বরিশাল পার্সপোর্ট কার্যালয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।  ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে নগরীর নতুল্লাবাদ বাসস্টান্ড সংলগ্ন পাসপোর্ট অফিসে দালালদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৫ জনকে পাকড়াও করা হয়।  কিন্তু গভীর উদ্বেগের বিষয় এরমধ্যে হ্যান্ডক্যাপ পরিহিত এক দালালকে খোদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখানকার সচেতন মহল এহেন বিষয়টিতে সংক্ষুদ্ধ।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহামুদা সুলতানা অভিযানের নেতৃত্ব দেন। অভিযানে আঞ্চলিক পত্রিকার সংবাদকর্মী পরিচয়ধারী নাহিদ হোসেন, আরিফুল ইসলাম,ইমরান হোসেন, ফটোকপির দোকানি সোহেল ও রুবেলকে আটক করা হয়। আদালতে নাহিদ হোসেন ও আরিফুলকে ৩ মাসের কারাদন্ড  দেওয়া হয়। এছাড়া ফটোকপির  দোকানি সোহেল ও রুবেলকে আড়াই হাজার টাকা করে মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সরেজমিন : পাসপোর্ট অফিস থেকে আটক পরবর্তী  জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংবাদকর্মী পরিচয়ধারী ইমরানকে দন্ড কিংবা জরিমানা থেকে রেহাই পেতে চলে কয়েক জনের লক্ষ্যনীয় দৌঁড়ঝাপ। হতবাক! কথা উঠে দেনদরবার। বিস্ময়কর! এ যেন  জেলা প্রশাসন ম্যানেজ প্রক্রিয়া। তাজ্জব। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আহুত ভ্রাম্যমান আদালতে প্রথমে দুই সংবাদকর্মী পরিচয়ধারী নাহিদ হোসেন, আরিফুল ইসলাম এবং দোকানী সোহেল ও রুবেলের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এ চার জনের বিচারকাজ চলাকালীন সময় অপর সংবাদকর্মী পরিচয়ধারী ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে আটক হ্যান্ডকাপ পরিহিত ইমরানকে ছাড়িয়ে নেয়ার পায়তারা চলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। মানে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে ছাড়িয়ে নেয়ার ন্যাক্কারজনক কান্ড।
ওই চারজনকে দন্ড ও জরিমানা করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহামুদা সুলতানা’র অফিসে চারজনের বিচারকাজ শেষে বাকী আটককৃত ইমরানের হ্যান্ডকাপ খুলে ফেলা হয়। তাকে মুক্তি দেয়া হয়। সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, চার জনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুই জনের দন্ড এবং দুই জনের জরিমানা করা হয়। আর ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। পাসপোর্ট অফিস থেকে ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযানে আটক এই ইমরান হোসেন যুবক অনারিয়াম প্রতিবাদ নামে পরিচিত। তার বাড়ি নগরীর ফিশারী রোড এলাকায়। যুবক ইমরান বরিশালের আঞ্চলিক একটি পত্রিকায় সংবাদকর্মী বলে চাউর ঘটে। পত্রিকাটি যিনি নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দীর্ঘ সময় ব্যাপী কর্মরত।  জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত থাকায় নানা ধরণের অনৈতিক সুবিধা ভোগ করে আসার কথা মিডিয়া অঙ্গনে চালু রয়েছে।
অনুসন্ধানী সূত্রগুলো বলছে,  জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনি বেশ ক্ষমতাবান। আইন কানুনকে তোয়াক্কা না করে অদৃশ্য ক্ষমতার দাপট বিরাজমান। নেপথ্যে থেকে মিডিয়াকে কুক্ষিগত করতে জামায়াতপন্থী ভাইকে পত্রিকাটির ডিক্লেরেশন করে দেন। এর আগে তার স্ত্রীকে সামনে রেখে আরেকটি পত্রিকাও নিয়ন্ত্রণ করতেন। সচেতন মহলের প্রশ্ন সরকারি চাকুরীজীবী ব্যক্তিটি কি এমন কারিশমায় পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ন নিয়ন্ত্রকারী পদে আসীন থেকে বছরের পর বছর থাকছেন বহাল তবিয়তে।
নানা জনের নানা বক্তব্য,  মুলত অনেক আগ থেকেই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন ধরণের চাটুকারিতায় সখ্যতা গড়ে তুলে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে চলছেন। কেউ বলছেন, যতসব অপকর্মের নাটের গুরু তিনি। বিএনপি ঘরোনার ব্যক্তিটি অতি সুযোগ সন্ধানী। বিগত জোট সরকারের আমলে বিএনপির বরিশাল মহানগর সভাপতি সাবেক এমপি অ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের ব্যক্তিগত ও দলীয় কর্মসূচীতে ক্যামেরা নিয়ে ছুটে যেতেন। তখন কট্টর বিএনপিপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত।
এসব প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো: সাইফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউই আইনে বাইরে নয়,আইন সবার জন্য সমান।

0 Shares

২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ

Thumbnails managed by ThumbPress