয়া জুড়ে যুদ্ধ শুরু হয়, এবং বসনিয়ার বিভিন্ন অংশের (বিশেষ করে পূর্ব বসনিয়ার) জাতিগত জনগোষ্ঠী এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
বলকান কসাইঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নৃশংসতার কথা তখন অনেকেই ভুলে গেছে। এর অস্তিত্ব তখন বইয়ের পাতায়, সিনেমার রূপালি পর্দায় কিংবা সামরিক জাদুঘরের ক্যাবিনেটে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিলো। ইউরোপের বড় রাষ্ট্রগুলো তখন শান্তিপূর্ণভাবে একজোট হয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলো। ঠিক তখন ইউরোপের অন্যতম পরাশক্তি যুগোস্লোভিয়াতে বিভক্তির গুঞ্জন শুরু হয়। যুগোস্লোভিয়ার রাষ্ট্রনায়ক মার্শাল টিটোর মৃত্যুর পর দেশটি বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর মাধ্যমে সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মেসিডোনিয়া, বসনিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু ভিন্ন জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়। আঞ্চলিক নেতারা সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। ফলে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে এক নৃশংস গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
১৯৯১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ চলে কয়েক বছর জুড়ে। যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে জন্ম নেয় এক অভিশপ্ত ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের খলনায়কদের মধ্যে প্রথম যে তিনজনের নাম মনে আসে তারা হলো স্লোবোদান মিলোসেভিচ, রাদোভান কারাদজিচ এবং রাতকো ম্লাদিচ। উগ্র জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী এই তিন সার্ব নেতার হাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। ইতিহাসের পাতায় এদেরকে একসাথে ‘বলকান কসাই’ নামে ডাকা হয়।
কসাইদের বিচারঃ
বলকান কসাইরা এক সময় সবাই পলাতক হলেও একে একে ধরা পড়ে, ওদিকে গৃহযুদ্ধ অবসান হওয়ার পর, সার্বিয়ায় মিলোসেভিচের জনপ্রিয়তা কমে প্রায় শূন্যের কাছাকাছি চলে যায়, ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন কিন্তু ক্ষমতালোভী মিলোসেভিচ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। সার্বিয়ার জনগণ মিলোসেভিচের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে, মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন তিনি, যে সার্বদের জন্য তিনি এতো হত্যাযজ্ঞ করলেন, শেষপর্যন্ত তারাই তার বিরুদ্ধে পথে নামলো। তিনি এতোটাই হতাশ হয়ে পড়েন যে, বাড়ি ফিরে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করার চেষ্টা করেন, পরবর্তীতে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
২০০২ সালে তাকে নেদারল্যান্ডসের দি হেগ শহরে আন্তর্জাতিক আদালতের হাতে হস্তান্তর করা হয়, শুরু হয় মিলোসেভিচের বিচার, তিনি সেখানেও দর্পের সাথে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন, বিচারকার্য শেষ হবার আগেই ২০০৬ সালে মিলোসেভিচ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কারাগারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বলকান কসাইদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য ৫ মিলিয়িন ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়।
মিলোসেভিচকে গ্রেফতার করা গেলেও বাকি দুজন বলকান কসাই তখন পলাতক। FBI, CIA, Interpol সহ পৃথিবীর বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর Most Wanted List-এর শীর্ষে চলে আসে তাদের নাম, তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে প্রায় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়।
প্রায় ১৩ বছর পালিয়ে বেড়ানোর পর বেলগ্রেডের এক মফস্বল থেকে ধরা পড়েন রাদোভান কারাদজিচ, তিনি সেখানে একজন চিকিৎসকের ছদ্মবেশে বহুদিন ধরে বাস করছিলেন, তার বিরুদ্ধে দুটি গণহত্যা, পাঁচটি মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড, চারটি যুদ্ধাপরাধ এবং একটি জেনেভা চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো।
মিলোসেভিচের মতোই কারাদজিচ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তার মতে যুদ্ধাপরাধের দায় সংশ্লিষ্ট সামরিক অধিনায়কদের উপর বর্তায় কিন্তু মামলায় তিনি হেরে যান, তাকে ৪০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
কারাদজিচের বিচার চলমান অবস্থায় ধরা পড়েন শেষ পলাতক কসাই রাতকো ম্লাদিচ, তিনি উত্তর সার্বিয়ার একটি গ্রামে লুকিয়ে ছিলেন, ম্লাদিচের বিরুদ্ধেও কারাদজিচের অনুরূপ অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো, তিনি দি হেগে বিচারকার্য চলার সময় কোর্টের নিয়ম বহির্ভূত আচরণ করে সমালোচনার মুখে পড়েন, তাকে ২০১১ সালে প্রথম বিচারের জন্য আদালতে হাজির করা হয়। তিনি কোর্টে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘বানোয়াট’ বলে দাবি করেন, এরপর তিনি অসুস্থতার দোহাই দিয়ে ২০১২ সালের জুলাই পর্যন্ত বিচারকার্য স্থগিত রাখেন, এখন পর্যন্ত তার বিচারকার্য চলছে।
বসনিয়া যুদ্ধে বলকান কসাইদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ড বিশ্বমানবতার জন্য এক কালো অধ্যায়, কিন্তু অপরাধ করে কেউ ছাড় পেতে পারে না, পৃথিবীর বুকে সকল অত্যাচারী নেতার পতন ঘটেছে, তাদের অহংকার ধূলিস্যাৎ হয়েছে ন্যায়ের হাতে।
১৯৯০-এর দশকে বসনীয় যুদ্ধের একটা অন্ধকার অধ্যায় ছিল ওই সংঘাতে ধর্ষণকে যুদ্ধের একটা সামরিক কৌশল হিসাবে ব্যবহার করা।
জাতিগত সংঘাতে পরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্টভাবে মুসলিম নারীদের নির্বিচারে গণধর্ষণ করা হয়েছিল বসনিয়ায়। তাদের শিবিরে রেখে বারবার তাদের উপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল।
বলকান কসাইদের গ্রেফতার এবং বিচারকার্য পরিচালনা যেন তাই প্রমাণ করে, আর যেন পৃথিবীর বুকে নতুন করে স্রেব্রেনিৎসার অভিশাপ ফিরে না আসে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিশ্বনেতাদের একসাথে কাজ করতে হবে, কারণ মানবতাহীন মানবজাতি পশুর সমান।
দায় ছিলো জাতিসংঘেরওঃ
২০০৪ সালে যুদ্ধ-অপরাধ আদালতের রিপোর্টে বলা হয়, ২৫ থেকে ত্রিশ হাজার বসনীয় মুসলিম নারী ও শিশুকে জোর করে অন্য অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্থানান্তরের সময় তাদের এক বিপুল অংশ ধর্ষণ ও গণহত্যার শিকার হয়। নানা সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা গেছে, এইসব হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধ অভিযানের ফসল। বসনিয়ার যুদ্ধ চলাকালে সার্ব সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা কখনও কখনও কোনো একটি অঞ্চলে হামলা চালানোর পর সেখানকার সমস্ত পুরুষকে হত্যা করতো অথবা অপহরণ করতো এবং সেখানকার নারীদের ধর্ষণের পর তাদের হত্যা করতো। তারা বহুবার গর্ভবতী নারীর পেট ছুরি দিয়ে কেটে শিশু সন্তান বের করে ওই শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছে মায়ের চোখের সামনে এবং কখনওবা আরো অনেকের চোখের সামনেই। আরো মর্মান্তিক ব্যাপার হল এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ও নৃশংস পাশবিকতার বহু ঘটনা ঘটানো হয়েছে হল্যান্ডের শান্তিরক্ষীদের চোখের সামনেই। এমনকি মাত্র ৫ ছয় মিটার দূরে যখন সার্ব সেনারা এইসব পাশবিকতা চালাতো তখনও হল্যান্ডের শান্তিরক্ষীরা কেবল বোবা দর্শকের মতই নীরব থাকতো ও হেঁটে বেড়াতো। জার্মানির একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তাকে সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন একজন মার্কিন কমান্ডার।
বসনিয় যুদ্ধে নিহতদের স্বজনদের কান্নায় যেন সম্বল
সাবেক মার্কিন সেনা কমান্ডার জন শিইহান মার্কিন সিনেটে জানিয়েছেন, হল্যান্ডের শান্তিরক্ষীরা নৈতিক অধঃপতনের কারণেই নিস্ক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল।ফলে ১৯৯৫ সালে সেব্রেনিৎসায় হামলা চালাতে সাহসী হয় সার্বরা। ন্যাটোর সাবেক এই সেনা কমান্ডার আরো বলেছেন, হল্যান্ডের সেনারা পিছু হটার কারণেই সার্বরা সেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলমানকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।
মানবতার বিরুদ্ধে এইসব ভয়াবহ অপরাধের দায় কেবল মিলোশেভিচ ও কারাদিচের মত সার্ব নেতার ঘাড়ে চাপানো হলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যসহ নানা সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা যায় জাতিসংঘের দায়িত্বহীন ভূমিকা ও ন্যাটো জোটের আওতায় পশ্চিমা সরকারগুলোর অন্যায্য ভূমিকার কারণেই এই মানবীয় বিপর্যয় ঘটেছিল পশ্চিমা সরকারগুলোর জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বসনিয়ার মজলুম মুসলমানদের সহায়তার নামে সেখানে সেনা পাঠানো সত্ত্বেও বাস্তবে তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপই নেয়নি। বরং তাদের জন্যই নিহত হয়েছে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ।
মার্কিন সরকারসহ পাশ্চাত্য বিশ্বের অন্য অনেক অঞ্চলেও এখনও একই ধরনের প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, লিবিয়া, মিশর, সিরিয়া, ইরাক ও ফিলিস্তিনের ঘটনাপ্রবাহই এর জ্বলন্ত সাক্ষ্য। আসলে এইসব মুসলিম দেশকে টুকরো টুকরো বা আরো ছোট রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই পাশ্চাত্য এ ধরণের প্রতারণা চালাচ্ছে, মুসলিম জাতিগুলোর ওপর গণহত্যা বা জাতিগত শুদ্ধি অভিযানও পশ্চিমা শক্তিগুলোর এ জাতীয় পদক্ষেপের অন্যতম লক্ষ্য।
লেখকের কথাঃ
পরিশেষে বলতে চাই, ধর্ম কখনোই কারো বিদ্বেষের শিকার হওয়া উচিত নয়, তেমনি ধর্মকে পুঁজি করে কোনো যুদ্ধ হওয়া বা যুদ্ধের অবতারণা করা উচিত নয়, কারণ ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম কিন্তু যুগে যুগে এই ধর্মকে সামনে রেখে কিছু অধর্মী যুদ্ধের অবতারণা করে এসেছে এবং অনেকেই ধর্মকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যও যুদ্ধে জড়িয়েছে যেমন হয়েছে বসনিয়ার যুদ্ধে, আবার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও ধর্মকে সামনে দিয়ে অকাতরে বাঙ্গালী নিধন যজ্ঞে নেমেছিলো পাকিস্তানি হানাদার এবং তাদের বাঙ্গালী দোসরা।
আবার এই ধর্মকে পুঁজি করে ওসামা বিন লাদেন তার আক্রোশ দেখিয়েছিলো ৯/১১ তে আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা করে, যার বিপরীতে আমেরিকাও বিদ্বেষের সাথে আফগানিস্তানের সাথে যুদ্ধ শুরু করে যার রেশ এখনো আফগানিস্তান বয়ে বেড়াচ্ছে, তেমনি ইরাক আক্রমণ, সিরিয়ার যুদ্ধ সবই ধর্মকে পুঁজি করেই শুরু হয়েছে।
কিন্তু এইসব যুদ্ধে কার কি লাভ হয়েছে তা কি কেউ ভেবে দেখেছেন?
না লাভ কারও হয়নি, বরঞ্চ সারা বিশ্ব বিপুল পরিমাণে এইসব যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।
সুতরাং আসুন আমরা আজ থেকেই চেষ্টা করি ধর্মকে যুদ্ধের হাতিয়ার না বানিয়ে হাতে হাত রেখে পণ করি এবং এক সাথে সমস্বরে বলি, "যুদ্ধ নয়, আমরা শান্তি চাই"।
সমাপ্ত।
ছবিঃ গুগল।
তথ্য সুত্রঃ গুগল, ROAR BD.
১৩টি মন্তব্য
পপি তালুকদার
যুদ্ধ মানে নারীর, শিশুর উপর পাশবিক নির্যাতন।যুদ্ধ মানে মানবেতর অপমান।যুদ্ধ মানে ধ্বংস।আমরা চাই না পৃথিবীর বুকে আর কোনো যুদ্ধ সংগঠিত হোক।
আমরা শান্তিপূর্ন পৃথিবীতে বাস করতে চাই। যেখানে থাকবেনা ধর্মীয় সংঘাত থাকবেনা ভূখণ্ড দখলের লালসা। একটা শান্তিময় পৃথিবী থাকবে মানবেতর সেবায়।
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত, কিছু ক্ষমতালোভী অমানুষের কারণে অন্যরাও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, এতে নিজেরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ই, সাথে সাথে সাধারণ মানুষও তাদের লোভের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সবচাইতে বেশি হয়, এখন যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।
তৌহিদ
বসনিয়া যুদ্ধে বলকান কসাইদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ড বিশ্বমানবতার জন্য এক কালো অধ্যায়, কিন্তু অপরাধ করে কেউ ছাড় পেতে পারে না, পৃথিবীর বুকে সকল অত্যাচারী নেতার পতন ঘটেছে, তাদের অহংকার ধূলিস্যাৎ হয়েছে ন্যায়ের হাতে।
অনেক কিছু জানলাম ভাই। শুভকামনা জানবেন।
ইঞ্জা
সত্যি ভাই অত্যাচারীর বিচার এই ইহলোকেই প্রথমে হবে, কেয়ামতে যা হবে তা আল্লাহই ভালো জানেন, তবে সারা বিশ্বের মানুষের এক কাতারে আসা উচিত, শান্তির পথ সবচাইতে উত্তম, ধন্যবাদ ভাই।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অপরাধ করলে তা থেকে মুক্তি নেই সেটা প্রমাণিত!
আজ না হয় কাল বিচার বা শাস্তি পেতেই হবে।
ইতিহাস তার প্রমাণ!
.
আমরা যুদ্ধ চাই না, সংঘাত চাই না, চাই শান্তি।
অজানা কিছু জানা হলো,দাদা।
ইঞ্জা
হাঁ দাদা, পরপার কে দেখেছে?
যা বিচার এই পৃথীবিতেই প্রথমেই হবে, পাপী তার শাস্তি পাবেই।
ধন্যবাদ দাদা।
আরজু মুক্তা
যুদ্ধ নয়। শান্তি চাই।
কেউ অপরাধ করে পার পায়নি। কিন্তু ক্ষতি তো হয়। মানুষ মনে প্রাণে শিক্ষিত হোক। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেক।
শুভ কামনা ভাই।
ইঞ্জা
এই কথা গুলোই মানুষ শিখেনা আপু, শিখলে এই ধরিত্রী কতোই না সুন্দর হতো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কি বিভৎস! পেটের বাচ্চাকে বের করে মেরে ফেলা। যুদ্ধ কখনোই শান্তি আনে না। ধর্ম নিয়ে যুদ্ধ ! তা-ও তো স্বার্থের কারনেই কখনো সেটা ধর্মের মঙ্গলের জন্য নয়। বরং হানাহানি, রক্তের বন্যা বয়ে যাওয়া ।যুদ্ধে শিশু আর নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শান্তি বর্ষিত হোক পৃথিবীতে। দায় সবার ই আছে। অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
ইঞ্জা
বিভৎসতা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আরও বেশি হয়েছে, দু যুদ্ধের নীতি এক ছিলো, স্বাধীনচেতা জনগণকে ধবংস করা, ভয়ভীতিতে স্বাধীনতাক
ইঞ্জা
★স্বাধীনতাকামীদের টলানো যাবেনা জেনেই ওরা অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকবেন সবসময়।
উর্বশী
যুদ্ধ নয় শান্তি কামনা করি।তবুও ধর্মের সাথে যুদ্ধের সম্পৃক্ততা থাকার প্রচলন রয়েই গেল। ব্যক্তিগতও রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে এই অপরাধ করেই চলেছে।আসোলেই কি যুদ্ধ সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে? বা সঠিক স্বাভাবিক স্বাধীন চেতনা বৃদ্ধি পায়? বর্তমানে বহির্বিশ্ব সহ কি দেখতে পাচ্ছি?
প্রচুর ক্ষতির পাহাড়, ধ্বংস,পাশবিক নির্যাতন,মানবতাবোধ হারানো।সব কিছুর শুরু থাকলে শেষ ও তো আছে। ক্ষমতা তো চিরস্থায়ী নয়। অনেক কিছুই জানা ও শেখার পোষ্ট, অসংখ্য ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপু