প্রথম দেখা
যেদিন তোমায় প্রথম দেখি; পৌষ পার্বণের মেলায়,
তোমায় নিয়ে মন যে মাতে, অনুরাগের খেলায়।
মনলোভা হাসি তোমার, চোখে ইন্দ্রজাল,
তোমায় দেখে ভীষণ কাতর; দৃষ্টি হলো কাল।
মায়াভরা চাহনীতে, মন হলো উদাসী,
কখন যেনো আবার দেখি, মনকাড়া সে হাসি।
তোমায় দেখার আশায় ঘুরি; মেলার আয়োজনে,
যদি আবার দেখা মিলে, খোঁজি সঙ্গোপনে।
ঘুরে বেড়াই বইয়ের মেলায়, বসন্ত উৎসবে,
নববর্ষের মেলায় ঘুরি, হয়তো দেখা হবে।
কোথাও তোমার পাই না দেখা; ব্যস্ত এ নগরে,
তোমার জন্যে মনটা আমার, শুধুই কেঁদে মরে।
কোথায় তোমায় পাবো খোঁজে; নেই জানা ঠিকানা,
ঠিকই তোমায় নিতাম খুঁজে, করলেও বারণ মানা।
আর হলোনা কোনদিনই, তোমার সাথে দেখা,
হৃদয় মাঝে এঁকে গেলে, প্রেম-প্রণয়ের রেখা।
সে রেখাটা হচ্ছে বড়, হৃদয়ের গভীরে,
তার কারণে ভাসি আজো; ভাসি চোখের নীরে।
দাও না এক ফোটা তৃষ্ণার জল
তীব্র পিপাষায় বুক পুড়ে গেলেও
বিলাওনা একফোটা শীতল বারিও
বিলাও না কৃপণ, এফোটা তৃষ্ণার জল।
পুড়ে পুড়ে খাঁক হয় এ দেহমন
ছাই হয় জ্বলে পুড়ে তুষের মতোন।
চাতক, তবুও চেয়ে থাকে
নিঃসীম আকাশের নীলে
মিলে যদি এক ফোটা পিপাষার জল
তা ও মিলেনা, কাটে প্রতিক্ষায় প্রহর।
মেঘেদের কেনো এই বখাটে জীবন
ঘনঘোর বর্ষার দিনেও কর্মহীন উদাসিন
ঘোরে, নেই যেনো কাজ শুধুই অবসর
বিরামহীন কেবলই উড়ে ।
তারা কেনো বেছে নিল বখাটে জীবন
ঢালেনা একফোটা শ্রান্তির বারি
এমন শ্রাবণ দিনেও।
গর্জেনা আকাশে গুরু গুরু ডাক
তোলেনা ময়ূর তার মুগ্ধ পেখম
বাজেনা টিনের চাল বৃষ্টি ধারায়
ফুটেনা আষাঢ়ের ফুল ঘননিপবনে
দিনে দিনে সব কিছুই বদলে যায়
বদলে যাওয়ার নিয়মেই।
আসা-যাওয়ার পথে
আসা-যাওয়ার পথে, তোমার বাড়ির কাছে
যখন আমি আসি, থমকে দাঁড়াই হঠাৎ
মনটা কেমন পোড়ে, পা চলে না আর
তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে
আসা-যাওয়াই দায়।
তোমার বাড়ির পাশ দিয়ে, যখোন হেটে যাই
সমীরণে আছরে পড়ে, তোমার গায়ের ঘ্রাণ
সুবাসিত চুল আর, পারফিউমের ঘ্রাণে
মন-পবনের নাও তখোন
উথাল পাতাল দোলে।
মনের সাথে যুদ্ধ করে, কেবল হেরে যাই
ইচ্ছে জাগে মনের মাঝে তোমায় যদি দেখি
কত চেষ্টা উঁকিঝুঁকি পাইনা তোমার দেখা
মনের ইচ্ছে মনের মাঝেই কয়েদ করে ফিরি।
হৃদয়মাঝে কষ্ট পোষে ভাবি, হয়তো কাজে মগন
নয়তো স্বামীর শিয়রে বসে দিচ্ছো তারে বাতাস
হয়তো ভুলে বসে আছো অতীত স্মৃতিসব
সুখের ভেলায় ভেসে ভেসে করছো সুখবিলাস।
রোষের আগুনে পোড়াব
তুমি যদি চলে যাবে তবে কেন
সযত্নে গড়ে তোলেছি এ পুষ্প উদ্যান
আর কেনই বা আদরে-সোহাগে
ফুলেফুলে ভরে তুলেছি এ স্বপ্নিল কানন,
তবে কেন উষ্ণ প্রণয়ে
ভরিয়ে তোলি তাকে সারাক্ষণ।
একদিন নিপুণভাবে তুমিই
চিনিয়েছো ফুল, শিখিয়েছো
পুষ্পচর্চা বলেছো-ফুলের সাথে
অলি কানে কানে কি কথা বলে
কেমন করে ভালোবাসা হয়
ফুল এবং অলি’র।
তোমার জন্যে একদিন তাই, গড়ে তুলেছি
ফুলের এক বিশাল কানন
কত বাহারী নাম ও রঙের
ফুলদলে ভরে তোলেছি তার অঙ্গন।
প্রতিপ্রভাতে পুষ্পাঞ্জলী দেব
কন্ঠে পরাব পুষ্পকন্ঠহার
প্রসূনে প্রসূনে সাজাবো শয্যা
ভালোবাসা বিলিয়ে দেব তোমার
কুসুমাবৃত্ত সুখাসনে।
তাই নিরন্তর এ পুষ্পবিলাস
বাগান পরিবেষ্টিত আমার আঙ্গিনা
তোমার নামেই উৎসর্গ করি
হৃদয় উৎকীর্ণ ভালোবাসায়।
তুমিই যদি না থাকবে নিশ্চিত
জেনে রেখ এ্যাসিডে ঝলসিয়ে দেব
ফুলেদের সুন্দর মুখ, নগ্ন শরীর
দ্রোহের আগুনে পোড়াব সে
প্রসূন কানন, তছনছ করে দেব; সমগ্র পুষ্পউদ্যান
অতঃপর সেখানে হবে পাষাণ
বিষকাটালীর চাষ, থাকবেনা সেখানে
ফুলেল বিভা কাঁটার আঘাতে আঘাতে
ঝরাবো রোধির তুমিই যেখানে
থাকবেনা সেখানে কুসুমদের
থাকার প্রশ্নই ওঠেনা; নিষ্ঠুরতা
ছাড়া সেখানে থাকবেনা কোনো
ভালোবাসার নাম ঠিকানা।
১৯টি মন্তব্য
নিতাই বাবু
শ্রদ্ধেয় দাদা,আপনার প্রত্যুত্তরের অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু শুধু অপেক্ষায়ই থাকতে হয়, উত্তর পাওয়া যায় না।
মাহবুবুল আলম
আজ দেখেন!
নিতাই বাবু
[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]
একগুচ্ছ গোলাপের শুভেচ্ছা।
সুরাইয়া পারভিন
এমনিই প্রেমের কবিতা প্রণয়ের কবিতা আমায় ভীষণ ভাবে টানে তার উপর যদি এতো গুলো এতো সুন্দর কবিতা পড়ি তবে কি মস্তিষ্ক ঠিক থাকে বলুন! কি যে মন্তব্য করবো ভেবে পাচ্ছি না।
সব গুলো কবিতায় অসাধারণ
মাহবুবুল আলম
অনেক ধন্যবাদ, অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে। কবিতাগুলো ভাল লেগেছে জেনে আমারও খুব ভাল লাগলো।
ছাইরাছ হেলাল
এক দিনের দেখাকে অনেক দূর নিয়ে গেলেন ভালোবাসার টানে।
প্রথমটি নিয়ে বললাম।
মাহবুবুল আলম
ভাই যতটুকু বলেছেন তাতেই খুশি!
ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ!
অনন্য অর্ণব
একদিন নিপুণভাবে তুমিই
চিনিয়েছো ফুল, শিখিয়েছো
পুষ্পচর্চা বলেছো-ফুলের সাথে
অলি কানে কানে কি কথা বলে
কেমন করে ভালোবাসা হয়
ফুল এবং অলি’র।
এই হলো কথা,,,, এই জন্যই তো এতো গুলো প্রণয় উপাখ্যান পেলাম। দুজনের জন্যই ভালোবাসা দাদাভাই 😍
মাহবুবুল আলম
ভাই! এটা শুধু আমার বেলায় নয়, সবার বেলায়ই প্রযোজ্য।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা। ধন্যবাদ!
জিসান শা ইকরাম
এমন করে খুঁজলে দেখা হবেই একদিন।
সব গুলোই ভাল লেগেছে।
শুভ কামনা।
মাহবুবুল আলম
জিসান ভাই! আপনি অনেক হাসি-খুশি মানুষ আর আমি হলাম গোমড়া প্রকৃতির। কিছু হাসি-খুশি ভাব ধার দিলে …
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
সাবিনা ইয়াসমিন
কবিতা গুলো ভালো লাগলো মোটামুটি 🙂
মাহবুবুল আলম
মোটামুটি লাগলেই হলো ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা জানবেন!
রাফি আরাফাত
বাহ বাহ। প্রতিনিয়ত দারুন কিছু কবিতা পাচ্ছি। ভালো লাগলো।
মাহবুবুল আলম
রাফি আরাফাত ভাই! শুভেচ্ছা জানবেন। ধন্যবাদ!
এস.জেড বাবু
ঘুরে বেড়াই বইয়ের মেলায়, বসন্ত উৎসবে,
নববর্ষের মেলায় ঘুরি, হয়তো দেখা হবে।
কেউ না বললেও এটা প্রায় সকল প্রেমিকের বাস্তব স্লোগান
একসাথে এতগুলি চমৎকার কবিতা, কোনটা রেখে কোনটায় মন্তব্য করবো বুঝে উঠতে পারি না।
শুভেচ্ছা ও দোয়া রইলো
মাহবুবুল আলম
এমন ঘটনা কিন্তু অনেকের জীবনেই ঘটে। আমারটা আমি কবিতায় বলে দিলাম এই আর কি!
শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ!
তৌহিদ
মন থেকে খুঁজলেই কি পাওয়া যায় সবসময়? তবুও খুঁজে যাই প্রতিনিয়ত।
তিনটি কবিতাই ভালো লেগেছে ভাই।
আরজু মুক্তা
ভালোই লাগলো