কোন এক গভীর সকালে চিনচিনে ব্যথার অনুভবে আবিষ্কৃত হলো বুকের মাঝে ছোট্ট একটি বিষের ফোঁড়া,
ও কিছু না, হটেনটট ভাবনায় কিছুই পাত্তা দেয়া হলো না। দিন যায় দিনের মত, রাত রাতের মত, দিন রাতের মত, রাত দিনের মত হয়ে যায়, নিয়ম বেনিয়মের তোয়াক্কা না করে টনটনে ব্যাথায়। অগত্যা ডাক্তারের শরণাপন্ন, সুগভীর মনযোগে প্রায় ধ্যানস্থ হয়ে ভাল ভাবে ব্যাথা দিয় না দিয়ে টিপে-টুপে দেখে বিধান দিলেন, ভয়ের কিছু নেই এমনিতেই সেরে যাবে, একান্ত যদি অসহ্য যন্ত্রণা হয় তাহলে কিছু বটিকা খাওয়ার নিয়মবিধি উল্লেখ করে লিখে দিলেন একখানি হিব্রু খত,
দিন যায় রাত যায়, যন্ত্রণাবিদ্ধতায় সপ্তাহ না যেতেই আবার যেতে হল ডাক্তারের কাছে। সিদ্ধান্ত হলো ফোঁড়া অপসারণের, কিছু টেস্ট ও হলো। দিন তারিখ ঠিক হলে আবার গেলাম, বাঁদরমুখো ডাক্তার আবার জটিল কিছু দামী টেস্ট দিলেন, অপারেশন স্থগিত।
একে ফোঁড়া সময় অসময় চিড়িক দিয়ে ওঠে, তার উপর ডাক্তারের কর্মকাণ্ডে মেজাজ তিরিক্ষি, সাতদিন পর আবার গেলাম, হাঁড়িমুখো রিপোর্ট দেখে-টেখে কাঁদো কাঁদো মুখে বলে, ক্যান্সার, আমার মহানন্দ এই সুখ সংবাদে, জিজ্ঞেস করি টাইম কিরাম, চৌক্ষের পানি ফেলে বলে টাইম বেশি নাই, এহেন খবরে সুখানন্দ আরও বেড়ে গেল, আহা একটা দুটো নয়, সত্তুরটা এস্তেমালের আনন্দ, অপেক্ষা করতে মন চাচ্ছে না।
বোর্ড বসে কেমোথেরাপির সিদ্ধান্ত দিতে, তার আগে আবার টেস্ট। সাতদিন পরে গেলাম আবার,
অসভ্য ডাক্তার রিপোর্ট দেখে-টেখে হাসে, বলে কিচ্ছুটি হয়নি।
রাগে দুঃখে আশা ভঙ্গের ফাঁটা হৃদয় নিয়ে ফিরে আসলাম, পণ করলাম এর হেস্তনেস্ত করতেই হবে,
এই মহা ধুরন্ধর শয়তানের সাথে ধুন্ধুমার কিছু একটা করতেই হবে।।
একবারের একটি প্রেসক্রিপশনের নমুনা দেখাচ্ছি,
“হে সহৃদয় বিষ ফোড়া,
বিষের কছম, বাদশাহ সুলেমানের দোহাই, মুক্তি দাও,
বিষটুকু চুলোয় যাক, ফোঁড়াটুকু থাকুক,”
ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠে দশ বার করে জপ করতে দিয়েছিলেন।
কাজ না হওয়ায় মাথায় বাঁশ মারতে গিয়েও মারা হয়নি, মারা যায় না বলে।
অবশেষে সাশ্রয়ী মূল্যের একটি বিশেষ প্যাকেজের আওতায় গুটিকয়েক বেয়াদপ ভাড়া নিলাম,
‘মিশন সম্মুখবর্জ নিক্ষেপ’ { যুগপৎ অজ্ঞানতা ও শব্দ অপ্রতুলতায় ‘সম্মুখ বর্জের’ বিকল্প ভদ্রস্থ সময়যোগী মোক্ষম শব্দ
ব্যাবহার করা গেল না, সোনেলার সোনাদের কাছে বিনম্র সাহায্য প্রার্থী}।
মৃত্যুন্মুখ পাণ্ডুর রোগিণীর কাছ থেকে কৌশলে পর্যাপ্ত বর্জ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হলো,
এরপর সময় নিয়ে সাবধানে রেকি পর্ব সম্পন্ন করে কৌশল পত্র প্রণয়ন পূর্বক অপেক্ষা, মু হা হা হা,
ছোড়া হলো, কিন্তু হায়! অব্যর্থ লক্ষ্যে আঘাত হানল না, বেঁচে গেল ডাক্তার; বিফল প্রচেষ্টা।
উহ সেকি যন্ত্রণা!! শরীরের ক্ষয়, টাকারও অপচয়। ফোঁসফোঁসানই সার এখন।
বাকী কথা পরে হবে।
Thumbnails managed by ThumbPress
৩২টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
“হটেনটট ভাবনা” 😮
উপজাতি মানে আদিবাসী ভাবনা? ;?
কতোকিছুই যে আর শিখবো!
ক্যান্সার নিপাত যাক, ডাক্তার এমন রোগীর হাত থেকে মুক্তি পাক। 😀
ছাইরাছ হেলাল
শিক্ষার শেষ নেই, চলিতেই থাকিবে।
ডাক্তারের পক্ষ নিলেন, অপেক্ষা করুন ডাক্তারের ক্রমবিন্যাসের দিকে,
ইকরাম মাহমুদ
ফোঁড়া তো নয় যেন ফুটন্ত আগ্নেয়গিরি।
আহা! কী অদ্ভূত ফোঁড়া। লেখক তো নয়ই,ডাক্তারও বাদ গেলো না। অগ্নুৎপাত হবে প্রাকৃতিকভাবে জেনেও ডাক্তারের মাথায়ও যে টনটনে ব্যাথা শুরু হয়েছিল।
ছাইরাছ হেলাল
খুবই দুষ্ট ডাক্তার তিনি।
খুবই যন্ত্রণার ফোঁড়া এটি।
মিষ্টি জিন
বুকের বাম পাশে যে এই ফোঁড়ার আবাসস্হল তাহা আমি পূর্বে কিন্চত সন্দেহ পোষন করিয়াছিলাম :p
ডাক্তার বদ্যি নিপীত যাক.. একটা তীর লইঁযা ফোঁড়াটা ছিদ্র করিয়া বিষ টুকু বাহির করিয়া দেওয়া হউক। :D)
ছাইরাছ হেলাল
ইস, কেন যে আপনি ডাক্তার হলেন না, তাই ভাবছি,
পরীক্ষা- নিরীক্ষা ছাড়াই রোগ নির্ণয় করে ফেললেন!
এরপর আর এই ভুতুম ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি না, একান্ত নিরুপায় না হলে।
মিষ্টি জিন
হা হা হা হা …,অভিজ্ঞ, তাই নিরীক্ষা করা ছাড়াই রোগ ধরতে পারি। :D)
ছাইরাছ হেলাল
এমন অভিজ্ঞজন সাথে আছে জেনে আনন্দিত।
মোঃ মজিবর রহমান
আহারে স্বাদের বিষফোড়া এতো জ্বালাস কে?
লাভা আগ্নেয়গিরি!!!
ছাইরাছ হেলাল
এ ফোঁড়াটি কিন্তু বিষের তাই একটু জ্বালাচ্ছে,
উপায় ছিল না কোন।
মোঃ মজিবর রহমান
ফোঁড়ার নাম কি লাইলী না আঘাতিনী
না মারিনী। ভাইয়া এতো জ্বালাচ্ছে কেন? কষ্ট হয় না বুঝি !!!!
ছাইরাছ হেলাল
নাহ, এ আর এমন কষ্ট কী?
এতেই সুখ সুখ আনন্দ আছে।
ক্রিস্টাল শামীম
স্বাদের ফোড়া বানাইলো মোরে বৈরাগী ^:^
ছাইরাছ হেলাল
সাধের হলেই বৈরাগ্যের স্থান কিন্তু নেই।
মৌনতা রিতু
অবশেষে ফোঁড়ার স্থান জানা গেল। গত ট্রিটমেন্টের ফি বাকি আছে। তিই এবার নো ট্রিটমেন্ট। ডাইরেক একশান। ফোঁড়ারে উপড়েই ফেলা হইল।
শেষে মুই কিছুই বুঝলাম না। ;(
ছাইরাছ হেলাল
স্থান কেমনে জানলেন! লেখায় তো তেমন কিছু পেলাম না।
এখনও এই ডাক্তারের আওতায় আছি, তাই ফি এর দিকে যাচ্ছি না।
বুঝবেন সবই যদি এমন ফোঁড়া হয়।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এক ফোড়ায় কত কিছুইনা দেখাল অবশেষে কেমো -{@
শরীরের ক্ষয়, টাকারও অপচয়। ফোঁসফোঁসানই সার এখন। -{@
ছাইরাছ হেলাল
এ বড় ভয়ঙ্কর ফোঁড়া, দেখানোয় পাকা।
কতই না বিপাকে ফেলেছে এই ডাক্তার।
প্রহেলিকা
ভালোই কাঁন্দাইছে দেখি ফোঁড়া আর ফোঁড়ার দাক্তার। কি দরকার ছিলো এই দাক্তার ফাক্তারের কাছে যাওয়া, তারচেয়ে বরং ফোঁড়ার সাথে দোস্তীইতো করতে পারতেন। আর যাইহোক হিব্রুভাষায় খত আর দেখতে হতো না, আর আপনারও সম্মুখবর্জ নিক্ষেপের মিশন শুরু করতে হতো না।
এই যদি হয় প্রেসক্রিপশনের নমুনা তাহলে আরো দেখিতে চাই এমন প্রেসক্রিপশন। কেন জানি প্রেসক্রিপশন দেখে মনে হলো ফোঁড়ার ভেতর যে ব্যথাখানি আছে তাও বড় আহ্লাদী। বুকের ভেতর উঠা ফোঁড়ারা আহ্লাদী হয় শুনেছি। কি জানি কম বুঝা মানুষ আমি।
বাকী যেন ফাঁকি না’হয় !!
ছাইরাছ হেলাল
আর বলেন কেন!! এ তো যেনতেন ফোঁড়া না বিষের ফোঁড়া, তাই ভোগা-ভুগির অন্ত নেই,
দোস্তি করাই যায়, তবে চিনচিনে টনটনে ব্যাথা শুরু হলে দোস্তি পালিয়ে বাঁচে।
ও আচ্ছা!! আপনাকে ফোঁড়া অভিজ্ঞ মনে হচ্ছে!! সবার কিন্তু আনন্দ অভিজ্ঞতা হয় না ফোঁড়া নিয়ে,
না ফাঁকি নয়, ছোট্ট দাক্তার উপাখ্যান পেয়ে যাবেন শীঘ্রই।
প্রহেলিকা
“শীঘ্রই” আসতে কত দেরী?
ছাইরাছ হেলাল
আপনার তো পাত্তা নেই তাই দিচ্ছি না।
আবু খায়ের আনিছ
আরে সবাইতো দেহি, ফোঁড়া নিয়ে ব্যাস্ত, ভাই আমার কত স্বপ্ন দেখা শুরু করছিলো, সত্তরটা হুর পাওয়ার। আহারে! অকালে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে বুক চিরে নিশ্চয় কান্না আসিতেছিলো।
হাসতে হাসতে পেটের খিল খুলে যাওয়ার উপক্রম। :D)
ছাইরাছ হেলাল
খিল বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করুন।
স্বপ্ন একটু রয়ে-সয়ে দেখতে হয়, হুট করে দেখে ফেললে তো হবে না।
ব্লগার সজীব
প্রেসক্রিপশন দেখে তো হাসতে হাসতে শেষ ভাইয়া, তো কতবার করে জপ করেছিলেন এই প্রেসক্রিপশনের কাব্য? ফোড়া থাক বিষটুকু কমে যাক!! ?? ^:^ স্মমুখ বর্জ্যের আর কোন বিকল্প পেলাম না ভাইয়া। তবে এটি লক্ষ্য ভ্রষ্ট হওয়ায় আমিও কষ্ট পেলাম। ফোড়া পর্ব চলুক আরো :D)
ছাইরাছ হেলাল
নাহ, ফোঁড়া শুধু আমার, তাই নিয়ে সোনাদের তেমন মাথা ব্যাথা নেই।
ডাক্তার খুপ খারাপ, এদের থেকে সাবধান থাকা দরকার সবারই।
শব্দস্বল্পতার জন্য সাহায্য চাইলাম, তা কেউ তেমন দা করল না, ব্যাপার না।
ব্লগার সজীব
ফোঁড়া পর্বের কি সমাপ্তি ঘোষনা করলেন? নাকি চলিবেক? 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপাতত ফোঁড়া-ফাঁড়ি বাদ, চলিবেক না।
শুন্য শুন্যালয়
সত্তুরটা মিস হয়ে গেলো? আহারে, একটু ধৈর্য্য ধরেন, দুইখানই তো কুলাতে পারেন না ঠিকমতো শুনেছি।
গুটিকতক বেয়াদব ক’পয়সায় ভাড়া করেছিলেন শুনি? সস্তার তিন অবস্থা শোনেননি? সামান্য একটা মুখজ্ঝটিকা, বর্জ্যবটিকার কর্মটুকুও করতে পারলো না!
বাদশাহ সুলেমানের দোহাই, বিষ চলে যাক, ফোঁড়ার দাগখানা থাকুকই থাকুক। ডাক্তার আর ফোঁড়া কী জানে, কোন কবির পাল্লায় পড়েছে!! নয়া জীবনের মোবারকবাদ কবি ভাউ। মিষ্টিমুষ্টি খাওয়ান। দোয়া, বদদোয়া সব কিন্তু আমাদের হাতে।
ছাইরাছ হেলাল
দোয়া না ছাই, বদদোয়ার পর্বত আপানাদের বগলে!!
তাই ই দিন প্রাণ-মন উজার করে, কেয়ামত অব্দি,
দু’খানা!! একখানাতেই নাভিশ্বাস! স্রষ্টার আজবতম সৃষ্টি এ জাতি!!
খুবই মিস, বুঝতেই পারছে একটি দু’টি বা চারটি নয়, গুনে গুনে সত্তুরটি!! ভাবতেই কেমন জানি ঘোর লেগে যায়।
জেপন খুবই সুন্দর ভাইয়া, আপনি বিশেষ জ্ঞানী মানুষ, সবই ই অজানা (জানা)!!
শুধু মিষ্টি-মুষ্টিতে তো হপে না, ঘাড় মটকে বিষটুকু চালান করে দিন।
ফোঁড়ার দাগই সই!!
শুন্য শুন্যালয়
আচ্ছা তাই? তা সত্তুরের আগে এই একখানার কী আলাদা গতি করে রেখে যাবেন? নইলে ঘোর কাটতেই ঝাড়ু হাতে সুন্দ্রির মুখখানা বড়ই ঘোর ঘোর লাগার কথা।
সেকী বলছেন দোয়ার কারনেই না এ জেবন ফেরত পাইলেন, তখন তো আর বুঝিনাই একের থেকে সত্তুরের ওজন বেশি। বদদোয়ার দেখছেন কী, এই শুরু করলাম বলে। যা দেই প্রাণ-মন উজার কইরাই দেই, অতএব বিষ বুষের ভাঁড়ার আগাম তৈরি করে রাখুন্।
জেপন আসলেই সুন্দর, দাক্তার যদি জানতো!
ছাইরাছ হেলাল
আল্লার মাল আল্লাই গতি করে দিবেন, তিনি দয়ালু ও মহা পরাক্রমশালী।
দেখুন দুন্দ্রিদের সব কিছুই মনোহর, সে ঝাটা থেকে শুরু করে যা কিছু তেনারা দান-দক্ষিণা দেন।
বিষ-বুষ আর ডরাই না, দারুণ উফকারী ডাক্তার আছে না!!
জেপনের মাহাত্ম ডাক্তার ভাল করেই বুঝে নিয়েছে, বাঁদর হারিয়ে।
বদ্দোয়া আর ডরাই না, দেন দেন উজার করে দেন, ধার নিয়েও দিতে পারেন,
কিচ্ছুটি আর হওয়ার নেই।
ল্যাহা কৈ? ফাঁকি-ফুঁকি বহুৎ দিয়ে ফেলেছেন ইতোমধ্যে!!