১)স্কুল জীবন প্রেমঃ
অনেকেই দেখি খুব বেশি আবেগি হয়ে পড়ে যার ফলে পড়াশোনাটাই নষ্ট হয়ে যায়। মনে মনে ছেলেরা মাদার টেরেসার জায়গায় মাধুরী দিব্যা ভারতী আর মেয়েরা রবীন্দ্রনাথের জায়গায় সলমন আমির নাগার্জুন হৃত্বিক রোশনের পূজো করে থাকেন। স্কুলে গেলেই মনে হত ওটা একটা রোমান্টিক প্রেম নিবেদনের ক্ষেত্র। কিছু কিছু বান্ধবী কে দেখতাম ক্লাশ টিচারদের করায়ত্তে রাখার নিপুণ চেষ্টা চালাতেন। বাপের টাকা দেখলে কিছু ছেলের মন গলতে সময় লাগে না। আর গরিবের সুন্দরী মেয়েদের অনেক সহানুভূতিশীল ক্লাশটিচার বিবাহ করেন । তা সংখ্যাতে খুব কম ও মহার্ঘ।
যাইহোক আমরা কিছু বান্ধবীরা মাষ্টার আর ছাত্রীর প্রেম নিবেদনের আকার ইঙ্গিত দেখে ধন্য হয়ে যেতাম। মাষ্টারের অফিশে ছাত্রীটির কদর প্রাইম মিনিষ্টার ইন্দিরা গান্ধির মতই ছিল। এখনও মনে আছে আমরা ওই দুইজন বিহ্বল প্রেমিক প্রেমিকা দেখার জন্য দরজায় ছিদ্র করে রেখেছিলাম। ওকে আলাদা করে বাংলা রোমাণ্টিক কবিতা বোঝানোর সময় আমরা ও ছুটতাম দেখতে স্যার কিরকম বোঝায়। পরীক্ষার সময় মেয়েটার প্রতি যত্ন আরো বেড়ে যেত। ঘড়ি থেকে মস্ত বড় বড় নোট প্রদান হত। অন্য মেধাবী বান্ধবীরা প্রেম করত না তা নয় তঁারা মজা করতেই ভালোবাসতো। লাস্ট বেঞ্চির ছেলেরা সারাক্লাশ তাক করে বসে থাকত কখন ফার্স্ট বেঞ্চি সেকেন্ড বেঞ্চির সুন্দরী মেয়েদের পেট আর পিঠ সুন্দরভাবে দেখতে পাবে। ফুল ছুঁড়ে মারা পেন দিয়ে খোঁচা মারা সেগুলো তো আছেই। দুষ্মন্তের প্রেম নিবেদন আমাদের বাংলার শিক্ষক এমনভাবে বলতেন আস্তে আস্তে মনে হত তিনি নিজেই কোন শকুন্তলাকে প্রেম নিবেদন করছেন । সবাই হো হো হেসে উঠত। সেই সময় বুলাদির বিজ্ঞাপণও জোর জোরসে প্রচার হত। স্যারগণ ওইসব নিয়ে বোঝাতে এলে মেয়েরা হো হো করে হাসত আর ম্যাডাম বোঝাতে এলে ছেলেরা হো হো হাসত । উনারা লজ্জা পেয়ে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে যেতেন। এইড্ স্ র জন্য পকেটে কনডোম নিয়ে ঘোরার থেকে নিজেরা সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি?
আমাদের স্কুলের সামনে একটা পুকুর ছিল। কিছু প্রেমিক প্রেমিকা পুকুরের জলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বিরহের কবিতা বানাত। জল শুকিয়ে পুকুরটি মরুভূমি হয়ে গেলে প্রেমিকের মনটাও কাতর হয়ে যেত অজানা যন্ত্রণায়।
অনেকে হলিউডি ফিল্মের গল্প শোনাত। আমি বরাবর একা থাকতেই ভালোবাসতাম। নিজের একটা সামান্য কল্পনার জগতে থাকতে পছন্দ করতাম। কারণ নিঃস্ব সর্বহারাদের উচ্চ প্রতিবাদের ভাষা নিভৃতে শৃগালের ডাকের মতই হেয় বলে পরিণত হয়।
স্মার্ট শিক্ষকের প্রতি লাইন মারার প্রখর প্রচেষ্টা দেখা যেত। কোন শিক্ষকের তাকানো কিরকম চোখের ইশারা কিরকম কেমন মোটা গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা এগুলো কিছু বান্ধবীদের ঠোঁটস্থ ছিল।
আসলে কারো কারো জীবন এমন হয় সব থাকতে কেউ নেই একদম শ্মশানের মত ফাঁকা মনে হয়। পড়াশোনাটা তখন বোঝা বলে মনে হয়। তবুও মানুষ হতে হবে। অশিক্ষিত গরিব মেয়ে আর রাস্তার নেড়ি কুকুরের বাচ্চার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। যে যখন পারে ক্যালানি দেয় । লোহার রড দিয়ে খোঁচা দিয়ে রক্ত বের করে মজা পায়।
২)কলেজ জীবন প্রেমঃ
কলেজ জীবন প্রেম বলতে আমার কিছুই ছিল না। দুর্ভাগ্যবশতঃ কলেজে ওঠার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। তাই বন্ধুরা কেউ প্রেম নিবেদন করতে সাহস পেত না বরং আমি ই তঁাদের জন্য মেয়ে দেখে দিতাম। যেকোন কলেজের কলেজ ক্যান্টিনটা হল ছেলেদের বিশেষ করে বড় সিনিয়ার ছেলেদের মেয়ে দেখার ও গার্লফ্রেন্ড চুজ করার উৎকৃষ্ট জায়গা। নবীনবরনটাও কলেজের ছেলে মেয়েদের মিলনমেলার উত্তম স্থান।
কিছু বেমানান জিনিষঃ
১)একটা মোটা মেয়ে একটা ছুঁচোমুখধারী রোগা ছেলের গলা জড়িয়ে সংগে প্রেম করছে। ভাবতাম ওরা কি সত্ত্যি প্রেম করছে না জাস্ট চেক করে দেখছে পার্টস ঠিক আছে কিনা । পরেরবার প্রেমটা যেন ভালো হয় তাই।
২)কিছু ছেলে আছে যাকেই ভালো লাগে তাকেই গোলাপ দেয় আর ফোন নং নিয়ে আই লাভ ইউ বলে।
৩)কিছু শিল্পা শেঠি ভাবধারী মেয়েদের সাজগোজের তাপটে চেয়ার টেবিল পাঠ্যপুস্তক তটস্থ হয়ে পড়ে।
Thumbnails managed by ThumbPress
২২টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
উপস্থাপনায় হাসলাম খুব 🙂
এমন লেখা এই প্রথম লিখলেন।
শুভ কামনা।
অরুণিমা
HAPPY NEW YEAR” AMADER SWEET DADA.
ধন্যবাদ আপনাকে
জিসান শা ইকরাম
নববর্ষের শুভেচ্ছা -{@
মিজভী বাপ্পা
ভালো লিখেছেন।শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অরুণিমা
ধন্যবাদ আপনাকে
অরুণিমা
HAPPY NEW YEAR .
মিজভী বাপ্পা
Same 2 u 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
কিছু প্রেমিক প্রেমিকা পুকুরের জলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বিরহের কবিতা বানাত। জল শুকিয়ে পুকুরটি মরুভূমি হয়ে গেলে প্রেমিকের মনটাও কাতর হয়ে যেত অজানা যন্ত্রণায়।
ভালই বলেছেন দিদি।
অরুণিমা
ধন্যবাদ আপনাকে
শুন্য শুন্যালয়
ফুটো দিয়ে প্রেম করা দেখাটা বেশ মজার 🙂 বোঝা যাচ্ছে আপনি বেশ লক্ষি টাইপের।
বেমানান জিনিসগুলো নিয়ে কিছু বলার নাই। প্রেম জিনিসটা যে কি তাই-ই তো বুঝলাম না 🙁
হ্যাপি নিউ ইয়ার আপু। ভাল থাকুন নতুন বছর জুড়ে। -{@
অরুণিমা
HAPPY NEW YEAR DADA
ধন্যবাদ আপনাকে
ব্লগার সজীব
শুন্য শুন্যালয় দাদা ^:^ :c :D) শুন্য দাদা কেমন আছেন? :p
অরুনিমা দিদি,শুন্য শুন্যালয় আপু :D)
শুন্য শুন্যালয়
দাঁত বন্ধ করুন সজু আপু।
অরুণিমা
দিদি ভুলে দাদা ডেকে ফেলেছি, স্যরি
শুন্য শুন্যালয়
ইটস ওকে অরুনিমা আপু, আমার নামের কারনে সবাই আমাকে ছেলে ভাবতো শুরুতে। 🙁
ব্লগার সজীব
দিদি,কলেজ জীবনের প্রেম বিস্তারিত দিলেন না যে?তাড়াহুড়ো করে শেষ করে ফেললেন 🙂 ভালো লেগেছে খুব -{@
অপার্থিব
স্কুল লাইফের প্রেমটা সবচেয়ে ইন্টারেষ্টিং কারণ এই সময়ের প্রেমটা হয় চোখে চোখে , হৃদয়ের অভ্যন্তরে। সামনা সামনি বলার সাহস অধিকাংশেরই হয় না। খুব বড় জোর চিঠি বা টেক্সট আদান প্রদান হয়। বিশেষ যাদের গায়ে “ভাল ছাত্র” বা ভাল ছাত্রীর লেবেল লাগানো থাকে তারা এসময় খুবই মর্মান্তিক জীবন যাপন করে। কারন আমাদের সমাজে প্রেম ভালবাসাকে এক ধরনের নিষিদ্ধ গোপনীয় বস্তু হিসেবে দেখা হয়। প্রেমে জড়িয়ে পড়া তাদের “ভাল ছাত্রত্বের” সামাজিক পরিচয়ের জন্য এক ধরনের হুমকি তৈরী করে। তবে প্রযুক্তির সহজলোভ্যতার এই যুগে দৃষ্টি ভঙ্গী পাল্টাচ্ছে, নারী ও পুরুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি অন্তরঙ্গ ভাবে মিশছে। ফলে তাদের প্রেমের প্রকাশও এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি হয়। ভাল লেগেছে লেখাটি।
মেঘলা আকাশ
অনেক ভালো লাগলো স্কুল জীবনে প্রেম কি বাবে আসে নতুন বছরে শুভেচ্ছা আপু
নীলাঞ্জনা নীলা
দিদি অনেক হাসলাম। এই প্রথম এমন লেখা পোষ্ট করলেন কিনা!
আমি প্রেম বুঝলামই না। তবে প্রেম করেছি। একজনের সাথেই। 😀
হ্যাপি নিউ ইয়ার। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
স্কুল জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন।
আহা! কতো আনন্দ! কতো ইটিসপিটিস! কতো বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে প্রেমপত্র পড়া!!!
মরুভূমির জলদস্যু
-{@ ১)একটা মোটা মেয়ে একটা ছুঁচোমুখধারী রোগা ছেলের গলা জড়িয়ে সংগে প্রেম করছে। ভাবতাম ওরা কি সত্ত্যি প্রেম করছে না জাস্ট চেক করে দেখছে পার্টস ঠিক আছে কিনা । পরেরবার প্রেমটা যেন ভালো হয় তাই।
হা হা হা :D)
অনিকেত নন্দিনী
আহা! স্কুলজীবনে দিদি কতোইনা লক্ষী ছিলো। শিক্ষক-ছাত্রীর বিহ্বল প্রেম দেখার জন্য দরোজায় ফুটো করা তো লক্ষী মেয়েরই কাজ। :p
একটা মোটা মেয়ে একটা ছুঁচোমুখধারী রোগা ছেলের গলা জড়িয়ে সংগে প্রেম করছে। ভাবতাম ওরা কি সত্ত্যি প্রেম করছে না জাস্ট চেক করে দেখছে পার্টস ঠিক আছে কিনা । পরেরবার প্রেমটা যেন ভালো হয় তাই।
এইটা পড়েই নিজেকে এমন পরিস্থিতিতে ভাবলাম। :p আমি নিজেও মোটা কিনা! :D)