ফুটবল ঈশ্বর

রুমন আশরাফ ২৬ নভেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ১১:৩৮:১২অপরাহ্ন স্মৃতিকথা ৬ মন্তব্য
১৯৮৬ এর বিশ্বকাপ ফুটবলের কথা আমার খুব একটা মনে নেই। আমরা তখন থাকতাম টাঙ্গাইলে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক কলোনিতে। ঘরে সাদাকালো টেলিভিশন থাকলেও খেলা ওভাবে দেখা হয়নি এখন যেভাবে দেখি। নিতান্তই ছোট মানুষ তখন। খেলা তো বুঝিই না, দেখবো কি! তবে এটা মনে আছে, আমরা যে এরিয়াতে থাকতাম তার বাইরে থেকে অনেকেই আসতো খেলা দেখতে। মাঝে মাঝে তাদের করতালির ছন্দে আমিও ছন্দ মিলাতাম। সে বছর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করে। ম্যারাডোনার নাম তখন মানুষের মুখে মুখে। ম্যারাডোনাকে চিনি তখন থেকেই।
বিশ্বকাপ জয়ের পর ম্যারাডোনার নামডাক ব্যাপক তুঙ্গে। খাতার কভার, কলম, গেঞ্জি বিভিন্ন জায়গায় ম্যারাডোনার ছবি এবং নামের ছড়াছড়ি। সে বছর বাবা আমাকে একটি গেঞ্জি উপহার দিয়েছিলেন। গেঞ্জির ডান পাশে বুকের দিকটায় ম্যারাডোনার নাম লিখা ছিল। ম্যারাডোনার প্রতি ভালোলাগাটা মূলত তখন থেকেই শুরু।
১৯৯০ এর বিশ্বকাপের সময় আমি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। খেলা তখনও খুব ভালো না বুঝলেও অন্তত গোল দেবার ব্যাপারটি বুঝি। ক্লাসে বন্ধুদের সাথে তখন আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল নিয়ে ব্যাপক দলাদলিও করি। ওই বয়সে আমরা দোকান থেকে স্টিকার কিনতাম। বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে আমি বেশ কিছু স্টিকার কিনেছিলাম। স্টিকার গুলোর সবগুলোতেই ম্যারাডোনার ছবি ছিল। সে বছর ফাইনাল খেলাটি দেখেছিলাম আমার এলাকার এক বন্ধুর বাসায়। আমরা সবাই ছিলাম আর্জেন্টিনার ফ্যান। ব্যাপক আনন্দ এবং উত্তেজনা ছিল আমাদের মধ্যে। কিন্তু হতাশ হয়েছিলাম আর্জেন্টিনার পরাজয়ে। বিতর্কিত পেনাল্টির মাধ্যমে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি জয়ী হয় প্রিয় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। ম্যারাডোনার অশ্রুসিক্ত দেখে আমরা দুই বন্ধুও অশ্রু বিসর্জন করেছিলাম। তবুও ম্যারাডোনার প্রতি ভালোবাসা রয়ে গেল।
১৯৯৪ এর বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মাত্র একটি ম্যাচ দেখেছিলাম। রোমানিয়ার সাথে সেই ম্যাচটি হেরে যায় ম্যারাডোনা বিহীন আর্জেন্টিনা। তবুও ম্যারাডোনার প্রতি ভালোবাসা রয়ে গেল।
গতকাল ফুটবল ঈশ্বরের মহাপ্রয়াণের খবর শুনে কেমন যেন শূন্যতা অনুভব করছি। মনে হচ্ছে কি যেন নেই। কি যেন হারিয়ে ফেললাম।
ম্যারাডোনার বেঁচে থাকবে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে। ❤
0 Shares

৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ